![বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতিকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ](uploads/2023/12/02/1701523965.Barishal kk.jpg)
বরিশাল সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশ।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশ (বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ অনুসারী) কেন্দ্রয়ী শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। দুপুর ১২টায় মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিমের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট একে এম জাহাঙ্গীর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আপনারা জানেন সারা বাংলাদেশে সিটি করপোশেন নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। তিনি এটা প্রশ্ন তুলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যালট ভরে রাতের আধারে কাউকে নির্বাচিত হতে দিবেন না। দলের লোক হয়ে দলের বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিতে পারবে না। আর যদি অবস্থান নিতেই হয়ে তাহলে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে, না হয় বহিষ্কার হতে হবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং জাহাঙ্গীরের বহিষ্কার চাই।
গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি, জামায়াতের অবরোধ-হারতালের নামে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশের বক্তৃতায় একে এম জাহাঙ্গীর বলেছিলেন, ফসল রোপণ করি আমরা। রোপণ থেকে শুরু করে ফল পাকা পর্যন্ত আমরা পরিশ্রম করে যাই। আর সেই পাকা ফসল আরেকজন এসে কেটে নিয়ে ঘরে তুলবে তা আমরা হতে দেব না। আমাদের কষ্টার্জিত ফসল আমাদের ঘরে রাখতে চাই।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের স্বতন্দ্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি বলেছিলেন, আমরা নির্বাচনে কেন এসেছি, আপনাদের প্রশ্ন জাগতে পারে। আমরা তো আওয়ামী লীগের। তাহলে আমরা কেন স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে যাচ্ছি প্রশ্ন উঠতে পারে। উত্তরে বলবো, নেত্রী আমাদের সুযোগ দিয়েছেন জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য। সেই সুযোগ আমরা নিয়েছি। যে আসনটি আগে ছিল বিএনপি জামায়াতের ঘাঁটি। ১০ থেকে ১২ বছর আগে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে সেখানে আওয়ামী লীগের একটি শক্ত ঘাঁটি করা হয়েছে। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছর সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালকে আলোকিত করেছেন। বরিশাল ছিল চাঁদাবাজ মুক্ত। হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড ছিল দখলমুক্ত। সাদিক আব্দুল্লাহ সিটি করপোরেশন ছেড়ে দেওয়ার পর সবখানে নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়েছে।
একে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ ক্ষুদ্ধ হন বর্তমান মেয়র ও সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ খোকন সেরনিয়াবাত। তাই খোকনের অনুসারী মহানগর আওয়ামীলীগের একাংশের বিক্ষোভ সমাবেশের বক্তৃতায় মহানগরের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
এ সময়ে আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম, যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহবায়ক মাহামুদুল হক খান মামুন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাজাহান হাওলাদার, জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসিম দেওয়ান, বিসিসি ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক বাকসু ভিপি মঈন তুষারসহ প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এসময় মিছিলে মহানগর সভাপতি জাহাঙ্গীরের অপসারণ দাবি করে শ্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
এআর