ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

সেনাপ্রধানের বিষয়ে হাসনাতের বক্তব্যে সারজিসের দ্বিমত

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
সেনাপ্রধানের বিষয়ে হাসনাতের বক্তব্যে সারজিসের দ্বিমত
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ- মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম

রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে সেনানিবাস থেকে চাপের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন দলটির আরেক মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ফেসবুকে তার ভেরিফাইড আইডিতে দেওয়া পোস্টে গত ১১ মার্চ সেনাভবনে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত জানিয়েছেন সারজিস আলম।

‘১১ মার্চ সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাৎ নিয়ে আমার জায়গা থেকে কিছু সংশোধন, সংযোজন ও বিয়োজন’ শিরোনামে সারজিস আলমের দেওয়া সেই ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘সেদিন আমি এবং হাসনাত সেনাপ্রধানের সাথে গিয়ে কথা বলি। আমাদের সাথে আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ আরেকজন সদস্যেরও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তিনি যেতে পারেননি। প্রথমেই স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখি সেদিন সেনানিবাসে আমাদের ডেকে নেওয়া হয়নি বরং সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইজারের সাথে যখন প্রয়োজন হতো তখন ম্যাসেজের মাধ্যমে আমাদের কিছু জিজ্ঞাসা ও উত্তর আদান-প্রদান হতো।

যেদিন সেনাপ্রধান পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবসে অনেকটা কড়া ভাষায় বক্তব্য দিলেন এবং বললেন ‘এনাফ ইজ এনাফ’ তখন আমি সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইসরকে জিজ্ঞাসা করি আপনাদের দৃষ্টিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দেখছেন কিনা? সেনাপ্রধানের বক্তব্য তুলনামূলক straight-forward এবং harsh মনে হচ্ছে। তিনি আমাকে বললেন তোমরা কি এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে চাও? আমি বললাম- বলা যেতে পারে। এরপরে সেদিন সেনাপ্রধানের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়। সেনাভবনে সেই রুমে আমরা তিনজনই ছিলাম। সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং আমি। 

মানুষ হিসেবে যেকোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তির অভিমতকে একেকজন একেকভাবে অবজার্ভ করে। হাসনাত সেদিন তার জায়গা থেকে যেভাবে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অবজার্ভ ও রিসিভ করেছে এবং ফেসবুকে লিখেছে আমার সেক্ষেত্রে কিছুটা দ্বিমত আছে। 

আমার জায়গা থেকে আমি সেদিনের বক্তব্যকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ দেয়ার আঙ্গিকে দেখিনা বরং ‘সরাসরি অভিমত প্রকাশের’ মতো করে দেখি। ‘অভিমত প্রকাশ’ এবং ‘প্রস্তাব দেওয়া’ দুটি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যদিও পূর্বের তুলনায় সেদিন সেনাপ্রধান অনেকটা স্ট্রেইথ-ফরোয়ার্ড ভাষায় কথা বলছিলেন। পাশাপাশি ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের জন্য ‘চাপ দেওয়ার’ যে বিষয়টি এসেছে সেখানে ‘চাপ দেওয়া হয়েছে’ এমনটি আমার মনে হয়নি। বরং রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ না আসলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সমস্যার সৃষ্টি হবে সেটা তিনি অতি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছিলেন।

হাসনাতের বক্তব্যে যে টপিকগুলো এসেছিল, যেমন- ‘‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ, সাবের হোসেন, শিরিন শারমিন চৌধুরী, সোহেল তাজ; এসব নিয়ে কথা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে কিনা, এই ইলেকশনে আওয়ামী লীগ থাকলে কি হবে না থাকলে কি হবে, আওয়ামী লীগ এই ইলেকশন না করলে কবে ফিরে আসতে পারে কিংবা আদৌ আসবে কিনা এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল। এসব সমীকরণে দেশের উপরে কি প্রভাব পড়তে পারে, স্থিতিশীলতা কিংবা অস্থিতিশীলতা কোন পর্যায়ে যেতে পারে সেসব নিয়ে কথা হয়েছিল। 

