বন্ধ করে দিলে ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি করার লাইসেন্স কেন দিয়েছেন? সরকারের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা ইমপোর্ট করেছে তারা তো আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। ঢাকাসহ প্রতিটি শহরেই এই ব্যাটারিচালিত যান চলাচলের রোড পারমিশন কারা দিল? এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল? প্রশাসন, স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এতে ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পরও যতটুকু তাদের উপার্জন হয় সেটা দিয়ে কোনরকমে তারা দিন যাপন করে।’
সোমবার (২০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উদ্দেশ্যে করে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আন্তর্জাতিক চা দিবস ও মুল্লুক চলো দিবস উপলক্ষে’ এ মানববন্ধনে আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘গরীবের আহার কেড়ে নিয়ে আপনি রাজত্ব করবেন, আপনারা স্বর্গে বসবাস করবেন, ওই স্বর্গ থেকে আপনাদের বিদায় নিতেই হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না।’
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ভ্যান বন্ধ করে দিলেন। আবার নিজেই বলেছেন তার হাতের যে ঘড়ি এই ঘড়ির দাম অনেক মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা। তিনি যে সানগ্লাস পড়েন সেটারও অনেক দাম লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার সানগ্লাস ও ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে তিনি এই ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালাদের মর্ম কীভাবে বুঝবেন। তারা যে পরিশ্রম করে রিকশা চালায় সেই টাকা দিয়ে তার সন্তানদেরকে স্কুলে ঠিকমতো পাঠাতে পারে না।’
ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘তাদের সন্তানরা তো বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ দুবাই, কেউ কানাডা, কেউ মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানিয়েছেন। তারা সেখানে বিভিন্ন ধরনের বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সরকারের আত্মীয়-স্বজন বিদ্যুৎ খাত ও উন্নয়নের নামে থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সুতরাং তারা কি করে বুঝবে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের করুন কাহিনী?’
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, মুল্লুক চলো নিজ বাড়িতে ফিরে চলো চা শ্রমিকদের এই আন্দোলন ছিলো সম্পূর্ন যৌক্তিক ও চা শ্রমিকদের অধিকার। চা শ্রমিকদের নিকট দেওয়া প্রতিশ্রুতি ইংরেজ মালিকরা ভঙ্গ করে চা শ্রমিকদের দাসে পরিণত করেছিল। ১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকদের রক্তদানে ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়। কিন্তু মুল্লুক চলো চা শ্রমিকদের আন্দোলনে হাজার হাজার চা শ্রমিকের রক্তে চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন ও মেঘনা নদীর পানি লালে লাল হলেও চা শ্রমিকরা আজও দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পায়নি।
তিনি বলেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি এখন ক্ষেত্রবিশেষে ১৬৮, ১৬৯, ১৭০ টাকা। চা শ্রমিকদের নায্য অধিকার আদায়ের জন্য সকল শ্রমিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার জন্য শ্রমিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/অমিয়/