রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে সোহান নামে এক তরুণকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর গোদাগাড়ীর প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেনকে পেয়ে স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে অবরুদ্ধ এএসআই আনোয়ারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
গতকাল শনিবার (৪ মে) রাত ৮টার দিকে উপজেলার গোগ্রাম বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার সোহান উপজেলার গোগ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মুর্ত্তজার ছেলে।
‘অপহরণের শিকার’ সোহান বলেন, ‘শনিবার রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলাম। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে চারজন এসে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার মোবাইল কেড়ে নেন। এরপর নাম জিজ্ঞাসা করেন। পরিচয় বলার পর জোর করে আমাকে মোটরসাইকেলে তুলে নেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আমার হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেন। এরপর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।’
সোহানের দাবি, ‘তারা আমাকে বলেন, তোর বাবাকে কল কর। দুই লাখ টাকা নিয়ে আনতে বল। টাকা না পেলে মাদক মামলায় চালান করব। এ সময় আমার মোবাইলে অন্য নম্বর থেকে কল আসছিল। কিন্তু তারা রিসিভ করতে দেননি। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসন্তপুর-খেতুরধামের রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে যান। সেখান থেকে আমি গোগ্রাম বাজারে চলে আসি।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, ‘ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সোহানকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই বাজারের লোকজন বিষয়টি দেখেছে। এরপর এএসআই আনোয়ার সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে গেলে লোকজন সোহানের খোঁজ জানতে চান। তিনি সোহানের খোঁজ না দিলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে রাখেন। এ সময় তাদের আটক করার হুমকি দিলে উত্তেজিত জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে গোদাগাড়ী সার্কেলের এএসপি সোহেল রানা থানার ওসিকে নিয়ে সেখানে যান। পরে তারা স্থানীয়দের শান্ত করে আনোয়ারকে উদ্ধার করেন।’
তিনি বলেন, ‘সোহানকে কারা অপহরণ করেছে সেটি তদন্ত করে বের করার জন্য পুলিশকে বলেছি। এর সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছি।’
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, ‘কারা সোহানকে তুলে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি করেছেন সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’