![রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বুয়েটের বৈশ্বিক খ্যাতি বাড়াবে: বুয়েট অ্যালামনাই](uploads/2024/04/06/1712341137.buet alumnikk.jpg)
অপরাজনীতিমুক্ত অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকায় ২০২১ সাল থেকে বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিং, অ্যাকাডেমিক সূচক এবং সাইটেশন স্কোর বাড়ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)। যদি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে তাহলে বুয়েট তার বৈশ্বিক খ্যাতি আরও বাড়াতে এবং বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বুয়েট অ্যালামনাই সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত এবং মহাসচিব প্রকৌশলী মাহতাব উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
গত ৩ এপ্রিল বুয়েট অ্যালামনাই বোর্ড অব ট্রাস্টি, বুয়েট আবাসিক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের সঙ্গে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্তগুলো ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-এর সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিষয়ে বুয়েট অ্যালামনাই-এর বক্তব্য’ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, বুয়েট অ্যালামনাই মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পূর্ণ দায়িত্ব উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের। কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মত প্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর। বিগত পাঁচ বছরে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম অবিঘ্নিত ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণার ক্ষেত্রে সম্মানজনক অর্জন ও স্বীকৃতির ক্রমোন্নতি এই ধারাবাহিক সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়। এই পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া কারোরই কাম্য হতে পারে না।
বুয়েট জঙ্গিবাদ লালনের ক্ষেত্র নয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জঙ্গিবাদের ন্যূনতম আভাস বা সম্ভাবনা দেখা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকার নিশ্চয়ই কঠোর হস্তে তা দমন করবে। একই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্ররা যে নিরাপত্তাহীনতার কথা বারংবার প্রকাশ করছে, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুয়েট অ্যালামনাই বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে।
বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা। শুক্রবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ সাম্প্রতিক সময়ে বুয়েটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালুর যৌক্তিকতা দেখিয়ে তারা বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ক্ষমতাসীন দল ও সংগঠন যে উদ্যোগ নিচ্ছে সেটা ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার মাধ্যমে ঠেকানো যাবে না। তথাকথিত রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসে প্রশাসনের একতরফা কর্তৃত্ব ছাত্র অধিকারকে মারাত্মকভাবে সংকুচিত করে। লুটপাট ও দুর্নীতি অনিয়ন্ত্রিত হয়।’
বুয়েটের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘অপরাজনীতিকে সঠিক রাজনীতির মধ্যদিয়ে মোকাবিলা না করে রাজনীতির ওপরই পুরো দায় চাপিয়ে দিলে, তাতে অপরাজনীতির লাভই হয়।’
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বুয়েট সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক ক্যাম্পাস- উল্লেখ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বলেন, ‘বিভিন্ন মত, চিন্তা, অভিব্যক্তি, সংগঠনের স্থান বুয়েটে হবে না- এরকম দাবি করাটা কি সঠিক হয়? আমরা এই বিষয়গুলো বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ভেবে দেখার জন্য আহ্বান জানাব।’
ছাত্রলীগ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধ শক্তি রাজত্ব করছে বলে যে আশঙ্কার কথা উল্লেখ করছে, তা ছাত্রলীগের ‘দখলদারিত্বের রাজনীতির একটি কৌশল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা বলেন, ‘এই ছাত্রলীগ যখন প্রতিক্রিয়াশীল, অন্ধকারের শক্তিকে রুখে দেওয়ার কথা বলে- এটাকে রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।’