ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

উপকূলের বেড়িবাঁধে ভাঙন আতঙ্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ০৯:১৬ এএম
উপকূলের বেড়িবাঁধে ভাঙন আতঙ্ক
খুলনার কয়রার উত্তর বেদকাশিতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ

খুলনার কয়রার শাকবাড়ীয়া নদীর তীরে গাববুনিয়া বেড়িবাঁধ। গত ৩০ বছর ধরেই দুর্যোগে কিংবা জোয়ারে পানির চাপে ভাঙছে সেটি। যেনতেনভাবে সংস্কার হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণ হয় না। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই আবারও বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বাড়িঘর, কৃষিজমি।

কয়রার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে গাববুনিয়া বেড়িবাঁধের মতো মদিনাবাদ লঞ্চঘাট থেকে গোবরা, হরিণখোলা-ঘাটাখালী, মহারাজপুর, কাশিয়াবাদ, দশহালিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। 

কয়রার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাওনেওয়াজ শিকারী জানান, সারা বছর ধরেই ঠিকাদারের মাধ্যমে বাঁধের সংস্কারকাজ হয়। কিছু যেনতেনভাবে সংস্কারকাজে সরকারি বরাদ্দের লুটপাট ছাড়া সাধারণ মানুষের লাভ হয় না। আগে বাঁধের নিচে ৬০ ফুট চওড়া ছিল। ঢালের মতো বাঁধের উপরের অংশে ছিল ১০-১২ ফুট। এখন ঠিকাদার-ওয়াপদা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বাঁধের নিচের মাটি এস্কাভেটর দিয়ে কেটে ওপরে সংস্কার করা হয়। এতে বাঁধের উপরে ১০-১২ ফুট ঠিক থাকলেও নিচের দিকে মাটি কমে যাওয়ায় বাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে। ফলে বাঁধ সংস্কারের কিছুদিনের মধ্যেই পানির তোড়ে সহজে বাঁধ ভেঙে যায়।  

জানা যায়, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে কালীবাড়ি, গিলাবাড়ি সিংহের কোনা, হড্ডা চৌকিদারপাড়া, আলোর কোলসহ ১০-১২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। বাঁধ ভাঙলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়ে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে।

এদিকে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ তৈরি হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে উপকূলে। আবহাওয়া অফিস বলছে, সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক শামীম হাসান বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তা বাংলাদেশের সুন্দরবন, খুলনা এবং তৎসংলগ্ন কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে ২৬-২৭ মে ঝড়টি হতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

অপরদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা। খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছার ৬০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৩টি মুজিবকেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বিভিন্ন উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।

৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ : ঘূর্ণিঝড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা, বাগেরহাট সাতক্ষীরার প্রায় ৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদ-নদীতে পানির চাপ বাড়লে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) খুলনা পওর বিভাগ-২-এর আওতায় কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। কয়রার মদিনাবাদ লঞ্চঘাট থেকে গোবরা ও হরিণখোলা-ঘাটাখালী এলাকায় দুই কিলোমিটার বাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। মহারাজপুর, কাশিয়াবাদ, মঠেরকোনা মঠবাড়ি দশহালিয়ায় দুই কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। দাকোপে সুতারখালি, কালাবগী, চেয়ারম্যানবাড়ি, বটিয়াঘাটা বুজবুনিয়ায় বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-১ ও ২ আওতায় ১৩ কিলোমিটার ও বাগেরহাটে আরও ১৫ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

বরাদ্দের টাকা নয়ছয়, টেকসই বাঁধ হয় না: খুলনার দাকোপ উপজেলার ৩২ নম্বর পোল্ডারের ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার ও দুই কিলোমিটার নদীশাসন কাজে গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন একই বাঁধ সংস্কারে আরও ১৫২ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে পাউবোর পক্ষ থেকে।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পটি সার্ভে হয়েছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নদীর গতি-প্রকৃতির পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আরও ছয় কিলোমিটার জায়গা নদীশাসনে আনা প্রয়োজন। এতে প্রায় ১৫২ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

