
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এর চাকরি ঠেকাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ১২ তম ব্যাচের (২০১৬-২০১৭ সেশনের) শিক্ষার্থী সাগর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী নওশের আলী।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২:৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন মামলায় হয়রানির শিকার সাগর চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী।
হয়রানির শিকার সাগর চৌধুরী এখন চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি ৪৬তম বিসিএস প্রিলিতে উত্তীর্ণ হয়ে লিখিতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি যেন বিসিএসে জয়েন করতে না পারেন সেজন্যেই এই মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাগর।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমার বাবা একজন সেনা সদস্য ছিলেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা একটা মামলা করি। কিন্তু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদেরকে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলাটি উঠিয়ে নিতে বলে। কিন্তু আমরা করি না, আমরা চেয়েছিলাম আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির বিচার হোক। এরপরে আমার বাবার হত্যা মামলার ২ মাস আগে পাশের গ্রামের একটি হত্যা মামলায় আমাকে আসামি করে চার্জশিট করে আমার বাবার হত্যাকারী কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, এ হত্যার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় থাকি কখনো এলাকায় থাকা হয়নি সেভাবে। আমি জুলাই বিপ্লবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি অংশগ্রহণ করি। ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার পতন হওয়ার পরেও আমাকে সিআইডি ও বিভিন্ন সরকারি তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে হয়রানিমূলক মামলায় আসামি করে চার্জশিটে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে আমার বাবার হত্যাকারী কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে। সে এখন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পোস্টে আছে। আমি এ হয়রানিমূলক হত্যা মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত দেখতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১০ম আবর্তনের শিক্ষার্থী মুন্না বলেন, সে জুলাই আন্দোলনে প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ছিল। সে পুরান ঢাকায় থাকতো। সে তার বাসা গোপালগঞ্জে খুব কমে যেত। ২০২৩ সালে সে ঢাকাতেই ছিল। তাকে মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে তাকে এই মামলা থেকে নিঃশর্তে মুক্তি চাই।
তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনও বহাল তবিয়তে এলাকায় বিচরণ করছে। তার ছেলে পুলিশের এসআই থাকায় সে এ কাজগুলো এখনও করে বেড়াচ্ছে। আমরা তারও বিচার দাবি করছি।
মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