![যে তিনটি সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে](uploads/2024/02/12/1707717118.kormo-jabe.jpg)
ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি হলো ‘আমি কোন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করব?’ এবং ‘আমার কি এই চাকরির প্রস্তাবটি গ্রহণ করা উচিত নাকি প্রত্যাখ্যান করব?’
এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়টাতে আমরা বেশ মানসিক চাপে থাকি। কোনো ভুল হয়ে যায় কি না, আমরা শুধু সেই ভয়েই থাকি। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, জীবনের মোড় পরিবর্তনকারী এই মুহূর্তগুলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতার মুহূর্তও বটে।
ক্যারিয়ারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আপনাকে অবশ্যই আপনার মস্তিষ্ক, হৃদয় এবং ভেতর থেকে আসা প্রতিটি সংকেত মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। যাতে আপনি সঠিক সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতে পারেন।
ক্যারিয়ার সম্পর্কিত তিনটি সিদ্ধান্তই সবচেয়ে মৌলিক এবং অনেক সুদূরপ্রসারি প্রভাব বিস্তারকারী। এই তিনটি সিদ্ধান্ত বিশেষ কোনো একটি মুহূর্তে গ্রহণ করার মতো নয়। বরং এই সিদ্ধান্তগুলো আপনাকে জগৎ সম্পর্কে আপনার উপলব্ধি এবং নিজের সম্পর্কে আপনার বুঝ এবং জ্ঞান বাড়ার পাশাপাশি নিতে হবে।
ক্যারিয়ার সম্পর্কিত এই তিনটি সিদ্ধান্ত হলো:
আপনি আপনার ক্যারিয়ার থেকে কী পেতে চান
আপনার কাছে যখন কোনো চাকরির প্রস্তাব আসবে তখন আপনাকে প্রথমেই যে বিষয়টি ভাবতে হবে তা হলো, ‘আপনি আপনার ক্যারিয়ার থেকে আসলে কী পেতে চান?’
কেউ আপনাকে এ ব্যাপারে সঠিক পরামর্শটি দিতে পারবেন না যদি তারা না জানেন আপনি আসলে কী করতে চাইছেন। অনেক চাকরিই আছে যেগুলো বেতনের কারণেই অনেক বড় মনে হয়। সেসব চাকরি থেকে এর বেশি কিছু পাওয়া যায় না। আসলে সেসব চাকরি এর বেশি কিছু দেওয়ার প্রস্তাবের ভানও করে না।
অনেক চাকরি আছে বেতন বেশি দেওয়ার চেয়েও বেশি কিছু দেওয়ার প্রস্তাব করে। আপনার মেধা এবং আগ্রহের সঙ্গে এসব চাকরির সঙ্গতি রয়েছে। যে আগ্রহের কারণেই আপনি প্রতিদিন কাজে যেতেও সবচেয়ে বেশি আগ্রহ বোধ করেন। অনেক চাকরি আছে আবার এর মাঝামাঝি অবস্থানে। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি আপনার ক্যারিয়ার থেকে আসলে কী চান। আর আপনি নিজেই সে সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করুন।
আপনার ক্যারিয়ার চালাবে কে
বেশির ভাগ কর্মজীবীই এ ব্যাপারে সচেতন নন যে তারা একটি কোম্পানি চালাচ্ছেন। আর এই কোম্পানিটি হলো তাদের নিজেদের ক্যারিয়ার বা কর্মজীবন।
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন আপনার যেহেতু এখন একটি ভালো চাকরি আছে সুতরাং আপনাকে আর কর্মজীবন নিয়ে বাড়তি কোনো ভাবনায় সময় ব্যয় করার দরকার নেই। এটা ভুল ধারণা। এটা আপনার ব্যবসা আর আপনাকেই এর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনিই আপনার জীবনের সিইও। আর যে কোনো ব্যবসার সিইও তার ব্যবসার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দূরদৃষ্টি রাখেন এবং স্পষ্ট পরিকল্পনা অবলম্বন করেন।
ভবিষ্যৎ জীবন এবং ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবার সময় যে প্রশ্নগুলো দিয়ে শুরু করবেন:
পেশাগতভাবে আমি এখন যা করছি এর কোন বিষয়টি আমি ভালোবাসি।
আমি কীসে আরও ভালো করতে চাই।
আমি কোন বিষয়ে আরও বেশি শিখতে চাই।
এক বছর পর আমার ক্যারিয়ারের কোন বিষয়ে আমি আরও উন্নতি করতে চাই।
এক বছর পর আমি আমার জীবনটাকে কেমন দেখতে চাই।
১০ বছর পর আমি আমার জীবন ও ক্যারিয়ারকে কেমন দেখতে চাই।
যতটা খুশি ততটা প্রশস্ত এবং বিস্তৃত পরিপ্রেক্ষিতে ভাবলে আমি পেশাগতভাবে কী করব? আমি যদি নিজের কোনো সীমা না টানি তাহলে পেশাগত জীবনে আমি আসলে কী করব?
নিজের পথ অনুসরণ করবেন কি না
অনেক কর্মজীবীই নিজেদের কাছ থেকে আর কোনো কিছুই প্রত্যাশা করেন না। কারণ ইতোমধ্যেই তারা অনেক নির্মমতা ও রূঢ়তা এবং অনায্যতার অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। ক্যারিয়ারের বর্বর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে যে কেউ তাদের নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া ত্যাগ করতে পারেন। তবে এরপরও আপনার রয়েছে প্রচুর শেখার সম্ভাবনা। এরপরও আপনি অনেক কিছুই অর্জন করতে পারেন এবং বিশ্বের জন্য অবদান রাখতে পারেন।
সময় কারও জন্য বসে থাকে না। সুতরাং নিজের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কেন আপনি সময়কে ব্যবহার করছেন না?
কেউ আপনার ব্যর্থতায় হাসবে না। আর যারা হাসবে তারা নিশ্চয়ই আপনার বন্ধু নন। সুতরাং তারা যদি আপনাকে একলা ফেলে চলেও যান তাতেও আপনার কিছুই যায় আসে না। আপনি তাদের ছাড়াই অনেক ভালো থাকবেন।
আপনি নিজের মতো কোনো একটি সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন এবং বিষয়টি নিয়ে চুপ করে থাকুন। বিশ্বের অনেক মেধাবী উদ্ভাবক এবং শিল্পীই এমনটি করেছেন।
যেকোনো একটি মুহূর্তে ছোট্ট একটি পদক্ষেপই আপনি গ্রহণ করতে পারেন এবং এগিয়ে যেতে পারেন। তা হতে পারে এমনকি এখনই। আপনার স্বপ্নের জীবন এবং ক্যারিয়ার নিয়ে আপনি কী করতে চান তা নিয়ে ভাবতে আপনি সেই ছোট্ট পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন।
সূত্র: ফোবর্স
কলি