ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

আশ্রয়ণে প্রতারণা : কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০০ এএম
আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০০ এএম
আশ্রয়ণে প্রতারণা : কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ

নারায়ণগঞ্জের দুই নারীসহ চার জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গৃহহীনদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত নালিশ করেছেন চার ভুক্তভোগী।

অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যানের ছত্রচ্ছায়ায় ইউপি সদস্যরা অর্ধশতাধিক লোকজনের কাছে থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়েছেন। নলকূপ বরাদ্দের প্রলোভন দেখিয়ে ৩৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন শতাধিক মানুষের কাছ থেকে। সবমিলিয়ে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন অভিযুক্তরা। 

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা হলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলী, একই ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য লিপি আক্তার, ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নিলুফা বেগম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিপ্লব হোসেন ওরফে হাবু।

অভিযোগের বিষয়টি গত সোমবার নিশ্চিত করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম। তিনি জানান, এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত দুটি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের তদন্ত করছে উপজেলা প্রশাসন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে যদি কেউ কোনো রকম অনিয়ম করেন, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

অভিযোগে জাহানারা বেগম নামের এক নারী উল্লেখ করেন, তিনি একজন দুস্থ ও গৃহহীন। তিনি পরিবার নিয়ে সৈয়দপুর এলাকায় মাটি ভাড়া (জায়গা ভাড়া নিয়ে ঘর তুলে বসবাস করা) থাকেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকার প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দুস্থ ও গৃহহীনদের জায়গাসহ ঘর এবং টিউবওয়েল বরাদ্দ করছেন জানতে পেরে গোগনগর ইউনিয়ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলী এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য নিলুফা আমার কাছে গেলে তারা ঘর দেওয়ার কথা বলে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় তাদের ওপর বিশ্বাস করে স্বর্ণালংকার ও গরু-ছাগল বিক্রি করে দাবি করা দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তারা ঘর বা টাকা কিছুই দেননি। তাদের কাছে  একাধিকবার গেলে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। এ ছাড়া টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে  নিলুফা বেগম আরও ৩৫ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন সালমা নামের আরেক নারী। 

অভিযোগের আরেক অংশে উল্লেখ করা হয়, একইভাবে নারীর কাছ থেকে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য লিপি বেগম দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন। তিন্নি আক্তারকে ঘর বরাদ্দের কথা বলে এ টাকা নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

অপর আরেক অভিযোগে নূরু মৃধা নামের এক ব্যক্তি উল্লেখ করেন, তিনি তার পরিবার নিয়ে গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাটি ভাড়া করে ঘর তুলে থাকেন। প্রায় দুই বছর আগে গৃহহীনদের সরকারি ঘর বরাদ্দ করা হবে জানতে পেরে তার স্ত্রী ফরিদা বেগম স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের কাছে গেলে তারা দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। তাদের বিশ্বাস করে গরু-ছাগল বিক্রি করে দাবি করা দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে তারা আর ঘর দেননি। টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করছেন। গত তিন মাস আগে চেয়ারম্যান ফজর আলী ফরিদা বেগমকে ডেকে এনে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে দেওয়া হবে বলে জানান।  প্রায় দুই বছর ধরে টালবাহানা করেও টাকা ফেরত না দেওয়ায় ইউপি সদস্যসহ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

জাহানারা বেগম জানান, কিস্তি তুলে নিলুফা মেম্বারকে টাকা দিয়েছেন। তবে ঘর বা টাকা কিছুই দেওয়া হয়নি বরং হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অন্তত ২০ থেকে ২৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন নিলুফা মেম্বার।

তিন্নি বলেন, ‘টাকা চাইলে নানাভাবে কথা শোনান। আমি কথা রেকর্ড করে রেখেছি। লিপি মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে টাকা দিয়েছি, ছবিও আছে। কিন্তু টাকা  ফেরত দেয় না। তাই বাধ্য হয়ে ডিসির কাছে গেছি। এমনি আরও যারা টাকা দিয়েছেন তাদের সংখ্যা অন্তত ৭ থেকে ৮ জন।’ তারা ভয়ে এখনো মুখ খুলছেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ছালমা নামের এক নারী বলেন, ‘নিলুফা শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। কারও কারও কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। নলকূপ বা টাকা চাইতে গেলে টালবাহানা করেন, কিন্তু কিছুই দেন না।’

