ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪

বার্নাব্যুতে এল ক্লাসিকো জয় রিয়ালের

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৪ এএম
বার্নাব্যুতে এল ক্লাসিকো জয় রিয়ালের
ছবি : সংগৃহীত

মাদ্রিদের মাঠে শুরুটা বার্সেলোনারই ছিল। সেই গোল আবার দ্রুতই পরিশোধ করেছিল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সেলোনা এগিয়ে যাওয়ার পর সেই গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার পর শেষ মুহূর্তের গোলে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লস ব্লাঙ্কোসরা।

এই জয়ে লিগ শিরোপা জয়ের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিগে দুইয়ে অবস্থান করা বার্সেলোনার চেয়ে ১১ পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। ৩২ ম্যাচে এখন রিয়ালের পয়েন্ট ৮১ আর বার্সেলোনার ৭০।

রবিবার (২১ এপ্রিল) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ফিনিয়ার কর্নারে দূরের পোস্টে লাফিয়ে উঠে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আন্দ্রে ক্রিস্তেন্সেন।

গোল হজম করলেও মনযোগ হারায়নি মাদ্রিদ। ১৮ মিনিটে নিজেদের বক্সে পাউ কুবারসি লুকাস ভাস্কুয়েজকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে দলকে ম্যাচে ফেরান ভিনিসিয়ুস। চলতি লিগে এটি তার ১৩তম গোল।

এরপর সমতায় থাকা ম্যাচে গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে লড়াই চালাতে থাকে দুই দলই। প্রায় গোলের দেখা পেয়ে গিয়েও ভাগ্যের সহায়তা না পাওয়ায় তা আর গোল বলে গণ্য হয়নি। কর্নার থেকে আসা বল লামিন ইয়ামাল ব্যাক ফ্লিক করলে তা  কোনোমতে ফেরান আন্দ্রি লুনিন। গোললাইনের ওপর থাকা বলের জন্য বার্সার খেলোয়াড়রা গোলের জন্য আবেদন করতে থাকেন। লা লিগায় গোললাইন টেকনেলোজি না থাকলেও ভিএআর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত দেয়, বল গোললাইন অতিক্রম করেনি।

দ্বিতীয়ার্ধের ৬৯ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের বাকানো শট ফেরান তোরেস ডামি করলে লুনিন কোনোমতে তা ফেরালেও ক্লিয়ার করতে পারেননি। সেখান থেকে বল পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। এবারও দ্রুতই সমতা ফেরায় রিয়াল তিন মিনিটের মধ্যেই। বাম প্রান্ত থেকে করা ভিনিসিয়ুসের দারুণ ক্রস দূরের পোস্টে পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিং করেন লুকাস ভাস্কুয়েজ।

সমতা ফেরানোর পর বার্সেলোনার রক্ষণে আক্রমণ বাড়াতে থাকা স্বাগতিকরা। কিছু সুযোগ নষ্টও করে তারা। তবে যোগ করা প্রথম মিনিটে আর কোনো ভুল করেননি জুড বেলিংহাম। সতীর্থ ভাস্কুয়েজের নিচু করে নেওয়া পাস বক্সের অন্য প্রান্তে পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল আদায় করে নেন বেলিংহাম। আর তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের।

সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ০১:০২ এএম
সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ছবি : সংগৃহীত

