![খাল কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে](uploads/2024/02/28/1709099769.3.-Faridpur-Mati-kata-111.jpg)
ফরিদপুরের সালথায় স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে পেঁয়াজ খেতের মধ্য দিয়ে খাল খনন করে ইটভাটায় মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া ছয়আনি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনে দিয়ে এই খাল খনন করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি মেহগনির বাগানের ভেতর দিয়েও খাল খনন করা হয়েছে। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন কৃষক।
জানা যায়, এই স্থানে একটি সরকারি খাল ছিল। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা সেখানে পেঁয়াজ চাষ করে আসছেন। তবে বর্তমানে খালটি সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে কাটা হয়নি। ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন মাটি বিক্রি করার জন্য ব্যক্তিস্বার্থে খাল কেটেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, খারদিয়া ছয়আনি আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে বলতলা এলাকা পর্যন্ত পেঁয়াজ খেত ও মেহগনি বাগানের ভেতর দিয়ে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে একটি খাল খনন করা হয়েছে। ভেকুর তাণ্ডবে নষ্ট হয়েছে কয়েক বিঘা জমির পেঁয়াজের চারা। উপড়ে ফেলা হয়েছে একটি বাগানের কয়েকটি মেহগনি গাছ। পাশেই কৃষি জমিতে খনন করা হয়েছে আরেকটি পুকুর।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, পেঁয়াজ খেত ও বাগানের ভেতর দিয়ে খাল কাটার নামে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেছেন যদুনন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ হোসেন। মাটি খালের দুই পাড়ে না ফেলে বিক্রি করে দেওয়ায় ওই খাল কৃষকের কোনো উপকারে আসবে না। বরং বৃষ্টি হলে খালের দুই পাশের কৃষিজমির মাটি ভেঙে খাল ভরাট হয়ে যাবে।
তারা আরও জানান, খাল খননের মাটি অবৈধ ট্রলি গাড়িতে করে আনা-নেওয়া করায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্থানীয় পাকা সড়কগুলো নষ্ট হয়েছে। ফসলসহ পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হলেও স্থানীয়ভাবে ওই ইউপি সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি।
এ বিষয় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘জনস্বার্থে খালটি কাটা হয়েছে।’
তবে সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে খাল কেটে মাটি বিক্রি করছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর আর ফোন রিসিভ করেননি।
যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন মিয়া বলেন, ‘ওখানে একটি সরকারি খাল ছিল। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা সেখানে পেঁয়াজ চাষ করে আসছেন। তবে বর্তমানে খালটি সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে কাটা হয়নি। ইউপি সদস্য ফরিদ হোসেন মাটি বিক্রি করার জন্য ব্যক্তিস্বার্থে খাল কেটেছে বলে জানতে পেরেছি। যে কারণে খালের পাড় বাঁধা হয়নি। ফলে খালটি জনগণের দশ পয়সার উপকারে আসবে না।’
যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই খাল কাটার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে খাল কাটা হচ্ছে না, সেটাও জানি না। তবে শুনেছি খাল কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।’
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ‘সরকারিভাবে খালটি কাটা হয়নি। কেউ আমার অনুমতিও নেয়নি। আমি এই বিষয় কিছু জানিও না। খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।’