একইভাবে ১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৪-২০১১ পর্যন্ত সমন্বিত টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৮-২০০৫ সালে উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্প পোল্ডার নং-৩৪/২ (অংশ) (আমিরপুর-ভাণ্ডারকোট-বালিয়াডাংগা) সংস্কারকাজ বাস্তবায়িত হয়।

বর্তমানে কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার বিভিন্ন অংশে বাঁধ মেরামত কাজ চলছে। খুলনা পওর বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম জানান, উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনায় বাঁধ মেরামত ও টেকসই করতে নিয়মিত সংস্কারকাজ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোথাও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের জন্য জিও ব্যাগ, সিনথেটিক ব্যাগ মজুত রাখা হয়েছে।   

টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি স্থানীয়দের: বেড়িবাঁধ নিয়ে সমন্বয় সভায় আসেন না পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। ঠিকাদারদের মাধ্যমে যেনতেনভাবে বাঁধ সংস্কার করা হয়। স্থানীয়দের বাঁধ নির্মাণকাজে সম্পৃক্ত করা হয় না। কেউ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি তুললে ঠিকাদারের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে বলে তাকে হয়রানি করা হয়। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরপর কয়েক বছরের দুর্যোগ ও নদীভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। বিলীন হয়েছে বাজার, চলাচলের রাস্তাসহ একাধিক স্থাপনা। আর এ ভাঙন মোকাবিলায় পাউবোর জরুরি সংস্কারের নামে গা ছাড়া কাজ চলছে সারা বছর ধরেই। বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়।

গোলাম দস্তগীর গাজীর কোম্পানির শেয়ার-ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
গোলাম দস্তগীর গাজীর কোম্পানির শেয়ার-ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্ত্রী হাসিনা গাজী

সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ১২ কোম্পানির শেয়ার, ৯টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি গাড়ি ফ্রিজ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গাজী ও তার স্ত্রী হাসিনা গাজীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ফ্রিজ হওয়া ১২ কোম্পানির শেয়ার, ৯টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি গাড়ীর সর্বমোট মূল্য ২৪ কোটি ৩১ লাখ ৭১ হাজার ২৩৬ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের করা আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার ওইসব সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ চেয়ে পৃথক তিনটি আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, আসামির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে যা তদন্তাধীন।  তদন্তকালে জানা যায়, আসামি অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে তার নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব, গাড়ি ফ্রিজ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তারা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন এ জন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন। 

জলিল/মেহেদী/

লালমনিরহাটে ২ ভুয়া মেজর আটক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
লালমনিরহাটে ২ ভুয়া মেজর আটক
ছবি: খবরের কাগজ

সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে দিয়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমি দখলের নামে চাঁদাবাজি করায় দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে ওই উপজেলার বড়খাতা ফেডারেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক দুই ভুয়া মেজর হলেন- রংপুরের হাজিরহাট এলাকার সাজু আহমেদ ও তারাগঞ্জ এলাকার মাসুম।

পুলিশ জানায়, ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বে-দখলে থাকা জমি উদ্ধারের জন্য  সাজু আহমেদ ও মাসুম নামে দুই ভুয়া মেজর ২০ হাজার টাকা নেন। মঙ্গলবার বাকি ৩০ হাজার টাকা নিতে রফিকুলের বাড়ি আসলে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার সহযোগিতায় দুই ভুয়া মেজরকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। 

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে নিয়ে আসে। দুই ভুয়া মেজরের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মেহেদী/

রংপুর নগরীর রাস্তায় বালু-পাথর, যান চলাচলে অসুবিধা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
রংপুর নগরীর রাস্তায় বালু-পাথর, যান চলাচলে অসুবিধা
ছবি: খবরের কাগজ

রংপুর নগরীর সড়কগুলোতে বালু ও পাথরের স্তূপ করে পথচারীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে প্রভাবশালীরা। এতে করে সড়কে চলাচলে যেমন বিঘ্ন ঘটছে, তেমনি বালু ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে শহরের বসতবাড়িতে। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

