নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয় । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয়

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৩২ এএম
নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয়
হারদীপ সিং নিজ্জর

কানাডায় শিখ নেতা হারদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা।

রবিবার (৫ মে) এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

সঞ্জয় ভার্মা বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি কানাডার সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দ্বারা পরিচালিত তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। এই ইস্যুটি কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তাই এ বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।’

যেহেতু অভিযুক্তরা ভারতীয় নাগরিক- তাই সঞ্জয় ভার্মা আশা প্রকাশ করেন, তাদের সম্পর্কে কানাডীয় কর্তৃপক্ষ ভারতীয় দূতাবাসকে নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করবে।

এদিকে গত শনিবার এই ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, তারা কানাডীয় পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার অপেক্ষা করছেন।

এর আগে গত শুক্রবার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৮ বছর বয়সী করণপ্রীত সিং, ২২ বছর বয়সী কমলপ্রীত সিং ও ২২ বছর বয়সী করণ ব্রারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) জানায়, তাদের বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত বছরের ১৮ জুন শিখ নেতা নিজ্জরকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার এক গুরুদয়ারার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি খালিস্তানপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মূলত খালিস্তানপন্থিরা ভারতে একটি স্বাধীন শিখ রাজ্যের স্বপ্ন দেখে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি ভারত সরকারের জড়িত থাকার কথা বলেছিলেন। ভারত সেই অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো অভিযোগ করেছে, উগ্রবাদী শিখদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে কানাডা। এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয়। সূত্র: এনডিটিভি

ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:০২ এএম
ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে সেখানে ‘জীবিত কাউকে এখনও দেখা যায়নি’ বলে জানাচ্ছে ইরানের সংবাদমাধ্যম। ফলে ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে গেছে।

সোমবার (২০ মে) সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট রইসি যে হেলিকপ্টারে ছিলেন সেটি পাওয়া গেছে। 

দুর্ঘটনাস্থলের ছবিও দিয়েছে রয়টার্স। তাতে দেখা যাচ্ছে, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। এটি আগুনে পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটির কেবিন। হেঁটে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিস্তারিত আসছে...

কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৫৪ এএম
কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি
নিহত বিজেপি নেতা আইজাজ আহমাদ শেখ

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে পৃথক দুটি জঙ্গি হামলায় এক বিজেপি নেতা নিহত ও রাজস্থানের জয়পুর থেকে ঘুরতে যাওয়া এক দম্পতি আহত হয়েছেন।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে স্থানীয় এক আসনে ভোটগ্রহণের দুই দিন আগে গত শনিবার এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৮ মে) রাতে প্রথমে পহেলগাঁওয়ে একটি পর্যটক ক্য়াম্পে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় গুরুতর আহত হন জয়পুর থেকে বেড়াতে যাওয়া তাবরেজ এবং তার স্ত্রী ফারহা। এরপর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দ্বিতীয় হামলাটি হয় সোপিয়ানে বিজেপি নেতার বাড়িতে। 

জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় আইজাজ আহমাদ শেখ নামে ওই বিজেপি নেতার।

ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। দলীয় নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বিজেপি।

ভারতে ছয় সপ্তাহব্যাপী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাত পর্বের এ নির্বাচনে চার পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে, আরও তিন পর্ব বাকি আছে। আজ পঞ্চম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৪ জুন ভোট গণনার পর ফলাফল প্রকাশ করা হবে। সূত্র: রয়টার্সের

গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা
ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায় একটি আবেগঘন স্মরণসভার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ সমাপ্তির ১৫ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষের স্মরণসভা বানচালের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারা।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তামিল টাইগার্সকে উদ্দেশ করে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে যারা একটি সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধ করেছিল। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের সভাগুলো অবৈধ হিসেবে গণ্য করে বিধায় তারা এদিন পুরোনো স্মৃতিসৌধগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।

