![জরিমানার কবলে সালাম মুর্শেদী](uploads/2024/05/23/1702918812.Salam_Murshedi-1716485984.jpg)
দুর্নীতি এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এবার ফিফার শাস্তির কবলে পড়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক ফুটবলার সালাম মুর্শেদী দীর্ঘদিন ধরে বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি সংস্থার ফিন্যান্স কমিটিরও প্রধান। আর্থিক অসঙ্গতি ও ফিফার কমপ্ল্যায়ন্স সঠিকভাবে পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ আর্থিক জরিমানা করেছে ফিফার নৈতিকতা কমিটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৩ লাখ টাকা।
গত বছর বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা- ফিফা। এ নিয়ে তোলপাড়ও কম হয়নি। বছর না ঘুরতেই তার সে শাস্তির মেয়াদ ফিফা আরও এক বছর বাড়িয়ে ৩ বছর করেছে। একই অভিযোগে ফিফার শাস্তির আওতায় এসেছেন এই দুজন ছাড়াও আরও দুজন। তারা হলেন বাফুফের সাবেক প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন ও অপারেশন্স ম্যানেজার মিজানুর রহমান।
সোহাগের ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ফিফা। গতকাল বৃহস্পতিবার ফিফার দেওয়া বিবৃতিতে সেই মেয়াদ আরও ১ বছর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ তিন বছর নিষিদ্ধ থাকবেন সোহাগ। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাফুফের সাবেক প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন ও অপারেশন্স ম্যানেজার মিজানুর রহমানকে সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি সালাম মুর্শেদীর মতো এই দুজনকেও ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১৩ লাখ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। আর সতর্ক করা হয়েছে বাফুফের প্রকিউরমেন্ট ম্যানেজার ইমরুল হাসান শরীফকে।
ফিফার প্রদত্ত অর্থে বাফুফের ক্রয় ও পরিশোধের প্রক্রিয়াগুলোতে মিথ্যা তথ্য, ত্রুটিপূর্ণ ক্রয়াদেশ এবং ভুয়া দলিল দস্তাবেজ পরিবেশনের দায়ে এই কর্মকর্তারা শাস্তি পেলেন। গত বছর ফিফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরই বাফুফের চাকরি হারান সাধারণ সম্পাদক সোহাগ। চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আবু হোসেন ও মিজানুর রহমানকেও। দুর্নীতির ঘটনা তদন্তে গত বছর বাফুফের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটিও এই তিনজনের দায় খুঁজে পেয়েছিল।
আবু নাঈম সোহাগ তার গত বছর পাওয়া শাস্তির ব্যাপারে ফিফায় আপিল করেন। কিন্তু এবার উল্টো তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বেড়েছে। সঙ্গে তার আর্থিক জরিমানার পরিমাণও বেড়েছে। প্রথম শাস্তির ঘোষণায় তার জরিমানার অঙ্ক ছিল ১০ হাজার সুইস ফ্র্যাঁ। এখন যেটার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার সুইস ফ্রাঁ। এদিকে তাকে আবার আজীবনের জন্য ফুটবল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে বাফুফে।
২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে ফিফার দেওয়া তহবিলের অর্থ খরচে জালিয়াতি ধরার পড়ায় তদন্ত চালিয়ে আসছিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটি। ফিফা বাফুফেতে নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে আর্থিক জালিয়াতির তদন্ত করেছিল। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক থাকা কালে সোহাগসহ অভিযুক্তরা ফিফার সদর দপ্তরে গিয়ে শুনানিতেও অংশ নিয়েছিলেন। গত বছর ফিফা সালাম মুর্শেদীর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এবার নতুন করেই তার নাম যোগ হয়েছে। ফিফা তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ভিন্ন ভিন্ন শুনানি এবং সবকিছু সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লেষণ করে এথিকস কমিটি সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে।