ঢাকা ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

দূরদেশে রবীন্দ্র স্মৃতি

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১০ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১২ পিএম
দূরদেশে রবীন্দ্র স্মৃতি

রবীন্দ্রনাথ ছড়িয়ে আছেন বিশ্বজুড়ে। সারা বাংলা তো বটেই, বিশ্বের অনেক জায়গাতেই সযত্নে সংরক্ষণ করা আছে রবীন্দ্রস্মৃতি। তেমনই একটি জায়গা মধ্য ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরি।

সাড়ে ৩৫০ বছর আগে হাঙ্গেরির বালাতন হ্রদের একপাশে মাটি ফুঁড়ে অলৌকিক জল বেরোনো শুরু হলো। সেই দৈবজলের কথা খুব দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পড়ল- সেই জল গায়ে মাখলে বা পান করলে অসুখ সেরে যায়। জায়গাটিতে দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ এসে ভিড় করতে লাগল। ডাক্তাররাও যখন বললেন সেই পানিতে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ আছে, যা হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য এবং রক্ত চলাচলের জন্য উপকারী, তখন তার গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে গেল। 

একপর্যায়ে সেখানে গড়ে ওঠে হাঙ্গেরির সবচেয়ে বিখ্যাত হৃদরোগ হাসপাতাল ‘স্টেট হার্ট হসপিটাল’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সেই হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন, হাওয়া বদলের জন্য আসেন সেই এলাকায়। ১৯২৬ সালে এক কবিতা উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য রবি ঠাকুর বুদাপেস্টে এসেছিলেন এবং তখন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে দুই-তিন সপ্তাহের জন্য এই হাসপাতালটিতে রাখা হয়েছিল। তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ড. স্মিডের অধীনে। এখন পর্যন্ত তিনিই হাসপাতালটির সবচেয়ে খ্যাতনামা রোগী। হাসপাতাল এবং বালাতন হ্রদের জনপদজুড়ে তাই আজও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে রবীন্দ্রনাথের অনেক স্মৃতি। 

রবীন্দ্রনাথ এই জনপদ দেখে মুগ্ধ হয়ে হাঙ্গেরির শিল্পী এলিজাবেথ ব্রুলারকে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘আমি পৃথিবীর প্রায় সব দেশই দেখেছি, কিন্তু বালাতন ফুরেডের এই বেলাভূমি, আকাশ ও জলের এমন অপূর্ব ঐকতান উপভোগের সৌভাগ্য আমার অন্তরাত্মাকে উন্মীলিত-উদ্ভাসিত করে তুলেছে।’

বালাতন হ্রদের সঙ্গেই সবুজ গাছপালাসমৃদ্ধ সুন্দর একটি রাস্তা। সেটিকে হাঙ্গেরির সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা মনে করে থাকেন অনেকে। রাস্তাটির নাম ‘ঠাকুর রোড’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতালটিতে থাকাকালীন সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে রোজ সকালে হাঁটতেন আর সেই স্মৃতি রক্ষার্থেই রাস্তাটির নামকরণ করা হয় ঠাকুর রোড।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে সেখানে হোটেলও আছে। তার নামসংবলিত দিকনির্দেশকাও রয়েছে। হাসপাতাল ভবনটি প্রকৃতিবেষ্টিত। লিফটের পাশে এক ফলকে হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় লেখা- ‘১৯২৬ সালের নভেম্বরে নোবেলজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই হাসপাতালে অবস্থান করেছিলেন।’ রবি ঠাকুর হাসপাতালটির ২২০ নং কক্ষে ছিলেন। কক্ষটির বারান্দায় দাঁড়ালেই বালাতন হ্রদ দেখা যায়। ১৯২৬ সালে কক্ষটি যেভাবে সাজানো ছিল, আজও সেভাবেই সাজানো আছে। ২২০ নং কক্ষের সামনে রবি ঠাকুরের নামফলক দেওয়া আছে। তার সঙ্গে লাগোয়া এক কক্ষে হাসপাতালে থাকাকালে রবি ঠাকুরের ব্যবহৃত সব আসবাবপত্র রয়েছে। এ ছাড়াও আছে তার লেখা চিঠি, ছবি, কবিতা ইত্যাদি। এমনকি রামকিঙ্কর বেইজের একটি আবক্ষ ভাস্কর্যও আছে। এটি খুব আশ্চর্যজনক ব্যাপার যে, দূরদেশের এক কবির জন্য তারা হাসপাতালটির একটি কক্ষ প্রায় ১০০ বছর ধরে জাদুঘর করে রেখেছেন!

এখানে কাছেই একটি শতবর্ষী লাইম গাছ আছে, যা রবি ঠাকুর নিজে লাগিয়েছিলেন। গাছটির সামনে রবি ঠাকুরের একটি আবক্ষ ভাস্কর্যও রয়েছে, যা রামকিঙ্কর বেইজের দ্বারা তৈরি। ১৯৮৩ সালে মূর্তিটি এখানে স্থাপন করা হয়। মূর্তিটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেন যুগ যুগ ধরে মুগ্ধ চোখে বালাতন হ্রদের দিকে তাকিয়ে আছে। সেখানে একটি সাদা মর্মর ফলকে লেখা ‘তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ, তাই তব জীবনের রথ/পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার বারংবার’। ইংরেজি আর হাঙ্গেরীয় ভাষায় লেখা, ‘When I am no longer on this earth, my tree/Leth the ever-renewed leaves of thy spring’। নিচে তারিখও দেওয়া ৮ নভেম্বর ১৯২৬।

এত দূরের দেশে বাংলার একজন কবির এমন সম্মান প্রদর্শনপূর্বক স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখার প্রচেষ্টা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না আসলে।

 

তারেক

মধুগাছ স্টেভিয়া

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ এএম
মধুগাছ স্টেভিয়া
ছবি: সংগৃহীত

আমরা জানি- চিনি মিষ্টি। কিন্তু যদি বলি, চিনির চেয়েও মিষ্টি লুকিয়ে আছে উদ্ভিদের পাতায়; তাহলে হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। তবে বাস্তবতা কিন্তু তা-ই বলছে। উদ্ভিদটির নাম স্টেভিয়া। মিষ্টি গুল্মজাতীয় এ ভেষজ উদ্ভিদটির উৎপত্তিস্থল প্যারাগুয়ে।

এ উদ্ভিদটি শত শত বছর ধরে প্যারাগুয়ের পাহাড়ি অঞ্চল রিওমন্ডে চাষাবাদ হতো। ১৮৮৭ সালে সুইজারল্যান্ডের উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. এমএস বার্টনি স্টেভিয়াকে প্রথম বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেন।

স্টেভিয়া ট্রপিক্যাল বা সাবট্রপিক্যাল ও কষ্টসহিষ্ণু বহুবর্ষজীবী গুল্মজাতীয় গাঢ় সবুজ ঔষধি উদ্ভিদ। ফুল সাদা, নলাকৃতি ও উভয় লিঙ্গ। গাছ সুগন্ধ ছড়ায় না, কিন্তু পাতা মিষ্টি।
স্টেভিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Stevia rebaudiana এবং এটি Compositae পরিবারভুক্ত গাছ। গাছটি বহুবর্ষজীবী এবং ৬০ থেকে ৭৫ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতার আকার বর্ষাকৃতি, ফুল সাদা এবং বীজ ক্ষুদ্রাকৃতি।

উদ্ভিদটির পাতা চিনির চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি। ভেষজ ঔষধি হিসেবে ডায়াবেটিস রোগী ও সুস্থ মানুষ নির্ভয়ে এটি খেতে পারবে। এর মধ্যে কোনো কার্বোহাইড্রেট কিংবা ক্যালরি নেই। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য চিনির সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক বিকল্প। এ ছাড়া এর মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বিনষ্টকারী প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান।

স্টেভিয়ার সবুজ ও শুকনো পাতা সরাসরি চিবিয়ে কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে বোতলে সংরক্ষণ করা যায়।
পাতার গুঁড়া দিয়ে মিষ্টান্ন তৈরি করে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত এ ঔষধি গাছের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। জাপানে কোমল পানীয় কোকা-কোলাতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কনফেকশনারি, ক্যান্ডিসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্যে চিনির বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। চা ও কফিতে স্টেভিয়ার ব্যবহার বিশ্বব্যাপী।

প্যারাগুয়ের গুরানি ইন্ডিয়ান নামক উপজাতীয়রা বিস্ময়কর এই ভেষজ উদ্ভিদটিকে বলে- কা-হি-হি অর্থাৎ মধুগাছ। আফ্রিকায় এটি মধু পাতা বা চিনি পাতা নামে পরিচিত। এ ছাড়া থাইল্যান্ডে মিষ্টি ঘাস, জাপানে আমাহা সুটেবিয়া ও ভারতে মধু পারানি নামে স্টেভিয়াকে অভিহিত করা হয়।

পৃথিবীতে স্টেভিয়ার ২৪০টির মতো প্রজাতি ও ৯০টির মতো জাত আছে। ১৯৬৪ সালে প্যারাগুয়েতে প্রথম স্টেভিয়ার বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়। জাপানে চাষাবাদ শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। তখন থেকে বিভিন্ন দেশে বিশেষত ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পেরু, চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ইসরায়েল, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ প্রভৃতি দেশে এটি ফসল হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়।

বাসাবাড়িতে টবে বা পটে সহজেই স্টেভিয়ার চাষ করা যায়। তবে টব রৌদ্রযুক্ত বারান্দায় বা ছাদে রাখতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্র্যাক নার্সারিসহ বড় বড় বেশ কয়েকটি নার্সারিতে স্টেভিয়ার চারা পাওয়া যাচ্ছে। এ উদ্ভিদের চারা রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিন পর পাতা সংগ্রহ করা যায়।

 

তারেক

 

সমুদ্রের তলদেশেও আছে গরু!

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০ এএম
সমুদ্রের তলদেশেও আছে গরু!
ছবি: সংগৃহীত

বলা হয় পৃথিবীর ৭০ শতাংশ অংশ জুড়েই রয়েছে পানি। আর এই পানির নিচেই আছে লাখ লাখ জানা-অজানা প্রাণী। নানা রকমের জলজ প্রাণীর বিচরণ সমুদ্রজুড়ে। বিশাল এই সমুদ্রের তলদেশেও আছে গরু। তবে এই গরু আমাদের চেনা গৃহপালিত গরু নয়। সামুদ্রিক গরু। এর নাম মানাটি। তবে একে মৎস্যকন্যা, সামুদ্রিক দৈত্যও বলা হয়।

মানাটি এক ধরনের সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী তৃণভোজী প্রাণী। যার বৈজ্ঞানিক নাম Trichechus। মানাটি নামের ব্যুৎপত্তি অস্পষ্ট, লাটিন মানুষ ‘হাত’ এবং প্রাক-কলম্বিয়ান তাইনো মানাটি ‘স্তন’-এর সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয়েছে মানাটি। এদের গড় আয়ু ৪০ বছর। শরীরের আকার ৮ থেকে ১৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। ৪৪০ থেকে ১,৩০০ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন হয় একটি মানাটির। গায়ের রং ধূসর বাদামি। তবে একেক অঞ্চলের মানাটি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

