![আ.লীগ সরকার কোনোদিন জনগণের ভোট পাবে না: মঈন খান](uploads/2024/04/04/1712219752.Moin-khan.jpg)
সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থবিত্ত-বৈভব দখল করতে পারবে কিন্তু জনগণের ভোট তারা আর কোনোদিন পাবে না, জনগণের ভালোবাসাও পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেন, ‘এটা ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আরেকবার প্রমাণিত হয়ে গেছে। আমরা চাই, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারা ফিরে আসুক, একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হোক।’
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) কারাগারে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের রাজধানীর শান্তিনগরের বাসায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সোহেলের বড় মেয়ে বাবাকে নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান।
মঈন খান বলেন, ‘সরকার কত বড় জুলুমবাজ হলে একজন নিরপরাধ মানুষের নামে প্রায় ৫০০ মামলা দেয়। তার অপরাধ শুধু সরকারের অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। একদলীয় শাসনের কাছে মাথা নত করার জন্য কি ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল? এই প্রশ্নগুলো আজকে দেশের ১৮ কোটি মানুষের। এ জন্য ৭ জানুয়ারি নির্বাচন তারা বর্জন করেছে। এই কঠিন সত্যের মুখোমুখি সরকারকে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা সরকারের বিরুদ্ধে ভিন্নমত পোষণ করছে, অন্যায় কাজের সমালোচনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার একের পর এক মামলা দিয়েছে। ২৮ অক্টোবর পর ক্র্যাকডাউন করে বিএনপি মহাসচিবসহ প্রায় ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর ৭ জানুয়ারি গায়ের জোরে সাজানো পাতানো একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করছে সরকার। কিন্তু বন্দুকের জোরে অর্জিত ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারবে না সরকার।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘সরকার যদি বিএনপির ওপর জুলুম না-ই করে থাকে, তা হলে গেল ১৫ বছরে বিরোধী দলের প্রায় অর্ধকোটি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এক লাখের ওপর মামলা দিল কেন?’
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে জাতীয় নির্বাচন, জেলা বা উপজেলা নির্বাচন সরকার কিভাবে করে এটা দেশ ও বিশ্ববাসী সবাই জানেন। সাজানো-গোছানো প্রহসনের নির্বাচনের জন্য তো বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়নি। সরকার নির্বাচন কমিশন ধ্বংস করে দিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছে, বিচার বিভাগকে সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে গড়ে উঠলে সবাই নির্বাচনে যাবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি সঠিক পথেই চলত তাহলে ব্যাংকে ডাকাতি হলো কেন? সরকার শুধু রাজনীতিকে ধ্বংস করেনি, দেশের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করেছে। সীমান্ত এলাকায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সরকারের ব্যর্থতায় রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে। তাই ব্যাংক ডাকাতিতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। দেশ চালনায় সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
আরেক প্রশ্নের জাবাবে আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গা আসার পর সরকার একের পর এক আলোচনা করে গেল কিন্তু এখন রোহিঙ্গা বিষয়টি কোথায় দাঁড়িয়েছে। সরকার যেখানে হাত দিয়েছে সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে। এরা দুইটি জায়গায় সফল হয়েছে। একটি হলো বিরোধী দলকে দমন করতে; আরেকটি এ দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থ বিদেশে পাচার করতে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে।’
এ সময় নবী খান সোহেলের বড় মেয়ে জান্নাতুল সুচনা বলেন, ‘আমার বাবা রাজনৈতিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৯০টির বেশি মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। বাবা ভীষণ অসুস্থ। বহু বছর ধরে আমরা মানসিক অত্যাচারে মধ্যে আছি। আমার বাবা যেন ন্যায়বিচার পান, আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। ঈদ আসছে কিন্তু আমাদের মনে কোনো ঈদ নেই। আমাদের জীবনে কোনো বিশেষ দিন নেই।’
শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/