শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ
শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) ও শুক্রবার এই চাল বিতরণ করা হয়। প্রতি কার্ডে ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ৬৫ থেকে ৭০ কেজি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় জেলে ও পরিষদের একাধিক মেম্বারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ কার্ড বিতরণ করেছেন। বিএনপি নেতারা তাদের পছন্দের মানুষজনকে এ কার্ড দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন জেলেরা। অনেকে নিবন্ধিত জেলে না হলেও তাদের স্লিপের মাধ্যমে এ চাল দেওয়া হয়েছে, আর নিবন্ধিত অনেক জেলেরা এ চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার কাঁচিকাটা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে চাল দেওয়া হলেও সেখানে নেই কোনো চাল পরিমাপের যন্ত্র। বালতি করে চাল পরিমাপ করে দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় স্থানীয়রা জানান, জেলেদের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। জনপ্রতি ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেওয়া হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ কেজি করে। এ নিয়ে স্থানীয় জেলেদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জেলেই স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। এ অনিয়মের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব লুৎফর রহমান জড়িত রয়েছেন বলে জানান অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে বলেন, ‘যারা জেলে না, তাদের জেলে কার্ড দেওয়া হয়েছে। আপনারা সাংবাদিকরা যতক্ষণ সামনে ছিলেন, ততক্ষণ সঠিকভাবে চাল দিয়েছে। আপনারা চলে গেলে এ চাল অর্ধেকে নেমে আসে।’
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার আলম দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে আমাদের পরিষদে কোন মিটিং ডাকা হয়না। বিএনপির লোকজন মিলে পরিষদের কার্ড বিতরণ করে। প্রত্যেক জেলেকে ৩৫ কেজি করে মোট ৭০ কেজি চালের মত দিয়ে থাকে।’
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘সঠিক পদ্ধতিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। চাল বিতরণে কোন অনিয়ম নেই।’
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, ‘জেলেদের চাল কম দেওয়ার সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজিব হোসেন/সুমন/