ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

হালদায় মা-মাছের ডিম সংগ্রহকারীদের অপেক্ষা

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৯:২২ এএম
হালদায় মা-মাছের ডিম সংগ্রহকারীদের অপেক্ষা
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে মা-মাছের ডিম সংগ্রহে অপেক্ষা করছেন মৎস্যজীবীরা। খবরের কাগজ

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা-মাছের ডিম সংগ্রহে এখন অপেক্ষা করছেন ৬৫০ জন মৎস্যজীবী। এ ছাড়া সংগৃহীত ডিম থেকে পোনায় রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৮টি কুয়া। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সরকারি ৪টি হ্যাচারি। গতকাল সোমবার রাতেই ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত ৩ মে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে পাওয়া যায় অল্পসংখ্যক মা-মাছের নমুনা ডিম। এরপর থেকেই শুরু হয় অপেক্ষার পালা। যেকোনো সময় মা-মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন মৎস্যজীবীরা।

এদিকে সোমবার দিনভর চট্টগ্রামের ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রাম পতেঙ্গা কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঞ্চঙ্গ্যা খবরের কাগজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের জেলা-উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। হালদার উজানে কিছু কিছু খালে পাহাড়ি ঢল নেমেছে। নগরের বেশ কিছু এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।’

অন্যদিকে হালদা বিষেজ্ঞরা জানান, সোমবারের বৃষ্টি হচ্ছে হালদার মোক্ষম সময়। এ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত ছিল। এতেই মা-মাছরা ডিম ছাড়ে। তাই বিপুল পরিমাণ ডিম পাওয়ার আশা ডিম সংগ্রহকারীদের।

রাউজান উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ডিম সংগ্রহের জন্য ৩৫০টি নৌকা, ৪০০টি জাল ও ৬৫০ জন ডিম সংগ্রহকারী প্রস্তুত রয়েছেন। এ ছাড়া সরকারিভাবে পোনা তৈরিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অঙ্কুরীঘোনা মৎস্য বিভাগের হ্যাচারি। মৎস্যজীবীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৬৮টি মাটির কুয়া তৈরি করেছেন।

পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকার মৎস্যজীবীরা জানান, পূর্ণিমার সময় টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হালদায় কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ে। যেহেতু নমুনা ডিম ছেড়েছে, তাই মা-মাছ যেকোনো সময় ডিম ছাড়তে পারে।

হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক ময়েদুজ্জামান বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তরের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পোনা তৈরির জন্য ৪টি হ্যাচারি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নদীতে বালুবাহী যান্ত্রিক বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আশা করছি, গতবারের চেয়ে বেশি ডিম পাওয়া যাবে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, এপ্রিল-জুনে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতসহ পানির বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটার যেমন: পানির তাপমাত্রা, স্রোত, পানির স্তর, তড়িৎ পরিবাহিতা, টারবিডিটি, দ্রবীভূত অক্সিজেন, পিএইচ ইত্যাদির মিথস্ক্রিয়তায় হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ে।

গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মা-মাছের ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়া। তবে সোমবার রাতে ডিম ছাড়ার একটি যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। হালদার উজানে পাহাড়ি ঢল নেমেছে বলে জানতে পেরেছি। মা-মাছের ডিম ছাড়ার অধিক সম্ভাবনা রয়েছে রাতে। এ ছাড়া মঙ্গলবার দিনভরও ডিম পাওয়া যেতে পারে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এটা আমাদের ধারণা।’

এদিকে ডিম ছাড়ার মৌসুম ঘিরে হালদা নদীর দুই পাড়ে প্রতিবছরের মতো নৌকা ও ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে সংগ্রহকারীরা নিষিক্ত ডিম ধরার অপেক্ষায় আছেন।

বিশ্বের একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী হালদা, যেখান থেকে কার্প জাতীয় মাছের সরাসরি নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হাটহাজারী-রাউজান-ফটিকছড়ি উপজেলা সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া হালদার পোনা হ্যাচারি পোনার চেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল। ডিম সংগ্রহকারীরা হ্যাচারির কুয়া ও স্থানীয়ভাবে মাটির কুয়া তৈরি করে অপেক্ষায় থাকেন, মা-মাছ কখন ডিম ছাড়বে। নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে তা থেকে রেণু ফুটিয়ে বাজারজাতের মাধ্যমে টাকা আয় করেন আহরণকারীরা। রেণু বিক্রি ও মাছ চাষের মাধ্যমে পুরো বছর জীবিকা নির্বাহ করেন ডিম সংগ্রহকারীরা।

বেনজীরের বেনামি সম্পদ খুঁজছে এনবিআরের টাস্কফোর্স

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
বেনজীরের বেনামি সম্পদ খুঁজছে এনবিআরের টাস্কফোর্স
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বেনামি সম্পদের খোঁজে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেনজীরের চলতি এবং গত চার করবর্ষের আয়কর রিটার্নে দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ এবং আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় আছে কি না তা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তার স্ত্রী ও সন্তানদের আয়, ব্যয় ও সম্পদের প্রকৃত পরিমাণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেনজীরের অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। গণ্যমাধ্যমের এসব তথ্য আমলে এনে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি), ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স তদন্ত শুরু করেছে। 

সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর আহমেদের দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে গোপনে বৈধ-অবৈধ ব্যবসা আছে, এমন গোয়েন্দা তথ্য সামনে রেখে টাস্কফোর্স তদন্ত শুরু করেছে। এসব ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ কোথায় গচ্ছিত রাখা হয়েছে তারও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। 

তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে গিয়ে বেনজীর লেনদেন করেছেন কি না, বা করে থাকলে লেনদেনের পরিমাণ কত, তার প্রকৃত আয়, ব্যয় ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ, অর্থপাচার করা হয়েছে কি না, অর্থ পাচার করা হলে তা কোন দেশে, পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ এবং রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে নিজে আড়ালে থেকে অন্য কারও নামে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত ব্যবসা বেনজীর পরিচালনা করেছেন কি না তাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে প্রণোদনা নেওয়া এবং পাচারকৃত অর্থ দিয়ে বিদেশে সম্পদ কেনার বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে টাস্কফোর্স কমিটি। 

অর্থ পাচার রোধে গঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির নির্দেশে এনবিআর এসব পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডিও অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ অন্যান্য অপকর্ম সম্পর্কে খতিয়ে দেখছে। এনবিআর তদন্তের প্রয়োজনে সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহযোগিতা নেবে। বিভিন্ন সূত্রে এসব জানা যায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেনজীরের যেসব সম্পদের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে বা পাচ্ছে তা আমলে নিয়ে এনবিআর বেনজীরের কর ফাইলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছে। এ ছাড়া নিজেকে আড়ালে রেখে অনেকের সঙ্গে ব্যবসা করার তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। এসবের সত্যতা যাচাই করতে কাজ শুরু করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। এসব ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ কোথায় গচ্ছিত রাখা হয়েছে বা অর্থ পাচার করা হয়েছে কি না তাও তদন্ত করা হচ্ছে।’ 

সূত্র জানায়, এনবিআরের তদন্তে আলোচিত আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়ের সঙ্গে যৌথভাবে সোনা পাচারে বেনজীরের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও আগে আরাভের সঙ্গে বেনজীরের ব্যবসার বিষয়টি আলোচনায় আসে। সে সময়ে বেনজীর নিজের ফেসবুকে আরাভের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছিলেন।

সূত্র জানায়, এনবিআরের রিটার্ন ফাইলে নিজের, স্ত্রী ও সন্তানদের নামে ফ্ল্যাট, গাড়ি, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের উল্লেখ আছে। তিনজনের ফাইলে সোনা আছে বলেও দেখানো হয়েছে। কৃষি জমি এবং মাছের খামারে করে লাভ হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এখানে বেনজীরের নামে গ্রামে বাড়ি, আবাদি জমি আছে বলেও জানানো হয়েছে। ৩৩টি ব্যাংক হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে। 

এনবিআরের টাস্কফোর্স থেকে বেনজীরের ব্যাংক হিসাবের খোঁজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এনবিআর থেকে চিঠি পাঠানোর কথা আছে। এনবিআর থেকে পাঠানো চিঠি গতকাল প্রস্তুত করা হয়েছে। চিঠিতে বেনজীর আহমেদের একক বা যৌথ নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এফডিআর, যেকোনো মেয়াদি আমানতের হিসাব, যেকোনো ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড, ভল্ট, সঞ্চয় পত্র বা যেকোনো সেভিংস ইন্সট্রুমেন্ট হিসাব সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হবে। বর্তমানে বন্ধ আছে বা চলমান সব হিসাবের তথ্যই চাওয়া হবে। 

