ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করল কুবি শাখা ছাত্রদল

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৮ পিএম
নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করল কুবি শাখা ছাত্রদল
ছবি: খবরের কাগজ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৩-২৪ বর্ষে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে মেইন গেইটের বাহিরে থেকেই ফুল দিয়ে বরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল।  

রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাহিরে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা। এইসময় গেইটের বাইরের অবস্থান সম্পর্কে তারা বলেন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের ওপর সম্মান রেখে তারা বাইরে থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাহিরে ফুল ও পানি দিয়ে দূরদূরান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদেরকে সাহায্য করেছে। এসময় নেতাকর্মীদের সারিবদ্ধভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে দেখা যায়। 

গত ৮ আগস্ট ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সকল ধরণের দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রশাসনের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে মেইন গেইটের বাহিরে নবাগত শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছি। আমরা চাই না আমাদের কার্যক্রম দ্বারা ক্যাস্পাসে কোনপ্রকার বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। সেজন্য আমরা মেইন গেইটের বাহিরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।’

আতিকুর রহমান তনয়/এমএ/ 

খেলার মাঠে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
খেলার মাঠে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
নিহত মেহেদী হাসান সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেট খেলার সময় ‘হৃদরোগে’ আক্রান্ত হয়ে মেহেদী হাসান সিয়াম নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস।

মেহেদী হাসান সিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীনগর গ্রামে।

মেহেদীর সহপাঠী, শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা চলাকালে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটার সিয়াম হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তিনি পানি পান করতে চান। এ সময় তার সতীর্থ খেলোয়াড়রা সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করলে তার অবস্থার অবনতি হয়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বুঝতে পারেন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও শিক্ষকদের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। 
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। বাদ এশা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।’

এস আই সুমন/নাবিল/

বড় গবেষক হতে চান কৃষিগুচ্ছে প্রথম হওয়া জাইমুন

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম
বড় গবেষক হতে চান কৃষিগুচ্ছে প্রথম হওয়া জাইমুন
জাইমুন ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

স্বপ্ন ছিল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। সেই লক্ষ্যে চলছিল প্রস্তুতিও। মাঝখানে ছন্দপতন হয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) ফলাফল প্রকাশ হলে। প্রত্যাশানুযায়ী ফল করতে না পেরে হয়ে পড়েন হতাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতেও কাঙ্ক্ষিত সফলতা না আসায় শুনতে হয় নিন্দুকের সমালোচনাও। এবার সব সমালোচনার জবাব দিয়ে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন ময়মনসিংহের জাইমুন ইসলাম।

গত ২৫ অক্টোবর সারাদেশের নয়টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে পঁয়ত্রিশ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে ৯৬.৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের এই শিক্ষার্থী। জাইমুন ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায়। ২০১৮ সালে বাবাকে হারানোর পর মা আর বড় বোনকে নিয়ে চলে তার জীবন-সংগ্রাম। ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত মেধাবী জাইমুন পড়াশোনা করেছেন গোকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, পয়ারী স্কুলে। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হন বাকৃবি চত্বরে অবস্থিত কেবি কলেজে। 

এইচএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজিতে ‘এ মাইনাস’ আসায় খুশি হতে পারেননি জাইমুন। কারণ তাকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। হতাশা আর সমালোচনার চাপে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ে পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে যায়। ফলস্বরূপ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো অবস্থান করতে পারেননি। এরপর শেষ সময়ে এসে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন জাইমুন। প্রত্যাশা আর দায়িত্ববোধের চিন্তায় আবারও প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন ভর্তি পরীক্ষার জন্য। মাঝে কিছুটা বাড়তি সময় পেয়ে নিজেকে গুছিয়ে নিতে সহজ হয়। ফলে কৃষিগুচ্ছের জন্য খুব ভালো প্রস্তুতি নিতে পারেন জাইমুন। ভর্তি পরীক্ষাও খুব ভালো দেন এবং চান্স পাওয়া নিয়েও ছিলেন আশাবাদী। পরীক্ষায় ৯৯টি প্রশ্নের উত্তর করেন, যার মধ্যে ৯৭টি সঠিক হয়। এর ফলে ৯৬.৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জনের কৃতিত্ব গড়েন জাইমুন। এখন তার ইচ্ছা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে পড়ার। কৃষি নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করা, কৃষি নিয়ে গবেষণা এবং বাংলাদেশের কৃষিতে অবদান রাখার ইচ্ছাও তার।

তার এই সাফল্যের পেছনের গল্প শোনাতে গিয়ে জাইমুন বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার মূলত ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়া। কিন্তু এইচএসসি রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর আমি ভাবলাম হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষাগুলো আমি দিতে পারব না। তাই পরবর্তী সময়ে আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রিপারেশন নেইনি। কিন্তু আমি সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আমি যদি সেই সময়টায় ভালো করে প্রিপারেশন নিতাম, হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার সুযোগ পেতেও পারতাম। কিন্তু আজকে যে সারাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করার সাফল্য, সেটা হয়তো আমি কখনোই পেতাম না। আমি আমার বর্তমান অবস্থান নিয়ে অত্যন্ত খুশি।’

জাইমুন তার সাফলতার কৃতিত্ব দিলেন তার দাদা ও শিক্ষকদের। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার পড়ালেখা ও আমার পরিবারের যাবতীয় সাপোর্ট দিয়ে আসছেন আমার দাদা আবু তালেব। তিনি আমার বাবার বড় চাচা। তিনি আমাদের ফুলপুরে একজন ব্যবসায়ী। ওনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। নিঃস্বার্থভাবে একজন মানুষ এতকিছু করতে পারেন, সেটা বাস্তবিক পক্ষে আমি ওনাকে দেখে জেনেছি। বলা যায় আমার এই কৃতিত্বের পেছনে আসল হিরো হচ্ছেন আমার দাদা। ওনার সাপোর্ট, মোটিভেশন আজকে আমাকে এখানে দাঁড় করিয়েছে। আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। শুধু আমার দাদা নয়, আমার চারপাশের যারা আমাকে সাপোর্ট করেছেন- তাদের সবার প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ।’

জাইমুন আরও বলেন, ‘আমাকে যারা গড়ে তুলেছেন আমার সব শিক্ষকের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। আমার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকবৃন্দ সবাই অনেক আন্তরিক ছিলেন। বিশেষ করে কলেজজীবনে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। কলেজের শিক্ষকদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যাপারটা সত্যিই অসাধারণ এবং অত্যন্ত উপকারী। গাইডলাইনের ক্ষেত্রে আমার শিক্ষকরা আমার জীবনে অনেক বেশি আবদান রেখেছেন।’


অনুজদের উদ্দেশে জাইমুন বলেন, ‘একটাই কথা বলার থাকবে, জীবনের যেকোনো অবস্থান থেকে কখনো হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। লক্ষ্য নির্ধারণ করে পরিশ্রম করতে হবে, তবেই সফলতা ধরা দেবে। আর সফলতার কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। কখনো হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশা কখনোই জীবনে ভালো কিছু দেয় না। দশটা দিন হতাশ হয়ে নষ্ট না করে নতুন করে চেষ্টা করলেও অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যায়। আর সবার মাঝে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা আছে, সেটা সবসময় বিশ্বাস করতে হবে।’

জাইমুনের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার কলেজও। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘কৃষিগুচ্ছে প্রথম হওয়ার জন্য জাইমুনকে অভিনন্দন জানাই। এই অর্জনের মাধ্যমে সে তার পরিবার ও কলেজের মুখও উজ্জ্বল করেছে। অনেক আগে থেকেই আমাদের কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ও কাঠামো অত্যন্ত সুগঠিত। কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম থেকে শুরু করে সবকিছু হয়ে থাকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে। শিক্ষকরা প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে কাউন্সেলিং করে থাকেন। এর ফলে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী মেডিক্যাল, প্রকৌশলসহ দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। আমি জাইমুনসহ কেবি কলেজের সব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ পথচলার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।’

হাসান

ঢাবিতে বিজয় র‌্যালি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম
ঢাবিতে বিজয় র‌্যালি
ঢাবিতে বিজয় র‌্যালি। ছবি: খবরের কাগজ

বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য এই র‌্যালির উদ্বোধন করেন। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে র‌্যালিটি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) হয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় উপাচার্য  মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে এ বছরের বিজয় দিবস উদযাপন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের ছাত্র-জনতা অনেক রক্ত দিয়ে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ এনে দিয়েছে। এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের দায় ও দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এখান থেকে আমাদের পেছনে ফেরার কোন সুযোগ নেই। বিজয়ের এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। সকল বাধাবিঘ্ন ও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।’

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা বলেন, ‘বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনতার যুদ্ধেও প্রাণকেন্দ্র ছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিজয়ের যে আনন্দ শুরু হয়েছে, তা যেন আমরা সব সময় ধরে রাখতে পারি। বিশেষ করে ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আজকে যে বিজয় র‌্যালি, এর মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবো।’

এ সময় র‌্যালিতে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ নেন।

পরে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান (মুক্তির গান ও বিজয়ের গান) পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিজয় র‌্যালি শেষ হয়।

আরিফ জাওয়াদ/নাবিল/এমএ/

গুচ্ছে থাকতে চান না বেরোবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম
গুচ্ছে থাকতে চান না বেরোবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : খবরের কাগজ

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ২০২০-২১ সেশন থেকে ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নতুন অনুমোদন পাওয়া আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হয়। সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ সেশনে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল তা সফল হয়নি অভিযোগ তুলে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও গুচ্ছ পদ্ধতি ভর্তি পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় আর থাকতে চান না।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষার্থী ভোগান্তি কমাতে এই পদ্ধতি চালু করা হলেও আদৌ তা লাঘব হয়নি। এই ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো যাচাই-বাছাই করেও শিক্ষার্থী নিতে পারছে না। এ ছাড়া প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২০২০-২১ সেশনে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন সাগর গাজী। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সময় নেয়। এর ফলে গুচ্ছের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় গুচ্ছে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অধিক মাইগ্রেশনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকে না। নিজ জেলা বা তার আশপাশের জেলার শিক্ষার্থীদের সংখ্যায় বেশি থাকে। অন্য অঞ্চলের শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না।

২০২৩-২৪ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বিপন রায় বলেন, ‘আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি হয়েছি। এই পদ্ধতিতে কিছু সুবিধা থাকলেও অসুবিধা বেশি। এখন গুচ্ছে দূরের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ ভর্তি হতে চান না। মাইগ্রেশন করে নিজ জেলার আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। ফলে সিট ফাঁকা থেকে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিলে একজন শিক্ষার্থী জেনে বুঝেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তখন এত বেশি আর সিট ফাঁকা থাকে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘গুচ্ছ যে উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল তা আদৌ পূরণ হয়নি। শিক্ষার্থীদের সেই ভোগান্তিই পোহাতে হচ্ছে। তা ছাড়া আমরা অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী শিক্ষার্থী পাচ্ছি। আমরা যখন স্বতন্ত্র ছিলাম তখন যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থী নিতে পারতাম। কিন্তু এখন সেই সুযোগটি পাচ্ছি না।’ 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু বলতে পারছি না।’ 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিতে এই গুচ্ছ পদ্ধতি থাকা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে একক ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে প্রথম গুচ্ছের নেতৃত্ব দেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকতে চায় না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীরা এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছে।

চাকরির আবেদন ফি ২০০ টাকাসহ ৪ দফার দাবিতে আলটিমেটাম

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম
চাকরির আবেদন ফি ২০০ টাকাসহ ৪ দফার দাবিতে আলটিমেটাম
ছাত্র অধিকার পরিষদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: খবরের কাগজ

চাকরিতে আবেদন ফি ২০০ টাকাসহ ৪ দফা দাবিতে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।  এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।

তিনি বলেন, ‘যখন সরকার আসে তখন বেকারত্ব দূর করতে নানা কথা বলেন কিন্তু যখন তারা ক্ষমতায় আসে এরপর তারা সেই প্রতিশ্রুতি ভুলে যান। অনেক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানরা কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি তিন দিনের মধ্যে দাবি না পূরণ করা হয়, তাহলে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কিন্তু আন্দোলনে যাবো। 

যদিও আমরা মনে করি না, আন্দোলন করতে হবে। তারপরেও যদি করতে হয়, আমরা অবশ্যই আন্দোলনে যাবো কেননা আন্দোলনে না গেলে সরকারের কাছে কথা পৌঁছায় না। ছাত্রদের প্রতিনিধি থেকে সরকারে উপদেষ্টা রয়েছেন। এক সময় তারাও দাবির প্রেক্ষিতে লিফলেট বিলি করেছেন। এখন তারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তারাও আমাদের মতো পরিবারের সন্তান। আমরা চাই অবিলম্বে যেন অর্ডিন্যান্স জারি করে চাকরিতে আবেদনের ফি যেন ন্যূনতম ২০০ টাকা করা হয়।’

পিএসসির চেয়ারম্যানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগের যে স্থবিরতা রয়েছে, সেগুলো যেন অতিদ্রুত কাটিয়ে ওঠা হয়। সেই সঙ্গে ফ্যাসিবাদের দুর্নীতিবাজ দোসর যারা রয়েছে, তাদের যদি অবিলম্বে অপসারণ করা না হয়, প্রয়োজনে আমরা পিএসসি চলে যাবো। আমরা চাই, এই দুর্নীতিবাজ দোসরদের বিরুদ্ধে যেন তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ৪ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। 

দাবিগুলো হলো: ১. চাকরির আবেদন ফি কমিয়ে সর্বোচ্চ ২০০ টাকার মধ্যে করা, ২. প্রিলি পরীক্ষার কাটমার্কস প্রকাশ করা, ৩. প্রিলিমিনারি, রিটেন এবং ভাইবার নাম্বারপত্র আলাদাভাবে প্রকাশ ও প্রিলির একসেট উত্তর প্রকাশ। এ ছাড়া বিসিএস সর্বোচ্চ এক বছর আর অন্যান্য চাকরিতে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং ৪. পিএসসি থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতিবাজদের অপসারণ।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মো. সানাউল্লাহ হক, সদস্যসচিব রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

আরিফ জাওয়াদ/নাবিল/এমএ/