ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বুয়েটে হিযবুতের ইমেইল, নিরাপত্তা চান শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৬ এএম
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৭ এএম
বুয়েটে হিযবুতের ইমেইল, নিরাপত্তা চান শিক্ষার্থীরা
ছবি : সংগৃহীত

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীদের ইমেইলে বার্তা দেওয়া হয়েছে। যদিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না হিযবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে এই মেইল পাঠানো হয়েছে কি না। এ ঘটনায় বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা চেয়ে আইনিব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এদিকে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ পেলে বুয়েটের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে বলে বিবৃতি দিয়েছে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাত ১২টায় বুয়েটের সব বর্ষের বহু সাধারণ শিক্ষার্থীর ইনস্টিটিউশনাল ইমেইলে হিযবুত তাহরীর নামক নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন থেকে একটি পিডিএফ প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরকারীদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে।

শিক্ষার্থীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘৫ এপ্রিল রাত ১২টায় পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির শিরোনাম ছিল ‘ছাত্রলীগের আগ্রাসন থেকে আমাদের মেধাবী সন্তানদের কে নিরাপত্তা দেবে?’ এবং তারা সাধারণ ছাত্রদের এই নিষিদ্ধ সংগঠনের দিকে আহ্বান করে। আজকে এবং এর আগেও পৃথক ইমেইল ব্যবহার করে এ জাতীয় পিডিএফ পাঠানো হয়েছে।’

এর আগেও নিষিদ্ধ ও জঙ্গি সংগঠনের নামে ইনস্টিটিউশনাল ইমেইলে মেইল পেয়েছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কৌশলে নিষিদ্ধ সংগঠনের এমন তৎপরতায় শঙ্কিত হয়ে আমরা বিভিন্ন সময় উপাচার্য এবং ছাত্রকল্যাণ পরিষদ বরাবর অভিযোগ করি। কে বা কারা গোপনে এরূপ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত চলমান বলে আমাদের জানানো হয়। নির্দেশনা দেওয়া হয় যে, আমরা যেন উপাচার্য স্যার, এডিএসডব্লিউ (ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের সহকারী পরিচালক) স্যার এবং আইআইসিটি (ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি) বরাবর অনলাইনে অভিযোগ দাখিল করি।’

শিক্ষার্থীরা জানায়, এভাবে গণহারে মেইল আসার পর আমরা সবাই অনতিবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানাই। পাশাপাশি আমাদের মধ্যে অনেকে এদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে জিডি করছে। তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘নিষিদ্ধ মৌলবাদী ও জঙ্গি সংগঠনের কোনো স্থান এই ক্যাম্পাসে হবে না এবং বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তা সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থেকে প্রতিহত করার চেষ্টা করবে।’

রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বুয়েটের বৈশ্বিক খ্যাতি বাড়াবে: বুয়েট অ্যালামনাই

অপরাজনীতিমুক্ত অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকায় ২০২১ সাল থেকে বিষয়ভিত্তিক র‌্যাংকিং, অ্যাকাডেমিক সূচক এবং সাইটেশন স্কোর বাড়ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)। যদি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে তাহলে বুয়েট তার বৈশ্বিক খ্যাতি আরও বাড়াতে এবং বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। 

শুক্রবার (৫ মার্চ) বুয়েট অ্যালামনাই সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত এবং মহাসচিব প্রকৌশলী মাহতাব উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। গত ৩ এপ্রিল বুয়েট অ্যালামনাই বোর্ড অব ট্রাস্টি, বুয়েট আবাসিক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের সঙ্গে এক জরুরি সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্তগুলো ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-এর সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিষয়ে বুয়েট অ্যালামনাই-এর বক্তব্য’ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বুয়েট অ্যালামনাই মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পূর্ণ দায়িত্ব উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের। কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মত প্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর। বিগত পাঁচ বছরে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম অবিঘ্নিত ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণার ক্ষেত্রে সম্মানজনক অর্জন ও স্বীকৃতির ক্রমোন্নতি এই ধারাবাহিক সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়। এই পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া কারোরই কাম্য হতে পারে না। 

বুয়েট জঙ্গিবাদ লালনের ক্ষেত্র নয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জঙ্গিবাদের ন্যূনতম আভাস বা সম্ভাবনা দেখা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকার নিশ্চয়ই কঠোর হস্তে তা দমন করবে। একই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্ররা যে নিরাপত্তাহীনতার কথা বারংবার প্রকাশ করছে, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুয়েট অ্যালামনাই বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে।

বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের  

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা। গতকাল শুক্রবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ সাম্প্রতিক সময়ে বুয়েটে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন। 

বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালুর যৌক্তিকতা দেখিয়ে তারা বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ক্ষমতাসীন দল ও সংগঠন যে উদ্যোগ নিচ্ছে সেটা ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার মাধ্যমে ঠেকানো যাবে না। তথাকথিত রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসে প্রশাসনের একতরফা কর্তৃত্ব ছাত্র অধিকারকে মারাত্মকভাবে সংকুচিত করে। লুটপাট ও দুর্নীতি অনিয়ন্ত্রিত হয়।’ 

