![তারুণ্য-অভিজ্ঞ মিশ্রণে বলিয়ান স্কটল্যান্ড](uploads/2024/05/20/scotland-1716179585.jpg)
দলে যেমন আছেন ৩৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার। তেমনি আছেন ১৯ বছর বয়সী তরুণও। সব মিলিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের স্কোয়াড তারুণ্য-অভিজ্ঞদের মিশ্রণে দারুণ এক প্যাকেজ। এমন দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ভালো করতে মরিয়া স্কটিশ শিবির।
১৯৯৪ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পায় স্কটল্যান্ড। এরপর তারা প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৯ সালে। তিনটা বিশ্বকাপ খেলে ফেলা স্কটল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক আসরেরও সাক্ষী (২০০৭ সালে)। সব মিলিয়ে এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে স্কটিশদের অংশগ্রহণ চারবার। ক্রিকেটের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের সখ্যতার ইতিহাস সুদীর্ঘ হলেও আসেনি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
ভারসাম্যপূর্ণ দল
স্কটল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপ স্কোয়াড অনেকটা তারুণ্যে ভরপুর। ১৫ সদস্যের দলে ৩০-এর ওপরের বয়স সাতজনের। বাকি আটজনের বয়স ১৯ থেকে ৩০ এর মধ্যে। বিশ্বকাপ মিশনে স্কটল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেবেন রিচি বেরিংটন। যার বয়স সবচেয়ে বেশি, ৩৭। টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে খেলেছেন ৮৭ ম্যাচ। এক সেঞ্চুরির পাশাপাশি তার আছে ১০টি ফিফটিও।
তারুণ্য সমৃদ্ধ দল নিয়ে স্কটল্যান্ডের কোচ ডগ ওয়াটসনের যুক্তি, ‘মাইকেল জোন্স এবং ব্র্যাড হুইলকে দলে নেওয়ার প্রধান কারণ তারা গত বিশ্বকাপে খেলেছে। আসন্ন বিশ্বকাপে দলে তাদের অভিজ্ঞতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।’ ২৬ বছর বয়সী মাইকেল জোন্স খেলেছে মাত্র চারটি ম্যাচ। সেখানে ২৭ বছর বয়সী পেসার ব্র্যাড হুইল খেলেছেন ১৭ ম্যাচ।
তবে দল থেকে বাদ পড়েছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জশ ডেভি। যিনি স্কটল্যান্ডের জার্সিতে তিনটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন। ২০১৬, ২০২১ ও ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার ছিল সরব উপস্থিতি। তবে স্কটিশদের জার্সিতে চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। ২০২১ সালের বিশ্বকাপে ১৩.৬৬ গড়ে ৯ উইকেট নেওয়া ডেভিকে ছাড়া বিশ্বকাপে মাঠে নামবে স্কটল্যান্ড।
তরুণদের ওপর আস্থা
স্কটল্যান্ডের স্কোয়াডে তরুণদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাড কুরি। উদীয়মান এই পেসার খেলেছেন মাত্র ৮ ম্যাচ। তবে কিপার ব্যাটার ম্যাথু ক্রস খেলেছেন ৬৭ ম্যাচ। সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও তার রয়েছে পাঁচটি ফিফটি। দলের ওপেনার অলিভার হ্যারিসের বয়স ৩১। ২২ টি-টোয়েন্টিতে তার রয়েছে একটি সেঞ্চুরি। ফিফটিও একটি। তবে পেসারদের মধ্যে ব্রাড কুরি, জ্যাক জারভিস, কিপার ব্যাটার চার্লি টিয়ারদের ম্যাচ খেলার সংখ্যা খুবই কম। এদের প্রথম বিশ্বকাপই এটি।
স্কটিশ শিবিরে আছে স্পিনার মার্ক ওয়াট। ২৭ বছর বয়সী এই অর্থোডক্স স্পিনার খেলেছেন ৬০ ম্যাচ। উইকেট পেয়েছেন ৭২টি। অন্যদিকে ৩২ বছর বয়সী সাফিয়ান শরিফ ৬৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৭২ উইকেটে। এই বোলারের ওপর দারুণ আস্থা স্কটিশ কোচের। ওপেনার হ্যারিসের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে থাকবেন জর্জ মুন্সি। ৩১ বছর বয়সী এই ওপেনার খেলেছেন ৬৫ ম্যাচ। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে তার রয়েছে ১২টি ফিফটি।
সেরা সাফল্যে চোখ
টুয়েলভে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে। প্রথম আসরেই স্কটল্যান্ড পড়েছিল ভারত ও পাকিস্তান গ্রুপে। জয় আসেনি একটিতেও। পরের আসরেও (২০০৯ সালে) জয়শূন্য। এরপর টানা তিন বিশ্বকাপের বাছাই পর্বই পার হতে পারেনি তারা। ২০১৬ বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের দেখা পায় স্কটল্যান্ড। বি গ্রুপে থাকা হংকংয়ের বিরুদ্ধে জয় আসে ৮ উইকেটে, তাও বৃষ্টি আইনে। ২০২১ বিশ্বকাপে সেরা সাফল্য স্কটল্যান্ডের। বাংলাদেশকে টপকে বি গ্রুপ চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল তারা। জিতেছিল গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ। সুপার টুয়েলভে পা রাখলেও সেখানে কুলিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। হেরে যায় পাঁচটি ম্যাচেই। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে হারিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল স্কটল্যান্ড। কিন্তু এই ধারা ধরে রাখতে পারেনি তারা। বি গ্রুপে বাকি দুই প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে বি গ্রুপে স্কটল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া ও ওমান। এই গ্রুপ থেকে দুটি দল যাবে সুপার এইটে। সেই হিসেবে সম্ভাব্য দুটি দলের নাম বলাই যায় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। সে ক্ষেত্রে স্কটল্যান্ডের লড়াইটা হবে মূলত বাকি তিন দলের সঙ্গে। আগামী ৪ জুন বার্বাডোজে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে স্কটল্যান্ড।
রিচি বেরিংটন, অধিনায়ক
অভিজ্ঞদের সঙ্গে তারুণ্যের মিশেলে আমাদের দলটি এবার বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। বিশ্বকাপে আমাদের লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব। এখানে ভালো করাটাই মুখ্য। ম্যাচ বাই ম্যাচে থাকবে আমাদের চোখ। যেকোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করার দুর্বার মানসিকতা রয়েছে।
বিশ্বকাপ স্কোয়াড
রিচি বেরিংটন (অধিনায়ক), ম্যাথু ক্রস, ব্র্যাড কুরি, ক্রিস গ্রিভস, ওলি হেয়ার্স, জ্যাক জার্ভিস, মাইকেল জোন্স, ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেন, জর্জ মানসি, সাফিয়ান শরিফ, ক্রিস সোল, চার্লি টিয়ার, মার্ক ওয়াট, ব্র্যাড হুইল, মাইকেল লিস্ক।