বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে নেওয়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিষয়ে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি হবে আগামী ১১ জুলাই।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। এ সময় রিটের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
কার্যতালিকায় ২৭ নম্বর ক্রমিকে থাকা ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আদালতে আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান উপস্থিত না থাকায় শুনানি তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল। সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে; এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন।
২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।
২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন।
আপিল বিভাগের রায়ের বিষয়ে করা রিভিউ আবেদন গত বছর ২৩ নভেম্বর আপিল বিভাগের ৬ জন বিচারপতি শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ।