ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। গত রবিবার সকাল থেকে সোমবার (৬ মে) সকাল পর্যন্ত দুজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে শিশুসহ তিনজন ভর্তি রয়েছেন।
এর আগে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর পুরুষ, নারী ও শিশুসহ ২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। পরে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু রোগী ছিল না। তবে বর্তমানে আবারও ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
মমেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফরহাদ হোসেন হীরা খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে কোনো রোগী ছিল না। এখন আবারও ডেঙ্গু আতঙ্ক শুরু হয়েছে। এক এক করে রোগী ভর্তি হতে শুরু করেছে। এখন থেকে সবাই সচেতন না হলে রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে।’
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে মশারির ভেতরে রাখা হচ্ছে। এখন রোগী কম থাকায় শয্যা পেয়েছে। রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেলে বারান্দার মেঝেতে শুয়েও চিকিৎসা নিতে হয়। তখন চিকিৎসারা যথাযথ চিকিৎসা দিতে হিমশিম খান। ফলে আগে থেকেই সচেতনতার বিকল্প নেই।’
এদিকে নগরবাসীরা জানান, ড্রেনের নির্মাণকাজ চলমান থাকায় অনেক এলাকায় পানি আটকে থাকছে। অপরিচ্ছন্ন ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে মশার উপদ্রব বাড়ছে। বর্তমানে মশার জ্বলায় অতিষ্ঠ তারা।
নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েল জালানো ছাড়া বাসায় থাকা যাচ্ছে না। দিনের বেলায়ও অনেক সময় মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হয়। জানালা বন্ধ না রাখলে অসংখ্য মশা একসঙ্গে ঘরে ঢোকে।’
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাইনুল মিয়া বলেন, ‘এই ওয়ার্ডটি সবচেয়ে অবহেলিত। উন্নয়নকাজ একেবারেই কম। এই ওয়ার্ডের যেসব জায়গায় মশার উৎপত্তি হয়, সেসব জায়গায় মশক নিধনের ওষুধ ছিটায়নি সিটি কর্তৃপক্ষ। ফলে ঘর থেকে বেড়িয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হয়।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘মশার উৎপত্তিস্থল ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফগার মেশিন দিয়ে কীটনাশক (অ্যাডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইড) দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের চেষ্টার কমতি নেই। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও নিজেদের আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।’