যশোরের সেলিম বিশ্বাস (৩০) হত্যার ২১ বছর পর রায়ে ১৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ মে) বিকেলে যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এই রায় দিয়েছেন।
সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় মামলার সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল পিপি হাসনাত মোস্তফা রাজা।
আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের টিটো, পুলতাডাঙ্গা গ্রামের কাসেম ওরফে আলমগীর, পুকুর বাগডাঙ্গার রুস্তুম আলী, তৈয়ব আলী, ইদ্রিস আলী, হযরত আলী, আজহার আলী, সরদার বাগডাঙ্গার নুরোল গাজী, আব্দুলপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাতিয়ানতলার শহিদুল ইসলাম, পুকুরবাগডাঙ্গার জামির হোসেন, নজরুল ইসলাম ও সরদার বাগডাঙ্গার রহমত আলী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেফাত রেজওয়ান সেতু মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০০৩ সালের ২৮ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে মামলার বাদী সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে সেলিম হোসেন বাড়িতে টেলিভিশন দেখছিলেন। এ সময় আসামি ইদ্রিস আলী তার বাড়িতে আসেন। ১৫-২০ মিনিট পর ইদ্রিস আলী সেলিম বিশ্বাসকে নিয়ে চুড়ামনকাটি বাজারের উদ্দেশে বের হয়ে যান। রাতে বাড়ি ফিরে না আসায়, বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে পরদিন সকালে ইদ্রিস আলী বাড়িতে এসে জানান- সেলিম মারা গেছে।
এই ঘটনায় ২৯ মার্চ অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে সেলিমের বাবা আব্দুস সাত্তার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
এদিকে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই লোকমান হোসেন বিভিন্ন সময় সাতজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তিনি তদন্ত শেষে ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। এর মধ্যে কয়েকজন আসামি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আদালতে জবানবন্দি দেন। কিন্তু জবানবন্দিতে কোনো আসামি নিজের দোষ স্বীকার করেননি। পাশাপাশি পুলিশ দুজনকে নির্যাতন করে আদালতে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে বলে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় ওই আসামিরা তাদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেন।
পরে মামলা চলাকালে বাদীপক্ষের সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হয়। ফলে সব আসামিকে আদালত বেকসুর খালাস দেয়।
এ ব্যাপারে আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রিফাত রেজওয়ান সেতু বলেন, এই মামলার কোনো দেখা সাক্ষী নেই। মোট সাত আসামিকে নির্যাতনের মাধ্যমে পুলিশ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে। যা আইনবহির্ভূত। আর একেকজনের জবানবন্দি একেক রকম।
তিনি আরও জানান, মামলার বাদীপক্ষ এবং সব সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় বিচারক এই মামলার সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
এইচআর তুহিন/ইসরাত চৈতী/অমিয়/