ঢাকা ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
English

স্বতন্ত্র লড়বেন লেবার নেতা করবিন

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
স্বতন্ত্র লড়বেন লেবার নেতা করবিন
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন আগামী ৪ জুলাইয়ের জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন। বিষয়টি লেবার পার্টিকে কিছুটা চাপের মুখে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মূলত উত্তর লন্ডনের আসন নিয়েই প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হতে পারে দলটিকে। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তর লন্ডনের ওই আসনে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন তিনি। গতকাল শুক্রবার হঠাৎ তিনি জানান, এবার ওই আসন থেকে স্বতন্ত্র দাঁড়াবেন ‘সমতা, গণতন্ত্র ও শান্তির পক্ষে আওয়াজ তুলতে।’  

আল-জাজিরার খবর বলছে, লেবার পার্টির কর্মকর্তারা ওই আসনের প্রার্থীর তালিকায় ৭৪ বছর বয়সী করবিনের নাম রাখেনি। আর এ কারণেই একা লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 

করবিন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি চাই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক হোক, কিন্তু প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ইসলিংটন নর্থ লেবারের সদস্যদের অধিকার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এ কারণেই আমাদের এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমাদের দাঁড়াতে হবে এবং বলতে হবে, এসব আমরা আর সহ্য করব না।’ সূত্র: আল-জাজিরা 

ইরান নাকি ইসরায়েল? সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫, ১২:০৮ এএম
ইরান নাকি ইসরায়েল? সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?
ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের ডামাডোল বেজে উঠেছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালালে পাল্টা জবাবে ইরান ইসরায়েলে অন্তত একশো ড্রোন হামলা চালায়। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইরানের পক্ষ থেকে আরও শক্তিশালী  প্রতিক্রিয়া আসছে অচিরেই।

ইসরায়েলের হামলার কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি এক বিবৃতিতে তেল আবিবকে তেহরানের ভয়ংকর পাল্টা জবাবের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

এদিকে,ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলাগুলোকে অপারেশন রাইজিং লায়ন-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করে জানান, ইরান ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। তাই হামলা অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, ইরানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেবে। 

যুগের পর যুগ ধরেই চরম বৈরী সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই পরাশক্তির মধ্যে। ১৯৭৯ সালের পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ চললেও এবং গত বছর দুই দফা পাল্টাপাল্টি হামলা হলেও তা খুব বড় আকার ধারণ করেনি। তবে এবার ঘটনাপ্রবাহ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার পুরোপুরি সংঘাতে জড়াবে দুপক্ষ।


ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যে, দুই দেশের কোন পক্ষের সেনাবাহিনী বেশি উন্নত? কার কাছে শক্তিশালী অস্ত্র বেশি আছে? বা সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?-এমন নানান প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। সেই সুবাদে দুই পরাশক্তির তুলনামূলক পরাক্রম সম্পর্কে এক নজরে জেনে নেওয়া যাক। 


ইরান বনাম ইসরায়েলের পরাক্রম

জনবলের দিক থেকে তেহরান ইহুদি জাতির চেয়ে এগিয়ে। ইরানের জনসংখ্যা ইসরায়েলের জনসংখ্যার চেয়ে দশগুণ বেশি, যেখান থেকে তারা তাদের সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করে থাকে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের ২০২৪ সালের সূচক অনুসারে, ইরানের জনসংখ্যা ছিল ৮,৭৫,৯০,৮৭৩। যেখানে ইসরায়েলের জনসংখ্যা ৯০,৪৩,৩৮৭। এর অর্থ হল, ইরানের হাতে বেছে নেওয়ার জন্য আরও অনেক বেশি জনবল রয়েছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে বৃহত্তম, যেখানে কমপক্ষে ৫,৮০,০০০ সক্রিয়-কর্তব্যরত কর্মী এবং প্রায় ২০০,০০০ প্রশিক্ষিত রিজার্ভ কর্মী ঐতিহ্যবাহী সেনাবাহিনী এবং ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের মধ্যে বিভক্ত ।

