ঢাকা ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
English

লোকসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বিজেপিই

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বিজেপিই

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল বিজেপি। রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস পায় ২২ আসন। সর্বভারতীয় দল কংগ্রেস দুটিতে জিতলেও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি- মার্কসবাদী (সিপিএম) কোনো আসনই পায়নি। 

এরপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। বিজেপি লোকসভায় ভালো করলেও সেই ধারা বজায় রাখতে পারেনি বিধানসভা নির্বাচনে। আশাপ্রদ ফল হয়নি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৫টি আসন জিতে আবার সরকার গঠন করে। মমতার দল ২০১৬ সালের চেয়েও ভালো ফল করে। সে বছর তৃণমূল পেয়েছিল ২১১ আসন। তবে ২০১৪ সালের লোকসভার চেয়ে ২০১৯ সালে তৃণমূল ১২ আসন কম পায়। ২০১৪ সালে ৪২টি আসনের মধ্যে মমতার দল পেয়েছিল ৩৪টি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে দেখার বিষয় তৃণমূল তার আসনগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারে কি না।

হালে সিপিএমে একাধিক ইস্যুতে তরুণ ব্রিগেডকে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে সক্ষম হলেও তৃণমূলের এই মুহূর্তে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিই হয়ে উঠেছে, তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 

পূর্বাভাস কী বলছে?
বিবিসির সঙ্গে কথোপকথনে নির্বাচন বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ভালো ফল করতে পারে, অন্যদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস ৩০-৩৫টি আসন পাবে।

বিবিসি জানায়, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দলের টার্গেট ৩৫ বলে জানালেও সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মইদুল ইসলাম মনে করেন না যে বিজেপি তার অবস্থান শক্তিশালী করতে পারবে।

‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে বেরিয়ে এসে ৪২টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হলো- সমালোচকদের এটা প্রমাণ করে দেখানো যে তারা একাই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আটকাতে পারে। যদি দলটি তা করতে পারে, তাহলে দেশের বিরোধী নেতাদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মর্যাদা বাড়বে। তবে তা যদি না করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস, তাহলে নেতাদের দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যেমন তৈরি হবে, তেমনই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য ফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে। 

মনে করা হয়, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির ভালো ফলের অন্যতম কারণ ছিল তৃণমূলবিরোধী ভোট তাদের পক্ষে যাওয়ার ঘটনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মইদুল ইসলামের মতে, ২০১৯ সালে বামদের প্রচুর ভোট বিজেপির দিকে গিয়েছিল এবং এর একটি বড় কারণ ছিল ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অনিয়মের অভিযোগ, যাতে মানুষ খুব ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আরেকটি কারণ ছিল রাজনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি বাম এবং কংগ্রেস। তাই মানুষের সামনে বিকল্প ছিল সীমিত, সে জন্যই বিজেপিকে তারা বেছে নিয়েছিল।

তার মতে, বাম দলগুলোর ভোট এখন আবার তাদের দিকেই ফিরছে, তাই বিজেপি তাদের আসন বাড়াতে পারবে বলে তিনি মনে করেন না। প্রবীণ সাংবাদিক শিখা মুখার্জী বিবিসিকে বলেন, কেউ ভাবেনি যে এত সংখ্যায় বামদের ভোট বিজেপির পক্ষে চলে যাবে।

বামদের কী অবস্থা?
সিপিএম দলের রাজ্য সম্পাদক মোহম্মদ সেলিম বলছিলেন, তাদের কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছিলেন যে ভোটাররা, গত দুই বছরে তাদের একটি অংশ ফিরে এসেছেন। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর যে কয়েকটি উপনির্বাচন হয়েছে, সেগুলোর কথা উল্লেখ করছিলেন, যেখানে বামদের ভোট বেড়েছে।

সম্প্রতি বাম সংগঠন ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আয়োজিত ‘ইনসাফ যাত্রা’ এবং কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে বড় সমাবেশ করাকে বামপন্থিদের জনসমর্থন ফিরিয়ে আনার একটা প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। 