গবেষণায় তারুণ্যের অগ্রযাত্রা

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম
গবেষণায় তারুণ্যের অগ্রযাত্রা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বাংলাদেশে বেশিসংখ্যক গবেষকের বয়স ৩৪ বছরের মধ্যে। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এই তথ্য উঠে আসে। গবেষণা ও উন্নয়ন (আর অ্যান্ড ডি) জরিপ ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনটি এ মাসেই প্রকাশ করা হয় বিবিএসের ওয়েবসাইটে। প্রতিবেদনটিতে ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে লিঙ্গ ও বয়সের ভিত্তিতে গবেষকের সংখ্যা তুলে ধরা হয়। 

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, লিঙ্গ ও বয়সের ভিত্তিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনূর্ধ্ব ৩৪ বছর বয়সের গবেষকের সংখ্যা ছিল মোট ৮৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষের ৭৫৩১ জন। ওই বছর নারী গবেষকের সংখ্যা ছিল ১২০৫ জন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট গবেষকের সংখ্যা ছিল ৮৫৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৪৯৭, মহিলা ১০৭০ জন। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষকের সংখ্যা ছিল ৮৬১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৫১৮, নারী ১০৯৪ জন। 

বিপরীতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী গবেষকের সংখ্যা ছিল মোট ৪৫৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪১৪৩ জন। নারী ছিল ৪৫১ জন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট গবেষকের সংখ্যা ছিল ৪৪৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪০৫৪ জন, নারী ৪৩৩ জন। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষক ৪৮৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৩৮৭, নারী ৪৬৬ জন। 

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী গবেষকের সংখ্যা ছিল মোট ২৯৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৬৬২ জন, নারী ২৭৬ জন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৮৯৩ জনের মধ্যে পুরুষ ২৬২৪ ও নারী ২৬৯ জন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৩০৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৮১৯ ও নারী ২৭৩ জন। 

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী গবেষকের সংখ্যা ছিল ১৩৭০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২৪৮, নারী ১২২ জন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৪৮৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৪০৫৪, নারী ৪৩৩। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষক ১১৮৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১০৩ ও নারী ৮৫ জন। 

৬৫ বা তদূর্ধ্ব গবেষকদের সংখ্যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল মোট ৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৯ ও নারী ২ জন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫২ ও নারী ৬ জন। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষকের সংখ্যা ছিল ৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ গবেষকের সংখ্যা ৪৭, মহিলা গবেষকের সংখ্যা ছিল ৪ জন।

শতাংশের হিসেবে, লিঙ্গ ও বয়সের ভিত্তিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনূর্ধ্ব ৩৪ বছর বয়স গোষ্ঠীর মধ্যকার গবেষকের হার ছিল মোট ৪৯.৩৮ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষের হার ৪৮.১৮ শতাংশ, নারীর হার ৫৮.৫৮। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট গবেষকের অনুপাত ৪৯.৮২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৪৮.৯১ শতাংশ, নারী ৫৭.৪ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষকের অনুপাত ছিল ৪৮.০২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৪৬.৭৭ শতাংশ, নারী ৫৬.০৭ শতাংশ। 

বিপরীতে, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী গবেষক যথাক্রমে ২৫.৯৭ শতাংশ, ২৬.১০ শতাংশ এবং ২৬.৯২ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পুরুষের অনুপাত ২৬.৫০ শতাংশ, নারী ২১.৯৩ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে পুরুষ ২৬.৪৪ শতাংশ, নারী ২৩.২৩ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে পুরুষ ২৭.২৯ শতাংশ, নারী ২৩.৮৯ শতাংশ। 

৪৫ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে গবেষকের অনুপাত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল মোট ১৬.৬১ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ১৭.০৩ শতাংশ, নারী ১৩.৪২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গবেষকের অনুপাত ১৬.৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ১৭.১২ শতাংশ, নারী ১৪.৪৩ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষকের অনুপাত ছিল ১৭.১৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ১৭.৫৪, নারী ১৩.৯৯ শতাংশ। 

