ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

পিলখানা ট্র্যাজেডির রহস্য ধামাচাপা দেওয়া যাবে না: রিজভী

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
পিলখানা ট্র্যাজেডির রহস্য ধামাচাপা দেওয়া যাবে না: রিজভী
ছবি : খবরের কাগজ

পিলখানা ট্র্যাজেডির রহস্য ধামাচাপা দেওয়া যাবে না, একদিন প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হবেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

তিনি বলেন, ‘সরকার পুরানো কায়দায় ১৫ বছর পর পিলখানার ঘটনার দায় বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত ছিল, পাশের কোন দেশ জড়িত ছিল তাও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।’

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সাহিদা রফিক, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আব্দুর রহিম, সাবেক নেতা অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।

‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পেছনে বিএনপি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত এবং ষড়যন্ত্র তারাই যে করেছে তা স্পষ্ট’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘সেদিন পিলখানায় কি ঘটেছিল, কারা ঘটিয়েছিল, কেন ঘটেছিল, ঘটনার নেপথ্যের নায়ক কারা, কারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে হাছান মাহমুদ। তিনি স্বীকার না করলেও দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে সত্য ঘটনা সোমবারও প্রকাশিত হয়েছে।সোমবার পিলখানার সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা নিয়ে বিডিআর এর সাবেক ডিজি লে. জে. (অব.) মো. মইনুল ইসলাম গণমাধ্যমে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তা দেখে কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে? তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন- বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে যে তদন্ত কমিটি হয়েছিল তাদেরকে কাজ করতে দেয়নি আওয়ামী সরকার। একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বিদ্রোহীদের সাথে জড়িত ছিল। যা সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।’

২০০৯ সালের পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একটি স্বাধীন দেশের ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকষ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘তাদের পরিবারের নারী ও শিশুদের ওপর বর্বর অত্যাচার করা হয়েছিল। কেবল বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, এমনকি বিশ্বের ইতিহাসেও এই নারকীয় বর্বরতা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত। এমন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আওয়ামী লীগ দেশ এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে মনুষ্যত্বহীন ছেলেখেলা শুরু করেছে।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ১৫ বছর পর এসে ‘ডামি সরকারে’র মন্ত্রীরা বলছেন, ঘটনার সঙ্গে নাকি বিএনপি জড়িত! একটি সরকার কতটা দায়িত্বহীন হলে এ ধরণের অভিযোগ করতে পারে। সব ঘটনা যদি বিএনপিই করে, তাহলে ক্ষমতা দখলকারী শেখ হাসিনা কি করছেন? লুটপাট, দুর্নীতি আর টাকা পাচার করা?’’

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ১ মার্চ থেকে আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন এমন জানিয়ে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘জনজীবনকে ভয়াবহ দুর্বিষহ করতেই গণবিরোধী সরকার সর্বনাশা পথে হাঁটছে।’

‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে শুধু নালিশ করে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন,  ‘২০০১ থেকে ২০০৬ তারা কি করেছেন। শুধু দেশে নয় বিদেশেও গিয়ে নালিশ করেছেন তারা। আওয়ামী শুধু দেশে নয় বিদেশে গিয়েও সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো নালিশ করেছে। আর আমরা যে নালিশ করেছি সেটি উনি কি করে জানলেন, উনি কি কোন গোপন যন্ত্র ব্যবহার করেন নাকি? মনে হয় ওবায়দুল কাদের বিএনপির বিকল্প স্থায়ী কমিটির সদস্য।’

তিনি বলেন, বিএনপি নয়, খেসারত তো আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। এরশাদের সাথে ভোটে গিয়ে জাতীয় বেইমান হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন। তাদের মিথ্যাচারের পরিণতি একদিন ভোগ করতে হবে।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

ন্যূনতম একদফা, অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য "জাতীয় ঐক্যের” আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম একদফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি "জাতীয় ঐক্য" গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের সকল শরিকদল ও জোট, বাম-ডান সকল রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সময় ও যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিবৃতির মাধ্যমে সম্মতি প্রদান করা যেতে পারে। শীঘ্রই সম্মতিপ্রাপ্ত সকলের স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে। জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।

সবুজ/এমএ/

বামপন্থি দলগুলোর শোক সমাবেশ আন্দোলন জনতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ পিএম
আন্দোলন জনতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ
ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর জনগণের মনে যে ক্ষোভ সঞ্চারিত হয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ সারা দেশ দেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বামপন্থি দলগুলোর নেতারা। দেশব্যাপী যে চরম সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাকে ‘জনতার আন্দোলন’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন তারা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং নিরপরাধ মানুষকে হত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদ শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে দেশব্যাপী শোক সমাবেশ ও মিছিল করেছে। ঢাকার পুরানা পল্টনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে বাম দলগুলোর নেতারা সরকারের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীরা কালো পতাকা হাতে নিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে সমাবেশ ও শোক মিছিলে শরিক হন। নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

বামপন্থি নেতারা বলেন, পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ২০৬ জন মানুষ হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সর্বশেষ কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী নামিয়ে দমন-পীড়ন চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করেনি। এখন চলছে নির্বিচার গণগ্রেপ্তার। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গণগ্রেপ্তার কর্মসূচির নিন্দা জানিয়ে বাম নেতারা বলেন, সরকার যদি ভাবে এভাবে দমন-পীড়ন চালিয়ে তারা আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারবে, তবে তারা ভুল পথে হাঁটছে। এই আন্দোলন কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্ররা শুরু করলেও বাস্তবে এ আন্দোলন সরকারের দুর্নীতি-লুটপাট, স্বৈরাচারী নীতি ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে জনতার দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকা পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। আন্দোলনের যে আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তা দমন-পীড়ন করে বন্ধ করা যাবে না। 

সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তারা বলেন, সরকার কোনোভাবেই এই হত্যাযজ্ঞ ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির দায় এড়াতে পারে না। এই হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের দায় নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

শোক সমাবেশ থেকে নানা দাবি উত্থাপন করেন বাম নেতারা। এ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে কারফিউ প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনী-বিজিবিকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত হামলায় জড়িতদের বিচার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করা। 

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চার বেলাল চৌধুরী ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

কোটা সংস্কার আন্দোলন হত্যা ও পঙ্গুত্বের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি বিএনপির

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
হত্যা ও পঙ্গুত্বের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি বিএনপির

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে জনগণের টাকায় কেনা কী পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে দলটি। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিৃবতিতে এ দাবি জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বিএনপি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিবৃতি দেন তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজির স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সব স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নেবে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনকে তিন দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই নির্মম অত্যাচারে দেশের জনগণ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচিও পালন করেছে। কিন্তু সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেপ্তার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেপ্তার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অবৈধ সরকারকে বলব- অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল দেশ প্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়াবহ ফ্যাসীবাদী শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দূর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শফিক/এমএ/

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডেকেছে জাপা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডেকেছে জাপা

দেশে সহিংস পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামী রবিবার (২৮ জুলাই) দলের সর্বস্তরের নেতাদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে দলের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম দলের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ তথ্য দেন।

তিনি জানান, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) নির্দেশে আগামী রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন জি এম কাদের।

দলের এই জরুরি যৌথসভায় জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, সব কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য, ঢাকায় অবস্থানরত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এবং সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিবদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা গণমাধ্যমকে জানান, সংকটময় পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের করণীয় নির্ধারণে এই সভা ডাকা হয়েছে। রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস, জনসম্পৃক্ত হয়ে দলের ভাবমূর্তি প্রতিস্থাপনের বিষয়েও দলের শীর্ষ নেতারা তৃণমূলের উদ্দেশে বার্তা দেবেন।

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের প্রেসিডিয়ামের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘রওশন এরশাদের পক্ষটি দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামো বিনষ্ট করতে নানা রকম অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের পক্ষে ভিড়িয়ে নিতে নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে দলের তৃণমূলকে। 

ইতোমধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীরা ওই পক্ষে গিয়ে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। এতে দলের ভেতরে নানা অসন্তোষ দানা বাঁধছে। এ ছাড়া দলের নবম কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এর আগে দলকে গোছানো জরুরি। তাই এ সভাটি গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাঠে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে রওশন এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। তার দলের দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ শনিবার (২৭ জুলাই) বেলা ১১টায় সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় রাজধানীর নানা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শনে যাবেন। 

তিনি সেতু ভবন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে টোলপ্লাজা হয়ে যাবেন মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন ছাত্র-সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যদের দেখতে যাবেন। পরে তিনি গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন।

জয়ন্ত সাহা/ইসরাত চৈতী/

প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে : ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কামনা করি না। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে। যারা সহিংসতায় জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। অচিরেই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায় বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসরদের। এ দায় থেকে মুক্তি পেতে তারা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাইছে। দেশ ও দেশের মানুষের ওপর তারা আস্থা রাখে না। এবারও তাদের সেই সন্ত্রাসী চরিত্র উন্মোচিত হওয়ায় এ দায় থেকে মুক্তি পেতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চাইছে।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সরকার হটানোর অপচেষ্টা সফল হতে দিতে পারি না। এই অশুভ চক্রান্ত ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কায়দায় লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। সরকার হটাতে এখনো সক্রিয় দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহল।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখনো যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য দেশকে ধ্বংস করা, দেশের অর্থনীতিকে আরও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া। বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা আবারও হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান, যেখানেই আক্রমণকারী দেখবেন সেই খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতাকারীদের ধ্বংসাত্মক কাজ জাতির সামনে উপস্থাপন করে সত্য প্রকাশ করুন। আওয়ামী লীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষ বানানোর চেষ্টা সফল হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আহমাদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

রাজু/সালমান/