সামুদ্রিক গরুখ্যাত এই প্রাণী অত্যন্ত নিরীহ। মানাটিকে বলা হয় নিরীহ দৈত্য। আবার তৃণভোজী বলে সামুদ্রিক গরুও বলা হয়। কিন্তু এর গায়ে গরুর মতো শিং নেই। এরা কিছুটা অলস বলেও গরুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। মানাটিরা তৃণভোজী এবং ৬০টিরও বেশি ভিন্ন স্বাদের এবং লবণাক্ত জলের উদ্ভিদ খায়। ক্যারিবিয়ান সাগর, মেক্সিকো উপসাগর, অ্যামাজন অববাহিকা এবং পশ্চিম আফ্রিকার অগভীর, জলাবদ্ধ উপকূলীয় অঞ্চল এবং নদীতে মানাটিস বাস করে। গভীর সমুদ্র এবং উপকূলে এরা সাঁতরায়। মানাটি সাধারণত ঘণ্টায় ৫ মাইল বেগে চলতে পারে। মানাটিগুলোকে সাধারণত একা, জোড়ায় বা দেড় ডজন বা তার কম প্রাণীর ছোট দলে দেখা যায়। জলের পৃষ্ঠের ওপর থেকে, প্রাণীর নাক এবং নাকের ছিদ্র প্রায়শই একমাত্র জিনিস দৃশ্যমান হয়। মানাটি পানির ওপরে আসে না। এরা স্বল্পমাত্রার শব্দ করে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। এরা কাউকে আক্রমণ করে না। এরা মানুষ দেখলেই এগিয়ে আসে। বেশির ভাগ সময় ভোরবেলা মানাটি সাঁতার কাটে।

মানাটিরা পানিতে জন্মায়। অন্য স্তন্যপায়ীদের মতো জন্ম নেয়। জন্মের পর মানাটি বাছুর এক ঘণ্টা পর সাঁতার কাটতে পারে। বাছুর তার মায়ের দুধ পান করে। বড় হলে মানাটিরা সামুদ্রিক ঘাস, আগাছা, শেওলা ইত্যাদি খায়। একটি প্রাপ্তবয়স্ক মানাটি একদিনে তার ওজনের প্রায় এক দশমাংশ খাবার খেতে পারে।

মানাটি সমুদ্রে বেশ নিরীহভাবে বসবাস করে। এদের কাজ সমুদ্রে চলাচল করা এবং খাবার খোঁজা। তবে বেশ কয়েক কিলোমিটার চলার পর পানির ওপরে মাথা তুলে বাতাসে শ্বাস নেয়। এদের সঙ্গে স্থলের হাতির মিল আছে শরীরের দিক থেকে। বিজ্ঞানীদের মতে, জেনেটিক্যালিও মিল আছে মানাটি এবং হাতির। তবে মানাটি হারিয়ে যেতে বসেছে প্রায়। তাদের চামড়া, তেল এবং হাড় নিতে শিকারিরা প্রায়ই এই প্রাণী শিকার করে। যার ফলে সমুদ্রে এই নিরীহ প্রাণীর বিচরণ কমে যাচ্ছে। আবার সমুদ্রে প্রায় স্পিডবোটের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানাটির শরীর। স্পিডবোট আসলে মানাটি দ্রুত সরে যেতে পারে না। তাই তাদের শরীর বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

দিন দিন সমুদ্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মানাটি। তাই প্রতি বছর মানাটি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে, সমুদ্রে স্পিডবোট সতর্কতার সঙ্গে চালানোর জন্য সচেতনতা মাস পালন করা হয়। এই নিরীহ প্রাণীকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সবার সচেতনতা।

 

তারেক

বিশ্বের শীতলতম ম্যারাথন

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১২ পিএম
বিশ্বের শীতলতম ম্যারাথন
ছবি: সংগৃহীত

ম্যারাথন হচ্ছে দূরপাল্লার দৌড় খেলা। দাপ্তরিকভাবে এ দৌড়ের দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২.১৯৫ কিলোমিটার। ম্যারাথন রোড রেস বা রাস্তায় দৌড় খেলা নামেও পরিচিত। প্রাচীন গ্রিক সৈনিক ফেইডিপ্পিডেস ম্যারাথন যুদ্ধ জয়ের সংবাদ বহন করে দৌড়ে অ্যাথেন্স নগরে নিয়ে এসেছিলেন। আর সেই ম্যারাথনের যুদ্ধকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ দৌড়ের নামকরণ করা হয় ম্যারাথন দৌড়।