অনিশ্চয়তার খেলা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। সেটাই যেন প্রমাণ হতে চলেছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে। ক্যারিবীয় দানবদের শক্ত ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল ‘পুঁচকে’ পাপুয়া নিউগিনি (পিএনজি)। কিন্তু বড় মঞ্চের চাপ শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি অনভিজ্ঞ দলটি। তাদের বিপক্ষে সাময়িক চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়ায় টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রবিবার (২ জুন) দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পিএনজিকে হারিয়েছে ৫ উইকেটে।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ‘সি’ গ্রুপে ম্যাচে ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকদের তেমন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি পিএনজি। কোনোরকমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে থামে ১৩৬ রানে। টি-টোয়েন্টির যুগে মামুলি এই পুঁজি নিয়েই হুমকি হয়ে উঠেছিল দ্বিতীয়বার টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া  দলটি। ৯৭ রানে ফেলে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ উইকেট। তখন জয় থেকে ৪০ রান দূরে ছিল ক্যারিবীয়রা। হাতে ছিল ৪ ওভার। সেই মুহূর্তে জয়ের স্বপ্ন বেশ তাজা ছিল পিএনজি শিবিরে। সেই স্বপ্ন অন্ধকারে মিলিয়ে দেন রস্তন চেজ ও আন্দ্রে রাসেল। দুজনের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে জয়ের হাসি ফুটে স্বাগতিকদের মুখে।

সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে গোল্ডেন ডাক মারেন জনসন চার্লস। তারকা ওপেনারের বিদায়ের ধাক্কা সামলে নেন ব্র্যান্ডন কিং এবং নিকোলাস পুরান। দুজনের প্রতিরোধে দুর্বার না হলেও বেশ সাবলীল গতিতে চলছিল তাদের রানচাকা। কিন্তু তাদের ৫৩ রানের জুটি ভাঙতেই যেন দিশেহারা হয়ে যান ক্যারিবিয়ানরা। চোখের পলকেই তাদের সংগ্রহ হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৯৭ রান! ১৬তম ওভারের শেষ বলে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন শেফার্নি রাদারফোর্ড (২)। তাকে ফেরান পিএনজি অধিনায়ক আসাদ ভালা।

কিং-পুরানের জুটি ভেঙেছিলেন জন কারিকো। তিনি আউট করেন পুরানকে (২৭)। কিংয়ের বিদায়ঘণ্টা বাজান আসাদ ভালা। চাপের মুখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল আউট হন মাত্র ১৫ রান করে। তাকে শিকার বানান চাঁদ সোপার। তবে পিএনজি বোলারের এসব সাফল্য বৃথা যায় রস্তন-রাসেলের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে। ম্যাচসেরা রস্তনের ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান (২৭ বলে)। অবসর ভেঙে জাতীয় দলে ফেরা রাসেল অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের জুটিতেই জয় দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করল ২০১২ এবং ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা।

এর আগে বোলিংয়ে বেগ পোহাতে হয়নি ক্যারিবীয় বোলারদের। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষকে বেঁধে ফেলে অল্প রানে। রাসেল ও আলজারি জোসেফ ২টি করে এবং আকিল হোসেন, রোমারিও শেফার্ড ও গুটাকেশ মোটি ১টি করে উইকেট পান। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে দারুণ ব্যাটিং করেন সিসে বাউ (৪৩ বলে ৫০ রান)। তুলে দেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। তবে যোগ্য পাননি সিসে। তাই ফুলে-ফেঁপে উঠেনি পিএনজির দলীয় সংগ্রহ। ফলস্বরূপ টুর্নামেন্টে প্রথম জয়ের অপেক্ষা বাড়ল তাদের। দলটি ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশ নিয়ে তিনটি ম্যাচেই হেরেছিল।

 

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামছে আরেক স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল।

রবিবার (২ জুন) গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সি গ্রুপের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে মাঠে গড়াবে ম্যাচটি।

টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল বলেন, ‘আমরা আগে বোলিং করবো। দেখে খুব ভালো উইকেট মনে হচ্ছে। আশা করি তাদের দ্রুত আটকে রাখতে পারবো এবং আমাদের ব্যাটাররা লক্ষ্য তাড়া করতে পারবে। এটা সেই প্রভিডেন্সের উইকেট, এতা আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ দেয়। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে আমরা বেশ উদ্দীপ্ত। এতা এমন একটা ব্যাপার যার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আশা করছি আমরা সেই অনুযায়ী করতে পারবো। দুই অলরাউন্ডার ও তিন স্পিনার নিয়ে দল সাজিয়েছি আমরা।’

