সবচেয়ে তপ্ত এপ্রিল দেখেছে বিশ্ব। রেকর্ড হওয়া ইতিহাসের মধ্যে এটিই ছিল তপ্ততম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সি৩এস) বুধবার (৮ মে) এ তথ্য জানিয়েছে।
সি৩এস-এর তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের জুন থেকে প্রতিটি মাস আগের বছরের তুলনায় উত্তপ্ত তাপমাত্রায় রেকর্ড করেছে। এল নিনো দুর্বল হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ব্যতিক্রমধর্মী এই উষ্ণ পরিস্থিতি দেখা গেছে।
এল নিনো মূলত আবহাওয়ার এমন এক পরিস্থিতি যা প্রশান্ত মহাসাগরকে উষ্ণ করে তুলে ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। গোটা পরিস্থিতির জন্যই গবেষকরা মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
সি৩এস বলছে, চলতি বছরের এপ্রিলে পূর্ব ইউরোপ ও আফ্রিকার বেশির ভাগ অঞ্চল উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। দক্ষিণ সুদানে তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। স্লোভাকিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। সেসব দেশে বসন্তে তাপমাত্রার পারদ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর পার করেছিল।
এ ছাড়া বন্যা, খরা সবদিক থেকেই আলোচনায় ছিল এপ্রিল। একদিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অংশবিশেষ- বাংলাদেশ থেকে ভিয়েতনাম পর্যন্ত ব্যাপক তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। অন্যদিকে ব্রাজিল, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কেনিয়া ও তানজানিয়ার মতো পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো ভুগেছে বৃষ্টি ও বন্যায়।
পাকিস্তানে এপ্রিলে স্বাভাবিক যে বৃষ্টিপাত হয়, এবার তার দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে ৬০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে আর্দ্রতম মাস দেখেছে দেশটি।
১৮৫০-১৯০০ সালের প্রাক-শিল্প যুগের এপ্রিল মাসগুলোর তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ১ দশমিক ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি ছিল বলেও জানিয়েছে সি৩এস। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা রাখার যে কথা বলা হয়েছিল, সে মাত্রা গত ১২ মাসে পার করে ফেলেছে বিশ্ব।
২০১৫ সালে বিশ্বের প্রায় ২০০ সরকারের স্বাক্ষরিত সমঝোতায় বলা হয়, শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ নাগাদ নবায়নযোগ্য শক্তি আনার লক্ষ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা হবে। তবে গত বছর জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বের দেশগুলো সে লক্ষ্য পূরণের পথেও নেই। সূত্র: আল-জাজিরা