কিন্তু যেই টোনে হাসনাতের ফেসবুক লেখা উপস্থাপন করা হয়েছে আমি মনে করি- কনভারসেশন ততটা এক্সট্রিম ছিল না। তবে অন্য কোন একদিনের চেয়ে অবশ্যই স্ট্রেইথ-ফরওয়ার্ড এবং সো-কনফিডেন্ট ছিল। দেশের স্থিতিশীলতার জন্য রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের ইলেকশনে অংশগ্রহণ করা যে প্রয়োজনীয় সেই বিষয়ে সরাসরি অভিমত ছিল। 

হাসনাত তার বক্তব্যে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করেছে-
‘‘আলোচনার এক পর্যায়ে বলি-যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই,সেই দলকে আপনারা কিভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, ‘ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি।’’

এই কনভারসেশন টা হয়েছে এটা সত্য। কিন্তু আমাদের রুমে বসে হওয়া কনভারসেশন হঠাৎ এককভাবে শেষ করে যখন সেনাপ্রধান উঠে দাঁড়ালেন এবং রুম থেকে কথা বলতে বলতে বের হয়ে এসে যখন আমরা গাড়িতে করে ফিরবো তার পূর্বে বিদায় নেয়ার সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই কনভারসেশন হয়েছে। সেনাপ্রধান রেগে যাওয়ার সুরে এই কথা বলেছেন বলে আমার মনে হয়নি বরং বয়সে তুলনামূলক বেশ সিনিয়র কেউ জুনিয়রদেরকে যেভাবে অভিজ্ঞতার ভারের কথা ব্যক্ত করে সেই টোন এবং এক্সপ্রেশনে বলেছেন।

‘হাসনাত না ওয়াকার’ এই ন্যারেটিভ এবং স্লোগানকে আমি প্রত্যাশা করি না। হাসনাতের জায়গা ভিন্ন এবং সেনাপ্রধান জনাব ওয়াকারুজ্জামানের জায়গাও ভিন্ন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টি অন্যান্য রাজনৈতিক দল কিংবা জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করানোও কখনো প্রাসঙ্গিক নয়। পাশাপাশি সেনাপ্রধানের পদত্যাগ নিয়ে যে কথা দুয়েক জায়গায় আসছে সেটিও আমাদের বক্তব্য নয়।

এসবের পাশাপাশি আমি আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে একটি অভিমত প্রকাশ করতে চাই। আমি ভুল হতে পারি কিন্তু এই মুহূর্তে আমার এটিই সঠিক মনে হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ না কেউ যোগাযোগ রক্ষা করে। সেই প্রাইভেসি তারা বজায় রাখে। আমাদের সাথে সেনাপ্রধানের যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে সেগুলোর সাথে আমাদের সরাসরি দ্বিমত থাকলেও আমরা সেগুলো নিয়ে আমাদের দলের ফোরামে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারতাম, সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম, সে অনুযায়ী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারতাম। কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আওয়ামী লীগের যেকোনো ভার্সনের বিরুদ্ধে এখনকার মতই রাজপথে নামতে পারতাম। অথবা অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সরাসরি আমাদের সাথে ঐক্যমতে না পৌঁছালে আমরা শুধুমাত্র আমাদের দলের পক্ষ থেকেই এই দাবি নিয়ে রাজপথে নামতে পারতাম। 

কিন্তু যেভাবে এই কথাগুলো ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এসেছে এই প্রক্রিয়াটি আমার সমীচীন মনে হয়নি বরং এর ফলে পরবর্তীতে যেকোনো স্টেকহোল্ডারের সাথে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আস্থার সংকটে পড়তে পারে।