বালু ও পাথরের স্তূপের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারী ও গাড়িচালকরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাড়ছে জনমনে ক্ষোভ। জেনেও নিরব প্রশাসন।

স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা শহরে প্রতিনিয়ত ঘটলেও প্রশাসনের তদারকি নেই বললেই চলে। আগে এমন কোনো কিছু ঘটলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। বেশিরভাগ বেয়ারা হয়েছে হাউজ বিল্ডিং কোম্পানিগুলো বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

ছবি: খবরের কাগজ

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর মুন্সিপাড়া থেকে বাস টার্মিনালের রাস্তার উপরে এক-তৃতীয়াংশ রাস্তায় রাখা হয়েছে বালু ও পাথর। বাস টার্মিনাল ও রংপুর কোর্ট, ডিসি অফিস, পুলিশ কমিশনার অফিস, রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রংপুর জেলা স্কুল—যাতায়াতের প্রধান রাস্তা এটি। যা চলাচলের বাধা হয়ে গেছে এই বালু-পাথর।

নগরীর কেরানীপাড়া চৌরাস্তা মোড়, মুন্সিপাড়া, পালপাড়া, গোমস্তাপাড়া, পাশাড়িপাড়া রাস্তা, মডার্ন মোড়, ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি, গুপ্তপাড়া-সহ রংপুর সিটি করপোরেশনের একাধিক রাস্তার একই অবস্থা।

স্থানীয়রা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। তবে এর কোনো সমাধান করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

গাড়িচালক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হইয়া কী হইছে? এরা আরও বেয়ারা হইয়া গেছে। আগেই একটু নিয়মকানুন মানতো। এখন সবাই নেতা হইয়া গেছে।’

নগরীর গুপ্তপাড়ার বাসিন্দা রেজওয়ান কবির বলেন, ফুটপাত ও রাস্তার পাশে ইট-বালু-সিমেন্ট স্তূপ করে রাখায় চলাচলের অনেক অসুবিধা হয়ে গেছে। প্রায় সময় রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের কেয়ারটেকার জাকির হোসেন বলেন, আমি এখানে দায়িত্বে আছি। কে ফেলেছে জানি না। সকালে বাধা দিয়েছি, তারপরও ফেলেছে।

বালু দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি করার বিষয়ে দলিল লেখক দীপু অস্বীকার করে বলেন, এগুলো আমার না। আমি কিছু জানি না।

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতেমা বলেন, আমাদের লোকবল সংকটের কারণে এগুলোতে তদারকি করা যাচ্ছে না। আমাদের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে যাচ্ছেন। তারপরেও বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।

সেলিম সরকার/মাহফুজ

ফেনীতে ফের বন্যার শঙ্কা, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৪০৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:২০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:২১ পিএম
ফেনীতে ফের বন্যার শঙ্কা, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৪০৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত
টানা বৃষ্টিতে ফেনী শহরের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। ছবি: খবরের কাগজ

টানা বৃষ্টিতে ফেনী শহরে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফেনীতে ২৪ ঘণ্টায় ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেনীর পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের গদানগর এলকায় সিলোনিয়া নদীর একটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া ফুলগাজীতে মুহুরী নদীতে ভেসে গেছে দু’টি দোকান ঘর, নদী পাড়ের রাস্তা ভেঙ্গে ফুলগাজী বাজার থেকে রাজসপুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। 

অন্যদিকে সকাল থেকে ফেনী শহরের কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জানা যায়নি। টানা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, সোমবার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টা হতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতে মৌসুমের জন্য সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। আরও দুইদিন ফেনীতে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ছবি: খবরের কাগজ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, পরশুরামের উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সিলোনিয়া নদীর উপর একটি ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। 

জানা গেছে, সোমবার বিকাল থেকে ফেনীতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। বৃষ্টির পানিতে ফেনী শহর নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। শহরের অলিতে গলিতে কোথায় কোথায় সড়কে তিন থেকে চার ফুট পানি জমেছে। পাড়ামহল্লার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। 