কিন্তু সাংবাদিক শিখা মুখার্জী মনে করেন না যে লোকসভা ভোটে বামদের ভোট ফিরে আসবে। তিনি বলছিলেন সমাবেশের জমায়েতের সঙ্গে ভোটকে মেলানো ঠিক হবে না।

অন্যদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক প্রশান্ত কিশোরের যুক্তি, ক্ষমতার প্রতিটি স্তরে অর্থাৎ পঞ্চায়েত, বিধানসভা ও লোকসভায় তৃণমূলের আধিপত্যও দলের মাথাব্যথার একটা কারণ হয়ে উঠতে পারে। 
বিজেপি সমর্থকরা অবশ্য আশা করেন, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ, বেকারত্ব বা সিএএর মতো ইস্যুগুলো থেকে তাদের দল ফায়দা তুলতে পারবে, আর তার মাধ্যমেই আসনও বাড়বে তাদের। আবার সিএএ বা ৩৭০ ধারা অপসারণ বা রাম মন্দির নির্মাণ নিয়েও তারা তাদের ভোটারদের বলতে পারবেন যে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলো পালন করেছেন।

বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সামনে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উঠলে বারবার শোনা যায় যে এ রাজ্যে দিদির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো শক্তিশালী সংগঠন নেই, বড় জননেতা নেই বিজেপির। আর যারা আছেন, তাদের অনেকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা নেতা। অনেকেই বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিশালী মাঠপর্যায়ের সংগঠনের মোকাবিলা করা বিজেপির পক্ষে সহজ নয়।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অধিকারী ২০২০ সালে তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন। এবার তার ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী, অর্জুন সিং এবং তাপস রায়ও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

মইদুল ইসলাম বলছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কোনো জননেতা বা বড় নেতা নেই। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ পছন্দ করেন না।’

তার যুক্তি, ‘শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূল ছাড়েন, তখন তার পক্ষের জনসমর্থন পুরোপুরি বিজেপির দিকে যায়নি। এর একটি কারণ, সাধারণ মানুষ সহায়তা পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের ওপর নির্ভর করে থাকে। তারা মনে করেন, নতুন কেউ এলে তাদের সঙ্গে আবার নতুন করে বোঝাপড়া করতে হবে।’

বিজেপির কাছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো, রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলমান ভোটারের একটি বড় অংশ তাদের থেকে অনেক দূরে থাকেন। এটি বলা ভুল হবে না যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার পর ওই দূরত্ব কমেনি, বরং বেড়েছে।

ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূল আলাদা লড়ছে, কিন্তু একই সঙ্গে তারা এটিও বলছে যে তাদের লক্ষ্য বিজেপিকে পরাস্ত করা এবং তারা লোকসভা নির্বাচনের পর জোট নিয়ে কথা বলতে পারে। তবে তার প্রয়োজন হবে কি না, তা জানা যাবে ৪ জুন, যেদিন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে। সূত্র: বিবিসি

মায়াদের রক্তগুহায় দেহ টুকরো করে মানব বলিদান, মিলছে ভয়ঙ্কর চিহ্ন!

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
মায়াদের রক্তগুহায় দেহ টুকরো করে মানব বলিদান, মিলছে ভয়ঙ্কর চিহ্ন!
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক যুগের প্রথম দিকের মেসোআমেরিকান (মেসোআমেরিকা হলো একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল ও সাংস্কৃতিক এলাকা, যা উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ অংশে শুরু হয় এবং মধ্য আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত) প্রাচীন মায়া সভ্যতা নিয়ে রহস্যের যেন শেষ নেই। এই সভ্যতা তার প্রাচীন মন্দির এবং পরিশীলিত গ্লিফ (মায়া লিপি), শিল্প, স্থাপত্য, গণিত, ক্যালেন্ডার এবং জ্যোতির্বিদ্যা ব্যবস্থার জন্যও বিখ্যাত।