৫৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে গবেষকের অনুপাত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল মোট ৭.৭৪ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ গবেষকের অনুপাত ৭.৯৮ শতাংশ, নারী ৫.৯৩ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গবেষকের অনুপাত ৬.৯১ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭.২০ শতাংশ, নারী ৪.৫৬ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে গবেষক ছিল ৭.৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮.১১ শতাংশ, নারী ৫.৭৯ শতাংশ। 

৬৫ বা তদূর্ধ্ব গবেষকদের সংখ্যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ০.২৯ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ০.৩১ শতাংশ, নারী ০.১০ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট গবেষকের অনুপাত ৬.৯১ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৪.৫৬ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট গবেষকের অনুপাত ছিল ০.২৮ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ০.২৯ শতাংশ, নারী ০.২১ শতাংশ। 

উল্লিখিত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী গোষ্ঠী গবেষণায় সর্বোচ্চ কেন্দ্রীভূতকরণ প্রদর্শন করে। অপরদিকে, ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী গোষ্ঠী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কেন্দ্রীভূতকরণ প্রদর্শন করে।

ফরেনসিক টেস্টের ফলাফলের ওপর নজর গোয়েন্দাদের

ফরেনসিক টেস্টের ফলাফলের ওপর নজর গোয়েন্দাদের
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ও নেপালে পালিয়ে থাকা আরেক অভিযুক্ত সিয়ামকে হাতে আনার জন্য যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে কলকাতা ও ঢাকার পুলিশ। ঢাকা পুলিশের অনুরোধে দুটি দেশে যোগাযোগ করেছে ভারতের প্রশাসন। আত্মগোপনে থাকা দুই সন্দেহভাজনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর আরজি জানানো হয়েছে বলে জানায় কলকাতা সিআইডি সূত্র। ভারতের সঙ্গে দুটি দেশেরই বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকায় দ্রুত অভিযুক্তদের হাতে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। এর পাশাপাশি নেপালেও তদন্তের তোড়জোড় করছে সিআইডি।

এদিকে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিবা আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা মাংসের টুকরোগুলোর ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত পাঠাতে ভারতীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন ঢাকা থেকে আসা গোয়েন্দারা। কলকাতা ও ঢাকার গোয়েন্দাদের ধারণা, এসব মাংসের টুকরো এমপি আনারের। 

এদিকে ডিএনএ পরীক্ষা দ্রুত করার জন্য এমপি আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের কলকাতায় আসার কথা। তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলকাতায় আসার অনুরোধ করেছিলেন স্বয়ং ডিবিপ্রধান। কলকাতায় তিনি বলেছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় আসবেন এমপিকন্যা। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশ মিশন সূত্রে জানা যায়নি তিনি কবে কলকাতায় আসছেন। তবে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারই ভিসা হাতে পেয়েছেন তিনি।

সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, কলকাতায় গ্রেপ্তার করা জিহাদ হাওলাদারকে সঙ্গে নিয়ে ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি ব্রিজের কাছে বাগজোলা খালে দিনের পর দিন তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এমনকি ডিবি কর্মকর্তারাও এসে দেখলেন। এই এলাকায় এখনো পর্যন্ত কিছুই পাওয়া যায়নি। হয় জিহাদ স্পষ্ট ও নির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না, আর না হয় শুধু শুধু সময় নষ্ট করছেন। আরও কয়েক দিন দেরি হলে নিউ টাউনের আবাসনের সেপটিক ট্যাংকে উদ্ধার হওয়া প্রায় চার কিলো ওজনের মাংসখণ্ড নাও মিলতে পারত। ফলে এই মুহূর্তে নেপালে পালিয়ে যাওয়া সিয়ামকে হাতে পাওয়া খুব জরুরি। তাকে নিয়ে নতুন করে তল্লাশি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই নেপালে তদন্তে জোর দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবারই ঢাকায় ফিরে গেছে ঢাকার গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্তকারী দলটি। বিমানে ওঠার আগে ঢাকার গোয়েন্দাপ্রধান পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির তদন্ত প্রক্রিয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, কলকাতায় তদন্ত করে অনেক দূর এগোনো সম্ভব হয়েছে। ঢাকায় ধৃতদের জেরা করে যে তথ্য মিলেছিল, তা কলকাতায় সিআইডি অফিসার এবং কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা যাচাই করে দেখেছেন। তারা দুই দেশের আসামিদের দেওয়া তথ্যে মিল পেয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘চার কিলোর মতো মাংসখণ্ড উদ্ধার হয়েছে। আমাদের আশা, খুব শিগগির বাকি অংশও খুঁজে পাওয়া যাবে। সিআইডি প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেহাবশেষ তল্লাশি চালিয়ে যাছে।’ 

