![১০ টাকা কেজি গরুর মাংস!](uploads/2024/04/04/1712208088.Munshiganj.jpg)
এক কেজি গরুর মাংস মাত্র ১০ টাকা! দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে শুনতে অবাক লাগলেও নিম্ন আয়ের ও দুস্থ মানুষের জন্য এমন ব্যতিক্রমী কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) জেলার সদর উপজেলার স্থানীয় শিলই সরল মানবকল্যাণ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে মাত্র ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে গরুর মাংস। বিষয়টি সাড়া ফেলেছে স্থানীয়দের মাঝে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিলই ইউনিয়নের মৃধা বাজারে ব্যানার টাঙিয়ে বসছে ‘সরল মাংসের দোকান’। সেখানে নামমাত্র মূল্যে গরুর মাংস কিনতে হাজির হন শত শত দুস্থ মানুষ। দোকানের সামনে পসরায় সাজানো মাংস থেকে প্রতি পরিবার কিনে নিচ্ছেন এক কেজি করে। সংগঠনের সদস্যরা তাদের কাছ থেকে মূল্য নিচ্ছেন মাত্র ১০ টাকা। হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন সবাই। এমন উদ্যোগে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র মানুষ।
পরী বেগম বলেন, ‘গত মঙ্গলবারে বাসায় যাইয়া কইয়া আইছে, ক্লাবের মানুষ আজকে (বুধবার) আমাগো গরুর মাংস দিবো ১০ টাকায়। আমি তো ভাবছিলাম এত কম টাকায় কেমনে দিবো! এখানে আইসা সত্যিই সত্যিই মাংস পাইলাম, নাতি-নাতনি নিয়া খামু।’
স্থানীয় দিলু বেপারী বলেন, ‘জন্মের পর থেকে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। কোথাও শুনলাম না মাত্র ১০ টাকায় এক কেজি গরুর মাংস পাওয়া যায়। এই প্রথম দেখলাম। যারা এই আয়োজন করেছে তাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
মো. কাশেম বলেন, ‘বাজারে তো এক কেজি গরুর মাংস ৬০০-৭০০ টাকা। এজন্য অনেকদিন ধরে গরুর মাংস খেতে পারি না। মাত্র ১০ টাকায় গরুর মাংস পেয়ে অনেক আনন্দ লাগছে। আমার মতো অনেকে আসছে। যারা গরিব তাদেরই দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি খুব ভালো।’
আয়োজক সংগঠন শিলই সরল মানবকল্যাণ সংগঠনের সভাপতি স্বপন ভূইয়া বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষকে নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাদের কাছে মাংস কেনাটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কোনো প্রকার দান কিংবা সহযোগিতা নয়, নিম্ন আয়ের মানুষগুলো যেন মাংস কিনতে পারে, এ লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সজীব বলেন, ‘আমাদের এলাকার তরুণ-যুবকরা সবাই কোনো না কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত। সংগঠনের সদস্য স্থানীয় তরুণ, যুবক ও প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় এ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে। তিনটি গরু জবাই করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫০০ পরিবারের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের এ কার্যক্রম চালু রেখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।’