![হাতির আতঙ্কে মশাল নিয়ে রাত-পাহারায় গ্রামবাসী!](uploads/2024/02/23/1708664445.hatir-111.jpg)
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় হাতির তাণ্ডবের দুদিন পর আবারও ভারতীয় বন্যহাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি গ্রামে। এদিকে হাতি তাড়াতে রাতে মশাল প্রজ্বালন করে অবস্থান নিয়েছে স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের তেলিপাড়া ও ভারতের হাফতিয়াগছ ফরেস্টের জিরো সীমানায় অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
জানমালের নিরাপত্তায় গ্রামপুলিশ ও সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি ভারতের অভ্যন্তরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও ভারতীয় বন বিভাগকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
এর আগে সকাল থেকে উপজেলা সদরের তেলিপাড়া, সিদ্দিকনগর খুনিয়াভিটাসহ গ্রামগুলোতে ভারতীয় বন্যহাতির আসার খবরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও হাতিকে বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে তেলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দিন আগে দুটি হাতি বাংলাবান্ধায় ঢুকে এক যুবককে মেরে ফেলেছে। এবার আমাদের বাড়ির পেছনে ভারতের অভ্যন্তরের একটি জঙ্গলে হাতি দুটি অবস্থান করছে।’
সিদ্দিকনগর এলাকার বাসিন্দা আহসানুল হক বলেন, ‘হাতি দুটি ভারতের ফরেস্টের জঙ্গল অবস্থান করছে। এদিকে জঙ্গল থেকে বের হলে আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে। তাই আমরা আগুন নিয়ে অবস্থান করছি। হাতি দুটি আমাদের গ্রামের দিকে এলে আগুন দেখে পালিয়ে যাবে। এই রাত পাহারায় রয়েছি গ্রামের সব মানুষ।’
পঞ্চগড় বন বিভাগ ও ভারতীয় বন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যহাতি দুটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সীমান্ত হতে মাত্র ২০০ গজ দূরে ভারতের বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন বনে অবস্থান করছে। তাই হাতি দুটি যেন পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য ভারতীয় বন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের তেলিপাড়া ও ভারতের হাফতিয়াগছ ফরেস্ট অফিসের জিরো সীমানায় উপস্থিত হয়ে ভারতীয় বন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হাতি দুটিকে ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘দুদিন পর আবারও বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা থাকায় আমরা ভারতের বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা করেছি। হাতি দুটি যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। বন্যহাতিকে দেখে কেউ যেন বিরক্ত না করে এবং মানুষকে নিরাপদে থাকতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। আশা করছি, ভারতীয় বন বিভাগ তাদের কৌশল অবলম্বন করে হাতি দুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে যাবে।’
রনি মিয়াজী/জোবাইদা/অমিয়/