ম্যারাথন সাধারণত রাস্তাতেই অনুষ্ঠিত হয়, তবে উত্তর মেরুর ম্যারাথন হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র ম্যারাথন, যা পানির ওপরে অনুষ্ঠিত হয়। পানির ওপরে আবার কীভাবে ম্যারাথন সম্ভব, নিশ্চয়ই তাই ভাবছেন? কিন্তু বিস্ময়কর হলেও এটা সত্যি। উত্তর মহাসাগরের জমাট বাঁধা বরফের ওপর আয়োজিত হয় এই ম্যারাথন। সর্বত্র যে স্থির জমজমাট বরফ থাকে, তাও নয়। পায়ের নিচে কখনো কখনো বরফের দোলাচল লক্ষ করা যায়। সেসবের ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে এই ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করতে হয়। 

সুমেরু বিন্দু থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ক্যাম্প বার্নে নামক অস্থায়ী আস্তানায় অনুষ্ঠিত হয় এই ম্যারাথনের আয়োজন। এটি একই সঙ্গে বিশ্বের শীতলতম, কঠিন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল একটি ম্যারাথন। ম্যারাথনটির আয়োজন করা হয় গ্রীষ্মকালে, কিন্তু উত্তর মেরুর তাপমাত্রা তখনো হিমাঙ্কের অনেক নিচে থাকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি সবচেয়ে শীতল ম্যারাথন। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠে দৌড়ানো কম পরিশ্রমের কাজ নয়। যারা ম্যারাথন ভালোবাসে এবং গ্র্যান্ড স্ল্যামধারী ম্যারাথনার হতে চায়, তাদের অবশ্যই সাতটি মহাদেশে অন্তত একবার এবং এই সুমেরুর শীতলতম ম্যারাথনটিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।

হঠাৎ করেই উত্তর মেরুর এ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন হয় অনেক প্রস্তুতির। ম্যারাথনে অংশগ্রহণের প্রয়োজনে নিজেকে উপযুক্ত করতে হয়। আর তার জন্য দরকার পর্যাপ্ত অনুশীলন। অর্থাৎ এই চূড়ান্ত ম্যারাথনে দৌড়ানোর আগে আপনাকে অনেক অনেক পথ দৌড়ে অভ্যস্ততা তৈরি করে নিতে হবে। না হলে এই কঠিন ম্যারাথন সম্পন্ন করা এক প্রকার অসম্ভব কাজ!

ম্যারাথনটিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ম্যারাথনপ্রিয় লোকজন আসেন প্রতি বছর। অনেকের কাছেই এই ম্যারাথনটি ভীষণ জনপ্রিয়। এই ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় যতবার খুশি বিরতি নেওয়া যায়, কফি পান করা যায়, শরীর উষ্ণ করার কসরত করা যায়, এমনকি ঘুমানোও যায়। বিশেষ কোনো তাড়াহুড়ো নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারলেই হলো। মজার ব্যাপার হলো, আপনি যদি জোরে জোরে হেঁটেও গন্তব্যে পৌঁছান, তাতেও সমস্যা নেই, দৌড়িয়েই পৌঁছাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। চাইলে তুষারজুতা পরতে পারেন, আরামদায়ক মনে না হলে নাও পরতে পারেন। চাইলে আয়োজকরাই তুষারজুতার ব্যবস্থা করে দেয়।
সব মিলিয়ে এই ম্যারাথনটি কঠিন হলেও উপভোগ্য। যারা এই ম্যারাথনটি সম্পন্ন করতে পারেন, নিঃসন্দেহে তারা জীবনের অন্যতম সুন্দর একটি স্মৃতি সঞ্চয় করেন।

 

তারেক

পাঠকের গল্প : কলস ভাঙার গান

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
পাঠকের গল্প : কলস ভাঙার গান


সূর্য ডুবে গেছে, পাতার ফাঁকে আর রোদ নাই। কিচিরমিচির করে বাসায় ফিরে গেছে পাখি। ডাহুক ডাকছে জলাশয়ে। কিশোরের দল বাড়ি ফিরেছে। জল আনতে গিয়ে কলস ভাঙল দীপাঞ্জলি। মনে মনে শাশুড়ির ভয়। কি না কী বলে? মাগি বলে গালি দেবে? মাগি ডাকবে? ধুর না। এত অমানুষ হয় নাকি শাশুড়ি! 

