ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

অযত্নে ভাষাশহিদ স্মৃতিচিহ্ন রফিক উদ্দিন আহমেদ গ্রন্থাগার

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম
অযত্নে ভাষাশহিদ স্মৃতিচিহ্ন রফিক উদ্দিন আহমেদ গ্রন্থাগার
ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। খবরের কাগজ

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গণে এলে পুলিশ গুলি চালায়, এতে রফিক উদ্দিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন। ২০০৮ সালে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের রফিকনগর গ্রামে তার স্মৃতিতে সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয় ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। নির্মাণের পরই সেখানে বই ছাড়া ছিল না শহিদ রফিকের কোনো স্মৃতিচিহ্ন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেখানে যুক্ত হয় ভাষাশহিদ রফিকের ব্যবহার করা কিছু আসবাবপত্র। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সিংগাইর উপজেলার রফিকনগরে অবস্থিত ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের একটি কর্নারে শহিদ রফিকের ব্যবহৃত চারটি চেয়ার, একটি টেবিল, ফুলতোলা টেবিল ক্লথ, একটি ফতুয়া ও একটি লুঙ্গি আছে। আর গ্রন্থাগারে সব মিলে বই আছে ১৫ হাজারের মতো। ২০০০ সালে বেসরকারি সংস্থা প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র দুটি আধা-পাকা ঘর তৈরি করে দেয়।

অপরদিকে ২০১৬ সালে শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদের বাড়ির সামনে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ। তবে, যে ঘরে রফিকের জন্ম সে ঘরটি এখন জরাজীর্ণ। বাড়িটিতে আত্মীয়স্বজন ও দর্শনার্থীদের থাকার উপযোগী নেই কোনো ঘর। 

স্থানীয়দের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হলে তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি নামেই করা হয়েছে। অন্য জাদুঘরে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও আমাদের এখানে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, এখানে তেমন কিছুই নেই। থাকার মধ্যে রফিকের ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, ফতুয়া ও লুঙ্গি আর বেশ কয়েকটি আলমারিতে কয়েক হাজার বই আছে। দেশের প্রথম ভাষাশহিদ তিনি। তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার বাড়িসংরক্ষণসহ এখানে পর্যটনকেন্দ্র করা হলে আরও ভালো হতো।

ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছরেও রফিকের পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শহিদ পরিবারের।

শহিদ রফিকের ভাতিজা মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের ভাষাশহিদরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেও তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে আজ পর্যন্ত কেউ তেমন কোনো বড় পদক্ষেপ নেয়নি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা ছিল গ্রামের নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকায়ও নানা উন্নয়ন হবে। প্রসার ঘটবে শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির। কিন্তু তা হয়নি।’

শহিদ রফিকের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস এলেই রফিকের পরিবারের গুরুত্ব বাড়ে। এ সময় অনেকে অনেক কিছু করতে চায়। ২১ তারিখ চলে গেলে যে যা প্রতিশ্রুতি দেয় তার সবই ভুলে যায়। তখন আর কেউ খোঁজ রাখেন না। শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদকে কবর দেওয়া হয় ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে। এখনো তার কবরটি চিহ্নিত করা হয়নি। জানি না আর কত সময় হলে এটি করা সম্ভব হবে।’

ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেন খান বলেন, ‘জাদুঘরে সব মিলে প্রায় ১৫ হাজারের মতো বই আছে। এখানে পড়ার জন্য পর্যাপ্ত চেয়ার ও টেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই কম আছে। শুরুর দিকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই শ দর্শনার্থী এলেও এখন দর্শনার্থীর সংখ্যা খুব কম। গেল বছর জাদুঘরে শহিদ রফিকের ব্যবহার করা চারটি চেয়ার, একটি টেবিল, টেবিল ক্লথ ও গায়ের ফতুয়া ও একটি লুঙ্গি যুক্ত হয়েছে।’

লেখক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মিয়াজান কবির বলেন, ‘রফিক উদ্দিন আহমদ ছিলেন ১৯৫২ সালের প্রথম ভাষাশহিদ। তার স্মৃতিকে জাগ্রত করে রাখার জন্য রফিকের জন্মভিটাকে হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণ করলে এখানে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটনকেন্দ্র। এ ছাড়া রফিকনগরে নির্মিত জাদুঘরটি আরও সমৃদ্ধ করাসহ এই শহিদের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’

বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাজেদ খান বলেন, ‘শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ আমাদের অহংকার। ভাষা আন্দোলনে তার আত্মদানে সিংগাইর উপজেলার পারিল গ্রামের মাটি ও মানুষ ধন্য। এই ফেব্রুয়ারি মাসসহ বিভিন্ন সময়ে দেশ ও বিদেশ থেকে দর্শনার্থীরা রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে আসেন। এখানে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যান তারা। তাই দর্শনার্থীদের জন্য একটি বাংলো নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি।’

জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, ‘ভাষাশহিদ রফিকের মায়ের কবর সংরক্ষণ, জাদুঘরে রফিক কর্নার স্থাপনসহ কিছু কাজ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কাজ করা হবে।

‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’
ছবি : খবরের কাগজ

কোটা সংস্কার আন্দোলন পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে না হতেই, তীব্র দাবদাহে পুড়ছে হবিগঞ্জ। এতে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে শহরের প্রায় আট হাজারের বেশি ইজিবাইক, অটোরিকশা ও ভ্যানচালকরা পড়েছেন বিপাকে। কোটা আন্দোলনে কর্মহীন থাকার পর, দাবদাহ যেন এসব মানুষের ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।

দেশব্যাপী কোটা আন্দোলনের কারণে গত ১৮ জুলাই বেলা ১১ থেকে হবিগঞ্জ শহরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাড়ে চার ঘণ্টা সংঘর্ষে সন্ধ্যা পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করে শহরজুড়ে। রাত থেকে শুরু হয় কারফিউ।

ওইদিন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত কারফিউ থাকায় শহরে মানুষের চলাচল ছিল কম। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা বাসা থেকে বের হননি। একইসঙ্গে বন্ধ ছিল বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ ও দোকানপাট। গ্রামাঞ্চল থেকেও শহরে আসেননি সাধারণ মানুষ।

শহরে মানুষের চলাচল কম থাকায় অনেকটা বেকার থাকেন ইজিবাইক, অটোরিকশা ও ভ্যানচালকরা। একই সঙ্গে কারফিউর কারণে অনেক চালক নিজেরাও গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হননি।

২৫ জুলাই থেকে দিনে শিথিল থাকছে কারফিউ। ফলে এসব শ্রমজীবী মানুষরা আগের মতো আয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এর মধ্যে শুরু হয়েছে দাবদাহ। ২৫ জুলাই থেকে প্রতিদিনই তাপমাত্রার পারদ ওঠছে ৩৭ ডিগ্রিতে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ি, শুক্রবার হবিগঞ্জের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি ওঠানামা করে। শনিবারও সকাল ১২টার পর তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি। তাছাড়া, সপ্তাহজুড়েই তাপমাত্রা বেশি থাকবে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরে ঘুরে দেখা যায়, মানুষের চলাচল খুবই কম। প্রায় ফাঁকা প্রতিটি রাস্তা। যারা বের হয়েছেন তারা জানান, বেশি প্রয়োজন থাকায় বের হতে হয়েছে তাদের।

রিকশাচালক আব্দুল হাকিম মিয়া বলেন, ‘সাত থেকে আট দিন ধইরা রুজি নাই। আন্দোলন আর কারফিউর জন্য তিনদিন রিকশা নিয়া বাইর হইছি না। আন্দোলন শেষ হলেও শহরে মানুষ নাই। দুইদিন ধইরা আবার গরম বেশি পড়ছে। আমরা গরিব বাঁচতাম কিভাবে?’