বুয়েটের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘অপরাজনীতিকে সঠিক রাজনীতির মধ্য দিয়ে মোকাবিলা না করে রাজনীতির ওপরই পুরো দায় চাপিয়ে দিলে, তাতে অপরাজনীতির লাভই হয়।’

ছাত্রলীগ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধ শক্তি রাজত্ব করছে বলে যে আশঙ্কার কথা উল্লেখ করছে, তা ছাত্রলীগের ‘দখলদারিত্বের রাজনীতির একটি কৌশল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বলেন, ‘এই ছাত্রলীগ যখন প্রতিক্রিয়াশীল, অন্ধকারের শক্তিকে রুখে দেয়ার কথা বলে- এটাকে রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।’ 

ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বরাত দিয়ে ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ হবে না’ এমন একটি প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সন, ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়েছে। তবে উপাচার্য এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দাবি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উপাচার্য শুক্রবার গণমাধ্যমে রাজনীতি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি এবং তিনি কখনোই বলেননি যে, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এই বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল লিখেছেন, ‘ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো কথা আমি কোথাও বলিনি। ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো প্রশ্নও আমাকে করা হয়নি এবং আমি মন্তব্যও করিনি।’ একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রতিবেদকের মুখ দিয়ে প্রকাশিত বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য। সবাইকে অপপ্রচার ও গুজব থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ রইল।’

এর আগে দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং স্যার এএফ রহমান হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব এ ঘোষণা দেন। তারপর গণসংযোগের জন্য ৯ দফা দাবিতে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। এর আগে জুমার নামাজের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদদের জন্য দোয়া করেন শিক্ষার্থীরা। 

নিহত রুদ্র সেন শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ১৮ জুলাই রাতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যান।

প্রধান ফটককের নামকরণকালে সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘কাগজের এই লেখা যদি ছিঁড়ে ফেলা হয়, আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসব একই নাম। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। সারা দেশের শহিদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি দ্রুত আমাদের ৯ দফা মেনে নেওয়া না হয়, যদি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ, ইন্টারনেট কানেকশন স্বাভাবিক করা, ক্যাম্পাগুলোতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসমুক্ত না করা হয়, যদি হল-ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো টিয়ার শেল-গ্রেনেড-গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে। শহিদদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে সব হত্যা (শহিদ), হামলা-নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তারের চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালমান থাকবে।’

এ সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার বা গুম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে দেশে চলমান গণহত্যা-নির্যাতনের ভয়াবহতা সর্বত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি
নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহত আবু সাঈদের মা-বাবার হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেক দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সে সময় ভিসি আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তিনি আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম, আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। সন্তানকে তো আর ফিরে পাব না। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব।’ সাঈদের বাবা আরও জানান, প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন। 

মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার টিউশনির জমানো টাকায় চলতাম আমরা। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।’ আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ, কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশে সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ সাড়ে ৭ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন। সেদিন সন্ধ্যার পর পরই দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নিহত আবু সাঈদের পরিবারের পাশে বেরোবি থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাসিবুর রশীদ। ১৭ জুলাই থেকে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি
অধ্যাপক জাহিদুল করিম

সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ও কিছু প্রতিবাদী শিক্ষককের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে অব্যাহতিপত্রটি পোস্ট করার পর ভাইরাল হয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে ম্যাসেঞ্জারে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অব্যাহতিপত্র রেজিস্ট্রারকে মেইল করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

জাহিদুল করিম ২০১০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন। 

শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলীয়করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ 

জাবিতে ১৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করা এই শিক্ষক বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধকে জাগ্রত করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি থেকে আমি অব্যাহতি ঘোষণা করছি।’

জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তালিকা করে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানান উপাচার্য। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী  আহত হয়েছে, এমন সব শিক্ষার্থীদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি প্রক্টরকে। তালিকার মাধ্যমে হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাদের তালিকা পেলে আমরা যেকোনো সাহায্য করতে পারব।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে, অনিক নামের একজন শিক্ষার্থীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার খাদ্যনালী ফুটাে হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তালিকা করা শুরু করেছি। ৮-৯ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খোঁজ পেয়েছি। যাদের টাকার প্রয়োজন ছিল, দ্রুত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের তালিকার কাজ চলমান রয়েছে। আজ থেকে বিভাগ অনুযায়ী খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যার যে ধরণের সহয়তা দরকার হবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গুলিবিদ্ধ ৫ শিক্ষার্থী ঢামেকে ছিল। তাদের চারজন রিলিজ পেয়েছে। আরেকজনকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। আমরা সাবর্ক্ষণিক তাদের খোঁজ রেখেছি। আমি নিজেও নিয়মিত ঢামেকে যেয়ে তাদের দেখে এসেছি। উপাচার্য মহোদয়ও আমাদের মাধ্যমে তাদের খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত।’

মুজাহিদ বিল্লাহ/অমিয়/