![পুঁজি ছাড়াও করতে পারেন ব্যবসা](uploads/2024/03/11/1710151651.a3.jpg)
‘টাকা (অর্থ) উপার্জন করতে টাকা (অর্থ) লাগে’ এমন কথা প্রচলিত রয়েছে। তবে আপনি চাইলে টাকা ছাড়াই ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যদি আপনার ধৈর্য, ব্যবসা সম্পর্কে জ্ঞান, বাজার এবং ট্রেন্ড পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকে। এর জন্য প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার ক্ষেত্র। এমন কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন, যা মূলধন ছাড়াই শুরু করতে পারবেন। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আফসানা আক্তার
ড্রপশিপিং স্টোর
অনলাইন ব্যবসা করার ইচ্ছা আপনার দীর্ঘদিনের। কিন্তু পণ্য উৎপাদন, প্যাকেজিং, শো-রুম বা ডেলিভারির মতো কাজে নিজেকে জড়াতে আপনার আগ্রহ নেই বললেই চলে। তাহলে বেছে নিতে পারেন ড্রপশিপিং। এই ব্যবসায়িক মডেলে আপনি গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ডার নেবেন। তারপর সে অর্ডার পণ্যের উৎসকারী বা বিক্রয়কারীকে দিয়ে দেবেন। তিনিই সরাসরি আপনার গ্রাহকের কাছে পণ্যটি পৌঁছে দেবেন। এতে আপনি পাবেন স্মার্ট একটি পারসেন্টেজ এবং এর জন্য আপনাকে ইনভেন্টরিও পরিচালনা করতে হবে না।
সার্ভিস বিষয়ক ব্যবসা
আপনার যদি কোনো বিষয়ে দক্ষতা, জ্ঞান, প্রতিভা বা বিশেষ জানাশোনা থাকে তাহলে টাকা নেই বলে থেমে থাকবেন না। টাকা উপার্জনের জন্য যেকোনো কাজ করতে যদি আপত্তি না থাকে তাহলে এখনই ব্যবসায় নেমে পড়ুন। আপনার সেবা টাকার বিনিময়ে প্রদান করার চেষ্টা করুন। যেমন- এসইও সেবা, ওয়েবসাইট তৈরি, ফ্রিল্যান্স লেখক, সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকারী, খাবার বা যেকোনো পণ্য ডেলিভারি, ঘরদোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পোষা প্রাণীর দেখভাল, গাড়ি ধোয়া ইত্যাদি।
বিশেষ প্রতিভা
আপনি যদি বিশেষ কোনো কাজে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে তা দিয়েই শুরু করতে পারেন উপার্জন। হতে পারেন একজন লেখক, কাটিং মাস্টার, আর্টিস্ট ও কাঠের কারুকাজ কর্মী। এ ছাড়া ই-বুক, বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন কোর্স, টেমপ্লেট বা ওয়ার্কবুকের মতো ডিজিটাল সম্পদও বিক্রি করতে পারেন। ফেসবুক, ইটসি, অ্যামাজন, দারাজের মতো বিভিন্ন জায়গা রয়েছে যেখানে এসব বিক্রি করে উপার্জন করতে পারেন সহজেই। এ ছাড়া বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে নিজস্ব অনলাইন স্টোর তৈরি করতে পারেন। এসব অনলাইন স্টোরে বেশ ভালোই বেচাকেনা হয়। যদিও এর জন্য মাসিক সামান্য ফি দিতে হয়।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
সরাসরি উপস্থিত না থেকে যারা দূর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ করে থাকেন তাদের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে। এ কাজ করতে গেলে পুঁজি লাগে না বললেই চলে। একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। যেমন- ফাইল তৈরি, মিটিংয়ের ব্যবস্থা, ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, মেইল গ্রহণ এবং পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনা ইত্যাদি। আপনি যদি দক্ষ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার দ্বারা প্রচুর আয় করা সম্ভব।
অনলাইন কনসালটেন্ট
অনলাইন কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করতে গেলে কোনো ধরনের পুঁজির প্রয়োজন হয় না। একটু খোঁজখবর নিলে জানতে পারবেন; অনেকেই এখন অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের বিষয়ের ওপর পরামর্শ দিয়ে ভালো করছে।
আপনি যে বিষয়ে খুব ভালো জানেন সে বিষয়ে অনলাইনে পরামর্শ দেওয়া শুরু করতে পারেন। সেটা যেকোনো বিষয় হতে পারে, যেমন ফ্রিল্যান্সিং, খেলাধুলা, শরীরচর্চা, আইন, বিনিয়োগ, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
ডাটা অ্যান্ট্রি সার্ভিস
সময় পাল্টাচ্ছে, সেই সঙ্গে পাল্টাচ্ছে ব্যবসা বা চাকরির ধরন। বর্তমানে অনেক কোম্পানি রয়েছে, যারা তাদের ডাটাবেইজ নিজেরা তৈরি না করে ডাটা অ্যান্ট্রি এজেন্সিকে দিয়ে করিয়ে থাকে। আপনি যদি বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে চান তাহলে ডাটা অ্যান্ট্রি সার্ভিসের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কোনো ধরনের পুঁজি ছাড়াই ঘরে বসেই এসব সার্ভিস দেওয়া যায়।
পরিশেষে
বিনা পুঁজিতে ব্যবসা একেবারেই পুঁজিবিহীন তা কিন্তু নয়। আপনাকে কিছু অর্থ অবশ্যই খরচ করতে হবে। যেমন ইন্টারনেট বিল, ওয়েবসাইট বানালে ওয়েবসাইট তৈরির পেছনে খরচ। যদি আপনি নিজে বানাতে পারেন তবে সেখানে কোনো খরচ হবে না।
জাহ্নবী