![৬০ লাখে রফা, উঠানে পড়ে থাকা মরদেহ ৩ দিন পর দাফন](uploads/2024/02/23/1708676106.Gaibandha-pic-1.jpg)
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে স্ত্রীর নামে ব্যাংকের টাকা ও সম্পত্তি লিখে দেওয়ায় ভাই-ভাতিজারা চাচার দাফন আটকে দেয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ৬০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে তিনদিন পর দাফন সম্পন্ন হয়।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহের দাফন করা হয়।
উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের শাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে এই ‘লজ্জাজনক’ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাঝিপাড়া গ্রামের মোতাহার হোসেন মুন্সি অসুস্থ হয়ে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে মোতাহার হোসেনের মরদেহ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী মাসুমা বেগম। কিন্তু টাকা ও সম্পত্তি লিখে দেওয়ার অভিযোগে, মরদেহ দাফনে বাধা দেন মোতাহার হোসেনের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মুন্সী ও তার ভাতিজা হাবিবসহ পরিবারের কয়েকজন।
তাদের অভিযোগ, কিছু দিন আগে মোতাহার আলী তার নামের জমি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করে ব্যাংকের রাখেন। সেই টাকা ও সব সম্পত্তি মাসুমা বেগম নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে মরদেহ নিজ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা ৬০ লাখ টাকার বিনিময়ে সমঝতা করে মরদেহ দাফন করা হয়।
জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন মুন্সী নিঃসন্তান। গণপূর্ত অধিদপ্তরে উপ-সহকারী কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। মারজিয়া আক্তার নামে পালিত মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী মাসুমা বেগমকে নিয়ে তিনি ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি মোতাহার হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয়। পরে ঢাকায় জমি বিক্রি করে তিনি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যাংকে রাখেন। এই টাকা দিয়ে তার চিকিৎসা চলছিল।
এ বিষয়ে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজারা মরদেহ দাফনে আপত্তি জানানোর কারণে তা বাড়ির উঠানে পড়েছিল। পারিবারিকভাবে অর্থসংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। মোতাহার আলীর স্ত্রী মাসুমা বেগম ৬০ লাখ টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন। তারপর মরদেহ দাফন করা হয়েছে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করেন পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
রফিক খন্দকার/ইসরাত চৈতি/অমিয়/