কাদা পায়ে ফিরছে হাঁস- যেন নূপুর পরা। প্যাক প্যাক প্যাক প্যাক প্যাক প্যাক। টিউবঅয়েলের পাশে শুষ্ক কলাপাতা বাতাসে মড়মড় শব্দে উড়ছে। কচি পাতাগুলো শোঁ শোঁ করছে। ফেটে গেছে যুবক-যুবতী রূপ, সব কয়টা কলাপাতার।

চারদিকে আনন্দঘন গোধূলি। 

বউ এখনো বাইরে? মেয়েটা কী বেয়াদব রে? কোথাও গেলে আটকে যায়। পায়ে যেন গ্লু মাখা। উফ্! যন্ত্রণা। মনে মনে কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে সায়নীর মা। 
বেলা ডুবে গেলে অথবা ভীষণ রাত্রিতে সায়নী বাড়ি ফিরলে কোনো দোষ নাই। কিন্তু বউ, ও মা গো! সে তো মহাবিপজ্জনক ঘটনা। এ যেন ৪৬-এর দাঙ্গা লেগে যায় ঘরে। কিন্তু এই দাঙ্গায় একপক্ষ মায়ের মুখী, অন্যপক্ষ বড্ড অসহায় অবলা নারী।

বাঙালির ঘরে শাশুড়ির মুখে মুখে তর্ক করা বা বাগবিতণ্ডা করা বেদ অবমাননা করার সমান পাপ। তবে বর্তমানে এই দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়েছে। 

কী রে সায়নী, বেটি তো এখনো এল না, জল আনতে গেল।

দীপা? দেখো গা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে কার সঙ্গে গল্পে ডুবেছে। আমি অত জানি না, বাড়ির বাইরে ন্যাকামো আমার ভালো লাগে না। কথা শেষ করে অন্তরালে স্মিত হাসে সায়নী।

সুপর্ণার মতোন হাসি, গোলে-মালে তেলে-জলে মেশানো হাসি।

সন্ধ্যা অত্যন্ত চঞ্চল হয়ে ঢুকে গেছে গ্রামগঞ্জে।

পুলিশ কনস্টেবল অপরাধী ধরে এনে যেমন অস্থির ও ছটফট অবস্থায় নিজেকে প্রকাশ করে, তেমনি এক ভাব নিয়ে সায়নীর মা বলল- যা না, একটু দেখ। মেয়েটা আবার কোথাও আটকে গেল কি না। 

পারব না। একবার বলছি তো। শোনোনি?

এদিকে মাথায় এক আকাশ হতাশা নিয়ে অপরাধীর মতোন চুপসে দাঁড়িয়ে আছে দীপাঞ্জলি। এ পথে আজ কোনো পথিক নেই। নির্জন-নির্মল পরিবেশে মেয়েটা ভয় পাচ্ছে, কিন্তু এ অপ্রাকৃতিক ভয় শাশুড়ির ভয়ের কাছে তুচ্ছ মনে করে ম্লানমুখে দাঁড়িয়ে আছে সে। জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতন- ‘কোন এক বিপদের গভীর বিস্ময় আমাদের ডাকে’। দীপাঞ্জলির এখন যেন আমাকে ডাকে বিষণ্ন বিপদ, এ রকম অস্থির অবস্থা। এ যেন পাকা ধানের ওপর দিয়ে বয়ে যায় দুপুরের ক্লান্ত বাতাস। একঝাঁক দুঃখ এসে দীপাঞ্জলির বুকে ভর করে আছে। মাথায় রাশি রাশি চিন্তা।

সজল এখনো বাড়ি আসেনি, নয়তো একটু হলেও বউয়ের খবর নিত। দীপাঞ্জলি ভাবে- বেলা তো গড়াল, রাত বাকি। মানুষটার জলসেচ এখনো শেষ হয়নি? আর যদি বাড়িই ফেরে, তাহলে আমাকে খুঁজতে তার একটু ইচ্ছে হলো না? 

