![সিলেটে ২২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার](uploads/2024/04/02/1712072595.rabkk.jpg)
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ২২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগে মামলা হয় সিলেট মহানগরের ১১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) আব্দুস সালামের (৪০) বিরুদ্ধে। সোমবার (১ এপ্রিল) রাত ২টায় সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৯ এর অধিনায়ক মো. মোমিনুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে মো. মোমিনুল হক বলেন, সিলেট নগরীর লালাদিঘিরপার এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুস সালাম। ভাল কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক কিশোরীকে ২২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেন আব্দুস সালাম। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় আব্দুস সালামকে। এছাড়া আরও কয়েকজনকে করা হয় অজ্ঞাত আসামি। মামলার পর আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে র্যাব-৯। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে সিলেটের গোলাপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অন্যদেরও আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণী নগরের শেখঘাটের একটি বোতল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। পরিবারের সদস্যরা ওই কিশোরীকে বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। এই সুযোগে একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম লালদিঘীর পাড়ের আব্দুস সালামের সঙ্গে তরুণীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গত ৭ জানুয়ারি রেখা বেগম ওই তরুণীকে আবদুস সালামের বাসায় নিয়ে যায়। পরে বাসার একটি রুমে ২২ দিন আটকে রেখে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা বাসায় ফিরে তরুণীকে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে রেখা বেগম তাদেরকে বুঝিয়ে আবদুস সালামের কাছে নিয়ে যায়। আবদুস সালাম তাকে উদ্ধারের ব্যাপারে আশ্বাস দেয়।
কয়েকদিন পর পরিবারের সদস্যরা আবারও আবদুস সালামের কাছে গেলে সে জানায়, লন্ডন প্রবাসী একটি পরিবারের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় লন্ডন প্রবাসী পরিবারের পরিচয় জানতে চাইলে আবদুস সালাম ক্ষেপে যান। কিন্তু নির্যাতিতা তরুণী ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা খুলে বললে আব্দুস সালাম প্রাণনাশের হুমকি ও তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ঘটনার ৩ দিন পর আবদুস সালাম বিয়ের কথা বলে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে মামলার আরেক আসামি আবদুল মনাফের মাধ্যমে তাকে হবিগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আটকে রেখে তাকে আবদুস সালাম ও আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হলে ও আব্দুস সালামের নামে মামলা হলে সরকারি দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রবিবার (৩১ মার্চ) রাতে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক জরুরি সভায় আব্দুস সালামকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা কার্যকর করা হয়। একই সঙ্গে সালামের নেতৃত্বাধীন সিলেট সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেক লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন বলেন, আব্দুস সালামকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।