ঢাকা ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
English

বাবাকে বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে চান জবি শিক্ষার্থী আকাশ

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
বাবাকে বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে চান জবি শিক্ষার্থী আকাশ
ফতেহ আলী খান আকাশ

হৃদরোগে আক্রান্ত বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করতে চান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী ফতেহ আলী খান আকাশ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে এই শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কিডনি বিক্রির জন্য সহযোগিতা চেয়ে একটি পোস্ট দেন।

ফেসবুক পোস্টে আকাশ লিখেন, ‘আব্বুর হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। অক্সিজেন মিটার ৩৫ শতাংশে নেমে আসছে। জরুরি ভর্তি করাতে হবে। ডাক্তার বলছে পেইসমেকার লাগাতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কিন্তু এই মুহুর্তে পেইসমেকার লাগানোর মত এত টাকা আমার কাছে নাই। তাই আমি আমার একটা কিডনি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছি। ঢাকায় কোথায় কিডনি বিক্রি হয়? এক কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো, আব্বুকেও বাঁচাতে পারবো।’

সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় আকাশের পোস্টটি। আকাশের শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুরা অনেকেই আকাশের পাশে থাকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছেন। 

আকাশ বলেন, ‘আজ (বুধবার) সকালে বাবাকে শেরে বাংলায় হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করাবো। সেখানে বাবার ট্রিটমেন্ট শুরু হবে। বাবার শরীরে পেসমেকার লাগানোর কথা বলছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এ মুহূর্তে পেসমেকার লাগানোর মতো টাকা আমার কাছে নেই। সেজন্য কিডনি বিক্রি করার জন্য ফেসবুকে আমার পোস্ট দেওয়া। আমার কিডনি বিক্রি করে হলেও বাবার চিকিৎসা করাতে চাই।’

সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত আকাশ ক্যাম্পাসের সবার পরিচিত মুখ। করোনা মহামারির সময় হাসপাতালে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের গান শুনিয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন আকাশ।

মুজাহিদ/পপি

নোবিপ্রবিতে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে কর্মচারী বরখাস্ত

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
নোবিপ্রবিতে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে কর্মচারী বরখাস্ত
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রিসার্চ সেলের ৪৩ লাখ টাকার দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্তে আর্থিক অনিয়ম, হিসাব জালিয়াতি এবং অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ চৌধুরী জিকুকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোছাইন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, শিক্ষকদের গবেষণা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ আদায় করা প্রায় ৩০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে যথাসময়ে জমা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জিকুর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। ওই অর্থ তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়। পরে নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও ওই টাকা নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়নি। এছাড়া সাম্প্রতিক অডিটেও বিভিন্ন খাত মিলে ৪৩ লাখ টাকার আর্থিক গরমিল ধরা পড়ে।

এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। পাশাপাশি তার বাবাকে এক মাসের মধ্যে পুরো অর্থ পরিশোধের অঙ্গীকারে তাকে নিজের জিম্মায় নিয়েছেন বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোছাইন চৌধুরী বলেন, 'হিসাবে গরমিল এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে তাকে শোকজ করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বাবা এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে ছেলেকে জিম্মায় নিয়ে যান। ইতোমধ্যে আমরা আরেকটি নোটিশ দিয়েছি। তাতে বলা হয়েছে কেউ যাতে তার সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেনে না যায়।'

তিনি আরও জানান, অফিসের কার্যক্রম শুরু হলে তদন্ত কমিটি করা হবে। এ ঘটনায় জিকু এককভাবে দায়ী, নাকি এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

কাউসার আহমেদ/রিফাত/

গাড়ি চালিয়ে চীন থেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
গাড়ি চালিয়ে চীন থেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইউকুন তাও। ছবি: বিবিসি

আধুনিক বিশ্বে কেউ এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে চাইলে বিমানে চেপে বসে। সেটা যদি চীন থেকে যুক্তরাজ্য হয়, তা হলে তো কথাই নেই। কিন্তু ২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ইউকুন তাও বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গাড়ি চালিয়ে তিনি চীন থেকে ১১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছেন। এ জন্য তার ২৬ দিন লেগেছে। পাড়ি দিয়েছেন সাতটি দেশ- কাজাখস্তান, রাশিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস। উদ্দেশ্য ছিল শুধু স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো। কিন্তু তার এই যাত্রা হয়ে উঠেছে সাহস, সংকল্প ও আত্মবিশ্বাসের এক অনন্য গল্প।