ক্লাসের ফার্স্ট বয়ের মতো আকাশের ধ্রুবতারা সবচেয়ে আগে দৃশ্যমান হলো। তারপর আকাশে তারার সংখ্যা বাড়তে থাকে। 

 

রুদ্র সুশান্ত
বায়েজিদ, চট্টগ্রাম

 

তারেক

 

যে দ্বীপে বন্দি ছিলেন ম্যান্ডেলা

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
যে দ্বীপে বন্দি ছিলেন ম্যান্ডেলা
ছবি: সংগৃহীত

রোবেন দ্বীপ। দ্বীপটি একসময় সবার অগোচরেই ছিল। মূলত রাজনৈতিক বন্দিদের কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর থেকে দ্বীপটি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি লাভ করে। আটলান্টিকের টেবিল উপসাগরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে উপবৃত্তাকার এই ছোট দ্বীপটি। এটি যেন আটলান্টিকের কূলকিনারহীন জলরাশির বুকে একখণ্ড সবুজ স্থলভাগ।

লম্বায় ৩ কিলোমিটার আর চওড়ায় ২ কিলোমিটারের এই দ্বীপে গ্রীষ্মের সময় দক্ষিণ-পূর্ব ও শীত মৌসুমে উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বায়ু প্রবাহিত হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই দ্বীপ খুব একটা উঁচু না হলেও এখানে রয়েছে এক অন্যরকম মায়া। প্রায় জনমানবহীন দ্বীপটির চারদিক সুনসান। কেবল সমুদ্রের ঢেউ আর শনশন শব্দ। জ্যোৎস্না নিশিতে আটলান্টিকের নীল জলরাশি হাতছানি দিয়ে ডাকে! 

আটলান্টিক ও ভারত মহাসাগর যেখানে মিলিত হয়েছে তার ঠিক পশ্চিম দিকে কেপটাউন শহর। দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম কেপ প্রদেশ উপকূল থেকে প্রায় ৭ কিমি এবং কেপটাউন পোতাশ্রয় থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে অবস্থিত দ্বীপটি। দ্বীপটি ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত। এটি নেলসন ম্যান্ডেলাসহ আরও অনেক বর্ণবাদ বিরোধীদের জন্য কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এই দ্বীপে আফ্রিকান নেতাদের নির্বাসিত করা হয় ১৯৬০- এর পর থেকে। ১৯৬৪ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৮ বছর আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা এখানে কারাবন্দি থেকেছেন। ম্যান্ডেলা ছাড়াও এখানে অন্তরীণ ছিলেন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রবার্ট সেবুকে, ম্যাক মহারাজ, কগালেমা মোটলানথে  ও জ্যাকব জুমা। কগালেমা মোটলানথে ও জ্যাকব জুমা পরবর্তীতে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এখানে শুধু রাজনৈতিক বন্দিদের নয়, সাধারণ অপরাধীদেরও রাখা হতো। অনেক সময় বিনা বিচারে রাজনৈতিক বন্দিদের তুলে এনে এখানে আটকে রাখা হতো। ১৯৩১ সালের আগ পর্যন্ত এই দ্বীপে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কুষ্ঠরোগীদের রাখা হতো। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষা বাহিনী ১৯৩৬ সালে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং নতুন সড়ক, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বসতি নির্মাণের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নত করে। বন্দিদশা অবস্থায় যাদের মৃত্যু হতো দক্ষিণ আফ্রিকান মুক্তি সংগ্রামের সেসব শহিদকে এখানে কবর দেওয়া হতো। 