নুর মৃধা বলেন, ‘আমি ঝগড়া করায় চেয়ারম্যান আমাকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এখনো বাকি আছে ৩০ হাজার। মেম্বার হাবু টাকা দেন না খালি ঘোরান। আমার মতো আরও ২০ থেকে ২৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নারী ইউপি সদস্য লিপির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না। এটা রটানো কথা।

একইভাবে অস্বীকার করেছেন আরেক নারী ইউপি সদস্য নিলুফাও। তিনি মুঠোফোন বলেন, ‘আমার আত্মীয় মারা গেছে। আমি এ ব্যাপারে জানি না। তারপর তার বাড়িতে গেলে তার মেয়ে পরিচয়ে একজন জানান নিলুফা বেগম বাড়িতে নেই। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিপ্লব হোসেন হাবু বলেন, আমি জানি ভাই, আপনে গোগনগর আইসেন ভাই। আপনার সঙ্গে কথা বলবোনে ভাই। ফোনে কথা না বলি।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার তথ্য বলছে, এখানে ১৫৬টি ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয় গৃহহীনদের কাছে। তবে যাদেরকে ঘর দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন সে ঘরে থাকে না। শুধু সরকারি লোক আসার খবর পেলে তারা হাজির হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন গোগনগরের সৈয়দপুর এলাকায় অবস্থিত মুজিব নগরের একাধিক বাসিন্দা। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নলকূপ বরাদ্দের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেওয়ার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহমুদ খান। নলকূপ বরাদ্দ দেয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসন। এখানে অন্য কারও সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

চার মেয়াদেও শেষ হয়নি রাজবাড়ী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কাজ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ এএম
চার মেয়াদেও শেষ হয়নি রাজবাড়ী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কাজ
ছবি : খবরের কাগজ

চারবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি রাজবাড়ী ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালের নির্মাণকাজ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বারবার গণপূর্ত বিভাগকে তাগাদা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় পুরাতন ভবনে চিকি‍ৎসা নিতে আসা রোগীদের বিড়ম্বনা ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন আটতলা ভবনের বেজমেন্ট ফ্লোরে থাকবে গাড়ি পার্কিং, স্টোর রুম, মরচুয়ারি, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ফার্নিচার রুম ইত্যাদি। এ ছাড়া আইসিইউ, সিসিইউ, সিটি স্ক্যান, মেমোগ্রাফির ব্যবস্থা থাকবে।

রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আটতলা ভবন নির্মাণের কাজ করছে জিকেবিপিএল ও এসসিএল নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের জুন মাসে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও পর পর তিনবার মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন মাসে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এবারেও ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ কারণে আগস্ট মাস পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ৮ তলা ভবনটির সামনে রড, সিমেন্ট, বালু, ইট, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর স্তূপ। শ্রমিকরা কাজ করছেন। ভেতরে বাইরে অনেক কাজ বাকি। লিফটের কাজ শুরুই হয়নি। বাকি রয়েছে বৈদ্যুতিক কাজও। 

নির্মাণকাজের তদারকি করছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী স্বজন সাহা। তিনি জানান, হাসপাতালের কাজে তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো গাফিলতি নেই। কাজ প্রায় শেষের পথে। রং, বিদ্যুৎ, টাইলসসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। 
কাজ পরিদর্শনে আসা রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ভেতরে কিছু কাজ বাকি আছে। রাস্তা, ড্রেন নির্মাণকাজ চলছে।

কাজ সম্পন্ন হতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। এ ছাড়া প্রথমে ছয়তলা ভবন করার কথা থাকলেও পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আটতলা ভবন করার চাহিদা দেয়। এ কারণে নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। সময় মতো নির্মাণসামগ্রী না পাওয়াও দেরি হওয়ার একটি কারণ ছিল।’ 

রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম ইফতেখার মজিদ জানান, কিছু সমস্যার কারণে সময়মতো হাসপাতালের কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে। 

এদিকে পুরনো ভবনের অভ্যন্তরে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে শত শত রোগী চিকিৎসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ ওষুধ নিচ্ছেন। ভিড়ের কারণে হাঁটার জায়গাই নেই। আন্তবিভাগে ভেতরে রোগীতে পরিপূর্ণ। অনেক রোগীর ঠাঁই হয়েছে বারান্দার মেঝেতে। দ্বিতীয়তলায় পুরুষ ওয়ার্ডের বারান্দার মেঝেতে একজন রোগী ঘুমিয়ে ছিলেন। তার মাথার কাছে হাতে স্যালাইন লাগিয়ে বসেছিলেন এক ব্যক্তি। যে কেউ ধরে নেবে তারা একই পরিবারের।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের গোপালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মিঠু সরদার নামে ওই ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যে ঘুমিয়ে আছেন, তিনি তার কেউ নন। পেটে ব্যথা নিয়ে সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু এখনো সিট পাননি। জায়গা না পেয়ে তার মাথার কাছে বসেছেন।

হাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শহীদ মোল্লা জানান, ঘাড়ব্যথা নিয়ে সকালে ভর্তি হয়েছেন। শয্যা পাননি। তাই বারান্দায় বিছানা পেতে দিয়েছে। মানুষ হাঁটাচলা করলে ধুলো উড়ে আসে। মাঝে মধ্যে দুর্গন্ধও আসে। 

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এসএমএ হান্নান বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালে রোগীদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগে রোগীদের অনেক কষ্ট করতে হয়। জায়গার অভাবে রোগীদের গরমে কষ্ট করতে হয়। নতুন ভবনের কাজ শেষ হলে রোগীরা খোলামেলা জায়গা পাবেন। তারাও লোকবল বেশি পাবেন। রোগীদের বেশি বেশি সেবা দিতে পারবেন। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। 

পাঁচটি উপজেলা, তিনটি পৌরসভা আর ৪২টি ইউনিয়ন নিয়ে রাজবাড়ী জেলার জনসংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। এ জেলার বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। এদের অসুখ বিসুখে রাজবাড়ীর বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। সদর হাসপাতালটি তাদের ভরসাস্থল। ১০০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু চিকিৎসার সব সুবিধা না থাকায় একটু জটিল রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢাকা অথবা ফরিদপুর। জেলার মানুষের চিকিৎসাসুবিধা বাড়ানোর কথা ভেবে ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ জন্য হাসপাতালের পূর্বদিকে আটতলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এটি বাস্তবায়ন করছে রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগ। ২০২০ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।

গাইবান্ধায় দুর্গত এলাকার পানি নেমেছে, ঘরে ফিরছেন বন্যার্তরা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০১ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০১ এএম
গাইবান্ধায় দুর্গত এলাকার পানি নেমেছে, ঘরে ফিরছেন বন্যার্তরা
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধার চার উপজেলায় বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। জলমগ্ন এলাকাগুলোয় দেখা যাচ্ছে ক্ষতচিহ্ন। নদী-তীরবর্তী এলাকার তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি আবার জেগে উঠছে। পানি নেমে যাওয়ায় ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বানভাসি মানুষ।

তবে বন্যাকবলিত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামাঞ্চলে এখনো খাবারের সংকট রয়েছে। বাড়িঘরে পয়োনিষ্কাশনের দুরবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে পানিবাহিত রোগে ভোগান্তিতে নারী-শিশু ও কিশোরীরা। ত্রাণের চাল ও শুকনো খাবার ঠিকমতো না পাওয়ার অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। বন্যায় যুদ্ধ করা ক্লান্ত মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের ৭০ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছিল। এসব এলাকার রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্য খামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। তাদের মাঝে ৩৮৫ টন চাল ও ৩ হাজার ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