এদিকে গতকাল কলকাতা থেকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় হারুন বলেন, ‘আমরা কলকাতার পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম স্যুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংক ভেঙে দেখার জন্য। আমরা মনে করি সেখান থেকে যে মাংসখণ্ড উদ্ধার করা হয়েছে তা হয়তো এমপি আনারেরই হবে। তবে ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এমপি আনার হত্যার অন্যতম আসামি সিয়াম নেপালে আত্মগোপন করেছেন জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তাকে ধরতে ভারত সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

ডিবিপ্রধান বলেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে গত ১৩ মে কলকাতার মাটিতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতায়ও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল ঘাতক হলেন আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া।

তিবি বলেন, ‘হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে বাংলাদেশে আর কার্যকর হয়েছে কলকাতায়। মামলার তদন্তের জন্য আমরা কলকাতায় গিয়েছি। গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে এবং ঘটনাস্থলের ডিজিটাল এভিডেন্সগুলো দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘মামলায় ভুক্তভোগীর মরদেহ বা মরদেহের অংশবিশেষ না পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার সুরতহাল, ভিসেরা ও মেডিকেল রিপোর্ট দিতে বেগ পেতে হয়। এগুলো না পাওয়া গেলে মামলাটি নিষ্পত্তি করাও অনেক কঠিন হয়ে যায়। আমরা সেখানে গিয়ে আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের তথ্য ক্রসচেক করেছি। এ ছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার আসামির তথ্য যাচাই-বাছাই করেছি। কলকাতা সিআইডিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মেলানোর চেষ্টা করেছি।’

এদিকে শিগগিরই ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এই প্রতিবেদন হাতে পেলে গোয়েন্দারা তদন্তের দ্বিতীয় ধাপ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মাংসের নমুনা পাঠাবেন। আর এর জন্য যেকোনো সময় কলকাতা পৌঁছাচ্ছেন এমপিকন্যা।

গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, উদ্ধার হওয়া ওই মাংস, চুল ও হাড় খুন হওয়া এমপি আনারের। তবে সেটি চূড়ান্তভাবে বলা যাবে ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার পর।

এর আগে গত রবিবার আনার হত্যা মামলার তদন্ত করতে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশপ্রধানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল কলকাতায় যায়। মামলাটির তদন্তকারী সিআইডি, নিউ টাউন থানার পুলিশ এবং ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে গত চার দিন কাজ করেছেন ঢাকার গোয়েন্দারা।

গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৩ মে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর ১৮ মে বরানগর থানায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন। ২২ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকার ডিবি পুলিশ সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে এমপি আনার খুন হয়েছেন।

বেনজীরের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
বেনজীরের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। মামলা হয়নি কোনো। মামলা না হলেও বিদেশে যেতে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন তিনি। অনুসন্ধান চলমান থাকা অবস্থায় এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই বেনজীর আহমেদ তার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের পর নিষেধাজ্ঞা জারির উদ্যোগ নিতে পারেন দুদক কর্মকর্তারা। 

এদিকে বেনজীর আহমেদের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। বেনজীর আহমেদ বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠিয়ে নেওয়ার খবরে দুদক কর্মকর্তারা তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি দেশে নাকি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিদেশ গেছেন, তা নিয়ে একাধিক মহলে চলছে নানা রকম আলোচনা। তবে কেউই নিশ্চিত করতে পারেননি বেনজীর আহমেদের অবস্থান। ফলে বেনজীর আহমেদ দেশে নাকি বিদেশ আছেন, তাও জানার চেষ্টা করছেন দুদক কর্মকর্তারা। তিনি বিদেশ গেলেও দুদকের হাতে উপযুক্ত তথ্য না থাকলে আইন অনুযায়ী তার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারবেন দুদক কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের একাধিক কর্মকর্তা ও আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