আমার এই বক্তব্যে আমার সহযোদ্ধা হাসনাতের বক্তব্যের সাথে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত এসেছে। এটার জন্য অনেকে আমার সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমাদের ব্যক্তিত্ব স্রোতে গা ভাসানোর মত কখনোই ছিল না। ছিল না বলেই আমরা হাসিনা রেজিমের বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। 

আজও কেউ হাসনাতের দিকে বন্দুক তাক করলে তার সামনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার কমিটমেন্ট আমাদের আছে। কিন্তু সহযোদ্ধার কোন বিষয় যখন নিজের জায়গা থেকে সংশোধন দেয়ার প্রয়োজন মনে করি তখন সেটাও আমি করব। সেই বিবেকবোধটুকু ছিল বলেই ৬ জুন প্রথম যেদিন শহীদ মিনারে কয়েকজন কোটা প্রথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায় তাদের মধ্যে সামনের সারিতে আমরা ছিলাম। 

আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই বিবেকবোধের জায়গাটুকুই আমাদেরকে সঠিক পথে রাখবে। আত্মসমালোচনা করার এই মানসিকতাই আমাদেরকে আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে নিয়ে যাবে। 

জুলাই গণহত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড ঘটানো ‘আওয়ামী লীগের যেকোনো ভার্সনের’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।

Truth shall prevail.’

অমিয়/

আদালতের এজলাসেই পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতা-কর্মী আটক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
আদালতের এজলাসেই পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতা-কর্মী আটক
ছবি: সংগৃহীত

পাবনায় আদালতের ভেতরে শুনানি চলাকালে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেওয়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় বিএনপির ৬ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

আটকরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের ফতে মোহাম্মদপুর নিউ কলোনী এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে আওয়াল কবির (৩৮), হাবিবুর রহমানের ছেলে সরোয়ার জাহান শিশির (৩৩), দাশুড়িয়া গ্রামের মৃত আমজাদ খানের ছেলে কালাম খান (৪০), এম এস কলোনী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৩), লোকসেড গাউছিয়া মসজিদ এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে সবুজ হোসেন (৩৫) এবং ভাঁড়ইমারী বাঁশেরবাদা গ্রামের মৃত আব্দুল গাফফার সরদারের জহুরুল ইসলাম (৩৫)।

আওয়াল কবির ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বর্তমান পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান শিশির পৌর ছাত্রদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী, কালাম খান দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রুবেল হোসেন পৌর ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এবং জহুরুল ইসলাম ডালিম সলিমপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ঈশ্বরদীতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সময় নাশকতার একটি মামলার শুনানিতে আটকরা হাজিরা দিতে এসেছিলেন। হাজিরা চলা অবস্থায় তারা এজলাসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকেন। এ সময় সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য শাহ আলম তাদের ছবি তুলতে বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই তাকে মারধর করেন বিএনপির ওই নেতা-কর্মীরা। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে আদালতের শুনানি শেষে তাদের আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) রাশেদুল ইসলাম জানান, সঙ্গে সঙ্গে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

এ বিষয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আইনজীবী মাসুদ খন্দকার বলেন, আদালতের এজলাসে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়ার মত নয়। বিএনপির কেউ যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পার্থ/মেহেদী/

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিরা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিরা
ছবি : খবরের কাগজ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১২টা ৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্য তারা যমুনায় প্রবেশ করেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাহউদ্দিন আহম্মেদ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ চাইবে বিএনপি। এ ছাড়া নির্বাচন নিয়ে সরকারের মনোভাব কি তা স্পষ্ট করার চেষ্টায় থাকবে প্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলতে পারেন নেতারা।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

নয়া ফরম্যাটে হবে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
নয়া ফরম্যাটে হবে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

