ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে মৃত হাতি উদ্ধার

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম
গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে মৃত হাতি উদ্ধার
ছবি : খবরের কাগজ

গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে এক হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে রাজেন্দ্রপুর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ২নং গেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে হাতির মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বনবিভাগের কর্মকর্তারা।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মহাসড়কের পাশে হাতির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে আমাদের বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পাই, মৃত হাতির মাথায় ক্ষত চিহ্ন আছে, দাঁতগুলো উঠিয়ে নিয়ে গেছে। 

ইতোমধ্যে, পুলিশের একটি ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের সদর থানা পুলিশ ও টুরিস্ট পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে আছেন। পুলিশের ফরেনসিক টিম তথ্য সংগ্রহের পর ভেটেনারি সার্জন ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভেটেনারি সার্জন যৌথভাবে পোস্টমর্টেম করবে। তারপর হাতির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, অন্য কোথাও হাতির মৃত্যু এখানে এনে ফেলে রেখে গিয়েছে। তদন্তের পর এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএ/

প্লাস্টিক দৈত্য-দানব হয়ে ফিরে আসছে

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০৬ এএম
প্লাস্টিক দৈত্য-দানব হয়ে ফিরে আসছে
খবরের কাগজ

প্লাস্টিক মানুষের জন্য দৈত্য-দানব হয়ে ফিরে আসছে বলে মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা। 

সোমবার ( ২ জুন) ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তারা। 

‘প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় টেকসই উদ্ভাবন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, ‘ধীরে ধীরে প্লাস্টিক মানবজীবনকে গ্রাস করে ফেলছে। মরণব্যাধি ক্যানসারসহ জটিল সব রোগ নিয়ে ধরা দেবে আমাদেরই ছুড়ে ফেলা প্লাস্টিক। তাই ছোট থেকে বড় সবাইকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে। বিশেষ করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। আমরা এগুলো বর্জন করতে না পারলে সামনে অনিশ্চিত, অনিরাপদ এক ভবিষ্যৎ উঁকি দিচ্ছে।’ 

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) নুরুল্লাহ নূরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জমির উদ্দিন।

চট্টগ্রামে মসলার বাজার: পাইকারিতে কমলেও খুচরায় ঝাঁজ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৫৮ এএম
চট্টগ্রামে মসলার বাজার: পাইকারিতে কমলেও খুচরায় ঝাঁজ
বিক্রির জন্য এক বিক্রেতা মসলা ওজন করছেন। চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকার ফইল্যাতলী বাজার থেকে তোলা ।খবরের কাগজ

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। চট্টগ্রামে ভোগ্যপণ্যের বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে মাসখানেকের বেশি সময় ধরে নিম্নমুখী মসলা পণ্যের দাম। তবে এর প্রভাব খুচরা বাজারে না পড়ায় সাধারণ ক্রেতারা সুফল পাচ্ছেন না। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে খুচরা পর্যায়ে বাড়তি অর্থ গোনায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। 

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যবসায়িক পরিবেশ ভালো থাকা এবং বিশ্ববাজারে মসলা পণ্যের দাম কমায় এবার মসলার আমদানি বেড়েছে। এ কারণে খাতুনগঞ্জে এ বছর সরবরাহ ভালো থাকায় ঈদের আগে মসলার বাজার চড়া হয়নি। কিন্তু এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়ছে না।  

খাতুনগঞ্জে বর্তমানে প্রতি কেজি গোলমরিচ ১ হাজার ৪০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২৪০, জয়ত্রী ২ হাজার ৬৫০, জিরা ৬০০, দারুচিনি ৩৯০, ধনে ১৫০, স্টার ৭৮০ ও এলাচ ৪ হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া পাইকারি এই বাজারে প্রতি কেজি শুকনা মরিচ মানভেদে ১২০ থেকে ১৭০ টাকা, ভারতীয় মরিচ ২১০ থেকে ২৫০, দেশি হলুদ ১৯০ থেকে ২০০, ভারতীয় হলুদ ২৩০, তেজপাতা ১৩০ থেকে ১৪০, মেথি ১২০, কালিজিরা ৩৭০ ও জায়ফল ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তা ছাড়া পাইকারি বাজারটিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আকারভেদে ৪৫ টাকা, চায়না রসুন ১৩০ ও কেরালা আদা ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম অনেক কম। এবার দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন ও সরবরাহ বেশ ভালো। পুরো বাজারে দেশি পেঁয়াজ রাজত্ব করছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আদা, রসুনসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের আমদানি ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তাই এবার কোরবানির মৌসুমে মসলা পণ্যের দাম না বেড়ে উল্টো কমে গেছে।’ 

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘শুধু মসলা পণ্য নয়, খাতুনগঞ্জে অধিকাংশ পণ্যের দাম অনেকটাই নিম্নমুখী। পর্যাপ্ত আমদানি ও সরবরাহের কারণে সরবরাহ ভালো থাকায় এবার দাম বাড়েনি। সে তুলনায় আমাদের এখানে বেচা-কেনা কম।’ 