ফেনী শহর ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে শহরের প্রধান সড়ক শহিদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, রামপুর শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠান বাড়ি এলাকা, নাজির রোড, পেট্রো বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় তৈরী হয়েছে জলাবদ্ধতা। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত পানির চাপে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় দূর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।  

ফেনী সরকারি কলেজ থেকে বাংলা সমাপনী বর্ষের পরীক্ষার্থী ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের খালেদুল আশরাফ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে অনার্স সমাপনী বর্ষের পরীক্ষা রয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, সড়কে কোনো পরিবহন নেই। বোর্ড থেকেও পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় কীভাবে কলেজে যাব? পরীক্ষা দেব? সেটি বুঝতে পারছি না।  

গাড়ি চালক বেলায়েত হোসেন জানান, ২০২৪ আগস্টে ফেনীতে ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে এখনো ফেনীর মানুষ কেটে উঠতে পারেনি। বৃষ্টি পরিস্থিতিতে আবার বন্যা শুরু হতে পারে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাওয়ার চিন্তা করছি।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমান উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৭টার দিকে ফুলগাজীর রাজেশপুর সড়কের মুহুরী নদীর বাধ ভেঙে দু’টি দোকান নদীতে ধসে গিয়েছে। এতে করে ওই গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, এখন প্রায় সকল স্কুলেই ষান্মাসিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে। সড়ক ও স্কুলে পানি ওঠায় অনেক স্কুলে ইতোমধ্যে অন্তবর্তী পরীক্ষা স্থগিত করার নোটিশ দিয়েছে। তবে বোর্ড পর্যায়ে চলমান পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ পাওয়া যায়নি। 

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদার বলেন, সীমান্তবর্তী তিন নদী মুহুরী, কহুয়া, সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়াও পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের গদানগর গ্রামে পূর্বের ভাঙন দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। আর উজানে ভারী বৃষ্টি হলে নদীর পানি আরও বাড়বে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তোফায়েল নিলয়/মাহফুজ

 

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ২ জনের জিকা ভাইরাস শনাক্ত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ২ জনের জিকা ভাইরাস শনাক্ত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে দুইজনের দেহে জিকা ভাইরাস (মশাবাহিত ভাইরাস) শনাক্ত হয়েছে। বন্দর নগরে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার এটিই প্রথম ঘটনা। পাশাপাশি এই রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘উপসর্গ দেখা দেওয়ায় সোমবার (৭ জুলাই) রাতে নগরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে দুই রোগীর পরীক্ষা করা হয়। সেখানে দুজনের রিপোর্টে জিকা ভাইরাস পজিটিভ আসে। আক্রান্তদের একজন পুরুষ ও অপরজন নারী। দুজনেই ৪২ বছর বয়সী।’

ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ‘যেসব কীট দিয়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা করা হয়, ওই একই কীট দিয়ে জিকা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এই ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা হয়। কোনো অপ্রচলিত বা বিরল রোগের ক্ষেত্রে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আক্রান্ত দুজনের নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এখন তারা চাইলে চট্টগ্রামের ওই ল্যাব টেস্টের ওপর ভরসা করতে পারে, অথবা নিজেরা পুনরায় পরীক্ষা করতে পারে।’

জানা গেছে, আক্রান্ত দুজনের শরীরে জ্বর, ব্যথা ও র‌্যাশ (চামড়ায় লালচে দানার মতো ছোপ) রয়েছে। পাশাপাশি হাত-পা ফোলা রয়েছে।

দেশে প্রথম ২০১৪ সালে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়। তবে চট্টগ্রামে এটিই প্রথম ঘটনা। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জিকা ভাইরাসে জীবনঝুঁকি নেই। তবে গর্ভবতী নারীদের অনাগত শিশু অপরিপূর্ণ হয়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা- এই তিন রোগ হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম, প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বর ও ব্যথার জন্য ওষুধ খেতে হবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করতে হবে।

সালমান/