সম্মেলনে ডেলিগেট কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে মহানগর, জেলা ও উপজেলায় নেতৃত্ব নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে এই চর্চা অব্যাহত রাখার পক্ষেও হাইকমান্ড। সেই লক্ষ্যেই এবার নয়া ফরম্যাটে পেশাজীবী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনে কাজ করছেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের মধ্যে অন্যতম বড় সংগঠন হচ্ছে চিকিৎসকদের নিয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। এবার সম্মেলনের মাধ্যমে ড্যাবের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে চার সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপিপন্থি প্রকৌশলীদের বড় পেশাজীবী সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) এবং কৃষিবিদদের সংগঠন অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও চলছে জোরেশোরে। তবে সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ নেতা-কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পক্ষে। তাদের মতে, সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত যোগ্য এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছেন তাদের মূল্যায়ন করা সম্ভব। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ড্যাব ও এ্যাবের সম্মেলনের দিনক্ষণ বা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিক বৈঠক করেছেন। খুব দ্রুতই এ্যাব ও অ্যাবের কাউন্সিলের দিনক্ষণ বা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। এ্যাবসহ প্রতিটি পেশাজীবী সংগঠনের আলাদা এবং একটি সমন্বিত থিংকট্যাংক গঠনের চিন্তা বিএনপির। মূলত রাষ্ট্র মেরামত ও ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রত্যেকটি খাতের জন্য এই থিংকট্যাংক কাজ করবে। 

গত ৪ মার্চ অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) ও অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যাব) এবং ২৪ মার্চ ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বিলুপ্ত করা হয়। মূলত দল গোছানোর পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠনগুলোকেও আরও শক্তিশালী করতে চায় বিএনপি। সে জন্য তিন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্ব নতুনভাবে নির্বাচনের ভাবনা হাইকমান্ডের।

৩০ দিনের মধ্যে ড্যাবের কাউন্সিল, নির্বাচন কমিশন গঠন

ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ এবং মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন কমিটি বিলুপ্ত করা হয় গত ২৪ মার্চ। ওই দিনই ১২ সদস্যর একটি সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে ড্যাবের কাউন্সিল সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে কমিটির সদস্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকারকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যরা হলেন সদস্যসচিব অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সদস্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও অধ্যাপক মামুন আহমেদ। 

জানা গেছে, এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যেই সম্মেলন সম্পন্ন করবে। ড্যাবের সম্মেলন সফল হলে পরবর্তী সময়ে অন্যান্য পেশাজীবী এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের কমিটিও সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হবে। ড্যাব সংগঠনে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার সদস্য (ভোটার) রয়েছেন। নতুনভাবে কাউকে ভোটার না বানিয়ে আগের সদস্যদের নিয়েই কাউন্সিল করার দাবি ড্যাব নেতাদের।

ড্যাবের সদ্য সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করলে গণতান্ত্রিক চর্চা বিকশিত ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। কেননা, কাউন্সিলে প্রকৃত নেতাদের মূল্যায়নের সুযোগ থাকে। জয়ী এবং পরাজিত প্যানেলের লোকজন মিলেমিশে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়। এই চর্চা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সর্বত্র অব্যাহত রাখলে দলের লাভ হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির দুঃসময়ে আমরা চিকিৎসকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে ড্যাবের দায়িত্ব গ্রহণ করি। যে সময় মহামারি করোনায় বিশ্ব বিপর্যস্ত ছিল, সে সময় দায়িত্ব নিয়েই আমরা দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি করোনাভাইরাস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় মাঠে নিরলসভাবে সক্রিয় ছিলাম। নেতা-কর্মীরা সেসবের মূল্যায়ন করবেন, ইনশাআল্লাহ।’

ড্যাবের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার বলেন, ‘আগামী ৯ মে পর্যন্ত কাউন্সিল করার সময় রয়েছে। আশা করছি, এই সময়ের মধ্যেই ভালো কিছু করা হবে। দল ও সংগঠনের জন্য যেটি ভালো তারা সেটিই করবেন।’

ড্যাবের নতুন কমিটির শীর্ষ পদে আলোচনায় থাকা ১৪ জন নেতা ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন এবং বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করছেন। এরা হলেন সাবেক সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশীদ, সাবেক মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন ও ডা. নজরুল ইসলাম, ড্যাবের উপদেষ্টা ডা. রফিকুল কবির লাবু, সহসভাপতি ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন ও সাইফুদ্দিন নিসার আহমেদ তুষান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. শাকুর খান প্রমুখ। তবে প্যানেল গঠনের সম্ভাবনাও রয়েছে। 

অবশ্য ড্যাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নির্বাচনে প্যানেলভিত্তিক না করে বরং প্রধান পাঁচটি পদে ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ড্যাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের কাছে সব সদস্যের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ড্যাবের প্রধান পাঁচটি পদে নির্বাচন ব্যবস্থায় একটা সুপারিশ বিবেচনার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান। ডা. ফখরুজ্জামানের মতে, এতে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কমানো সম্ভব। কারণ প্যানেলভিত্তিক নির্বাচনে বিজয়ী প্যানেল এবং পরাজিত প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে শত্রুভাবাপন্ন বিভাজন তৈরি হয় এবং তা পরবর্তী সময়ে কর্মসূচিতে প্রভাব ফেলে। 

২০১৯ সালের ২৪ মে কাউন্সিলরদের ভোটে হারুন-সালামের নেতৃত্বধীন কমিটি বিগত আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচিতে ভূমিকা রেখেছে। দলীয় কর্মসূচির বাইরেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রান্তিক মানুষের মাঝে ড্যাবের উদ্যোগে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প, ত্রাণ এবং ওষুধ বিতরণ করেছে। 

এ্যাবের নতুন কমিটি শিগগরিই, থাকবে থিংকট্যাংক

কাউন্সিলদের ভোটে নির্বাচিত ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু এবং মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হাছিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হয় গত ৪ মার্চ। গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত এ্যাবের সাধারণ সদস্য ১ হাজার ৩০০ জন। সম্মেলনের মাধ্যমে নাকি সরাসরি আহ্বায়ক কমিটি হবে এ নিয়েই আলোচনা চলছে। আহ্বায়ক কমিটি দিলে প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুলকে আহ্বায়ক করে ৭১-৮১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি হতে পারে। তবে বিগত কমিটির একজন নেতাকে নিয়ে হাইকমান্ডের আপত্তি থাকায় কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করতে হলে নতুন সদস্য দেওয়ার দরকার নাই। রাজপথের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও মেধাবীদের সমন্বয়ে কমিটি হবে। তবে বয়স্ক এবং অতীতে যারা নেতৃত্বে ছিলেন এমন কাউকে আবারও নেতৃত্বে আনলে সংগঠন পিছিয়ে পড়বে।

সম্মেলন না হলে এবারও নতুন কমিটির শীর্ষ পদে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, সিনিয়র সহসভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তফা-ই জামান সেলিম, আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী এ কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নু ও প্রকৌশলী মাহবুব আলম। 

জানা যায়, বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ্যাবের নেতৃত্বে নতুন থিংকট্যাংক গঠন করা হবে। এ বিষয়ে এ্যাবের নতুন কমিটি কাজ করবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। মূলত পাওয়ার, ওয়েস্ট এনার্জি, পাওয়ার সেভিং, রিনিউঅ্যাবেল এনার্জিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত হবে এ্যাবের থিংকট্যাংক।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ইঞ্জিনিয়ারিং থিংকট্যাংক গঠন করা অত্যন্ত জরুরি, যা দেশবাসীকে নতুন আশার আলো দেখাবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার জানান, তিনি ১৯৯০ সাল থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় আছেন। বিএনপির হাইকমান্ড যখন যেখানে দায়িত্ব দেবেন তিনি সে জন্য প্রস্তুত।

কৃষিবিদ অ্যাবের কমিটি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ

অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয় ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তিন মাসের কমিটি সাত বছরের সম্মেলনের আয়োজন করতে না পারায় প্রাণচাঞ্চল্য হারায় সংগঠনটি। গত ৪ মার্চ ওই কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে অ্যাবকে আরও শক্তিশালী করতে তরুণ, দক্ষ ও ত্যাগীদের সমন্বয়ে কমিটি করার দাবি তৃণমূলের।

জানা গেছে, অ্যাবের নতুন কমিটির শীর্ষ পদে আলোচনায় আছেন কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, মো. এমদাদুল হক দুলু, আকিকুল ইসলাম আকিক, এ কে এম আনিসুজ্জামান আনিছ, শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, শাহাদাত হোসেন চঞ্চল, খন্দকার আরিফ, শফিকুল ইসলাম শফিক, রফিকুল ইসলাম খান ডন, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মো. সোহরাব হোসেন সুজন, কৃষিবিদ শফিকুর রহমান নোবেলসহ কয়েকজন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া-জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় এই সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি একটি সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।

প্রায় দুই সপ্তাহের সফর শেষে গত সোমবার সকালে জামায়াতের আমির দেশে ফিরেছেন। তবে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এখনো দেশে ফেরেননি।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি স্বীকার করেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। আমরা একসঙ্গে অনেক দিন কাজ করেছি। উনি অসুস্থ। ওনার খোঁজখবর নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বহুদিন পর আমাদের দেখা হয়েছে। আমরা ওনার জন্য দোয়া করেছি, ওনার কাছে দোয়া চেয়েছি।’

তারেক রহমানের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, দুজন মানুষ একসঙ্গে হলে তো অনেক কথাই হয়। অনেক কথাই হয়েছে। তবে কি কথা হয়েছে তা বলেনি।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ৪ এপ্রিল ব্রাসেলস সফরে যান। এই সফরে তার সঙ্গে ছিলেন দলের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও আমিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান। আর লন্ডনে তারেক রহমানের বাসায় আছেন খালেদা জিয়া। তিনি সেখানে থেকে লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে একাধিক বৈঠক ও সাক্ষাৎ কর্মসূচি ছিল জামায়াত আমিরের। সফরকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাউথ এশিয়ান ককাসের এমপিদের সঙ্গে বৈঠক, ইইউর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সাউথ এশিয়া ডেস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয় জামায়াত প্রতিনিধিদলের। ব্রাসেলস থেকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের লন্ডনে যান।

এদিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। 

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বেগম জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাতে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি। দুই ডাক্তারের (শফিকুর রহমান ও সৈয়দ আবদুল্লাহ আবু তাহের) এই সাক্ষাৎ রাজনীতির রসায়নে নতুন কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, নাকি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েই থাকবে, তা বুঝতে হলে আমাদের চোখ রাখতে হবে সামনের দিকে।’

মারুফ কামাল খান আরও লিখেছেন, ‘বেগম জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিলেত যাওয়ার আগে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও সস্ত্রীক তার বাসায় গিয়ে দেখা করেছিলেন। সে সাক্ষাৎ নিয়েও বিশদ কিছু জানা যায়নি।’

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনের সংকট বাড়াবে: সিপিবি

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনের সংকট বাড়াবে: সিপিবি

গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনের সংকট বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তারা যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলেন। 

গ্রাহক পর্যায়ে সয়াবিন তেলের মূল্য লিটার প্রতি ১৪ টাকা এবং নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিট ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী আখ্যা দেন। তারা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে সিপিবি নেতার বলেন, গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি একদিকে জনজীবনের সংকট বাড়াবে, অপরদিকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রশ্রয় পাবে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প বিশেষ করে ক্ষুদ্র শিল্পে নতুন সংকট তৈরি করবে, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি জনগণের ঘাড়েই চাপানো হবে। এছাড়া ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ জনগণের খরচ বাড়াবে এবং সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে।

জয়ন্ত সাহা/এমএ/