বর্তমানে দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এখানে একটি জাদুঘর রয়েছে। ১৪৮৮ সালে বার্থলোমিয়ো ডায়াস নামের পর্তুগিজ নাবিক ছোট্ট এই দ্বীপ আবিষ্কার করেছিলেন। পরে ডাচরা এটার দখল নেয়। রোবেন দ্বীপটির নামকরণ করেন ডাচরা। প্রথম দিকে কৃষিকাজ করা হতো এখানে। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশ অপরাধীদের বন্দি করে রাখা হতো এখানে। ১৭ শতকের পর থেকে দ্বীপটিতে অপরাধীদের নির্বাসন করা শুরু হয়। ১৭৯৫ সালে ব্রিটিশরা যখন কেপটাউন নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে তখন তারা দ্বীপটিকে একটি কারাগার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে।

দ্বীপটির এককোণে রয়েছে চুনাপাথরের খনি। নেলসন ম্যান্ডেলাসহ রাজনৈতিক বন্দিদের দিয়ে এই চুনাপাথর ভেঙে টুকরো টুকরো করার কাজ করানো হতো। যার ফলে ম্যান্ডেলার চোখে চুনাপাথরের বালুকণার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। যা তিনি আত্মজীবনী ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’-এ উল্লেখ করেছেন। সামুদ্রিক শৈবাল ঘেরা দ্বীপটিতে নানা রকম উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের বাস। সিল মাছ, কচ্ছপ, পানকৌড়ি ও পেঙ্গুইন রয়েছে দ্বীপটিতে। সামুদ্রিক প্রাণী সিল প্রচুর পরিমাণে থাকার কারণে দ্বীপটিকে ‘সিল আইল্যান্ড’ও বলা হয়। এখানে পেঙ্গুইনের বিশাল একটা বিচরণক্ষেত্র রয়েছে।

দ্বীপটিতে একটি বাতিঘর রয়েছে।  এখানের সর্বোচ্চ চূড়া মিন্টো হিল। এটি প্রায় ৩০ মিটার উঁচু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দ্বীপটি আবার আলোচনায় আসে। এ সময় কেপটাউনকে রক্ষার জন্য এখানে দুর্গ বানানো হয়। ১৯৯৯ সালে দ্বীপটিকে জাদুঘর হিসেবে স্থাপন করা হয়। রোবেন দ্বীপের বিল্ডিংগুলো এর ভয়ংকর ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। অনেকের মতে, রোবেন দ্বীপ এবং এর কারাগারগুলো নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানব চেতনার, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের বিজয়ের প্রতীক। ১৭ শতক থেকে ২০ শতক পর্যন্ত প্রায় ৪০০ বছর ধরে দ্বীপটি কারাবাস ও নির্বাসনের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই দ্বীপের প্রথম বন্দি ছিলেন অতশুমাতো। ১৭ শতকের মাঝামাঝিতে এই দ্বীপে তাকে দোভাষী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। পরে তিনি দ্বীপটি ছেড়ে পালিয়ে যান। 

বর্তমানে এখানে কোনো রাজনৈতিক বন্দিকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় না। দ্বীপটিতে এখন আর কোনো বন্দিও থাকে না। শুধু রয়েছে বন্দিদের নির্মম স্মৃতিচিহ্ন। এককথায়, দ্বীপটি এখন অভিশাপমুক্ত। দ্বীপটিতে যারা আছেন তারা কারাগার-জাদুঘরেরই কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য। পর্যটকদের ঘোরার সুবিধার জন্য দ্বীপে বাসের ব্যবস্থা আছে। পর্যটকরা কেপটাউনের তীর থেকে ফেরিযোগে দ্বীপটিতে যাতায়াত করে থাকে। তবে দ্বীপের পুরোটায় পর্যটকদের ঘোরার অনুমতি নেই। আগে যেটুকু কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো সেটুকুর আশপাশ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। অর্ধেকের বেশি অংশ প্রাণ-প্রকৃতি তথা জীববৈচিত্র্যের জন্য সংরক্ষিত। ইতিহাসের ভয়ংকর সাক্ষ্যকে পাশ কাটিয়ে আটলান্টিকের ফেনিল জলরাশি দ্বীপটির শক্ত তীরে যখন আছড়ে পড়ে; সেই আছড়ে পড়া আর মুক্ত বাতাস এখন বেশ উপভোগ করেন দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটকরা।

 

তারেক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });