‘জেলে কোনো রাজবন্দি নেই’ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জিজ্ঞাসা, ‘ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনারা কি চোর হিসেবে জেলে গিয়েছিলেন? না, রাজবন্দি হিসেবে জেলে গিয়েছিলেন? প্রধানমন্ত্রীও জেলে গিয়েছিলেন। উনি কী হিসেবে জেলে গিয়েছিলেন? জনগণ জানতে চায়।’
শনিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব’-এর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন অভিভাবক, স্ত্রী-সন্তান তার বাসায় আসেন জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে আমার স্বামী জেলে, কেউ বলে আমার ছেলে জেলে, কেউ বলে আমার ভাই জেলে। কতজনের জন্য কথা বলব, কতজনের জন্য সান্ত্বনা দেব।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা কত বার বলেছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে অথবা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠান। ওনার অবস্থা বেশি ভালো নয়। কিন্তু তারা বলছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। অর্থাৎ তাকে হত্যা করতে চায়। এমনভাবেই করতে হবে, যাতে কেউ কিছু বলতে না পারে। এক সময় রাশেদ খান মেনন ও আ স ম আব্দুর রবকে কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গ্রেপ্তার করে পৃথিবীর কোনো আন্দোলন কোনো স্বৈরশাসক থামাতে পারেনি। একদিন না একদিন এই স্বৈরশাসকের পতন ঘটবেই জনরোষের মুখে। এটাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সে নির্বাচন বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই।’
সরকারকে উৎখাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা তো সরকারই দেখি না। সুতরাং এ সরকারকে উৎখাত করার বা রাখার দায়-দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। জনগণ যখন মনে করবে, তখন এই সরকারকে লাথি দিয়ে ফেলে দেবে। তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’
দেশে গণতন্ত্র, সুশাসনের আবহাওয়া তৈরি করতে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করব। কিন্তু আমাদের গায়ে যদি লাঠির বাড়ি পড়তে থাকে, তাহলে কতদিন শান্তিপূর্ণ থাকব। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ একসঙ্গে চালাতে হবে। না হলে আরও অনেক হাবিবুর রশিদ হাবিবদের কারাগার যেতে হবে; প্রতিকার পাওয়া যাবে না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি শহীদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম সান্ত, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ জামান তারেক, জয়দেব জয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ বকুল, জাকির হোসেন, মো. ইব্রাহীম, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ঢাকা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব সজীব রায়হান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ পরাণ, ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম মিশু প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/জোবাইদা/অমিয়/