লোকসভা নির্বাচন / পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বিজেপিই । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

লোকসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বিজেপিই

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪ পিএম
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বিজেপিই

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল বিজেপি। রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস পায় ২২ আসন। সর্বভারতীয় দল কংগ্রেস দুটিতে জিতলেও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি- মার্কসবাদী (সিপিএম) কোনো আসনই পায়নি। 

এরপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। বিজেপি লোকসভায় ভালো করলেও সেই ধারা বজায় রাখতে পারেনি বিধানসভা নির্বাচনে। আশাপ্রদ ফল হয়নি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৫টি আসন জিতে আবার সরকার গঠন করে। মমতার দল ২০১৬ সালের চেয়েও ভালো ফল করে। সে বছর তৃণমূল পেয়েছিল ২১১ আসন। তবে ২০১৪ সালের লোকসভার চেয়ে ২০১৯ সালে তৃণমূল ১২ আসন কম পায়। ২০১৪ সালে ৪২টি আসনের মধ্যে মমতার দল পেয়েছিল ৩৪টি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে দেখার বিষয় তৃণমূল তার আসনগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারে কি না।

হালে সিপিএমে একাধিক ইস্যুতে তরুণ ব্রিগেডকে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে সক্ষম হলেও তৃণমূলের এই মুহূর্তে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিই হয়ে উঠেছে, তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 

পূর্বাভাস কী বলছে?
বিবিসির সঙ্গে কথোপকথনে নির্বাচন বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ভালো ফল করতে পারে, অন্যদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস ৩০-৩৫টি আসন পাবে।

বিবিসি জানায়, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দলের টার্গেট ৩৫ বলে জানালেও সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মইদুল ইসলাম মনে করেন না যে বিজেপি তার অবস্থান শক্তিশালী করতে পারবে।

‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে বেরিয়ে এসে ৪২টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হলো- সমালোচকদের এটা প্রমাণ করে দেখানো যে তারা একাই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আটকাতে পারে। যদি দলটি তা করতে পারে, তাহলে দেশের বিরোধী নেতাদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মর্যাদা বাড়বে। তবে তা যদি না করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস, তাহলে নেতাদের দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যেমন তৈরি হবে, তেমনই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য ফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে। 

মনে করা হয়, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির ভালো ফলের অন্যতম কারণ ছিল তৃণমূলবিরোধী ভোট তাদের পক্ষে যাওয়ার ঘটনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মইদুল ইসলামের মতে, ২০১৯ সালে বামদের প্রচুর ভোট বিজেপির দিকে গিয়েছিল এবং এর একটি বড় কারণ ছিল ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অনিয়মের অভিযোগ, যাতে মানুষ খুব ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আরেকটি কারণ ছিল রাজনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি বাম এবং কংগ্রেস। তাই মানুষের সামনে বিকল্প ছিল সীমিত, সে জন্যই বিজেপিকে তারা বেছে নিয়েছিল।

তার মতে, বাম দলগুলোর ভোট এখন আবার তাদের দিকেই ফিরছে, তাই বিজেপি তাদের আসন বাড়াতে পারবে বলে তিনি মনে করেন না। প্রবীণ সাংবাদিক শিখা মুখার্জী বিবিসিকে বলেন, কেউ ভাবেনি যে এত সংখ্যায় বামদের ভোট বিজেপির পক্ষে চলে যাবে।

বামদের কী অবস্থা?
সিপিএম দলের রাজ্য সম্পাদক মোহম্মদ সেলিম বলছিলেন, তাদের কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছিলেন যে ভোটাররা, গত দুই বছরে তাদের একটি অংশ ফিরে এসেছেন। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর যে কয়েকটি উপনির্বাচন হয়েছে, সেগুলোর কথা উল্লেখ করছিলেন, যেখানে বামদের ভোট বেড়েছে।

সম্প্রতি বাম সংগঠন ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আয়োজিত ‘ইনসাফ যাত্রা’ এবং কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে বড় সমাবেশ করাকে বামপন্থিদের জনসমর্থন ফিরিয়ে আনার একটা প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। 

কিন্তু সাংবাদিক শিখা মুখার্জী মনে করেন না যে লোকসভা ভোটে বামদের ভোট ফিরে আসবে। তিনি বলছিলেন সমাবেশের জমায়েতের সঙ্গে ভোটকে মেলানো ঠিক হবে না।