এদিকে পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গোলমরিচ ১ হাজার ১০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০, জয়ত্রী ৩ হাজার ৩০০, জিরা ৭৫০, দারুচিনি ৫৮০, ধনে ১৬৫ ও এলাচ ৪ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা, চায়না রসুন ১৬০ ও কেরালা আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরের উত্তর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘খুচরা বাজারে সব ধরনের মসলা পণ্যের দাম বাড়তি। এভাবে সুযোগ পেয়ে বাড়তি দাম নিয়ে ভোক্তাকে ঠকানোর কোনো মানেই হয় না।’  

নগরের হালিশহর এলাকায় আল মদিনা স্টোরের মালিক মো. শোয়েব বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে মসলা পণ্য কিনে আনতে গাড়ি ভাড়া, শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়। আমাদের সীমিত লাভ করতে হয়। তাই পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরায় সব সময় পণ্যের দাম একটু বাড়তি থাকে।’ 

উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮০ টন মসলা পণ্য আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে রসুন ৯৯ হাজার ৮৫৮ টন, এলাচ ১ হাজার ৬১৪, দারুচিনি ১০ হাজার ৫৪৩, জিরা ৩ হাজার ৭০২, লবঙ্গ ২ হাজার ১৫৪, জয়ত্রী ২৯০, কালিজিরা ৭, গোলমরিচ ১ হাজার ৯, মেথি ৭২, আদা ২১ হাজার ১৯, পেঁয়াজ ১৪ হাজার ৬৩ ও শুকনো মরিচ ১৭৯ টন রয়েছে। 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, শুধু মসলা পণ্য নয়। পাইকারি বাজারে যেকোনো পণ্যের দাম কমলেও এর প্রভাব খুচরা পর্যায়ে পড়ে না। যথাযথ বাজার তদারকি ব্যবস্থা না থাকায় খুচরা ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফার সুযোগ পাচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘খুচরা দোকানের সংখ্যা তো কম নয়। তবুও আমরা পাইকারি, খুচরা পর্যায়ে আমাদের সাধ্যমতো অভিযান পরিচালনা করছি। কেউ প্রতারণা বা হয়রানির শিকার হলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে পারেন। আমরা অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’  

মাটির গন্ধে বেড়ে ওঠা জীবন

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৩৬ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪২ এএম
মাটির গন্ধে বেড়ে ওঠা জীবন
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নিজমেহার গ্রামের পালপাড়ায় ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। খবরের কাগজ

একসময় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নিজমেহার গ্রামের পালপাড়া ও রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রসন্নপুর পালপাড়া ছিল মৃৎশিল্পের জীবন্ত নিদর্শন। ঘরের কোণে কোণে মাটির কলস, হাঁড়ি-পাতিল, প্রদীপ, খেলনা, সবখানেই ছিল মাটির ছোঁয়া। আজ সেই শিল্পের আলো নিভু নিভু প্রায়। কিন্তু হার মানেননি কিছু সংগ্রামী শিল্পী। এখনো এই প্রাচীন ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নিজমেহার গ্রামের মনি রানী পাল (৪৬) প্রায় তিন দশক ধরে রেখেছেন মৃৎশিল্পের এই প্রাচীন পেশা। একই গ্রামের সুভাষ পাল (৬৬) ও কুমেশ্বর পাল (৬৮) অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত আছেন। তারা শুধু কাজই করছেন না, এককভাবে বহন করছেন একটি সংস্কৃতির উত্তরাধিকার।

একই পাড়ার আরও ২০টি পরিবার, যাদের মধ্যে আছেন দুলাল পাল, নেপালী রানী পাল, মঞ্জু রানী পাল ও শেফালী পাল। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা ধরে রেখেছেন পূর্বপুরুষের এই ঐতিহ্যবাহী পেশা। অথচ একসময় এই পাড়ার প্রায় ৩০০টি পরিবার মাটিরসামগ্রী তৈরি ও বিপণনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল।

মৃৎশিল্পী সুভাষ পাল বলেন, ‘জন্ম থেকেই যেন মাটির গন্ধ লেগে আছে শরীরে। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে থেকে কাজ শিখেছি, কাঁধে করে মাটির হাঁড়ি-বাটি নিয়ে বিক্রি করেছি ধান, চাল বা টাকার বিনিময়ে।’ তিনি জানান, বাঁশঝাড় থেকে সংগ্রহ করা হতো কাঁচামাল। কখনো হেঁটে, কখনো ভ্যানে করে ঘুরে বেড়াতেন গ্রামে গ্রামে। পরে রহিমানগর ও ঠাকুরবাজারে দোকান দেন। কিন্তু এখন আর মৃৎপণ্য তৈরি না করে কুমিল্লার বিজয়পুর ও হাজীগঞ্জ বাজার থেকে মাল এনে বিক্রি করছেন তিনি। তার একমাত্র ছেলে সঞ্জয় পাল থাকেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