মায়া সভ্যতা আজকের দক্ষিণ-পূর্ব মেক্সিকো, সমগ্র গুয়াতেমালা এবং বেলিজ এবং হন্ডুরাস এবং এল সালভাদরের পশ্চিম অংশ নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে- ইউকাতান উপদ্বীপের উত্তরের নিম্নভূমি এবং সিয়েরা মাদ্রের গুয়াতেমালার উচ্চভূমি, মেক্সিকান রাজ্য চিয়াপাস, দক্ষিণ গুয়াতেমালা, এল সালভাদর এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় সমভূমির দক্ষিণের নিম্নভূমি। 

তাদের বংশধর, যারা সম্মিলিতভাবে মায়া নামে পরিচিত, তাদের সংখ্যা বর্তমানে ৬০ লাখেরও বেশি। তারা ২৮টির বেশি মায়ান ভাষায় কথা বলেন এবং তাদের পূর্বপুরুষদের মতো প্রায় একই অঞ্চলে বাস করেন।

এবার গুয়াতেমালার মায়াদের ভূগর্ভস্থ একটি গুহার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে পাওয়া গেছে শত শত মানুষের হাড়। যা সভ্যতাটির মানব বলিদানের অদ্ভুত এবং ভয়ঙ্কর ধর্মীয় রীতির ইঙ্গিত দেয়।

এটি কুয়েভা দে সাংগ্রে বা ‘রক্তগুহা’ নামে পরিচিত। এটি গুয়াতেমালার পেটেনের দোস পিলাসের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের নিচে অবস্থিত। এটি এই অঞ্চলের এক ডজনেরও বেশি গুহার মধ্যে একটি, যা  খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ থেকে ২৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মায়ারা ব্যবহার করতেন।

নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে রক্তের গুহা থেকে মানুষের হাড়ের একটি বিশাল সংগ্রহের সন্ধান পাওয়া যায়, যার মধ্যে অনেকগুলোতে মৃত্যুর সময় আঘাতের প্রমাণ মিলেছে।

সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, এখানকার দেহাবশেষ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রায় দুই হাজার বছর আগে বলিদানের সময় সংঘটিত ধর্মীয় রীতি অনুসারে এসব মানবদেহ কেটে অঙ্গ ছিন্ন করা হতো।

উদাহরণস্বরূপ, কপালের বাম দিক থেকে আসা একটি খুলির টুকরো থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়, কেউ এটিকে কুঠার-সদৃশ হাতিয়ার দিয়ে আঘাত করে এটিকে দ্বিখণ্ডিত করেন। একইভাবে কয়েকটি শিশুটির নিতম্বের হাড়েও একই রকম চিহ্ন পাওয়া গেছে।

এছাড়া, গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, হাড়গুলো গুহার মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এবং খুব অদ্ভুত্ভাবে সম্ভবত ধর্মীয় কোনো উপায়ে সেগুলো সাজানো ছিল। এছাড়া মূল জরিপের সময় খননকারীরা গুহার একটি অংশে চারটি স্তুপ করা খুলির টুপি আবিষ্কার করেন। আর হাড়ের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় আচার-অনুষ্ঠানের কিছু নিদর্শন। যেমন- অবসিডিয়ান ব্লেড এবং লাল কুড়াল, একটি প্রাকৃতিক মরিচা রঙের রঙ্গক। এসবই প্রমাণ দেয় যে, রক্তগুহার ভিতরে কোনো ধরণের অনুষ্ঠান হয়েছিল।

গবেষক এবং ফরেনসিক নৃ-বিজ্ঞানী এলেন ফ্রিয়ানকো লাইভ সায়েন্সকে জানান, গুহায় পাওয়া মানুষের দেহাবশেষের পরিমাণ, তাদের আঘাতের ধরণ এবং ধর্মীয় জিনিসপত্রের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, এটি সম্ভবত একটি বলিদানের স্থান ছিল।

