![সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে রাবিতে ইফতার](uploads/2024/04/07/1712473068.cam-jwe.jpg)
মুসলিম দেশগুলোতে রমজান মাস এলে সবাই রোজা রাখার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের দৈনন্দিন কার্যাবলির সময়সূচির মধ্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। এ মাসে বিকেল থেকেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন আয়োজন শুরু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরাও বিকেল থেকে ঠিক একই আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে শহরে বা গ্রামের নিজ বাড়িতে ইফতারের যে আয়োজন করা হয় তার থেকে ক্যাম্পাসের আয়োজন কিছুটা ভিন্ন।
বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করলেও ক্যাম্পাসে এ আয়োজনে অংশ নেন বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের মানুষ। এখানে একজনের সঙ্গে আরেকজনের সম্প্রীতির বন্ধনে সম্পর্ক হয়ে ওঠে ভ্রাতৃত্বের। কিন্তু এই সম্প্রীতির বন্ধনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি। এ কারণে সবাই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নিতে পারছেন না। কেউ কেউ খরচ বহন করতে না পেরে ইফতার করছেন মসজিদেও।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, শহিদ হবিবুর রহমান হল মাঠ, শেখ রাসেল মাঠ, জুবেরি মাঠ, সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, শাহ্ মখদুম হল মাঠসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের গ্যালারি কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন, বিভাগ, ব্যাচ ও বন্ধুদের ইফতার। জানা যায়, প্রত্যেকটি হলের কক্ষ ও ছাদেও মিলেমিশে ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা। মেয়েরাও সিনিয়র-জুনিয়র মিলে নিজ নিজ হলে ইফতার করেন। এদিকে মেসে ও বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে নেই। বিকাল হলেই তারা ইফতারের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইফতারির এমন চিত্র জানান দেয় শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতি ও বন্ধনের কথা। কিন্তু শিক্ষার্থীরা জানান, একসঙ্গে ইফতার করার অনেক আনন্দ থাকলেও বিপত্তি বাধে ইফতারসামগ্রী কিনতে গিয়ে। আকাশছোঁয়া দামে মনমতো কিছুই কিনতে পারেন না তারা। শুধু মুড়ি, ছোলা, জিলাপি, পিঁয়াজুতেই সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে তাদের।
বন্ধুদের সঙ্গে শহিদ মিনার চত্বরে ইফতার করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করলে রোজার মাসে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে না পারার অপূর্ণতা আর থাকে না। সবার সঙ্গে মিলেমিশে ইফতার করলে মনে হয় পরিবারের সঙ্গেই আছি। তবে সবকিছুর দাম বেশি হওয়ার কারণে আশানুরূপ ইফতার করতে পারি না।
ইফতারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। নাম না প্রকাশ করে আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমার বন্ধুবান্ধবরা একসঙ্গে ইফতার করলেও তাদের সঙ্গে আমি সবসময় থাকতে পারি না। যেখানে ৩০-৪০ টাকার মধ্যে আমি প্রতি বেলার খাবার খাই, সেখানে ইফতার করতেই শতাধিক টাকা চলে যায়। তাই মাঝে মাঝে একাই হালকা খাবার দিয়ে ইফতারি করি অথবা আশপাশের মসজিদে চলে যাই।
ইফতারের নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন মেয়েরাও। বিকাল হলেই শুরু হয় তাদের প্রস্তুতি। ইফতার আয়োজন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী প্রিয়া বলেন, আশপাশের কক্ষের শিক্ষার্থী অথবা বান্ধবীদের সঙ্গে ইফতার করেন তিনি।
জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ার কারণে হলেই ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি তৈরি করেন তারা। সবসময় তাদের ফলমূল খাওয়া হয় না। তবে সবাই একসঙ্গে ইফতারে অংশ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোড়দার করছেন।
কলি