বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নির্বাচনে সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষকের কার্ড না দিয়ে ‘একশ সাংবাদিক হইয়া গেছে, নির্বাচনে আর সাংবাদিক লাগবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আমতলী উপজেলা নির্বাচন ও রিটানিং কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকরা পর্যবেক্ষকের কার্ডের আবেদন নিয়ে গেলে তিনি এমন মন্তব্য করে অফিস থেকে বেরিয়ে যান।
তার বক্তব্যের এমন কোন বিধান বা কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং একজন অফিস সহকারীকে দেখিয়ে বলেন, 'এটাও কি আমি বলবো, যার কাছে ইচ্ছা জিজ্ঞেস করেন'।
পর্যবেক্ষকের কার্ড নিতে এসে বিড়ম্বনায় পড়েন খবরের কাগজ, ঢাকাপোস্ট, দীপ্ত টেলিভিশন, বার্তা টুয়েন্টিফোর, দ্যা ফিনান্সিয়াল পোস্টসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধি।
বার্তা টোয়েন্টিফোরের সোহাগ হাফিজ বলেন, এই ইউনিয়ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হত্যা মামলায় জেলেও আছেন। সহিংসতার শঙ্কা রয়েছে এখনও। আবার ঘুষ নিয়ে পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগেরও অভিযোগ রয়েছে আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে। হয়তো তাই মূলধারার গণমাধ্যম কর্মীদের পর্যবেক্ষকের কার্ড দিতে চাচ্ছেন না এই কর্মকর্তা।
এ বিষয় জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হাই আল হাদী খবরের কাগজকে বলেন, ১০০ সাংবাদিক কার্ড পেয়েছেন বলে অন্যরা পাবেন না এমন কোন বিধান নেই। আপনারা বসেন, আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি।
বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুসারে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হবে।
আমতলী সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে এ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান ঘোড়া প্রতীকের মোতাহার উদ্দিন মৃধা ও নির্বাচনী সহিংসতায় দায়ের করা হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আটোরিকশা প্রতীকের নয়ন মৃধার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানান স্থানীয় ভোটাররা।
আমতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটগ্রহণ উপলক্ষে নয়টি ভোট কেন্দ্রে ২৩ হাজার ৩০০ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে সাত স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিন প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আনসার, র্যাব, স্টাইকিং ফোর্স, নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষন টিম ও প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
মহিউদ্দিন অপু/এমএ/