অন্যদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক প্রশান্ত কিশোরের যুক্তি, ক্ষমতার প্রতিটি স্তরে অর্থাৎ পঞ্চায়েত, বিধানসভা ও লোকসভায় তৃণমূলের আধিপত্যও দলের মাথাব্যথার একটা কারণ হয়ে উঠতে পারে। 
বিজেপি সমর্থকরা অবশ্য আশা করেন, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ, বেকারত্ব বা সিএএর মতো ইস্যুগুলো থেকে তাদের দল ফায়দা তুলতে পারবে, আর তার মাধ্যমেই আসনও বাড়বে তাদের। আবার সিএএ বা ৩৭০ ধারা অপসারণ বা রাম মন্দির নির্মাণ নিয়েও তারা তাদের ভোটারদের বলতে পারবেন যে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলো পালন করেছেন।

বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সামনে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উঠলে বারবার শোনা যায় যে এ রাজ্যে দিদির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো শক্তিশালী সংগঠন নেই, বড় জননেতা নেই বিজেপির। আর যারা আছেন, তাদের অনেকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা নেতা। অনেকেই বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিশালী মাঠপর্যায়ের সংগঠনের মোকাবিলা করা বিজেপির পক্ষে সহজ নয়।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অধিকারী ২০২০ সালে তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন। এবার তার ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী, অর্জুন সিং এবং তাপস রায়ও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

মইদুল ইসলাম বলছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কোনো জননেতা বা বড় নেতা নেই। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ পছন্দ করেন না।’

তার যুক্তি, ‘শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূল ছাড়েন, তখন তার পক্ষের জনসমর্থন পুরোপুরি বিজেপির দিকে যায়নি। এর একটি কারণ, সাধারণ মানুষ সহায়তা পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের ওপর নির্ভর করে থাকে। তারা মনে করেন, নতুন কেউ এলে তাদের সঙ্গে আবার নতুন করে বোঝাপড়া করতে হবে।’

বিজেপির কাছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো, রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলমান ভোটারের একটি বড় অংশ তাদের থেকে অনেক দূরে থাকেন। এটি বলা ভুল হবে না যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার পর ওই দূরত্ব কমেনি, বরং বেড়েছে।

ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূল আলাদা লড়ছে, কিন্তু একই সঙ্গে তারা এটিও বলছে যে তাদের লক্ষ্য বিজেপিকে পরাস্ত করা এবং তারা লোকসভা নির্বাচনের পর জোট নিয়ে কথা বলতে পারে। তবে তার প্রয়োজন হবে কি না, তা জানা যাবে ৪ জুন, যেদিন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে। সূত্র: বিবিসি

লোকসভা নির্বাচন আজ ভাগ্য পরীক্ষা রাহুল, রাজনাথ, স্মৃতি, রচনা, লকেটের

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
আজ ভাগ্য পরীক্ষা রাহুল, রাজনাথ, স্মৃতি, রচনা, লকেটের
প্রতীকী ছবি

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার (২০ মে)। ছয়টি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯টি আসনে হবে এই পর্বের ভোট গ্রহণ। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৪টিতে, মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে ১৩টি, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টির মধ্যে ৭টি, বিহারের ৪০টির মধ্যে ৫টি, ওড়িশায় ২১টির মধ্যে ৫টি, ঝাড়খন্ডের ১৪টির মধ্যে ৩টিতে ভোট হবে আজ।

পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগ, বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর ও হুগলিতেও ভোট হবে এই পর্বে।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি এবং লাদাখের একমাত্র আসনটিতেও আজ ভোট গ্রহণ হবে পঞ্চম দফায়। 

এদিন ভাগ্য নির্ধারণ হবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি নেতা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। এই নেতাদের মধ্যে ভাগ্য পরীক্ষার মুখে থাকা সবচেয়ে বড় নাম রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রতিদ্বন্দ্বী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রাদেশিক মন্ত্রী দীনেশপ্রতাপ সিংহ। উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকে এবার প্রার্থী হয়েছেন রাহুল। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (লক্ষ্ণৌ), স্মৃতি ইরানি (আমেথি) এবং পীযূষ গয়াল (মুম্বাই উত্তর)।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ আসনে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, হুগলিতে দুই অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটাররা।

লোকসভার সাত দফার ভোট পর্ব শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। ২৮ রাজ্য ও ৮ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেরে ৯৭ কোটি ভোটারের কাছ থেকে সুষ্ঠু ভোট নিতে নির্বাচন কমিশন সাত দফায় ভোটের আয়োজন করেছে। লোকসভার চতুর্থ পর্বের ভোট হয় গত ১৩ মে। লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে চার দফায় ভোট নেওয়া হয়েছে ৩৭৯ আসনে। বাকি ১৬৪ আসনের মধ্যে আজ ৪৯ আসনের ভোট শেষ হলে বাকি থাকবে ১১৫টি আসন, যা পরবর্তী দুই দফায় সম্পন্ন হবে।

