ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ
ছবি : খবরের কাগজ

বিগত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সিলেট জেলার কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সুরমা নদী অন্য পয়েন্ট ও বাকি সব নদীতে পানি বাড়লেও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও আপাতত বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। তবে যেহেতু উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়ে, তাই সবসময় বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

এদিকে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। তাই আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। এই আকস্মিক বন্যায় উপজেলার নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ফুলবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়, লক্ষ্মীপুর, আমবাড়ী, ঝিঙ্গাবাড়ী, কাঁঠালবাড়ী ও নলজুরী হাওর প্লাবিত হয়। তবে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার নিচে চলে যায়। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য মতে, প্রাক বর্ষাকালে সুরমা নদীর কানাইঘাট এলাকার বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সেখানে গতকাল সকাল ৬টায় ১১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার পানি ছিল। সিলেটে সুরমার বিপদসীমা ৮ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি গত বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ৬ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ১০ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ১১ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ১২ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদী শেওলা এলাকার বিপদসীমা ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ৮ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ৮ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৯ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার। সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট পেয়েন্টে বিপদসীমা হলো ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬টায় পানি ছিল ৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ১১ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৯ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার। সারিগোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা হলো ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬টায় পানি ছিল ৬ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ৮ দশমিক ১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৭ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রাক বর্ষাকালে বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। আর বৃষ্টি হলে নদ-নদীতে পানি বাড়াটাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পানি বাড়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে। যেমন বৃহস্পতিবার বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে সারি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। তবে এখন পানি কমে গেছে। এখন যদি ভারতে বৃষ্টি হয় তাহলে তো পাহাড়ি ঢল আসবেই। তাই আমাদের প্রাক বর্ষাকাল ও বর্ষাকালে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’

অপরদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, যেহেতু প্রাক বর্ষাকাল চলছে তাই এখন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হবে। আগামী পাঁচ দিন সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘পুরোদমে বর্ষাকাল আসতে আর মাস দেড়েক বাকি আছে। এখন প্রাক বর্ষাকাল চলছে। তাই এ সময় প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকবে। আগামী পাঁচ দিন সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।’

সিলেটের সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম
সিলেটের সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি
ছবি : খবরের কাগজ

ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী সাতটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি উপজেলার অবস্থা ভয়াবহ। জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাত উপজেলায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০২ জন বাসিন্দা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। আর আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ৪ হাজার ৮০২ জন। শুক্রবার (৩১ মে) সকাল পর্যন্ত পানিবন্দি ও আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠা লোকজনের সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে জানা গেছে। পানিবন্দিদের তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে সিলেট নগরী। 

সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে চলা সুরমা নদীর পানি বেড়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর থেকে নগরীর তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করে। শেষ রাতে নগরীর সুবহানিঘাট, ঘাসিটুলা, শামিমাবাদ, কানিশাইল, তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, যতরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এসব এলাকার কারও ঘরে হাঁটুপানি, আবার কারও উঠানে হাঁটুপনি প্রবেশ করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর তালতলায় একটি ছড়ার পানি উপচে সিলেটের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ে প্রবেশ করে। তাৎক্ষণিক দমকলের কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেন।

গতকাল নগরীর বন্যায় প্লাবিত সুবহানিঘাট, ঘাসিটুলা, শামিমাবাদ, কানিশাইল, তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, যতরপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বাসা থেকে মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। ঘরের শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাচ্ছেন। যাদের ঘরে পানি উঠেছে তারা খাবার রান্না করতে পারছেন না। কিন্তু বেলা ২টা পর্যন্তও এসব এলাকায় সিলেট সিটি করপোরেশনের কেউ যাননি।

নগরীর সুবহানিঘাট এলাকার নিয়তি দেব বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে ঘরে পানি। ঘরের বেশির ভাগ মালামাল পানিতে ডুবেছে। কিছু আসবাবপত্র এখন আরেকজনের বাসায় নিয়ে রাখছি। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত রান্নাও করতে পারিনি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও পেটে কারোরই এখনো খাবার পড়েনি।’

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ‘এই পুরো এলাকায় প্রায় ৪০০ মানুষ পানিবন্দি আছেন। এখানে অনেক নিম্নবিত্ত পরিবার আছে, যারা কলোনিতে বাস করে। যাদের সম্পদ বলতে কাঁথা, বালিশ, হাঁড়িপাতিল। এসব মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে।’ 

এদিকে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, গতকাল সিলেটের নদনদীর পানি কিছুটা কমেছে। গতকাল সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে অমলসিদ পয়েন্টে ২০৭ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

এ ছাড়া ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি এলাকায় টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভা, ধলাই ও পিয়াইন নদীর বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে পড়ে ওই পাঁচ উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে কুশিয়ারা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বেড়ে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রবেশ করলে এ দুই উপজেলাও বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। 

এদিকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. মখলিছুর রহমান কামরানের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বিকেলে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনস্বার্থে সিলেট সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ, পানি, স্বাস্থ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়। সভায় নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে ওই ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসাসামগ্রী প্রেরণ, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার কাজের জন্য নৌকার ব্যবস্থা, নিম্নাঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্র, উপকেন্দ্রগুলো বন্যার পানিতে যাতে ডুবে না যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা প্রদান, নগরবাসীর জরুরি সেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম চালুসহ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে রান্না করা খাবার পরিবেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়র মখলিছুর রহমান কামরানের সঙ্গে আলোচনা করে জরুরি সভা আহ্বানের নির্দেশনা প্রদান করেন এবং ইতোমধ্যে জরুরি ত্রাণব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া তিনি সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় বিশেষ মোনাজাত-প্রার্থনা করার জন্য নগরবাসীর কাছে অনুরোধ জানান। সিসিক মেয়রের দপ্তর থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে তিন টন চিড়া, তিন টন মুড়ি, গুড়, খাওয়ার পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ওরস্যালাইন কেনা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্যের জন্য ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম (০১৯৫৮-২৮৪৮০০) অথবা ভারপ্রাপ্ত মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

শাকিলা ববি/এমএ/

সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ৬ দিন ধরে নিখোঁজ ৩ জেলে

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ৬ দিন ধরে নিখোঁজ ৩ জেলে
নিখোঁজ তিন জেলে

সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কবলে পড়ে নৌকাসহ ৩ জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। 

শুক্রবার (৩১ মে) তাদের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানান।
 
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকার বাবুর আলীর ছেলে সাইদুর রহমান (৪২), হযরত আলীর ছেলে হায়দার আলী (৩০) ও গোলাম রব্বানীর ছেলে লিফন হোসেন (৩০)।

নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ২৫ মে পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের কোবাদক ফরেস্ট স্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যান তারা। তাদের সঙ্গে আরও একটি নৌকাসহ মোট দুটি নৌকায় ৬ জন জেলে ছিলেন। বনে যাওয়ার দিন শনিবার (২৫ মে) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ হয় পরিবারের সদস্যদের। ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজ স্বজনরা কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা।

তবে তাদের সঙ্গে যাওয়া অপর নৌকার জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের সদস্যদের।

তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তারা জানায়, ওই তিন জেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারাও তাদের খোঁজ করছেন।

কোবাদক স্টেশনের স্টেশন অফিসার মোবারক হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা এমন কোনো খবর পাইনি। তবে আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এজেডএম হাছানুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘সুন্দরবনের মাছ ধরতে যাওয়া তিন জেলে নিখোঁজের খবর পেয়েছি। আমরা যাচাই-বাছাই করছি কতজন গিয়েছিল এবং কতজন ফিরেছে। তথ্য পেলে দ্রুত নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কাজ করবে বন বিভাগ।’

নাজমুল শাহাদাৎ/ইসরাত চৈতী/  

ট্রেন থামিয়ে যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম
ট্রেন থামিয়ে যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন
মানববন্ধনে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ছবি: খবরের কাগজ