সরেজমিন বালাসীঘাট এলাকার ভাষারপাড়া, সৈয়দপুর, কাউয়ারহাটে দেখা গেছে, বসতবাড়ি থেকে সদ্য বন্যার পানি নেমে গেছে। উঠানে এখনো কাদা।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, নষ্ট হয়েছে টয়লেট। ঘরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে। ঘরের পিড়ালি ভেঙে গেছে। লোকালয় থেকে পানি নদীতে নেমে গেছে। নদীর পানি দক্ষিণের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, জেলার প্রধান সব নদ-নদীর পানি এক সপ্তাহ থেকে কমতে শুরু করেছে। অনেক চর জেগে উঠেছে। কিছু চরাঞ্চল থেকে পানি নামতে সময় লাগবে। সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দুর্গত এলাকার সব পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। জেলায় আপাতত আর পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই। 

এর আগে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ৩ জুলাই থেকে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়ার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তিস্তা, ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জুয়েল মিয়া জানান, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। চার উপজেলার দুর্গত এলাকায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বন্যাদুর্গত একটি মানুষেরও না খেয়ে থাকার সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার শনিবার চট্টগ্রামে কারফিউ বিরতি ১৪ ঘণ্টা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২২ এএম
শনিবার চট্টগ্রামে কারফিউ বিরতি ১৪ ঘণ্টা
ছবি: খবরের কাগজ

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আজ (শনিবার) কারফিউ বিরতি থাকবে ১৪ ঘণ্টা। সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরতি দিয়ে পরবর্তী ১০ ঘণ্টা কারফিউ বলবৎ থাকবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র কাজী তারেক আজিজ। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, শনিবার নগরীতে ১৪ ঘণ্টা কারফিউ বিরতি থাকবে। এরপর থেকে পুনরায় কারফিউ চলবে। পরের দিনের সিদ্ধান্ত শনিবার সন্ধ্যায় জানানো হবে।’

এর আগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বিরতি ছিল। তার আগের দুইদিন সকাল ছয়টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতি ছিল। 

চট্টগ্রামে শুরুতে ১৯ জুলাই থেকে তিন দিন কারফিউতে কড়াকড়ি ছিল। এই তিন দিন বিরতি ছিল মাত্র দুই ঘণ্টা। পরে ধীরে ধীরে বিরতি বাড়ানো হয়।

মনির/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তনি চালু হলেও স্বাভাবিক হয়নি কার্যক্রম

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৮ এএম
আমদানি-রপ্তনি চালু হলেও স্বাভাবিক হয়নি কার্যক্রম
ছবি : খবরের কাগজ

কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্নে চার দিন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। তবে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় পণ্য বেচাকেনা হচ্ছে না। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন পাঁচ হাজার শ্রমিক। আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, চার দিনে প্রায় ২৫ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন, বেচাকেনা বন্ধ ও ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক এলেও ইন্টারনেট না থাকায় পণ্য খালাস করা যায়নি। ফলে খরচ বেড়েছে। ছিল না ব্যাংকিং সুবিধা। সব মিলে রাজস্বের সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদেরও। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে পরিবহনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। আন্দোলনের পরিস্থিত খারাপ হওয়া সঙ্গে সঙ্গে বেচাকেনা কমে যায়। একপর্যায়ে কারফিউ জারি করে সরকার। তার আগে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট। ফলে গত শনিবার বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যাংকে আর্থিক লেনদেন করতে না পারায় নতুন করে এলসি খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে আগের করা এলসির পণ্য (পাথর) এলেও ইন্টারনেটের অভাবে তথ্য নিশ্চিত হতে না পারায় সেসব পণ্য খালাস করা যায়নি। ফলে দীর্ঘসময় চালক-শ্রমিকসহ পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো অবস্থান করতে হয়।

বুধবার বন্দর চালু হলেও সড়ক যোগাযোগও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় এখন পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে কিছু শ্রমিক কাজ পেলেও বেশির ভাগ এখনো বেকার সময় পার করছেন। বন্দরের শ্রমিক শাহজালাল মিয়া বলেন, ‘শ্রমিকরা দিন আয় করে দিন চালায়। কাজ ছিল না আয় ছিল না। ঋণ, ধারকর্জ ছাড়া বাঁচার উপায় নাই।’ 

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আবু তাহের ফরাজী বলেন, বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বড় সমস্যায় পড়েছেন। একদিকে ইন্টারনেট নাই। পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। ব্যাংকিং করার সুযোগ নেই। অন্যদিকে সড়কে ট্রাক চলাচল করতে না পারায় কেনাবেচা বন্ধ ছিল। সব মিলে আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরকার রাকীব আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সুযোগ ছিল না। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরাও কর্মহীন হয়ে পড়েন। তবে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’ 

সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো. আতিকুল ইসলাম ইসলাম বলেন, ‘কারফিউর কারণে গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় ২৫ লাখ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বুধবার থেকে বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়েছে। তবে এখনো পুরোদমে বা স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। সড়ক যোগাযোগ ভালো থাকলে এ অবস্থা কেটে যাবে।’

গাইবান্ধায় বেড়েছে সবজির দাম, স্বস্তি নেই ব্রয়লার মুরগিতেও

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
গাইবান্ধায় বেড়েছে সবজির দাম, স্বস্তি নেই ব্রয়লার মুরগিতেও
ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট-বাজারে অস্বাভাবিক হারে চালসহ সবজির দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও সবজির দাম। পাশাপাশি আদা, পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও কারফিউ আতঙ্কে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে জিনিসপত্রের দাম আরও বেশি। ফলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, আগের থেকে গত এক সপ্তাহে বেচাকেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নানা দামে চালসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বেচাকেনার চিত্র। প্রতি কেজি মোটা চাল ৪০ থেকে ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, আদা ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা ও পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১২০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, মসুর ডাল ১০৪ থেকে ১৫০ টাকা, সোয়াবিন তেল ১৬৭ থেকে ১৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

শহরের হকার্স মার্কেটে যান রতন মিয়া (৫০)। তার বাড়ি সদর উপজেলার ফলিয়া গ্রামে। তিনি একটি বিদ্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরি করেন। রতন মিয়া বলেন, ‘অল্প বেতনের চাকরি। যা বেতন পাই তা দিয়ে কোনো একরকম সংসার চলে। বেতনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে খরচ করি। কিন্তু চাল কিনতে এসে অবাক হলাম। প্রতি কেজি চালে ৩-৫ টাকা বেড়েছে। কারফিউর কারণে এ মাসে অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে। এ জন্য ঋণ করতে হবে।’

একই মার্কেটে আসা শহরের সুখনগর এলাকার চাকরিজীবী হোসেন আলী বলেন, ‘আমরা চাকরিজীবী। সারা বছর চাল, ডাল, সবজি কিনে খেতে হয়। যে টাকা নিয়ে বাজারে কেনাকাটা করতে এলাম, এসে দেখি দাম বেশি। বাধ্য হয়ে কয়েক কেজি চাল কম কিনলাম। সবজিও কম নিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। কিন্তু এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’

এই বাজারের চাল ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চালের দাম বাড়াইনি। বেশি দামে চাল কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

কাঁচা সবজি বিক্রেতার একই ভাষ্য। এই বাজার থেকে শহরের পুরাতন বাজারে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেল। পুরাতন বাজারে আসা সদর উপজেলার খোলাহাটি গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, ‘পাইকারি বাজারে এলাম। ভাবলাম দাম একটু কম পাব। কিন্তু ব্রয়লার মুরগি, মসুর ডাল, আলু, রসুন, সোয়াবিন তেল বেশি দামে কিনতে হলো। প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে দেখলাম।’

বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী সাজু মিয়া বললেন, ‘এখন কারফিউ চলছে। ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। আমরা বেশি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করছি। বিক্রিও অনেক কম।’

গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর রহমান বলেন, ‘কোনো জিনিসের দাম বৃদ্ধির কারণ নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মালবাহী পরিবহন চলছে। দাম বাড়ানোর প্রশ্নই উঠে না। কারফিউ দোহাই দিয়ে যাতে কেউ দাম বাড়াতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আফসানা পারভীন বলেন, ‘প্রতিদিনই বাজার মনিটর এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত দামেই ব্যবসায়ীদের পণ্য বেচাকেনা করতে বলা হচ্ছে।’