তিনি এবং তার সহকর্মী জৈব প্রত্নতাত্ত্বিক মিশেল ব্লুজ, গত এপ্রিল মাসে আমেরিকান প্রত্নতত্ত্ব সমিতির বার্ষিক সভায় তাদের বিশ্লেষণের ফলাফল উপস্থাপন করেন।

মজার ব্যাপার হলো, রক্তগুহায় কেবল একটি ছোট খোলা জায়গা দিয়ে প্রবেশ করা যায়, যা একটি নিচু পথের দিকে নেমে একটি পুকুরের দিকে নিয়ে যায়। এর গঠনের কারণে গুহাটি বছরের বেশিরভাগ সময় প্লাবিত থাকে। শুধু মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে এটিতে প্রবেশ করা যায়।

মায়ারা বিশ্বাস করেন, গুহার ভেতরে থাকা বলিদানের দেহাবশেষ বৃষ্টির দেবতা চাকের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছিল। মায়ারা সাধারণত খরার মতো সংকটের সময় দেবতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য মানব বলিদান করতেন। 

গুয়াতেমালার মায়া সংস্কৃতির একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা মেসোআমেরিকান অঞ্চলে চার হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত।

কিন্তু অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এই গবেষণাপত্রে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, মায়াদের বংশধররা আজও নাকি একইরকম আচার পালন করেন! তারা ৩ মে, অথবা পবিত্র ক্রুশের দিন, শুষ্ক মৌসুমের শেষে বৃষ্টি এবং ভালো ফসলের জন্য প্রার্থনা করার জন্য এই গুহাগুলোতে যান।

এদিকে, মৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে আরও জানতে গবেষকরা এই হাড়ের প্রাচীন ডিএনএ অধ্যয়ন করার পরিকল্পনা করছেন। তারা অস্থিগুলোর স্থিতিশীল আইসোটোপ বিশ্লেষণও করবেন, ফলে মৃত ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাস এবং অভিবাসনের ধরণ এবং জীবিত থাকার সময় পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স এবং ডেইলি মেইল

সুলতানা দিনা/অমিয়/

৩০ সেকেন্ডে ৫০ বোমা বিস্ফোরণ করিয়ে হামাসের প্রধান কমান্ডারকে হত্যা, প্রকাশ্যে ভিডিও

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
৩০ সেকেন্ডে ৫০ বোমা বিস্ফোরণ করিয়ে হামাসের প্রধান কমান্ডারকে হত্যা, প্রকাশ্যে ভিডিও
ছবি: সংগৃহীত

১৩ মে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে নিহত হন। এই অভিযানের প্রায় তিন সপ্তাহ পর শনিবার (৩১ মে) ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের ওই ভূগর্ভস্থ কেন্দ্রটির একটি থ্রিডি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে।

আইডিএফ-এর দাবি গাজার খান ইউনিসের একটি হাসপাতালের নীচে হামাসের একটি গোপন কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল সেন্টারে তিনি লুকিয়ে ছিলেন । শুধু সিনওয়ারই নন, মুহাম্মদ শাবানা নামে আরও এক হামাস নেতারও এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে।

জানা গিয়েছে, মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে সেখানে ৫০টিরও বেশি বোমা ফেলেছিল ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলি বাহিনীর প্রকাশ করা এই থ্রিডি ভিডিও গ্রাফিক্সে দেখানো হয়, একটি ইউরোপীয় বেসামরিক হাসপাতালের নীচে কীভাবে ছড়িয়ে ছিল জঙ্গিদের ঘাঁটি।

আইডিএফ-এর দাবি ওই ঘাঁটি আসলে হামাসের ‘যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র’। তাদের দাবি হাসপাতালের নীচের টানেল কমপ্লেক্সটি সন্ত্রাসবাদী অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হতো।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, হামলাটি অত্যন্ত নির্ভুল ভাবে করা হয়েছিল। নীচের কমপ্লেক্সটি ধ্বংস হলেও, হাসপাতালটি অক্ষত রয়েছে। আর তাদের কাজকর্ম এখনও বন্ধ হয়নি। বেসামরিক মানুষের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে  আকাশপথে নজরদারি চালানো হয়। সেক্ষেত্রে নির্ভুল ভাবে আঘাতকারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।