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেনসহ চন্দনা কমিউটার খানখানাপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।

শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ১০টা থেকে খানখানাপুর রেলস্টেশনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে এ কর্মসূচি। 

রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন বেলা সাড়ে ১১টায় খানখানাপুর স্টেশনে পৌঁছালে রেললাইনে লাল কাপড় টানিয়ে ট্রেনের সামনে অবস্থান নেন তারা। ১০ মিনিট পর বিক্ষুব্ধরা সরে গেলে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি। 

এ রুটে চলাচল করা তিনটি আন্তঃনগর ও দুটি কমিউটার ট্রেন খানখানাপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবি জানান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধ জনতা।   

মানববন্ধনে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রশিদ মাহাতাব, আতিক আল আলম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ জেলা শাখার সভাপতি মাকসুদুর রহমান শাওন, ঢাকাস্থ খানখানাপুর সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, খানখানাপুর বাজার পরিষদের সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, খানখানাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাউদ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান সৌরভ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খানখানাপুরসহ আশপাশ এলাকার যাত্রীদের ঢাকা যাওয়ার সুবিধার্থে খানখানাপুর রেলস্টেশনে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনসহ সব ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছে অনেক দিন ধরে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বরে একই দাবিতে ট্রেন থামিয়ে কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয় আন্দোলন থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় এ দাবিতে আবার মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেওয়া হয়।’ 

এর পরও যদি এখানে যাত্রাবিরতি না দেওয়া হয়, তা হলে আবার তারা পরবর্তী সময়ে মানববন্ধনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।

সুমন বিশ্বাস/ইসরাত চৈতী/ 

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে শিয়াল, দেরিতে নামল ফ্লাইট

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে শিয়াল, দেরিতে নামল ফ্লাইট
সৈয়দপুর বিমানবন্দর

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে শিয়ালের ছোটাছুটির কারণে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ২৫ মিনিট দেরিতে অবতরণ করেছে। 

শুক্রবার (৩১ মে) সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট (ড্যাশ-৮ ডি) সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইটটি নামানোর সময় পাইলট রানওয়েতে একটি শিয়ালকে এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করতে দেখেন। এ পরিস্থিতিতে ফ্লাইটটি অবতরণ না করে বিমানবন্দরের ওপরে আকাশে চক্কর দিতে থাকে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পাইলট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা শিয়ালটি তাড়িয়ে দেন। এরপর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২৫ মিনিট পর পৌনে ৯টার দিকে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।

ফ্লাইটের যাত্রী আতিকুল ইসলাম বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করতে গিয়ে পাইলট উড়োজাহাজটি আবার ওপরে তোলেন। এরপর ২৫ মিনিট ধরে আকাশে চক্কর দিতে থাকেন। পরে যাত্রীরা জানতে পারেন বিমানবন্দর রানওয়েতে নামার সময় একটি শিয়াল নজরে আসায় পাইলট ফ্লাইটটি অবতরণ না করে এভাবে চক্কর দিচ্ছিলেন।

সুপ্লব কুমার ঘোষ খবরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি বড় ধরনের কিছু না। ঘটনাটি জানার পর নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মমিনুর আজাদ/পপি/

চট্টগ্রাম বন্দরে আরটিজি চাপায় নিহত ১

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরে আরটিজি চাপায় নিহত ১

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট ‘রাবার টায়ার গ্যান্ট্রিক্রেন’ (আরটিজি) চাপায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেল ৫টার দিকে বন্দরের এনসিটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. আনিস (২৩) ট্রেইলারের (পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়ি) হেলপার (সহযোগী) ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকার বাসিন্দা। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক খবরের কাগজকে জানান, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট আরটিজি চলাচলের পথে মানুষ যাওয়ার কথা নয়। হয়তো অন্যমনস্ক হয়ে আরটিজির পথে চলাচলের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে। আহতাবস্থায় তাকে বন্দর অ্যাম্বুলেন্সযোগে শ্রমিক হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/