এ ব্যাপারে দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর খবরের কাগজকে বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি অনুসন্ধান-তদন্তে অসহযোগিতা করলে বা বাধার সৃষ্টি করলে তার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারেন দুদক কর্মকর্তারা। একইভাবে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান পর্যায়ে অথবা আদালতের নির্দেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) থাকা অবস্থায় টাকা উঠিয়ে নিলে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। একই কারণে ইতোমধ্যে পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তবে এ ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আদালতে আবেদন করতে হবে। আদালত সন্তুষ্ট হলে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়ে থাকেন।’

আদালতের ফ্রিজ আদেশের কপি ব্যাংকে যাওয়ার আগেই বেনজীর আহমেদ তার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে সমুদয় টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে, এ ক্ষেত্রে কী হতে পারে? এমন প্রশ্নের উত্তরে অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আদালতের আদেশ জারির আগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশের খবরটি জাতীয়ভাবে প্রকাশ হয়েছে। এখন দেখতে হবে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখন এবং কোন পরিস্থিতিতে টাকা ছাড় করেছে। সর্বোপরি দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রয়োজন, তাহলে তিনি এ বিষয়ে আদালতে আবেদন করবেন।’ 

এদিকে দুদকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট আছে। নতুন কোনো অনুসন্ধান শুরু করার আগে গোপনে খোঁজখবর নিয়ে থাকে এই ইউনিট। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর আগে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট একই কাজ করেছে। তবে ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট গোয়েন্দাসহ দেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। সংস্থাগুলোর উচ্চপর্যায়ে দুদকের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। ফলে অনুসন্ধানাধীন কোনো ব্যক্তির বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কার ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। তবে বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। ৬ জুন দুদকে তার হাজিরা নির্ধারিত আছে। তিনি দুদকের ডাকে সাড়া না দিলে, জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি না হলে অথবা দুদকের অনুসন্ধানে অসহযোগিতা করলে তার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে।

ইতোমধ্যে বেনজীর আহমেদ বিদেশ গেছেন- এমন খবর প্রসঙ্গে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, তার অবস্থান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস করতে হবে তিনি আছেন এবং দুদকের অনুসন্ধানে সহযোগিতা করবেন। যদি তার অবস্থান না জানা যায় এবং দুদকের ডাকে সাড়া না দেন, তখন ধরে নিতে হবে তিনি অসহযোগিতা করছেন। সে ক্ষেত্রে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞাসহ পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।  

 

রেল যোগাযোগে প্রবেশের দ্বারে দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:৫৮ এএম
রেল যোগাযোগে প্রবেশের দ্বারে দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা
মোংলা রেলওয়ে স্টেশন। ছবি : খবরের কাগজ

আগামীকাল শনিবার (১ জুন) বেনাপোল থেকে মোংলার উদ্দেশে প্রথম ছেড়ে যাবে ‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন। এটি খুলনা হয়ে যাবে মোংলায়। এর মধ্য দিয়ে দেশে ট্রেন চলাচল প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা। এর আগে গত ৩০ অক্টোবর খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। ‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন চলাচলের জন্য ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোলের স্টেশন মাস্টার মো. সাইদুজ্জামান। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ রেলপথ তৈরিতে ব্যয় হয়েছে সোয়া ৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করেন। কিন্তু স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ নানা জটিলতায় যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা যায়নি।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ট্রেন চলাচলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত কম খরচে মালামাল নিতে পারবেন। গতিশীল হবে মোংলার সঙ্গে যাতায়াত সুবিধা। দেশের বৃহত্তম দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালের ডিসেম্বরে। বাগেরহাট জেলার পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে বন্দরের অবস্থান। 

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল জানিয়েছেন, আগামী ১ জুন সকাল সোয়া ৯টায় বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে মোংলার উদ্দেশে। ট্রেনটি পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে বেলা ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে ট্রেন চলাচল করবে। এ রুটের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। 

তিনি আরও জানান, বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর যশোরের নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, খুলনার বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, বাগেরহাটের কাটাখালী, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে মোংলায় পৌঁছাবে।

খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান জানান, খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেললাইন ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী রয়েছে। আটটি স্টেশনে আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালকুদার জানান, খুলনা-মোংলা রুটের জন্য এখনো জনবল নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। রেলওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে জনবল এনে আপাতত ন্যূনতম জনবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। ২০২১ সালে আবারও সময় ও ব্যয় দুটিই বাড়ানো হয়। তখন দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধরা হয়।