কাজল সরকার/জেবাইদা/অমিয়/

অর্থসঙ্কটে আটকে গেছে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:১০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:১০ পিএম
অর্থসঙ্কটে আটকে গেছে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন
ছবি : খবরের কাগজ

অর্থ সঙ্কটে আটকে গেছে দেশের সর্ববৃহৎ শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন। মেয়াদপূর্তির তিন বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে সংগঠনটির কার্যক্রম। 

নির্বাচন না হওয়ায় নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন আর এতে সংগঠনটির নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে সাংগঠনিক স্থবিরতা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাবেক নেতারা।

তবে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা নেতারা সাংগঠনিক স্থবিরতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, সরকার নির্বাচনের ব্যয় বহন না করায় আটকে রয়েছে নির্বাচন। 

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৪ জুন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এরপর ২০২১ ও ২০২৪ সালে আরও দুটি নির্বাচন হওয়ায় কথা থাকলেও ২০১৮ সালের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। সংগ্রাম কমিটিই গত ছয় বছর ধরে দায়িত্বে রয়েছে।
 
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, ‘বর্তমান কমিটি তিন বছরের জন্য শ্রমিকদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল কিন্তু এই কমিটি এখন ছয় বছর ধরে দায়িত্বে। দুই মেয়াদে নির্বাচন না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পাশাপাশি ইউনিয়নের নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের আশা আকাঙ্খা ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পুরণ করা ইউনিয়নের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। 

ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে কাজ করার কথা সেগুলো করতে পারছে না। শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে হওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দুর্বল হচ্ছে। ইউনিয়ন মালিকদের কাছ থেকে সম্পুর্ণ বকেয়া মজুরি আদায় করতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এখন শ্রমিকদের কাছে নেতাদের জবাবদিহিতা নেই। নেতৃত্বে থাকা অনেক নেতাই নিস্ক্রিয়, অনেকে চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। ফলে আন্দোলন বা চা শ্রমিদের জন্য কথা বলার ইউনিয়নের নেতাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি নির্বাচনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে সত্য, কিন্তু সরকারকে বুঝাতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে।’
 
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রাজঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জী বলেন, ‘চা শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যয়ভার মূলত চা শ্রমিকদের চাঁদা থেকে নির্বাহ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় শ্রমিকরা আগের মতো চাঁদাও দিচ্ছেন না। এখন তো শ্রমিকদের দাবি দাওয়া পুরণ হয় না। মজুরি বৈষোম্যর বিষয় ইউনিয়ন দেখে না। বাগানগুলোতে ছোটখাট সমস্যা দেখা দিলে নেতারা যেতে চায় না। শ্রমিকরা তাদের পায় না। নির্বাচনের জন্য অনেক টাকা লাগে। সেই অজুহাত দেখিয়ে দুই মেয়াদ ইতোমধ্যে পার করে দেওয়া হয়েছে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রতে কিছু ফাঁক-ফোকর রয়েছে। এজন্য কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তারা চেয়ার দখল করে বসে আছেন।’
 
চা জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন ফোরামের আহ্বায়ক পরিমল সিং বাড়াইক বলেন, আমরা অবিলম্বে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন চাই। চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। চা শ্রমিকদের নেতৃত্ব প্রকৃত চা শ্রমিকদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। আমরা চাই চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে ইউনিয়ন। সঠিক নেতৃত্ব এসে চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা খবরের কাগজকে বলেন, সবার মতো আমরাও চাই দ্রুত ইউনিয়নের নির্বাচন হোক। নির্বাচন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আয়োজন করার চেষ্টাই আমরা করছি। আমাদের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই আইন অনুযায়ী শ্রম মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করেছিলাম। সরকার আমাদের নির্বাচনের জন্য ব্যয় ধরছে ৭০ লাখ টাকা। সেখানে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছি। আগের সব নির্বাচন সরকারি খরচেই হয়েছে। ১৭০ টাকা মজুরিতে কাজ করে শ্রমিকদের পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না। আমরা সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই যেন আগের মতো সরকারিভাবে ব্যয় বহন করে একটি সুন্দর নির্বাচন আমাদের জন্য আয়োজন করা হোক।’

নির্বাচনের বিষয়ে জানতে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গলের উপ-পরিচালক ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামকে একাধিকবার মোবাইলফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