আরেক মৃৎশিল্পী কুমেশ্বর পাল বলেন, ‘বরিশাল থেকে সামগ্রী এনে হাটে বিক্রি করি। হাটের দিনে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা আয় হলেও, অন্য দিনগুলোতে দুই-চার শ টাকাও রোজগার হয় না।’

এদিকে মনি রানী পাল এখনো নিজের হাতে মাটির সামগ্রী বানান, আগুনে পোড়ান, বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন। কিন্তু এঁটেল মাটির অভাব ও কাঁচামালের দাম বাড়ায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। অর্থাভাবে বাজারের চাহিদা পূরণ করাও কঠিন হয়েছে পড়েছে।

পালপাড়ার উচ্চশিক্ষিত যুবক গণেশ পাল বলেন, ‘একসময় ৩০০ পরিবারের মধ্যে ১৫/২০টি পরিবার এখনো মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত আছে। তবে সব কিছু বাড়ায় তারা চাপে পড়েছেন। নতুন প্রজন্ম এ পেশার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।’

শাহরাস্তি মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঐতিহ্য বাঁচাতে হলে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী, বাজারজাতকরণসহ নানা উদ্যোগ নিতে হবে।’ 

শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মঈনুল ইসলাম কাজল বলেন, ‘আজ মানুষ প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিলের দিকে ঝুঁকছে। ফলে এই শিল্প চরম সংকটে পড়েছে। একে টিকিয়ে রাখতে হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’

বিশেষজ্ঞদের অভিমত ও জিজ্ঞাসা, এই শিল্প শুধু মাটি নয়, এই শিল্পে গাঁথা আছে বাংলার আত্মা, ইতিহাস, সংস্কৃতি। যত দিন এই পরিবারগুলো টিকে থাকবে, ততদিন শাহরাস্তির মাটিতে মৃৎশিল্পের আলো জ্বলবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এই আলো জ্বালিয়ে রাখার দায়িত্ব কি কেবল ওদেরই?

চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তারের ১৮ ঘণ্টা পর আসামির মৃত্যু

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:১৬ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:১৬ এএম
চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তারের ১৮ ঘণ্টা পর আসামির মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার কুড়ালগাছি পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহিরুল ইসলাম (৪০)। মাদকের একটি মামলায় রবিবার (১ জুন) বেলা ১১টায় তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে দর্শনা থানা পুলিশ। 

এরপর তাকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রাত ২টার দিকে তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২টা ২৫ মিনিটে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫টা ৪০ মিনিটে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, সম্ভবত তিনি ‘স্ট্রোক করে’ মারা যেতে পারেন। তবে মহিরুলের স্বজনদের দাবি, ‘পুলিশের নির্যাতনে তিনি মারা গেছেন।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের একটি মাদক মামলায় মহিরুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে দর্শনা থানা পুলিশের সদস্যরা তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, রবিবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটে মহিরুল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ২টা ২৫ মিনিটে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, মহিরুলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। নিহতের ভাই সুবার আলী খবরের কাগজের কাছে দাবি করেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় তার (মহিরুল) শরীরে কোনো আঘাত ছিল না। কিন্তু মৃত্যুর পর হাতে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশই মারধর করে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।’

মহিরুলের ভাতিজি কাজল রেখা বলেন, ‘সাদা পোশাকের দুই পুলিশ সদস্য হঠাৎ ঘরে ঢুকে মহিরুলকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়।’ ভাতিজা মো. গাফ্ফারের অভিযোগ, ‘গ্রেপ্তারের সময় আমি ওয়ারেন্ট দেখানোর অনুরোধ করেছিলাম। তখন আমাকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি হেনস্তা করা হয়।’

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. রকিব সাদী বলেন, ‘কারাগার থেকে আনার সময় মহিরুল অচেতন ছিলেন। তার অবস্থা গুরুতর ছিল। সম্ভবত স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে।’ দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদ তিতুমীর বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর দ্রুত তাকে আদালতে হাজির করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। প্রহারের কোনো সুযোগ ছিল না, এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি।’

এদিকে সোমবার (২ জুন) দুপুর ১২টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল শেষে লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নান্দাইলে কৃষককে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় গাছে

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম
নান্দাইলে কৃষককে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় গাছে
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক কৃষককে হত্যার পর লাশ আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। 

সোমবার (২ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের চর মহেশকুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত মো. সুজন মিয়া (২৮) কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চর জামাইল গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে।

বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন। 

তিনি বলেন, ‘রবিবার (১ জুন) রাতের যেকোনো সময় সুজন মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এরপর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশটি চরমহেশকুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে নিয়ে এসে আমগাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঝুলন্ত লাশটি দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।’

ওসি আরও বলেন, ‘নিহত সুজন মিয়ার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’