এদিকে আইডিএফ এবং শিন বেত এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, 'খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালের অধীনে একটি ভূগর্ভস্থ কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে কাজ করার সময় সন্ত্রাসবাদীদের হত্যা করা হয়। তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই হাসপাতালের ভিতরে এই ঘাঁটি তৈরি করেছিল। এর ফলে আশেপাশের বেসামরিক জনগোষ্ঠীর প্রাণ বিপন্ন হয়েছিল।' সূত্র: দ্য টাইমস অব ইসরায়েল

সুলতানা দিনা/

মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষের অন্ধকার দিক উন্মোচন করলেন মিস ইংল্যান্ড

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:১২ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষের অন্ধকার দিক উন্মোচন করলেন মিস ইংল্যান্ড
প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালের আগেই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান মিস ইংল্যান্ড মিলা ম্যাগি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের তেলেঙ্গানায় অনুষ্ঠিত চলমান মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে এক সাহসী এবং অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছেন ২০২৪ সালের মিস ইংল্যান্ড মিলা ম্যাগি।

একজন লাইফগার্ড এবং সিপিআর (কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন) সচেতনতার সমর্থক হিসেবে অনুপ্রেরণাদায়ক পটভূমির জন্য পরিচিত ম্যাগির প্রতিযোগিতা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। 

‘সৌন্দর্যের উদ্দেশ্য রয়েছে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চলা মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার আয়োজকদের বিরুদ্ধে তিনি এবার সম্পূর্ণ বিপরীত এক অভিযোগ তুলেছেন।

এবারের আসরে অংশ নেওয়া মিলা ম্যাগি অভিযোগ করেন, তাকে প্রতিযোগিতায় ব্যবহার করা হয়েছে কেবল ‘উইন্ডো ড্রেসিং’ হিসেবে এবং প্রতিযোগিতার নামে বিনিয়োগকারীদের মনোরঞ্জনের মাধ্যম হিসেবে।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে ম্যাগি প্রথম মিস ইংল্যান্ড খেতাবধারী হিসেবে স্বেচ্ছায় মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চ থেকে বেরিয়ে এটিকে নৈতিকভাবে আপোষমূলক বলে বর্ণনা করেন। 

এক বিবৃতিতে তিনি আয়োজকদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগীদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে গভীর অস্বস্তি প্রকাশ করে অভিযোগ করেন যে, তাদের এখানে অবমাননাকর পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘এখানে আমি একজন পতিতার মতো অনুভব করতাম!’ এরপর তিনি, কীভাবে প্রতিযোগীদের ধনী পুরুষ স্পনসরদের সামনে কুচকাওয়াজ করতে এবং কেবল বিনোদন হিসেবে পারফর্ম করতে বলা হতো তা বর্ণনা করেন।

যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার পর ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সান-এ এক সাক্ষাৎকারে ম্যাগি প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে জানান, এবার (২০২৫ সাল) মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় তিনি অংশ নিয়েছিলেন মূলত তার প্রচারিত ক্যাম্পেইন ‘গো ফর উইদ সিপিআর’কে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরার জন্য। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তিনি স্কুলপাঠ্যক্রমে সিপিআর অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার অভিজ্ঞতা হয়েছে একেবারেই বিপরীত।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, শনিবার (৩১ মে) ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড ফিনালের আগেই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান মিলা।

তিনি বলেন, ‘আমাকে ও অন্য নারী প্রতিযোগীদেরকে বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। বিষয়টি ছিল শোষণমূলক।’

এদিকে, মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে ম্যাগির বক্তব্যকে মিথ্যা ও মানহানিকর বলে আখ্যা দিয়ে বলেছে, ‘তার অভিজ্ঞতার সঙ্গে এসব অভিযোগের কোনো মিল নেই।’

সংস্থাটির সিইও জুলিয়া মরলি আরও একধাপ এগিয়ে ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকায় বলেন, 'ম্যাগি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান; কারণ, তিনি ভেবেছিলেন, তার জেতার কোনো সম্ভাবনাই নেই।'

এ বিষয়ে ম্যাগি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘জুলিয়ার মন্তব্য প্রতিহিংসাপরায়ণ ও তীব্র ক্ষোভপূর্ণ। ওটা ছিল হাস্যকর। আমি জেতার সম্ভাবনা না দেখে সরে যাইনি। আমি সরে গেছি কারণ, এই প্ল্যাটফর্ম আমার বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই ছিল না। আমি চাই না আর কোনো তরুণী আমার অভিজ্ঞতা দেখে এই ব্যবস্থায় প্রবেশ করুক।’

মিলা জানান, হায়দরাবাদের অনুষ্ঠানে বাহ্যিক হাসির আড়ালে ছিল চোখের জল। প্রতিযোগিতার প্রতিশ্রুতি ছিল ‘উদ্দেশ্যসম্পন্ন’ সৌন্দর্যের। কিন্তু বাস্তবে ছিল, প্রতিদিন নতুন গাউন পরে সাজিয়ে তোলা ও বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রদর্শনী।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, এই প্রতিযোগিতার ভেতরে একটা ভ্রান্ত গল্প আছে। এটা নাকি অ্যাডভোকেসির প্ল্যাটফর্ম, যেখানে প্রতিযোগীরা তাদের প্রচারণার বিষয় নিয়ে কথা বলবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, আমাদের শুধু অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য রাখা হয়েছে। নিজের ক্যাম্পেইন নিয়ে বলার সুযোগ খুবই সীমিত ছিল।’

এছাড়াও ম্যাগি জানান, প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া অনেক নারীই তাকে ব্যক্তিগত বার্তায় সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, এমন অভিজ্ঞতা তাদেরও হয়েছে।
মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ এখনো এ বিষয়ে আর কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান , দ্য সান

সুলতানা দিনা/অমিয়/

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে আগুন ও ককটেল নিক্ষেপ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১১:২৮ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে আগুন ও ককটেল নিক্ষেপ
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর বোল্ডারে ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে আগুন ও ককটেল নিক্ষেপ করেছেন এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) দুপুরে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশে ভিড়ের মধ্যে ‘ফ্রি ফিলিস্তিন’ বলে চিৎকার করে আগুন বোমা নিক্ষেপ করেন ৪৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ সাবরি সোলিমান নামে এক ব্যক্তি। 

সোমবার (২ জুন) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই খবর জানায়।

কলোরাডো স্প্রিংসের পুলিশ পরে এই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে হেফাজতে নেয়। এছাড়া এই ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে তদন্ত শুরুর কথা জানায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

ডেনভার ফিল্ড অফিসের এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট ইন চার্জ মার্ক মিচালেক জানান, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এটা স্পষ্ট যে এটি একটি লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা এবং আমরা এটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে তদন্ত করছি।’

তিনি আরও জানান, ৬ জন আহত ব্যক্তির বয়স ৬৭ থেকে ৮৮ বছরের মধ্যে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানানো হয়েছে।

তাছাড়া হামলাকারী মোহামেদ সোলাইমানকে হামলার পরপরই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে তার বা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এফবিআইয়ের প্রধান ক্যাশ প্যাটেলও  ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘আমরা কলোরাডোর বোল্ডারে একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে অবগত এবং ঘটনাটির আদ্যোপান্ত তদন্ত করে দেখছি।’

কলোরাডোর অ্যাটর্নি জেনারেল ফিল উইসার বলেন, যেহেতু হামলার লক্ষ্যবস্তু একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী, তাই এটি একটি বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে মনে হচ্ছে।

বোল্ডার পুলিশের প্রধান স্টিফেন রেডফার্ন বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে একমাত্র সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।’
এই হামলাটি পিয়ার্ল স্ট্রিট মলে ঘটে। এটি ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর পাশে একটি জনপ্রিয় কেনাকাটার স্থান। সেখানে ‘রান ফর দেয়ার লাইভস’ নামক একটি সংগঠন ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করছিল।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গায়ে শার্ট না থাকা এক ব্যক্তি দুই হাতে স্বচ্ছ স্প্রে বোতল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার সামনে ঘাসে আগুন জ্বলছে।

ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়—‘জায়নবাদীরা নিপাত যাক’, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘তারা খুনি’। লাল টি-শার্ট পরা কয়েকজনের দিকে তাকিয়ে তিনি কথাগুলো বলছিলেন, যারা মাটিতে পড়ে থাকা একজনের শুশ্রূষা করছিলেন। সূত্র: বিবিসি এবং ইউরো নিউজ

সুলতানা দিনা/

হজ পারমিট ছাড়া ২ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রীকে মক্কা প্রবেশে বাধা

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১০:৩৫ এএম
হজ পারমিট ছাড়া ২ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রীকে মক্কা প্রবেশে বাধা
ছবি: সংগৃহীত

গত বছর গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর পর সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ এবার বার্ষিক হজযাত্রার জন্য মক্কায় অবৈধ ভ্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ এবার এখন পর্যন্ত হজ পারমিট ছাড়া ২,৬৯,৬৭৮ জন হজযাত্রীকে অনুমতি ছাড়াই মক্কায় প্রবেশে বাধা দিয়েছে। হজে অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য অনুমতি ছাড়াই আসা এসব অংশগ্রহণকারীদের দায়ী করছে দেশটি। 

সোমবার (২ মে) ইউরো নিউজ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।

সৌদি সরকারের হজ কর্মকর্তারা জানান, গত বছর হজ মৌসুমে তীব্র তাপদাহে অনেক হাজীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হওয়ায় এ বছর ‘অবৈধ’ হজযাত্রীদের মক্কায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। হজের অনুমতি না থাকায় এ পর্যন্ত ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৮ জন হজযাত্রীকে মক্কা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সৌদি সরকার জানায়, অনুমতি ছাড়া হজ করতে আসায় মক্কায় হাজীদের ভিড় বেড়ে যায়। গত বছর অতিরক্ত ভিড় ও তীব্র তাপদাহের কারণে ১ হাজার ৩০০ হাজী মারা গেছেন। এ বছর যেন এমন অনাকাঙ্ক্ষিক মৃত্যু না ঘটে, তাই ভিড় কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং অবৈধ হজযাত্রীদের মক্কায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে মক্কায় অন্তত ১৪ লাখ হজযাত্রী রয়েছেন বলেও জানায় সৌদি কর্তৃপক্ষ। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার আগে হাজযাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অনুমতি ছাড়া হজ করতে গিয়ে আটক হলে ৫ হাজার ডলার (€৪,৪০০) জরিমানা ও অন্যান্য শাস্তির বিধান রয়েছে সৌদি আরবে। এই নীতিতে সৌদি নাগরিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
 
রবিবার মক্কায় এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি কর্মকর্তারা বলেন, ‘সৌদি আরবের নাগরিক হলেও তাকে হজের জন্য অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া হজের পরিকল্পনা করায় এখন পর্যন্ত ২৩ হাজারের বেশি সৌদি নাগরিককে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪০০টি হজ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।’

প্রতি বছর হজ মৌসুমে নানা কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

গত রবিবার সৌদি আরবের সিভিল ডিফেন্স জানায়, এ বছর হাজীদের নিপাত্তায় প্রথমবারের মতো ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ড্রোন নজরদারি ও পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হবে। সূত্র:ইউরো নিউজ

সুলতানা দিনা/