
প্রযুক্তির এই যুগে সাইবার হুমকি দিন দিন বাড়ছে। ভাইরাস, ম্যালওয়্যার বা ফিশিং আক্রমণে ব্যক্তিগত তথ্য, অর্থ ও ডিভাইস মারাত্মকভাবে ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে সচেতনতা ও নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যানের মাধ্যমে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
কেন ভাইরাস স্ক্যান জরুরি?
বিশ্বখ্যাত সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি জানিয়েছে, নিরাপদ সফটওয়্যার ব্যবহার করে নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করলে ডিভাইস নিরাপদ রাখা যায়। এটি শুধু সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত রাখে না, বরং ডিভাইসের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন অ্যান্টিভাইরাসের কাজের ধরন ভিন্ন হতে পারে। তবে ভাইরাস স্ক্যানার সাধারণত পরিচিত ম্যালওয়্যার ও তাদের সংশ্লিষ্ট কোড শনাক্ত করে। এমনকি কিছু উন্নত অ্যান্টিভাইরাস সন্দেহজনক আচরণও চিহ্নিত করতে সক্ষম। ক্ষতিকর প্রোগ্রাম শনাক্ত হলে সফটওয়্যারটি ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে।
ভাইরাসের সাধারণ লক্ষণ কী?
ভাইরাসে আক্রান্ত ডিভাইসে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে ডিভাইসের গতি ধীর হয়ে যাওয়া, ফাইল হারিয়ে যাওয়া বা স্টোরেজ ঘাটতি, আপনার অজান্তে ই-মেইল বা বার্তা পাঠানো, ব্রাউজারের হোমপেজ বা সেটিংস পরিবর্তন, অপ্রত্যাশিত পপ-আপ উইন্ডো দেখা, অ্যাপ ক্র্যাশ বা ঘন ঘন ত্রুটি দেখা দেওয়া। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ভাইরাস স্ক্যান করা উচিত।
বিনামূল্যের ভাইরাস স্ক্যানার কি নিরাপদ?
অনেক বিনামূল্যের ভাইরাস স্ক্যানার ওয়েবসাইট বা অ্যাপ আকারে পাওয়া যায়। তবে সব টুল নিরাপদ নয়। অনেক ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধীরা ভুয়া স্ক্যানার তৈরি করে, যা আসলে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দেয়। তাই স্ক্যানার ব্যবহারে সতর্ক থাকা জরুরি। বিনামূল্যে স্ক্যানিং টুল ব্যবহার করলে সুপরিচিত কোনো সাইবার নিরাপত্তা ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করাই ভালো। অ্যাপ স্টোর বা ব্রাউজারে ভালো রিভিউ, স্পষ্ট প্রাইভেসি পলিসি ও ‘এইচটিটিপিএস’ দিয়ে শুরু হওয়া ওয়েবসাইট বেছে নিন। ট্রায়াল সংস্করণ ব্যবহার করাও এক ভালো উপায়। এতে কিছুটা প্রিমিয়াম সুবিধা পাওয়া যায়।
একাধিক ডিভাইস সুরক্ষায় সমন্বিত সমাধান
কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটসহ সবকিছু আলাদাভাবে সুরক্ষিত রাখা ঝামেলার হতে পারে। এই সমস্যার সমাধান দিতে কিছু নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্লাউডভিত্তিক সমন্বিত সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে। এতে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সব ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষিত রাখা যায়।
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নির্বাচন
ভাইরাস স্ক্যানের বাইরে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নির্বাচন করার সময় কিছু ফিচার বিবেচনা করা যেতে পারে। এগুলো হলো- রিয়েলটাইম প্রোটেকশন, ডিভাইসের পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব, ফায়ারওয়াল, ভিপিএন, আইডেন্টিটি প্রোটেকশন ও সহজ ইন্টারফেস।
স্ক্যান প্রক্রিয়া
ভাইরাস পরীক্ষা করার প্রক্রিয়াটি ডিভাইসের ধরন এবং এর অপারেটিং সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ভাইরাস স্ক্যানার সিস্টেমের ফাইল ও অ্যাপগুলো পরীক্ষা করার জন্য একটি ‘স্ক্যান’ বাটন প্রদর্শন করে। ‘স্ক্যান’ বাটনে ক্লিক করে ভাইরাস পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। স্ক্যান শেষে টুলটি একটি ফলাফল দেখাবে। প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সফটওয়্যারটির নির্দেশনা অনুসরণ করা। এরপর স্ক্যানারের দেওয়া তথ্য দেখে সন্দেহজনক ফাইলটি ডিলিট করে দিতে পারেন। এরপর আরেকবার স্ক্যান করুন, যেন কোনো ধরনের ভাইরাস আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।