পরীক্ষায় রাহুল, মোদির নতুন চ্যালেঞ্জ কেজরিওয়াল
আজ ভাগ্য নির্ধারণ হবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্মৃতি ইরানির। এই নেতাদের মধ্যে ভাগ্য পরীক্ষার মুখে থাকা সবচেয়ে বড় নাম রাহুল গান্ধী।

রাহুলের মা সোনিয়া গান্ধী ছেলের নামে ভোটারদের কাছে ভোট দেওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছেন। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। আপনারা যেভাবে আমাকে আপনাদের করে নিয়েছেন, তেমনি দয়া করে তাকেও আপনাদের একজন করে নিন। সে আপনাদের হতাশ করবে না।’ 

এই দফার ভোটে মোদির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিহাড় জেল থেকে বেরিয়েই শনিবার পুরোদস্তুর ভোটের প্রচারে নেমে পড়ে তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে জেল থেকে বেরোনোর পর জনতার দরবারে হাজির হন কেজরিওয়াল। তাকে স্বাগত জানাতে উপচে পড়েছিল আম আদমি পার্টির (আপ) কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। সবার মাঝে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের মন থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আপনাদের কাছে আমার একটাই আবেদন, আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে দেশেকে বাঁচাতে হবে। দেশকে একনায়কতন্ত্র থেকে বাঁচাতে হবে। আমি সর্বশক্তি দিয়ে এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়ছি।’

এক বছর আগেও যা অভাবনীয় ছিল, তাই করে দেখিয়েছেন কেজরিওয়াল। একসময় একে অপরের শত্রু হিসেবে বিবেচিত হলেও কংগ্রেস প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে তিনি রোড শো করছেন।

কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি। বিশ্লেষকরা বলছেন, তার প্রচার বিরোধী দলকে চাঙা করবে। যদিও তাতে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে তারা বড় কোনো জয় হাসিল করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় আছে।

কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি রাজধানী দিল্লি এবং উত্তরের রাজ্য পাঞ্জাবের ক্ষমতায় আছে। দুইয়ে মিলে লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে তাদের আসনসংখ্যা মাত্র ২০।

এ ক্ষেত্রে কেজরিওয়াল হয়তো সহমর্মিতাকে কাজে লাগিয়ে কিছু ভোট আদায় করতে পারেন। কিন্তু তা ভোটের ফল উল্টে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে বলেই মনে করেন ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষক রাহুল বর্মা। তবে তারপরও কেজরিওয়াল বিজেপিকে বিব্রত করতে সক্ষম। জেল থেকে বেরোনোর পর জোর প্রচারে নেমে তিনি সরাসরি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করে তার এই সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছেন।

দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কেজরিওয়াল কারাগারে থাকার সময় কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা দিল্লিতে বিশাল প্রতিবাদ সভা করেছেন। আর এখন কেজরিওয়াল কংগ্রেসের প্রার্থীদের জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। এক হাতে কংগ্রেস, অন্য হাতে আম আদমি পার্টির প্রতীক নিয়ে তিনি হরিয়ানায় রোড শো করেছেন। আর কেবল দিল্লি বা হরিয়ানাই নয়, ইতোমধ্যে তিনি উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবেও প্রচার চালিয়েছেন।

আম আদমি পার্টির নেতারা জানিয়েছেন, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র ও বিহার থেকেও ইন্ডিয়া জোটের নেতারা কেজরিওয়ালকে প্রচারে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ সব আরোহী নিহত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:৩০ এএম
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ সব আরোহী নিহত
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সব আরোহী নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২০ মে) ইরানের আধাসরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ অ্যাজেন্সি ও আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মেহর নিউজ বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ সব যাত্রী ‘শহিদ’ হয়েছেন।

আল-জাজিরা জানায়, ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, কিছু মরদেহ এমনভাবে পুড়েছে যে, শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি এবং একই প্রদেশের ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি, হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রু ছিলেন।

রাইসি এবং তার সঙ্গীরা আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এর আগে সকালে দুর্ঘটনাস্থলের ছবি দিয়েছে রয়টার্স। তাতে দেখা যাচ্ছে, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। এটি আগুনে পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটির কেবিন। 

৬৩ বছর বয়সী রাইসি ২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি গতকাল রবিবার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভারজাকান ও জোলফা শহরের মাঝামাঝি ডিজমার জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এমন সময় এ দুর্ঘটনা ঘটল, যখন গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।

> ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!
> ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

অমিয়/

ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:০২ এএম
ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি ও বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে সেখানে ‘জীবিত কাউকে এখনও দেখা যায়নি’ বলে জানাচ্ছে ইরানের সংবাদমাধ্যম। ফলে ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে গেছে।

সোমবার (২০ মে) সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট রাইসি যে হেলিকপ্টারে ছিলেন সেটি পাওয়া গেছে। 

দুর্ঘটনাস্থলের ছবিও দিয়েছে রয়টার্স। তাতে দেখা যাচ্ছে, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। এটি আগুনে পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটির কেবিন। হেঁটে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন বলে জানা গেছে।

অমিয়/

কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৫৪ এএম
কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি
নিহত বিজেপি নেতা আইজাজ আহমাদ শেখ

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে পৃথক দুটি জঙ্গি হামলায় এক বিজেপি নেতা নিহত ও রাজস্থানের জয়পুর থেকে ঘুরতে যাওয়া এক দম্পতি আহত হয়েছেন।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে স্থানীয় এক আসনে ভোটগ্রহণের দুই দিন আগে গত শনিবার এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৮ মে) রাতে প্রথমে পহেলগাঁওয়ে একটি পর্যটক ক্য়াম্পে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় গুরুতর আহত হন জয়পুর থেকে বেড়াতে যাওয়া তাবরেজ এবং তার স্ত্রী ফারহা। এরপর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দ্বিতীয় হামলাটি হয় সোপিয়ানে বিজেপি নেতার বাড়িতে। 

জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় আইজাজ আহমাদ শেখ নামে ওই বিজেপি নেতার।

ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। দলীয় নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বিজেপি।

ভারতে ছয় সপ্তাহব্যাপী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাত পর্বের এ নির্বাচনে চার পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে, আরও তিন পর্ব বাকি আছে। আজ পঞ্চম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৪ জুন ভোট গণনার পর ফলাফল প্রকাশ করা হবে। সূত্র: রয়টার্সের

গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা
ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায় একটি আবেগঘন স্মরণসভার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ সমাপ্তির ১৫ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষের স্মরণসভা বানচালের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারা।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তামিল টাইগার্সকে উদ্দেশ করে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে যারা একটি সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধ করেছিল। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের সভাগুলো অবৈধ হিসেবে গণ্য করে বিধায় তারা এদিন পুরোনো স্মৃতিসৌধগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।

সাবেক যুদ্ধ অঞ্চলগুলো এই ধরনের স্মরণসভাগুলো অনেক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পণ্ড এবং অংশগ্রহণকারীদের ধরপাকড় করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কড়া নজরদারি এবং ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শন সত্ত্বেও শনিবার সভার আয়োজন করা হয়।

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ভুক্তভোগীদের স্মরণ করতে এই আয়োজন করা হয় বলে জানায় তামিলরা। 

টাইগার্সদের সর্বশেষ দুর্গে সামরিক হামলার মাধ্যমে ২০০৯ সালে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। 

জাতিসংঘের ধারণামতে, যুদ্ধের শেষ মাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। বেসামরিক লোকদের ওপর নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য এই সামরিক অপারেশনটি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছিল।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ৪১ বছর বয়সী এক তামিল কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগের দিন এখানে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, এখানে অসংখ্য আহত মানুষ সাহায্যের জন্য কাঁদছিল, দৃশ্যটি আমাকে সারা জীবন তাড়িত করবে।’ 

‘সম্মিলিত ব্যর্থতা’
কয়েক হাজার তামিল যুদ্ধকবলিত গ্রামগুলোতে সফর করে মৃতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করে। এই বছর এই স্মরণসভায় অংশ নেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক প্রধান আগনেস ক্যালামার্ড, যিনি এই ধরনের সভায় অংশ নেওয়া সর্বোচ্চ উচ্চপদস্থ বিদেশি। তিনি তামিলদের পর চলা এই নিধনযজ্ঞকে শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন। 

এ ছাড়া আল-জাজিরাকে পাঠানো এক মেইল বার্তায় তিনি তিন দশক ধরে চলা এই সশস্ত্র সংঘাতে ভুক্তভোগীদের স্বপক্ষে সুষ্ঠু বিচারের জন্য শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।