ইউকুন তাও বর্তমানে হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর মেয়াদি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। তার এই পরিকল্পনার কথা তার মা-বাবাকে জানালে তারা মাসের পর মাস ধরে তাকে এই পাগলামি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। তবে তিনি থামেননি।

ভ্রমণ নিয়ে ইউকুন তাও বলেন, ‘আমি ওইসব দেশে আগে কখনো যাইনি। বস্তুত ১০ বছর ধরে বিদেশে যাওয়া হয়নি আমার। এই সিদ্ধান্ত নিতে মানসিক শক্তি আর সাহসের দরকার ছিল। অজানার মুখোমুখি হতে আসলেই সাহস লাগে।’

এই অজানা যাত্রার প্রস্তুতি নিতে সময় লেগেছিল প্রায় ছয় মাস। গাড়ি, রুট প্ল্যান, ভিসা ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে ভাবতে হয়েছে ইউকুন তাওকে।
ভ্রমণটা সহজ ছিল না ইউকুন তাও-এর। ১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করার কিছুদিন পরই চীন-কাজাখস্তান সীমান্তের কাছে এসে তার গাড়ির ইঞ্জিনে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। তাও-এর হাতে সময় কম ছিল। ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশ ছাড়তে না পারলে পুরো যাত্রা থেমে যেত। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে রাত-দিন কাজ করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গাড়ি ঠিক করে ফেলেন মিস্ত্রিরা।

২৬ সেপ্টেম্বর, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তাও পৌঁছান ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জোসেফিন বাটলার কলেজে। গাড়ির পেছনে ঝোলানো ছিল তার প্রিয় মাউন্টেন বাইক। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিনিধি তাকে স্বাগত জানায়। তাও অবাক হন। এত ভালোবাসা আর এত সম্মান পাবেন, সেটা তিনি আঁচ করতে পারেননি।  সূত্র: বিবিসি

/রিয়াজ

ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি শিক্ষকদের

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১০:১১ পিএম
ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি শিক্ষকদের
ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন শিক্ষকরা। ছবি: খবরের কাগজ

রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা খাতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। 

রবিবার (১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে এই দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেন তারা। 
জানা গেছে, পরবর্তীতে ওই স্মারকলিপিটি উপাচার্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠাবেন। স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩টি বিভাগের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করা হয়। 

এ বিষয়ে ঢাবির বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে যত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন হয়েছে সব আন্দোলনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ছিল অগ্রগামী। শুধু তাই নয় শিক্ষা ও গবেষণায়ও ঢাকা বিশ্ববদ্যালয় জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই কোনো বিশেষ মর্যাদা। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার নজির রয়েছে। আমরা চাই, সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা যুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এবং সর্বশেষ চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি।’ 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।

এ সময় ঢাবির স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এমএ কাউসার, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা, শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল আজিম, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কম খরচে পড়াশোনা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে পর্তুগাল

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
আপডেট: ০১ জুন ২০২৫, ১২:১২ পিএম
কম খরচে পড়াশোনা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে পর্তুগাল
ছবি: সংগৃহীত

পর্তুগাল শুধু ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন রাষ্ট্রই নয়, দেশটি এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম তীরে অবস্থিত শান্ত, ছিমছাম এই দেশটি এখন উচ্চশিক্ষার এক সম্ভাবনাময় ঠিকানা। কম খরচ, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ- সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য পর্তুগাল হতে পারে এক অনন্য সম্ভাবনার দেশ।

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সের বৈচিত্র্য
পর্তুগালের প্রায় সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রাম। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মেডিকেল, অর্থনীতি, ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে শুরু করে সোশ্যাল সায়েন্স- প্রায় সব বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে দেশটিতে। অনেক কোর্সই পর্তুগিজ ভাষায় হলেও, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি মাধ্যমে নানা কোর্স অফার করা হয়।

তবে আবেদন করার আগে আপনার বাছাইকৃত কোর্সটি কোন ভাষায় পড়ানো হয় সেটা অবশ্যই দেখে নেবেন।