সেখানে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীতে সবমিলিয়ে ১,৬৯,৫০০ সক্রিয় সামরিক কর্মী রয়েছে। আরও ৪,৬৫,০০০ এর মধ্যে রয়েছে তাদের রিজার্ভ বাহিনী, যেখানে ৮,০০০ এর মধ্যে রয়েছে আধাসামরিক বাহিনী।

প্রতিরক্ষা ব্যয়

প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে, ইসরায়েল ইরানকে ছাড়িয়ে গেছে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেএক্সের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ইরানের ৯.৯৫ বিলিয়ন ডলার।

তবে, ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিজ (এফডিডি) অনুসারে, ইরানের সামরিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি) কেবল রাষ্ট্রীয় বাজেটের উপর নির্ভর করে না। ‘তেহরান স্টক এক্সচেঞ্জে’ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজার মূল্য (এক-পঞ্চমাংশ) নিয়ন্ত্রণ করে এই সামরিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া এটি হাজার হাজার অন্যান্য কোম্পানির মালিক, যার সবকটিই সশস্ত্র বাহিনীর জন্য রাজস্ব এনে দেয়। এছাড়াও, আইআরজিসি ইরানের ভূগর্ভস্থ অর্থনীতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

অস্ত্রের দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান

অস্ত্রশস্ত্রের হিসাবেও এগিয়ে আছে ইরান। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের ট্যাংক আছে ১০ হাজার ৫১৩টি, ভারী অস্ত্র আছে ৬ হাজার ৭৯৮ ও সাঁজোয়া যান আছে ৬৪০টি। ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে ৫০টি হেলিকপ্টার আছে। আর ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর আছে পাঁচটি। অন্যদিকে, ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে ট্যাংক আছে ৪০০টি, ভারী অস্ত্র আছে ৫৩০টি এবং সাঁজোয়া যান আছে ১ হাজার ১৯০টি।

ইরান জনবল এবং অস্ত্রের দিক থেকে ইসরায়েলকে ছাড়িয়ে গেলেও তাদের চেয়ে ইসরায়েলের বিমান শক্তি বেশি। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেএক্সের মতে, ইসরায়েলের মোট ৬১২টি বিমান রয়েছে, যেখানে ইরানের ৫৫১টি। এক্ষেত্রে, উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, ইসরায়েলের বিমান বাহিনীতে F-15s, F-16s এবং F-35s এর মতো সবচেয়ে আধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে। যেটি ইরানের নেই।

এছাড়া, ইসরায়েলের দখলে রয়েছে তাদের বিখ্যাত বহু-স্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যার মধ্যে রয়েছে আয়রন ডোম , ডেভিড'স স্লিং, অ্যারো , এবং দ্য প্যাট্রিয়ট। যা ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম।  

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার অতুলনীয়

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার অতুলনীয়। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ জানায়, পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের কাছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের বৃহত্তম এবং সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, পাশাপাশি ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলোর ইসরায়েল সহ যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা এবং পরিসীমা আছে।

ইরান এই বিষয়টি গোপন করেনি, সামরিক কুচকাওয়াজের সময় দেশটি তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার প্রদর্শন করে এবং ড্রোনের একটি বৃহৎ রপ্তানি ব্যবসা গড়ে তোলার উচ্চাকাঙ্ক্ষার কাথাও জানায়। সম্প্রতি, রাশিয়া ইউক্রেনে ইরানের তৈরি করা ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায় এবং সুদানের সংঘাতেও এটি দেখা গিয়েছে।

তাছাড়া, স্থলশক্তির কথা বলতে গেলে ইরান এগিয়ে। ইসরায়েলের ১,৩৭০টি ট্যাঙ্ক আছে, যেখানে ইরানের ১,৯৯৬টি। তবে, ইসরায়েলের চেয়ে বেশি ট্যাঙ্ক থাকা মোটেও সামরিকভাবে অপ্রতিরোধ্যতা নয়। তাছাড়া, ইহুদি জাতির অস্ত্রাগারে মেরকাভা ট্যাঙ্কের মতো আরও উন্নত ট্যাঙ্ক রয়েছে, যা বিশ্বের সেরা নকশাকৃত এবং ভারী সাঁজোয়াযুক্ত ট্যাঙ্কগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।

নৌবাহিনীর সক্ষমতায় এগিয়ে ইরান

ইরান বা ইসরায়েলের নৌবাহিনীর তেমন উপস্থিতি নেই। তবে, এরমধ্যেও, নৌবাহিনীর সক্ষমতার দিক দিয়েও এগিয়ে আছে ইরান। ইরান ছোট নৌকা আক্রমণ চালানোর ক্ষমতার জন্য পরিচিত। ইরানের নৌবহরে আছে ১৭টি ট্যাকটিক্যাল সাবমেরিন (ছোট ও দ্রুত হামলার উপযোগী ডুবোজাহাজ), ৬৮টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ, সাতটি করভেট (ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ), ১২টি ল্যান্ডিং শিপ (সৈন্য ও যানবাহন পরিবহনের জন্য), ১১টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট (সৈন্য নামানোর ছোট জাহাজ) এবং ১৮টি লজিস্টিক ও সাপোর্ট যান (সহায়ক সরঞ্জাম ও জাহাজ)।

বিপরীতে ইসরায়েলের আছে কেবল পাঁচটি সাবমেরিন এবং ৪৯টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের মতে, তেহরানের নৌবহরের সংখ্যা ১০১টি আর ইসরায়েলের ৬৭টি। এছাড়াও, এটি ১৯টি সাবমেরিন পরিচালনা করে, যেখানে ইসরায়েলের পাঁচটি সাবমেরিন রয়েছে। 

এছাড়া, ইরানের ইসফাহানে একটি সামরিক মহড়ার সময় একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে দেখা যায়। পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে ইরানের কাছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের বৃহত্তম ভাণ্ডার রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, পাশাপাশি ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। 

বিমানবাহিনীর সক্ষমতায় কিছুটা এগিয়ে ইসরায়েল

বিমানবাহিনীর সক্ষমতার হিসাবে কিছুটা এগিয়ে আছে ইসরায়েল। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, ইরানের বিমানবাহিনীর ৩১২টি যুদ্ধবিমান রয়েছে, অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে দুটি। এর পাশাপাশি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কাছে যুদ্ধবিমান আছে ২৩টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে পাঁচটি। এ ছাড়া ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর কাছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৫০টি। অন্যদিকে ইসরায়েলের ভান্ডারে যুদ্ধবিমান আছে ৩৪৫টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে ৪৩টি।

পারমাণবিক শক্তিতে এগিয়ে ইসরায়েল

পারমাণবিক শক্তির দিক থেকে, ইসরায়েল এগিয়ে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) এর পূর্ববর্তী প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি বিমানের মাধ্যমে সরবরাহের জন্য মাধ্যাকর্ষণ বোমা। বাকি ৫০টি অস্ত্র জেরিকো I 

এছাড়া, মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য জেরুজালেমের পূর্বে একটি সামরিক ঘাঁটিতে গুহায় তাদের মোবাইল লঞ্চারগুলো স্থাপন করা হয়েছে বলে মনে করা হয়।

বিপরীতে ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলে ধারণা করা হয়। তবে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। দেশটিতে একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে। অনেকেই আবার বলে থাকে, ইরান ইচ্ছে করেই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিস্তারিত তথ্য সামনে আনেনি।

ইরানের মারাত্মক প্রক্সি শক্তি

সামরিক দিক থেকে ইরানের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর জটিল সামরিক ব্যবস্থা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রতিপক্ষ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল, কয়েক দশক ধরে ইরানের উপর সরাসরি সামরিক হামলা এড়িয়ে চলেছে বা জড়াতে চায় না।

নেভাল পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক এবং ইরানের সামরিক বাহিনী বিশেষজ্ঞ আফশন অস্তোভার আমেরিকান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ইরানে আঘাত না লাগার একটি কারণ আছে। ইরানের প্রতিপক্ষরা ইরানকে ভয় পায় এমন নয়। তারা বুঝতে পারেন যে, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো যুদ্ধ মানেই সেটি অত্যন্ত গুরুতর যুদ্ধ। কেননা, ইরান পশ্চিম এশিয়া জুড়ে ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ নামে পরিচিত একটি প্রক্সি মিলিশিয়া নেটওয়ার্ককে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ এবং সমর্থন দেয়। এই মিলিশিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি, সিরিয়া ও ইরাকের মিলিশিয়া গোষ্ঠী এবং গাজার হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ। যদিও তাদেরকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অংশ হিসেবে গণ্য করা হয় না, কিন্তু তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং ইরানের প্রতি অত্যন্ত অনুগত।’


আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা

আকাশ প্রতিরক্ষার দিক থেকে এগিয়ে আছে ইসরায়েল। তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’কে বিশ্বের সেরা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এটি এমন একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যা শত্রুপক্ষের ছোড়া রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথেই শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে।

আয়রন ডোমে একটি রাডার থাকে, যা ইসরায়েলের দিকে আসন্ন রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও দিক নির্ণয় করে। এরপর নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র হিসাব করে দেখে—এই রকেট জনবসতির জন্য হুমকি কি না। যদি হুমকি না হয়, তাহলে সেটিকে ধ্বংস না করে ফাঁকা জায়গায় পড়তে দেওয়া হয়। কিন্তু হুমকি হলে লাঞ্চার থেকে প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সেটিকে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। একটি লাঞ্চারে (ব্যাটারি) ২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র থাকে। ইসরায়েলজুড়ে এরকম ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি মোতায়েন রয়েছে।

এর পাশাপাশি ইসরায়েলের কাছে রয়েছে আরও দুটি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। একটি হলো ডেভিডস স্লিং, যেটি ৪০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে পারে। আরেকটি হলো অ্যারো সিস্টেম, যা ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম।

অন্যদিকে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরান আজারাখশ নামের একটি স্বল্পপাল্লা ও নিচ দিয়ে উড়তে থাকা লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকারী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করে। এটি রাডার, ইনফ্রারেড ও ইলেকট্রো অপটিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং যানবাহনের ওপর বসিয়ে ব্যবহার করা যায়।

ইরানের অন্যান্য প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ৪২টির বেশি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা—যেমন রাশিয়ার এস-২০০, এস-৩০০ ও স্থানীয়ভাবে তৈরি বাভার-৩৭৩। মাঝারিপাল্লায় রয়েছে ৫৯টির বেশি। এর মধ্যে অন্যতম মিম-২৩ হক, এইচকিউ-টু ও খোরদাদ-১৫। আর স্বল্পপাল্লার জন্য রয়েছে ২৭৯টি সিস্টেম, যার মধ্যে রয়েছে চীনের সিএইচ-এসএ-৪ এবং রাশিয়ার নাইনকে ৩১ টোর-এম১।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের কাছে অন্তত ১২ ধরনের স্বল্প ও মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তোন্দার-৬৯, যার সর্বোচ্চ পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার এবং আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র যেমন খোররামশহর ও সেজজিল, যেগুলোর পাল্লা প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত।

অন্যদিকে ইসরায়েলের কাছে অন্তত চার ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—যেমন লোরা, যার পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার এবং জেরিকো-৩, যার পাল্লা ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

সুলতানা দিনা/

 

বিশ্বব্যাপী দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ করল ইসরায়েল

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৯:১১ পিএম
বিশ্বব্যাপী দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ করল ইসরায়েল
ছবি: সংগৃহীত

ইরানের রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলার পর বিশ্বব্যাপী দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। কতদিন ধরে দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েলের দূতাবাসের ওয়েবসাইট পোস্ট করা এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।  

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কনস্যুলার কোনো সেবা দিবে না। এ সময় তাদের কোনো নাগরিক সমস্যায় পড়লে তাদেরকে  স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলি নাগরিকদের আপডেট জানাতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি ফরম পূরণের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এ দিকে এ হামলার পরে বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের দূতাবাসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বার্লিনের ইসরায়েলি দূতাবাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া স্কটহোমের গ্রেট সিনাগনের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ওই ভবনের কাছে পুলিশ ভ্যান রাখা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি নিহত হন। তাছাড়া ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসির) কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর-জেনারেল গোলাম আলী রশিদ নিহত হন বলে দাবি ইসরায়েলের।

এদিকে তেহরানে ইসরাইলি হামলায় আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি হামলায় শহরে বিপ্লবী গার্ডের সদর দপ্তর আঘাত করে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, তেহরানের পূর্বে পিরুজি স্ট্রিটে অবস্থিত আইআরজিসি জেনারেল কমান্ড সদর দপ্তরে আগুন এবং ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। 

তাছাড়া, এক্স-এ এক পোস্টে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, তারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি; ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের কমান্ডার হোসেইন সালামি; এবং খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর-জেনারেল গোলাম আলী রশিদকে হত্যা করেছে। সেনাবাহিনী জানায়, রাতে ২০০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইরানের ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে।

এএফপি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন।

অপরদিকে, ইরানের তেল মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘দেশের পরিশোধনাগার এবং তেল ডিপোগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি এবং বর্তমানে দেশের সমস্ত অংশে এই স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম এবং জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিকভাবে চলছে।’

সুমন/

আল-আকসা বন্ধ করল ইসরায়েল, জুমা আদায় করতে পারেনি মুসল্লিরা

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
আল-আকসা বন্ধ করল ইসরায়েল, জুমা আদায় করতে পারেনি মুসল্লিরা
আল আকসার প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দিল ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল প্রথমবারের মতো পূর্ব জেরুজালেমের দখলকৃত অংশে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই হুকুম বহাল থাকবে। কোভিড-১৯ মহামারির পর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, শুক্রবার (১৩ জুন) ফজরের নামাজের পর ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে ধড়-পাকড় চালায় এবং সেখানে থাকা মুসল্লিদের বের করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ওয়াফাকে জানিয়েছেন, মুসল্লিদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-আকসা মসজিদের সকল দরজা বন্ধ করে দেয় এবং কাউকে মসজিদে ঢুকতে দেয়নি।

এই বন্ধের কারণে সেখানকার ফিলিস্তিনি মুসলমানরা আজ জুমার নামাজ আদায় করতে পারে নি এই পবিত্র মসজিদে, যেটি ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত।

এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়, যখন ইসরায়েল ইরানের ওপর চালানো হামলার পর পুরো দখলকৃত পশ্চিম তীরে লকডাউন ঘোষণা করেছে এবং ইসরায়েলের সকল সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

জেরুজালেমে ইসলামিক ওয়াকফ-এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি ও পর্যটন বিভাগের পরিচালক আওন বাজবাজ Middle East Eye-কে বলেন, তিনি মনে করেন ইসরায়েল ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার সুযোগ নিয়ে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে আরও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ইসরায়েল দাবি করছে এই বন্ধের কারণ ‘মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া’। কিন্তু এরপর থেকে শুধু ওয়াকফের কর্মীদেরই আল-আকসায় ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আসল সমস্যা হলো, আমাদের কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি যে কবে এটি আবার খুলবে। এই অনিশ্চয়তা খুবই সন্দেহজনক। এখনকার যুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েল নতুন নিয়ম আরোপ করছে এবং নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে। পুরো দুনিয়া, বিশেষ করে মুসলিম দুনিয়া যখন গাজা ও ইরানের দিকে তাকিয়ে, তখন ইসরায়েল চুপিসারে আল-আকসায় তাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।

গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা আল-আকসা মসজিদকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভাগ করার চেষ্টা করছে-এবং এর ৯৯% এখন কার্যকর হয়ে গেছে। এখন দিনের বেলাও মসজিদে হানা দেওয়া হয়। এটা যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই

মাহফুজ

যেভাবে ইরানি কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে হত্যা করেছে ইসরায়েল

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম
যেভাবে ইরানি কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইসরায়েলি হামলায় নিহত আইআরজিসির কমান্ডার হোসেইন সালামি ও এয়ার ফোর্স প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহ

প্রায় এক বছরের দীর্ঘ পরিকল্পনা, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও কয়েক দফা যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু অস্ত্র চুক্তির নাটক করে ইরানি কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে শীর্ষ জেনারেলদের হত্যার কথা জানিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

ইসরায়েল এই পরিকল্পনা করে ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ড কর্পসের (IRGC) বিমান শাখার শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যা করে। ইরানি কর্মকর্তাদের প্রথমে একটি বৈঠকে আসতে প্রলুব্ধ করানো হয়। এরপর সেই জায়গা ঘিরে রাখা হয়, যাতে তারা সরে যেতে না পারে। ঠিক তখনই হামলা চালানো হয়।

মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করেছি এবং তাদের সেখানে রেখে হামলার সময় নির্ধারণ করেছি।’

মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ২০টিরও বেশি জায়গায় যেমন: কমান্ডারদের বাসা ও অফিসে আঘাত হানা হয়। 

লক্ষ্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের হত্যা করা। হামলাটি ইসরায়েলের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা।

পাশাপাশি, আলাদা করে পারমাণবিক কেন্দ্র, ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার ঘাঁটি এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বংস করা হয়েছে। এই পুরো পরিকল্পনার জন্য এক বছর ধরে গোপনে গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করা হয়েছে।

ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তার মতে, শুক্রবার শেষ রাতে চালানো হামলায় ইরান তার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বৈঠকে বসবে এটা জানা ছিল। আর তখনই তাদের অবস্থানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় আইআরজিসির শীর্ষ অন্তত ২০ কমান্ডার নিহত হয়েছে। এজন্য গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন ছিল যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল এবং এ আলোচনায় দুই পক্ষই যে কেউ কারও প্রস্তাব মেনে নেবে না তা আগেই অনুমেয় ছিল। তারপরও এই আলোচনার নাটক সাজানো হয়েছে মূলত ইরানি কর্মকর্তাদের নির্ভার রাখার জন্য এবং তাদের গতিবিধি সহজ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য। গত বুধবার (১১ জুন) যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের শেষ বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসার পর দিনই ইরানে হামলা করে ইসরায়েল। 

এদিকে ইরানে হামলার বিষয়ে ট্রাম্প নতুন এক টুইটে লিখেন, ‘দুই মাস আগে আমি ইরানকে "চুক্তিতে পৌঁছানোর" জন্য ৬০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তাদের এটা করা উচিত ছিল। আজ ৬১তম দিন। আমি তাদের কী করতে হবে তা বলেছিলাম, কিন্তু তারা সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এখন তাদের কাছে সম্ভবত দ্বিতীয় সুযোগ আছে।’

অর্থাৎ ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে রাজি করাতে না পারলে ইরানে হামলা যে পরিকল্পিত ছিল তা ট্রাম্পের টুইট ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মন্তব্যে তা স্পষ্ট। সোর্স: ফক্স নিউজ

মাহফুজ

ইরানের আইআরজিসি এয়ার ফোর্স প্রধান-সহ শীর্ষ ২০ জেনারেল নিহত

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ইরানের আইআরজিসি এয়ার ফোর্স প্রধান-সহ শীর্ষ ২০ জেনারেল নিহত
আইআরজিসি এয়ার ফোর্স প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহ। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এয়ার ফোর্স প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহ-সহ শীর্ষ অন্তত ২০ কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তথ্যের সূত্রতা নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ হামলায় নিহত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন আইআরজিসির এয়ার ডিফেন্স প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দাউদ শেইখিয়ান। সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনস বিভাগের উপপ্রধান মেজর জেনারেল রাব্বানি। আইআরজিসির ড্রোন প্রধান তাহের পোর ও আকাশ প্রতিরক্ষা প্রধান দাউদ শেইখিয়ান। এ হামলায় রাব্বানির স্ত্রী ও সন্তানরাও নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF) জানায়, রাতে চালানো বিমান হামলায় তারা IRGC এয়ার ফোর্সের ভূগর্ভস্থ সদরদপ্তর টার্গেট করে। এতে এয়ার ফোর্সের শীর্ষ কমান্ডাররা নিহত হয়।

এর আগে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি নিহত হয়েছেন। তাছাড়া ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসির) কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর-জেনারেল গোলাম আলী রশিদ নিহত হয়েছেন। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স

মাহফুজ