নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক গত ১৪ দিন ধরে অনুপুস্থিত। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার পর থেকে তারা পলাতক।
জানা গেছে, হাতিয়া উপজেলার জাহাজামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্যাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) গত ৬ মে থেকে বিদ্যালয়ে অনুপুস্থিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। ওই মামলায় প্রধান আসামি সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি এখন কারাগারে।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদি মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি খবরের কাগজকে বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা করা হয়েছে। পরে মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হাতিয়ার বিদ্যালয়গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অনুপুস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
এই বিদ্যালয়গুলোর সভাপতিরা জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শিক্ষকরা এতোদিন অনুপুস্থিত থাকা অস্বাভাববিক।
হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল জব্বার খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার জানা মতে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন।’ কিন্তু খবরের কাগজের হাতে আসা হাজিরা খাতা অনুযায়ী তারা ১৪ দিন অনুপস্থিত বলার পর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অনেক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা খবরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) মো. মনসুর আলী খবরের কাগজকে বলেন, খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/জোবাইদা/অমিয়/