অন্যদিকে, টস হেরে পিএনজির অধিনায়ক আসাদ ভালা বলেন, ‘গত দুইদিনে বৃষ্টি হলেও উইকেট দেখে ভালোই মনে হচ্ছে। অলরাউন্ডারদের নিয়ে দলে সঠিক ভারসাম্য রয়েছে। প্রস্তুতিও বেশ ভালো হয়েছে। এখানে আমরা দুই সপ্তাহ ধরে আছি এবং টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

আইসিসির সহযোগী দেশের বিপক্ষে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এই ম্যাচকে ঘিরে সবার দৃষ্টিতেই ফেবারিট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই পাপুয়া নিউ গিনিকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ

জনসন চার্লস, ব্র্যান্ডন কিং, নিকোলাস পুরান, রস্টন চেইজ, রভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), শেরফানে রাদারফোর্ড, আন্দ্রে রাসেল, রোমারিও শেফার্ড, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, গুদাকেশ মতি।

পাপুয়া নিউ গিনি একাদশ

টনি উরা, শেশে বাউ, আসাদ ভালা (অধিনায়ক), লেগা সিয়াকা, হিরি হিরি, চার্লস আমিনি, কিপলিন দরিগা, আলেই নাউ, চাদ সোপার, কাবুয়া মোরেয়া, জন কারিকো।

বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৪ থাইল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম
থাইল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। আজ রোববার (২ জুন) মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডকে ৩টি লোনাসহ ৪১-১৮ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নেয় লাল-সবুজের দল। এর মধ্য দিয়ে মর্যাদার বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডিতে টানা চতুর্থবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিল দলটি। আজ খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল ২৩-০৮ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল।

শেষ চারের লড়াইয়ে দারুণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের তারকা রেইডার অধিনায়ক আরদুজ্জামান মুন্সি। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আরদুজ্জামান একাই তুলে আনেন মূল্যবান ১১টি পয়েন্ট। সেমিফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ম্যাচসেরার হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় সংসদের হুইপ সানজিদা খানম, এমপি এবং দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম।

কাকতালীয়ভাবে গত আসরের দুই সেমিফাইনালিস্ট এবারো পস্পরের বিরুদ্ধে আজ মুখোমুখি হয়। অভিন্ন প্রতিপক্ষের ম্যাচের ফলাফলও অভিন্ন। শুধু পার্থক্যে ভেন্যুতে। গত বছর বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল থাইল্যান্ড। পল্টনের শহীদ নূর হোসেন ভলিবল স্টেডিয়ামে সেদিন থাইল্যান্ডকে ৪৫-২৬ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

আজ ম্যাচের শুরুতেই বাজিমাত বাংলাদেশের। খেলার মাত্র ১২ সেকেন্ডেই বোনাসসহ থাইল্যান্ডের কাছ থেকে ৪ পয়েন্ট তুলে আনেন আরদুজ্জামান। খেলার ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম লোনা অর্জন বাংলাদেশের। এ সময় ১০-১ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ১৯ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় লোনা বাংলাদেশের। আরদুজ্জামান, মিজানুররা এগিয়ে ছিল ২৩-৭ পয়েন্ট ব্যবধানে। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি থাইল্যান্ড।

প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন থাইল্যান্ডের। খেলার ২৮ মিনিটে তৃতীয় লোনা (৩৪-১২ পয়েন্ট এগিয়ে বাংলাদেশ) তুলে একচেটিয়া ম্যাচ জয় স্বাগতিকদের। খেলাশেষে ম্যাচসেরা বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, চতুর্থবারের মতো আমি বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডিতে খেলছি। প্রথম আসরে তিনবার ম্যাচসেরা, দ্বিতীয় আসরে একবার, তৃতীয় আসরে ম্যাচসেরা না হলেও এবার চতুর্থবার আসরে ৬ ম্যাচের মধ্যে ২ বার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছি। আসলে আমি সেরা হয়েছি এটা বড় কথা নয়। দল সেমিফাইনালে জিতে ফাইনালে উঠেছে এটাই আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার। সেমিফাইনালেও মতো ফাইনালেও আমরা জিততে চাই। দেশকে আরেকবার শিরোপা রঙে রাঙাতে চাই।