দেশের ছোট বড় মিলিয়ে ২৪১টি চা বাগানের প্রায় ৯৭ হাজার চা শ্রমিক ভোটার রয়েছেন।

হৃদয় শুভ/জোবাইদা/অমিয়/

ক্যাম্প করে জনগণকে সেবা দেওয়ার নির্দেশ বিভাগীয় কমিশনারের

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
ক্যাম্প করে জনগণকে সেবা দেওয়ার নির্দেশ বিভাগীয় কমিশনারের
মাধবদী পৌরসভা কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম

নরসিংদীর মাধবদীতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পুনঃসংস্কার ও চালু না করা পর্যন্ত অস্থায়ী ক্যাম্প করে মানুষকে সেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।

শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মাধবদী পৌরসভা কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় সাবিরুল ইসলাম বলেন, ‘সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যে নিজেরাই তাদের ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করছে। আমরা যাচাই করে ক্ষতির পরিমান বলতে পারব। সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে থানায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

এর আগে তিনি দুষ্কৃতিকারীদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত নরসিংদী কারাগার, জেলা পরিষদ কার্যালয়, মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। 

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মৌসুমী সরকার রাখী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব পাঠান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসরাত উদ্দিন আহমেদ মনির, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ, মাধবদী পৌরসভার মেয়র হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক প্রমুখ।

শাহিন/পপি/অমিয়/

বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া সংগঠন: মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া সংগঠন: মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী
ছবি : খবরের কাগজ

বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এখন দেশকে ধ্বংস করার জন্য ৭১ এর পরাজিত শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। 

শনিবার (২৭ জুলাই)  চকবাজার সিটি কর্পোরেশন কাঁচাবাজারে অসহায়দের মাঝে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংকট উত্তরণের এ ক্রান্তিকালে সাধারণ মানুষকে মনোবল না হারানো আহ্বান জানিয়ে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় আসীন করেছেন তা বিএনপি-জামায়াতের সহ্য হচ্ছে না। বিশ্বে তারা এখন একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ চিহ্নিত অপশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাড়ায়-মহল্লায় দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ও গণশক্তির দূর্ভেদ্য মোর্চা গড়ে তুলতে হবে। 

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সংকট থেকে বার বার উত্তরণ ঘটানোর হিম্মত রাখে। জনগণের সার্বিক মুক্তি অর্জনের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির কল্যাণে যে সফলতা অর্জন করেছেন তা ধ্বংস করার একটি অশুভ তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এ অপতৎপরতার সঙ্গে জড়িতদের আর কোনভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। তাই শুধু সরকার এককভাবে সরকার নয় প্রতিটি দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষকে এ অপশক্তি নির্মূলে সরাসরি ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টা আলহাজ শফর আলী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, উপ-প্রচার সম্পাদক শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য আবদুল লতিফ টিপু, বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের সাহাব উদ্দিন আহমেদ, আনসারুল হক, জামশেদুল আলম চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাহেদুল আজম সাকিল, শেখ সরওয়ারদ্দী, মোহাম্মদ মুছা, কাউন্সিলর নুরুল মোস্তফা টিনু।
 
একই সময়ে সকাল ৮টায় দেওয়ানহাট মোড়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগৈর পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. হোসেন, নির্বাহী সদস্য মো. জাবেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ইদ্রিস কাজেমী, মো. ওহিদুল রহমান মহসীন, সাবেক যুবলীগ নেতা আবদুল মান্নান ফেরদৌস, ওয়ার্ড কাউন্সিল হাসান মুরাদ বিপ্লব, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আবদুর রশিদ লোকমান প্রমুখ।

এস এম ইফতেখারুল/জোবাইদা/অমিয়/

গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও জয়ের জন্মদিন উদযাপন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও জয়ের জন্মদিন উদযাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৭টায় এ উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি শুরু হয়। 

এরপর সকাল ৯টায় সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহসিন উদ্দিন সিকদারের নেতৃত্বে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। 

পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত এবং শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদের দীর্ঘায়ু কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এরপর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহসিন উদ্দিন সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ খান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তারিকুজ্জামান চৌধুরী, হেলাল কাজী, অ্যাডভোকেট মফিজ, ইকরামুজ্জামান, সাজ্জাদুর রহমান, কামাল হোসেন, নজরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

পরে দেশে সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। 

বাদল সাহা/পপি/অমিয়/