সাবেক যুদ্ধ অঞ্চলগুলো এই ধরনের স্মরণসভাগুলো অনেক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পণ্ড এবং অংশগ্রহণকারীদের ধরপাকড় করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কড়া নজরদারি এবং ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শন সত্ত্বেও শনিবার সভার আয়োজন করা হয়।

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ভুক্তভোগীদের স্মরণ করতে এই আয়োজন করা হয় বলে জানায় তামিলরা। 

টাইগার্সদের সর্বশেষ দুর্গে সামরিক হামলার মাধ্যমে ২০০৯ সালে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। 

জাতিসংঘের ধারণামতে, যুদ্ধের শেষ মাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। বেসামরিক লোকদের ওপর নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য এই সামরিক অপারেশনটি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছিল।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ৪১ বছর বয়সী এক তামিল কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগের দিন এখানে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, এখানে অসংখ্য আহত মানুষ সাহায্যের জন্য কাঁদছিল, দৃশ্যটি আমাকে সারা জীবন তাড়িত করবে।’ 

‘সম্মিলিত ব্যর্থতা’
কয়েক হাজার তামিল যুদ্ধকবলিত গ্রামগুলোতে সফর করে মৃতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করে। এই বছর এই স্মরণসভায় অংশ নেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক প্রধান আগনেস ক্যালামার্ড, যিনি এই ধরনের সভায় অংশ নেওয়া সর্বোচ্চ উচ্চপদস্থ বিদেশি। তিনি তামিলদের পর চলা এই নিধনযজ্ঞকে শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন। 

এ ছাড়া আল-জাজিরাকে পাঠানো এক মেইল বার্তায় তিনি তিন দশক ধরে চলা এই সশস্ত্র সংঘাতে ভুক্তভোগীদের স্বপক্ষে সুষ্ঠু বিচারের জন্য শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

কৌশলগত চুক্তির দ্বারপ্রান্তে সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:২৬ এএম
কৌশলগত চুক্তির দ্বারপ্রান্তে সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্র
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান-যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত চুক্তির একটি ‘সেমিফাইনাল’ সংস্করণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের বৈঠকে ওই আলোচনা হয়। 

সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দাহরানে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

রবিবার (১৯ মে) সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে চুক্তিগুলোকে বিবেচনা করা হয়। গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে এ প্রচেষ্টা অনেক জটিল হয়ে পড়েছে। তবে যুবরাজ মোহাম্মদ এবং সুলিভানের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত চুক্তির সেমিফাইনাল সংস্করণ পর্যালোচনা করা হয়েছে, যা প্রায় চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের একটি গ্রহণযোগ্য পথ খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে কী কাজ করা হচ্ছে তারা সেটি নিয়েও আলোচনা করেন। বৈঠকে গাজার পরিস্থিতি ও যুদ্ধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা এবং সেখানে মানবিক সাহায্য প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং বেসামরিক পারমাণবিক সহায়তার ব্যাপারে ওয়াশিংটন ও রিয়াদ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার খুব কাছে পৌঁছেছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপটে চুক্তির বাস্তবায়নকে ধরা হয় ব্যাপক আকারের দর-কষাকষির ক্ষেত্র হিসেবে। সেটি এখনো রয়ে গেছে নাগালের বাইরে।

এই চুক্তির আওতায় সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চলতি মাসের গোড়ার দিকে রয়টার্স জানায়, ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অধরা থাকলেও পরমাণু চুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইছে বাইডেন প্রশাসন ও সৌদি সরকার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিশ্বাসযোগ্য পথ খুঁজে বের করতেও আলোচনা করেছেন সৌদি যুবরাজ এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ নিরাপত্তা সহকারী। 

হোয়াইট হাউস জানায়, যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনার জন্য রবিবার সন্ধ্যার দিকে সুলিভানের ইসরায়েল সফর করার কথা রয়েছে।

ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।

এদিকে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় কমপক্ষে ৩৫ হাজার ৩৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। এদের অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিক।

যুক্তরাষ্ট্রের উপদেষ্টার সফরের মধ্যেই গাজায় হামলা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:০৫ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের উপদেষ্টার সফরের মধ্যেই গাজায় হামলা
গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এলাকায় শনিবার ইসরায়েলি হামলার পর ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়।ছবি : সংগৃহীত

হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের মধ্যপ্রাচ্য সফর চলাকালে ইসরায়েলের ট্যাংক ও জঙ্গিবিমান শনিবার (১৮ মে) রাতভর গাজা উপত্যকা ও সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

হোয়াইট হাউস সূত্র জানায়, রবিবার ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুলিভানের বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা। সেখানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ব্যাপক হামলার পরিবর্তে হামাসের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পরামর্শ দিতে পারেন সুলিভান।

রাফাহ শহরকে হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করে ইসরায়েল সেখানে হামলা জোরদার করেছে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অনেকেই হামলার ভয়ে শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া গুটিকয়েক স্থানের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শহরের অলিগলিতে অভিযান জোরদার করেছে ইসরায়েল। সংঘর্ষ চলাকালে এর আগে এই এলাকাটি একবার খালি করেছিল বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাবালিয়ায় তাদের সামরিক অভিযান সুনির্দিষ্ট এবং এর লক্ষ্য শহরটি হামাসের পুনর্নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা। গাজায় আটটি ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরের একটি জাবালিয়া।

ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রবিবারের সংঘর্ষে দুজন সৈন্য নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও হামাস জানিয়েছে, রবিবারের হামলায় কমপক্ষে ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকার নুসেইরাত এলাকার একটি বাড়িতে হামলায় ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

গাজা সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস এক বার্তায় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি সৈন্যদের হামলায় নিহত ১৫০ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সময়ে ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় কমপক্ষে ৩০০ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অবশ্য লাশ গণনায় বেসামরিক ব্যক্তি ও যোদ্ধাদের মধ্যে কোনো প্রভেদ করেননি।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৩৫ হাজার ৩৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সাহায্য সংস্থার পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে, গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং স্বাস্থ্যসামগ্রী ও জ্বালানির সংকট দেখা দিতে পারে।

ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর পদত্যাগের হুমকি
এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বেনি গান্টজ সতর্ক করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকার জন্য যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ না করলে তিনি পদত্যাগ করবেন। 

বেনি গান্টজ ছয়টি ‘কৌশলগত লক্ষ্য’ অর্জনের পরিকল্পনার জন্য ৮ জুন সময়সীমা নির্ধারণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে গাজায় হামাস-শাসনের অবসান এবং এই অঞ্চলের জন্য একটি বহুজাতিক বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

বেনি গান্টজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আপনি যদি ব্যক্তির ওপরে জাতিকে স্থান দেন, তাহলে এই সংগ্রামে আমাদের অংশীদার হিসেবে পাবেন, আর যদি ধর্মান্ধতার পথ বেছে নিয়ে দেশকে তলানির দিকে নিয়ে যান, তাহলে আমরা পদত্যাগে বাধ্য হব।’

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অবশ্য বেনি গান্টজের মন্তব্যকে ধোঁয়াশাপূর্ণ বলে বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, এর মানে হলো ইসরায়েলের জন্য পরাজয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্লন্তের বক্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যে গান্টজ এ মন্তব্য করলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে প্রকাশ্যে জানাতে হবে যে গাজায় সামরিক বা বেসামরিক শাসন কর্তৃত্ব হাতে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ইসরায়েলের নেই।

দ্রুত ত্রাণ সরবরাহের আহ্বান
এদিকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরএডব্লিউ শনিবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় স্থলপথে নিরাপদ ত্রাণ সরবরাহ রুট পুনরায় খুলতে ব্যর্থ হলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি দেখা দেবে। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ কথা জানিয়েছে।

ইউএনআরএডব্লিউ কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজ্জারিনি বলেছেন, গাজা ক্রসিং পুনরায় খোলা না হলে শরণার্থীদের বঞ্চনা ও মানবিক বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো সম্ভব হবে না।