যোগ্যতা ও কম খরচে সুযোগ
অনেক শিক্ষার্থীর কাছে ইউরোপ মানেই আইইএলটিএসের জটিলতা। কিন্তু পর্তুগালে উচ্চশিক্ষার জন্য এটা বাধ্যতামূলক নয়। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকলেই যথেষ্ট। 

ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালে টিউশন ফি অনেক কম। ব্যাচেলর বা মাস্টার্স প্রোগ্রামে বার্ষিক খরচ মাত্র ৯৫০ থেকে ১২০০ ইউরো। আর পিএইচডির ক্ষেত্রে বছরে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ ইউরোর মতো প্রয়োজন পড়বে। এই ফি অনেক সময় স্কলারশিপ বা বিভিন্ন ডিসকাউন্টের মাধ্যমে আরও কমে আসে।

আবেদন প্রক্রিয়া ও সময়সীমা
প্রতিবছর দুইবার আবেদন গ্রহণ করে পর্তুগালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল থেকে জুলাই। এ দুটি সময়েই ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায়। আবেদন করতে হয় অনলাইনে এবং কাগজপত্র জমা দিতে হয় ডিজিটালি।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • একাডেমিক সনদপত্র ও নম্বরপত্র
  •  পাসপোর্ট, ছবি ও সিভি
  •  মোটিভেশন ও রেফারেন্স লেটার
  •  ব্যাংক সলভেন্সি ও টিউশন ফি জমার রসিদ
  •  অ্যাকোমোডেশন ডকুমেন্ট ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স

ভিসা প্রক্রিয়া
বাংলাদেশে পর্তুগালের এমব্যাসি না থাকায় শিক্ষার্থীদের দিল্লির পর্তুগিজ এমব্যাসিতে আবেদন করতে হয়। এ জন্য সময় লাগতে পারে ৩০ দিন বা তার বেশি। ভিসা আবেদন করার আগে অবশ্যই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজন পড়বে:

  •  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার
  •  টিউশন ফি জমার প্রমাণ
  •  আর্থিক সচ্ছলতার দলিল
  •  স্বাস্থ্যবিমা (কমপক্ষে ১২০ দিন মেয়াদি)
  •  ফ্লাইট বুকিং টিকিট

গ্যাপ বেশি থাকলে ভিসা পাওয়ায় জটিলতা হতে পারে। তাই শিক্ষাজীবনে বড় বিরতি না রেখে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করা ভালো।

স্কলারশিপের সুযোগ
পর্তুগালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা ধরনের স্কলারশিপ অফার করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
১) ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ: ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতায় এটি ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ। 
২) এফসিটি স্কলারশিপ:  পিএইচডি ও গবেষণার শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ভালো একটি সুযোগ হতে পারে। 
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্কলারশিপ:  এসব স্কলারশিপের মাধ্যমে টিউশন ফিতে ৫০%-৭৫% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়।

খরচ ও খণ্ডকালীন চাকরি
পর্তুগালের জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক কম। মাসে মাত্র ৩৫০ থেকে ৪০০ ইউরোতেই থাকা ও খাওয়ার খরচ মেটানো সম্ভব। শিক্ষার্থী হিসেবে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন চাকরি এবং ছুটিতে ফুল-টাইম কাজ করার অনুমতি থাকে। পর্তুগিজ ভাষা জানলে কাজ পাওয়া সহজ হয়, তবে টিউশন ফি চালাতে খণ্ডকালীন চাকরির টাকা যথেষ্ট নয়।

নাগরিকত্বের সম্ভাবনা
পড়াশোনার পর পর্তুগালে থেকে যাওয়ার সুযোগ আছে। দেশটিতে বৈধভাবে ৫ বছর অবস্থান, ট্যাক্স পরিশোধ ও ভাষাজ্ঞান থাকলে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। তাই ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী বসবাসের সুযোগও আছে পর্তুগালে। 

লেখক: শিক্ষার্থী, এমএম কলেজ, যশোর

/রিয়াজ

নতুন ফ্যাসিবাদীর আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ১০:২১ পিএম
আপডেট: ৩১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
নতুন ফ্যাসিবাদীর আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে: আনু মুহাম্মদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক নাগরিক সংহতি সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ছবি: খবরের কাগজ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম আপিলের রায়ে খালাসের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও চট্টগ্রাম মহানগরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে নতুন ফ্যাসিবাদীর আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে এবং পুরো সমাজে একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি নড়াচড়া করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত এই বাংলাদেশ কীভাবে দাঁড়াবে তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা, বিতর্ক হচ্ছিল। কিন্তু আজকে প্রত্যাশা ভঙ্গের জায়গায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি। যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে নতুন ফ্যাসিবাদীর আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে এবং পুরো সমাজে একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি নড়াচড়া করছে।’

শনিবার (৩১ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক নাগরিক সংহতি সমাবেশে এসব কথা বলেন আনু মুহাম্মদ।

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির জন্য আন্দোলন করলে তাদের ওপর হামলা হয়, শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক অধিকার বা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে হামলার শিকার হয়, শিক্ষকরা তাদের অধিকারের জন্য সমবেত হলে তাদের ওপরও হামলা হয়, নারী তার অধিকারের জন্য কথা বললে কুৎসা রটানো হয়। সামাজিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, একদিকে বলপ্রয়োগ করার একটি পক্ষ তৈরি হয়েছে; অন্যদিকে প্রচার ও মিথ্যা তথ্য, কুৎসা রটানো এবং ইতিহাস বিকৃত করে ফ্যাসিবাদী শক্তি তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

আজহারুল ইসলামকে আপিলের রায়ে নির্দোষ ঘোষণা করাই ছিল সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আজহারুল ইসলাম যিনি যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন চিহ্নিত ব্যক্তি কীভাবে নির্দোষ হিসেবে ঘোষিত হন। আওয়ামী লীগ আমলে যে মামলা হয়েছে তার মধ্যে ত্রুটি রয়েছে, আমরা শুনছি। এই আদালত তো ত্রুটি সংশোধন করতে পারত, মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে দিতে পারতো; আমি নিজেও মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করি না। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী এটা তো আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সত্য, এটিকে তো খারিজ করা যাবে না। আদালত ও সরকারের সমর্থন দেখে বোঝা যাচ্ছে, তাকে নির্দোষ ঘোষণা করাই ছিল লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘চিহ্নিত ব্যক্তিকে যদি নির্দোষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়; তাহলে তো পুরো ইতিহাসই পাল্টে যায়। একাত্তর সালে লক্ষ-লক্ষ শহিদ, নির্যাতিত নারী এবং কোটি মানুষ যারা লড়াইয়ের সঙ্গে ছিলেন, তাদের সঙ্গে তো বেঈমানী করা হয়, তখন প্রতিবাদ হবে না? সেই প্রতিবাদ যারা করছেন তাদের উপর আবার হামলা চালানো হচ্ছে; এখানে সরকারের ভূমিকাও নীরব।’

বৈষম্যবাদী রাজনীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা, এটি আমরা কোনভাবেই হতে দিতে পারি না। এ জন্য জনগণকে প্রতিবাদ জারির আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বলেন, ‘যখন যুদ্ধাপরাধ-বিরোধী কথা হয় তখন সেটিকে ইসলাম-বিরোধী হিসেবে যারা চিত্রায়িত করতে চায়, তারা ভয়ংকর অপরাধী ও বিকৃতকারী। যারা ইসলামের অনুশাসন মানেন, তারাও তো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইবেন। তাদের বেশিরভাগই তো ধার্মিক মুসলমান। যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাওয়া হয় ইসলামবিরোধী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। এই সব রাজনৈতিক অপদার্থ, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে এবং সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দিকে যাত্রা করা, কিন্তু তাদের ভূমিকা দাঁড়িয়েছে বৈষম্যবাদী রাজনীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা। এটি আমরা কোনভাবেই হতে দিতে পারি না।’

এতে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশীদ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন।

সমাবেশের শুরুতে ১৯৮৮ সালে ইসলামী ছাত্র শিবির কর্তৃক নিহত সেই সময়ের ছাত্র মৈত্রী রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সভাপতি ডা. জামিল আখতার রতনের ৩৭তম শহিদ দিবসে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং শহিদ জামিলের অস্থায়ী প্রতীকী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।