
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা উপেক্ষা করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তানজিউল ইসলামকে (জীবন) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, নতুন ভিসি দায়িত্ব গ্রহণের পরই ড. মো. তানজিউল ইসলামকে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক করা হয়। একজন সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অধ্যাপক জানান, এই পদে অধ্যাপক থেকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। এ ছাড়া ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী সেখানে একজনকে পূর্ণকালীন নিয়োগ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অধ্যাপক রয়েছেন সেখানে একজন সহযোগী অধ্যাপককে দায়িত্ব দেওয়া ঠিক হয়নি।
এদিকে ক্যাম্পাসে একসময় আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন ড. তানজিউল। তাই জুলাই বিপ্লবের পাশে থাকা শিক্ষকরাও তার এ নিয়োগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ইউজিসির ২০২২ সালের ২০ মার্চ জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিচালকসহ (পরিচালক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় পূর্ণকালীন নিয়োগ দিতে হবে। অতিরিক্ত দায়িত্ব, চলতি দায়িত্ব, চুক্তিভিত্তিক বা খণ্ডকালীন হিসেবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি/সামরিক কর্মকর্তা বা কলেজের শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। পত্রে প্রতিষ্ঠাকাল ১০ বছর হয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়কে এসব পদে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিয়োগ দিয়ে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।
কিন্তু বেরোবি প্রশাসন সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তানজিউল ইসলামকে (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব দিয়েছে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমাদের লোকজন কম তাই তাকে (ড. মো. তানজিউল) আপাতত নিয়োগ হয়েছে। পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমরা পূর্ণকালীন নিয়োগ দেব।
ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই ধরনের কিছু আমি শুনিনি। যদি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে অবশ্যই ইউজিসি ব্যবস্থা নিবে। আর আমি অন্য ডিভিশনের কাজ করি। এই ব্যাপারে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান ভালো বলতে পারবেন। তবে অনিয়ম হলে ইউজিসি সেটির ব্যবস্থা নিবে।
এই ব্যাপারে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
গাজী আজম/জোবাইদা/