বাংলাদেশের কোচ আব্দুল জলিল বলেন, আমি গতকালই বলেছিলাম থাইল্যান্ডকে হারিয়ে আমরা ফাইনালে যেতে চাই। ছেলেরা দারুণ খেলে আজ সেই উপলক্ষ এনে দিয়েছে। ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। ওরা শুধু আজ সেমিফাইনালেই নয়; পুরো টুর্নামেন্ট অর্থাৎ গ্রুপপর্ব থেকে সেমিফাইনাল ৬ ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছে। গত তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন হলেও এবারের দলটাকে আমি বলব সবচেয়ে দুর্দান্ত।

বাস্কেট বলের দেশে ক্রিকেট জ্বর

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম
বাস্কেট বলের দেশে ক্রিকেট জ্বর
ছবি : সংগৃহীত

মাইকেল জর্ডান, লেব্রন জেমস কিংবা কোবে ব্রায়ান্ট, নামগুলো শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবলের দৃশ্য। অন্যদিকে বাবে রুথ, রজার ক্লেমেন্স কিংবা হাঙ্ক অ্যারোনের নাম উঠে আসতেই মনে পড়ে বেসবলের কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খেলাধুলার ক্ষেত্রে এই দুটি ইভেন্ট বেশ জনপ্রিয়। সাম্প্রতিককালে ফুটবলও বেশ এগিয়ে। বিশেষ করে লিওনেল মেসির আবির্ভাবের পর। কারো কারো মতে, বাস্কেটবল কিংবা বেসবলের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল। মার্কিনীরা যাকে ভালোবেসে ডাকে সকার বলে। সেই দেশে আগামী একমাস কাঁপবে ক্রিকেট জ্বরে।

বৈশ্বিক কোন আসরে আমেরিকা ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে এই প্রথম। তাও আয়োজক হওয়ার সুবাদে। কারণ বাছাই পর্ব দলটির জন্য রীতিমতো কঠিনসাধ্য একটা ব্যাপার। ইতিহাস তেমনই স্বাক্ষ্য দেয়। ২০০৭ থেকে ২০২২, টানা আট আসরে বাছাই পর্বে অংশ নিলেও টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট মেলেনি তাদের। এবার সহ-আয়োজক হওয়ার সুবাদে মিলেছে সেই টিকিট। যা নিয়ে মার্কিনিদের মধ্যে কাজ করছে আলাদা রোমাঞ্চ। ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক ও টেক্সাসের তিন ভেন্যুতে মাসখানেক চলবে ক্রিকেট লড়াই।

যে দেশটিতে বাস্কেটবল, বেসবল কিংবা সকারের রোমাঞ্চে ভেসে যায় সবাই, সেখানে ক্রিকেট কতটা মনে দাগ কাটতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেশটিতে নতুন করে ক্রিকেট উন্মাদনা তৈরি করেছে মার্কিন দল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

অনেকে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্রিকেট একেবারেই নতুন ইভেন্ট। বাস্তবে কিন্তু তা নয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট প্রথম পা রেখেছিল সেই ১৮৪৪ সালে ম্যানহ্যাটনে। যেখানে কানাডার সঙ্গে হেরেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তথ্য অনুসারে, আমেরিকায় প্রথম ক্রিকেট খেলা হয়েছিল ১৭৩৭ সালে জর্জিয়ায়। সেই হিসাব ধরলে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরিচয় ২৩৫ বছরের! এতদিনের পরিচয় থাকলে কেন ক্রিকেটের প্রসার ঘটেনি সেখানে। কেন অনেকটা ক্রিকেট সাদৃশ্য খেলা বেসবল সেখানে অনেক জনপ্রিয়? এর পেছনেও রয়েছে ইতিহাস।

১৭৩৭ সালে জর্জিয়ায় যে ক্রিকেট খেলা হতো সে কথা ‘দ্য টেনটেড ফিল্ড’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন টম মেলভিল নামের এক ভদ্রলোক। ক্রিকেটের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসাবে তিনি লিখেছেন, ‘গৃহযুদ্ধের সময় ক্রিকেট খেলা কঠিন ছিল। ক্রিকেটে একটি মসৃণ ব্যাটিং পিচের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বেসবলে তার দরকার হয় না। আরও একটি কারণ, বেসবল অনেক কম সময়ে খেলা সম্পন্ন করা যায়।’ এ ছাড়াও তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকার মানুষের চরিত্রের সঙ্গে ক্রিকেটের চরিত্র মিলত না সে সময়।’

ক্রিকেট খেলতে দরকার হয় দীর্ঘ সময়।  টেস্ট ক্রিকেটে  পাঁচদিন। ওয়ানডের ক্ষেত্রে প্রায় সাড়ে সাত ঘন্টা, টি টোয়েন্টিতে সাড়ে তিন ঘন্টা। তবু কেন বাড়ছে এই ইভেন্টের প্রতি আগ্রহ। এর অন্যতম কারণ হিসাবে উঠে এসেছে বেসবলের তুলনায় ক্রিকেটের উত্তেজনা অনেক বেশি। যে খেলায় উত্তেজনা যত বেশি সেই খেলা যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের তত পছন্দের। ক্রিকেট সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের ধারণা বদলের প্রধানতম কারণ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। ২০০৮ সালে আইপিএল শুরু হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসল উন্মাদনা ও উত্তেজনা দর্শকদের কাছে টেনেছে। ফলে ধীরে ধীরে সব দেশেই শুরু হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ। ক্রিকেট সম্পর্কে ‘বিরক্তিকর’ ধারণা বদলে দিয়েছে আইপিএল এবং অন্য লিগগুলি। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণের সুবাদেই পরিবর্তন হয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীদের মনোভাব।

ক্রিকেটের এই বিবর্তনই অটুট রেখেছে আকর্ষণ ও জনপ্রিয়তা। খেলার চরিত্র বদলের সঙ্গে রঙিন পোশাক, রাতে খেলাও বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। ব্রিটিশ ক্রীড়া সাংবাদিক টিম উইগমোর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে লিখেছেন, ‘আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটকে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের মতো করে তুলেছে। একটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররা খেলে থাকেন এখানে। অথচ চ্যাম্পিয়ন হয় সব সময় ভারতের একটি দলই।’

আইপিএলের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে পরিচিত চিয়ার লিডারদের নিয়ে আসা হত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এই পদক্ষেপও ক্রিকেট সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের আগ্রহ তৈরি করেছিল। আইপিএলের ধারণা থেকেই এখন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে মেজর ক্রিকেট লিগ। গত বছর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। আগামী মৌসুমে তো এই লিগে খেলবেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও।

যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটারদের সংখ্যা লজ্জায় ফেলে দিতে পারে অনেক টেস্ট খেলুড়ে দেশকেও, প্রায় দুই লাখ। যাঁদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ছাড়া কেউই আদতে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ নন। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট দল এক কথা বলা যায় পরবাসী টিম। আসন্ন বিশ্বকাপেই যেমন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেবেন উন্মুক্ত চাঁদ। যার নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। আইপিএলে বিভিন্ন দলে খেলা সানি সোহাল, সিদ্ধার্থ ত্রিবেদীরাও এখন স্বপ্নের দেশের ক্রিকেটার। যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ক্রিকেট খেলার জন্য সেখানে গিয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার লিয়াম প্লাঙ্কেট। তাঁর স্ত্রীর জন্ম আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায়। তাদের হয়েই খেলবেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার শ্যাডলি ভ্যান শালউইকও এখন মার্কিন মুলকের ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ডের বা হাতি হার্ড হিটার ব্যাটিং অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসন তো এখন যুক্তরাষ্ট্র টিমের মূল আকর্ষণ।  

আমেরিকায় মাঝারি মাপের ক্রিকেট প্রতিযোগিতাতেও এখন গ্যালারিতে দর্শক দেখা যায়। আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৪০০ ছোট ছোট ক্রিকেট লিগ হয়। খেলোয়াড়দের প্রায় সকলেরই শিকড় দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা বা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। আমেরিকার অনূর্ধ্ব-১৯ পুরুষ এবং মহিলা দলের সদস্যদের সকলেই আদতে ভিন্দেশি।

অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে ভালোমতো গ্রহণ করলে ফলাফল ইতিবাচকই হবে। ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আমেরিকা গুরুত্ব দিলে আরও অনেক দেশ গুরুত্ব দেবে। সেটা আমেরিকার প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ হিসাবেই হোক বা ক্রীড়া ক্ষেত্রে দাপট দেখানোর জন্যই হোক, আখেরে লাভ ক্রিকেটেরই।

নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ডের মতো ইউরোপের অন্য দেশ থেকেও আমেরিকায় আসছেন ক্রিকেটাররা। আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারা এখন সেই সব প্রতিভাবান এবং দক্ষ ক্রিকেটারের খোঁজ করছেন, যাঁদের নিজের দেশের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। উন্নত জীবন এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নপূরণের আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা। টাকার অভাবে ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ় বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থা। সাফল্য এলে অর্থসঙ্কট হবে না বলেই বিশ্বাস দেশটির ক্রিকেট কর্তাদের। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তানের মতো প্রথম সারির ক্রিকেট খেলিয়ে দেশগুলির সঙ্গে এখনই কুলিয়ে উঠতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। কর্তাদের আশা, একবার জনপ্রিয়তা পেয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটকে আটকানো কঠিন হবে। অদূর ভবিষ্যতে ২২ গজের লড়াইয়ে সমীহ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ মানুষের আগ্রহ না থাকলেও প্রায় ৭০ লাখ নাগরিকের আবার প্রবল আগ্রহ ক্রিকেট ঘিরে। এই ৭০ লাখ মানুষের প্রায় ৪২ লক্ষ সে দেশে গিয়েছেন ভারত থেকে। প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ গিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশ থেকে। আরও ১৫ লক্ষ মানুষ আমেরিকায় গিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিভিন্ন দেশ থেকে বা ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল এমন কোনও দেশ থেকে। আদতে ব্রিটেনের কিছু মানুষও আছেন যাঁরা ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহী। এই ৭০ লক্ষের ৬৮ শতাংশের জন্ম আমেরিকায় নয়। এদের আগ্রহ, ভালবাসায় ভর করেই বেসবল, ফুটবলের দেশে ডালপালা মেলতে শুরু করেছে ক্রিকেট।

ডালাসে বাবর আজম ও সুনীল গাভাস্কারের সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
ডালাসে বাবর আজম ও সুনীল গাভাস্কারের সাক্ষাৎ
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে এখন দলগুলো অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে। পাকিস্তান ও ভারত এই দুই দলের ম্যাচগুলো হবে যুক্তরাষ্ট্রে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক তথা সহ-আয়োজক মার্কিনিদের বিপক্ষে খেলতে এখন ডালাসে অবস্থান করছে বাবর আজমরা।

ধারাভাষ্যকের ভূমিকা পালন করতে সেখানে অবস্থান করছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাস্কার। সেখানেই পাকিস্তান অধিনায়কের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তার। সেই ভিডিও ‘এক্সে’ শেয়ার করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

দুই দলের ক্রিকেট দ্বৈরথ বহু বছরের পুরোনো। তাই দুই দলের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের একসাথে কুশল বিনিময় করার ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা জায়গা করে নেয় ভক্ত ও সমর্থকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই দেশের দুই সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটীয় আইকন করমর্দন করে কুশল বিনিময় করছেন এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছেন। 
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ সময় ৬ জুন নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্সআপ পাকিস্তান।