আগে দিল্লি, তারপর বেইজিং যাবেন প্রধানমন্ত্রী । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

আগে দিল্লি, তারপর বেইজিং যাবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আগে দিল্লি, তারপর বেইজিং যাবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের চলমান নির্বাচনের পর নয়াদিল্লি সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেইজিং সফরে যাবেন নয়াদিল্লি সফরের পর।

সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে বৃহস্পতিবার (৯ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ কথা জানান।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দিল্লি আমাদের কাছে। বেইজিং একটু দূরে।’

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর সফর হবে। ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের পর সরকার গঠন হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সফর কখন হবে, সেটা ঠিক হবে। অনেক আগে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা রয়েছে। তাদের সেখানে যেহেতু নির্বাচন, সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বেইজিং সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশা করা হচ্ছে, জুনের শেষ দিকে তিনি দিল্লি সফরে যাবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা গতকাল বুধবার (৮ মে) রাতে ঢাকায় আসেন। আজ সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে
ওলামা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ঢাকা সিটিতে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে বলেছেন।

সোমবার (২০ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওলামা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় তিনি একথা জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি ও স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে শুধুমাত্র ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তবে ২২টি মহাসড়কে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি। 

এর আগে গত ১৫ মে রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বিআরটিএ ভবনে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনাও দিয়েছিলেন তিনি।

পরে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রবিবার (১৯ মে) লাঠি হাতে রাস্তায় নামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। তারা দিনভর রাস্তা অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

অমিয়/

সাগরে লঘুচাপ ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:১৭ পিএম
সাগরে লঘুচাপ ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ২২ মের পর লঘুচাপের সৃষ্টি হলে, তা পর্যায়ক্রমে ঘনীভূত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে রবিবার (১৯ মে) চার জেলা ও দুই বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ আজও অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অতি ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি ২২ বা ২৩ মের দিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি পরে আরও ঘনীভূত হতে পারে। কয়েক দিনের মধ্যে তা আরও স্পষ্ট হবে। আমরা পর্যায়ক্রমে জানাব, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে কি না।’

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রবিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মোংলায় ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় ছিল ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি। তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির ওপরে থাকায় রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার ৪৪ স্টেশনের মধ্যে ২৩ স্থানে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। তবে তেঁতুলিয়ায় ১০৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা অতি ভারী বৃষ্টিপাতের শ্রেণি ধরা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে রেকর্ড করা হয় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি।

রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-একস্থানে অস্থায়ী দমকা-ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহের এলাকায় তা অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আজ বিশ্ব মৌমাছি দিবস

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:১০ পিএম
আজ বিশ্ব মৌমাছি দিবস
মৌমাছি

মৌমাছি, মৌমাছি/কোথা যাও নাচি নাচি/ দাঁড়াও না একবার ভাই।/ওই ফুল ফোটে বনে/ যাই মধু আহরণে/ দাঁড়াবার সময় তো নাই। 

ছোটবেলায় নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের ‘কাজের আনন্দ’ কবিতাটি আমরা প্রায় সবাই পড়েছি। মৌমাছির নাম শোনার সঙ্গে সঙ্গেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কর্মচঞ্চল, চটপটে ছোট এই পতঙ্গটি। এর সঙ্গে ছোটবেলায় যারা মৌমাছির কামড় খেয়েছেন, তাদের স্মৃতি তো আরও ভোলার নয়। কবিতাটি পড়লেই বোঝা যায় ছোট এ পতঙ্গটি কত বেশি কর্মঠ। শুধু কর্মঠই নয়, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যও ছোট এই পতঙ্গটির ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

আজ ২০ মে আন্তর্জাতিকভাবে পালন করা হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রে বড় ভূমিকা রাখা ছোট এই পতঙ্গটির  জন্য বিশেষ দিবস। প্রতিবছর এই দিনে পালন করা হয় বিশ্ব মৌমাছি দিবস। এই দিবস পালন করার উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীতে মৌমাছিসহ অন্য যেসব পতঙ্গ পরাগায়নে ভূমিকা রাখছে, সেসব প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। 

১৭৩৪ সালের ২০ মে স্লোভেনিয়ার ব্রেঞ্জিকা গ্রামে অ্যান্টন জনসা নামের একজন মৌমাছি বিশারদ জন্মগ্রহণ করেন। স্লোভেনীয় মৌমাছি পালক অ্যান্টন জনসাকে আধুনিক মৌমাছি পালনের জনক বলা হয়। তার জন্মদিনেই দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে প্রথম মৌমাছি দিবস উদযাপন করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে স্লোভেনিয়া সরকার ২০ মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে উদযাপনের ধারণাটি প্রস্তাব করেছিল এবং এটি ২০১৭ সালে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল।  ২০১৮ সাল থেকে জাতিসংঘ এ দিনটি উৎসর্গ করেছে মৌমাছিদের জন্য। 

ফুলে ফুলে বিচরণ করে ফুলের রেণু ও মিষ্টি রস সংগ্রহ করে মৌমাছিরা। রস সংগ্রহের পর তা পাকস্থলীতে জমা রাখে। তারপর সেই রসের সঙ্গে মৌমাছির মুখনিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয়। এরপর মুখ থেকে সে মধু তারা জমা রাখে মৌচাকে। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমে ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়লে পরাগায়ন ঘটে, তাতে উৎপন্ন হয় ফল। এভাবে মৌমাছিরা পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়ায়। 

পৃথিবীতে ৯টি স্বীকৃত গোত্রের অধীনে প্রায় ২০ হাজার মৌমাছি প্রজাতি আছে। অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া পৃথিবীর সকল মহাদেশে যেখানেই পতঙ্গ-পরাগায়িত সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে, সেখানেই মৌমাছি আছে। আমাদের দেশে সাধারণত পাঁচ রকম মৌমাছির দেখা মেলে। সারা দেশে এদের দেখা মিললেও সুন্দরবনে মাত্র দুটি প্রজাতি-এপিস ডরসেটা ও স্টিং-লেস মৌমাছির দেখা পাওয়া যায়।

মধু সংগ্রহে বের হলে একটি মৌমাছি প্রতি সেকেন্ডে ২০০ বার পাখা ঝাপটিয়ে ঘুরে আসে ৫০ থেকে ১০০০ ফুল। এক কেজি মধু উৎপাদনে কম করে হলেও ছয় হাজার মৌমাছির বিশাল কর্মযজ্ঞের প্রয়োজন হয়। মৌমাছি ক্ষুধার্ত থাকলে দিনে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে। তবে সাধারণত এরা মৌচাকের ৩ কিলোমিটারের মধ্যেই থাকে। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে। মৌমাছির প্রায় ১৭০টি গন্ধ নেওয়ার রিসেপ্টর আছে। গন্ধ শুঁকে তারা বাসায় ফিরতে পারে। খাবারের সন্ধানে গিয়ে ফুল চিনতেও সাহায্য করে এই রিসেপ্টর। 

বাংলাদেশে আকতার হামিদ খান ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লি উন্নয়ন একাডেমিতে প্রথম মৌচাষ শুরু করেন। এরপর ১৯৬৩ সালে সাতক্ষীরাতে বিসিক প্রথম মৌচাষের উদ্যোগ নেয় এবং অদ্যাবধি বিসিকের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে ও সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে। বিসিকের প্রচেষ্টার সঙ্গে পরবর্তীকালে ৮০-এর দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সম্পৃক্ত হয় এবং এর মাধ্যমে বর্তমানে মৌপালন সম্প্রসারণে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

উদ্বেগের ব্যাপার হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে মৌমাছির সংখ্যা। মধু আহরণ করার সময় মৌয়ালরা চাকে আগুন ও ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে মধু আহরণ করেন। এই পদ্ধতিতে মধু আহরণ করায় প্রচুর মৌমাছি ও ডিম পুড়ে যায়। এ ছাড়া অতিমাত্রায় কীটনাশকের ব্যবহার, বন-জঙ্গল কেটে ফেলা, পরিবেশ দূষণ প্রভৃতি কারণে মৌমাছির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। 

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাচন স্থগিত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০১:২১ পিএম
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাচন স্থগিত
ছবি: খবরের কাগজ

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রবিবার (১৯ মে) নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আপিল বিভাগের আদেশ পালনের সুবিধার্থে দ্বিতীয় ধাপে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাচন সাত দিনের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মো. তাজুল ইসলাম তাজের মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

জানা গেছে, মৌলভীবাজার সদরের এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ও মোস্তাফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজ গত ২১ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেন। দুই দিন পর মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই শেষে ২৩ এপ্রিল তাজের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার আব্দুস সালাম। কিন্তু পাঁচ দিন পর ২৮ এপ্রিল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী তাজের মনোনয়নপত্র আপিল শুনানিতে বাতিল ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও আপিল কর্তৃপক্ষ ড. উর্মি বিনতে সালাম।

এরপর তাজ মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন। 

গত ৯ মে তাজের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও মো. আখতারুজ্জামানের যৌথ বেঞ্চ এবং রুলসহ আদেশ দেন। একই সঙ্গে দ্রুত প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচন করার জন্য রুল জারি করেন যৌথ বেঞ্চ। 

রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে তাদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি রুল জারি করেন।

পুলক পুরকায়স্থ/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আচরণবিধির খসড়া প্রস্তুত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০১:০১ পিএম
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আচরণবিধির খসড়া প্রস্তুত
শিক্ষা মন্ত্রণালয়

দেশের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য ‘সরকারি চাকরি বিধিমালা-২০১৮’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯’ থাকলেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোনো আচরণবিধি নেই। এবার প্রায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য আচরণবিধি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গেল বছর ক্লাস ফেলে জাতীয়করণ নিয়ে রাজধানীতে আন্দোলনে যোগ দেওয়া শিক্ষকদের বারবার সতর্ক করা হলেও তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি। অনেক শিক্ষক তাদের কোচিংয়ে প্রাইভেট পড়তে যেতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীদের। ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনও করেন অনেকে। এ পরিস্থিতিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

এরই মধ্যে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আচরণবিধি ও শৃঙ্খলা বিধিমালা’র খসড়াও প্রস্তুত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

গত ৫ মে এ খসড়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার চাঁপা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখার অতিরিক্ত সচিব, মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, পরিচালক (মাধ্যমিক) সৈয়দ জাফর আলী ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল খবির চৌধুরী অংশ নেন।

সভায় অংশ নেওয়া মাউশি পরিচালক (মাধ্যমিক) সৈয়দ জাফর আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক ও কর্মচারীর জন্য আলাদা একটি আচরণ বিধিমালা করতে যাচ্ছে সরকার। কী অপরাধের জন্য কেমন শাস্তি হতে পারে, এসব নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও পর্যালোচনা হবে। সবার মতামত নিয়েই বিধিমালা চূড়ান্ত করা হবে।’

খসড়ায় যা আছে
খসড়া বিধিমালায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা শিরোনামে ১০টি বিধি রয়েছে।

প্রথমত, ‘কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেবেন না, এর সাহায্যে চাঁদা দেওয়া বা অন্য কোনো উপায়ে এর সহায়তা করবেন না এবং প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে নিজেকে জড়াবেন না।’

দ্বিতীয়ত, ‘কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ বা প্রস্তাব নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো সংসদ সদস্য বা অন্য কোনো বেসরকারি ব্যক্তির দ্বারস্থ হতে পারবেন না।’ 

অনুমোদন ছাড়া টিউশনি নিষিদ্ধের কথাও খসড়ায় বলা হয়েছে।

কোনো শিক্ষক নিজ নামে প্রকাশিত কোনো লেখায় অথবা জনসমক্ষে দেওয়া বক্তব্যে অথবা পত্রিকায় এমন কোনো বিবৃতি বা মতামত প্রকাশ করতে পারবেন না, যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারে। 

একইসঙ্গে সাধারণ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে, এমন বিতর্কিত ধর্মীয় বিষয়ে অংশ না নিতেও বলা হয়েছে।

এ ছাড়া অদক্ষতা, পেশাগত অসদাচরণ, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধে তিরস্কার, ইনক্রিমেন্ট স্থগিত, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তি হতে পারে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা আছে।

কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে খসড়ায় বলা হয়েছে। জবাবে সন্তুষ্ট না হলে কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করবে। কমিটিতে জেলা সদরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা তার প্রতিনিধি, উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা তার প্রতিনিধি, অভিভাবক প্রতিনিধি এবং একজন শিক্ষককে রাখতে হবে।

এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা হলে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে। সাময়িক বরখাস্তকালীন বেতনের অর্ধেক খোরপোশ পাবেন। এ ছাড়া কোনো অভিযোগ আদালতের রায়ে মিথ্যা প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিকে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. রবিউল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আচরণ বিধিমালাটি এখনও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে। চূড়ান্ত করতে আরও কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। 

তিনি বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই বিধিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

অমিয়/