![লাগে কোটি টাকা, মিলেছে ৫০ হাজার](uploads/2024/05/25/md-erfan-1716608578.jpg)
অন্য দিনের মতো গত বছর ৯ নভেম্বরও টিউশনি করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ইরফান। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। হাত, বুক ও মাথায় আঘাত পান। দুর্ঘটনার পর প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সর্বশেষ কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ইরফান চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার লনুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গটিয়া ডেঙ্গা গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। তার পরিবারের পক্ষে প্রায় এক কোটি টাকার চিকিৎসা ব্যয়বহন করার সামর্থ্য নেই।
ইরফানের বড় ভাই আজাদ বলেন, ‘তিন মাস আইসিইউতে ছিল। আইসিইউর বিল এখনো পরিশোধ করা হয়নি। আইসিইউর বিল এসেছে ৩২ লাখ। এ ছাড়া অন্য খরচ হয়েছে ৬০ লাখ টাকা। ব্রেন সার্জারিসহ এখন পর্যন্ত মোট ৬টা অপারেশন করা হয়েছে। ইরফানকে বর্তমানে বাসায় নিয়ে এসেছি।’
টাকা কীভাবে জোগাড় হচ্ছে এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য অনেক সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিনিয়র, জুনিয়ররা যে যেভাবে পারছে সহযোগিতা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। তারপর তারা আর যোগাযোগ করেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন তার চিকিৎসা ব্যয়ের আশ্বাস দিলেও আর কোনো সহযোগিতা করা হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের থেকে।
এ বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একবার অর্থ সহযোগিতা দিয়েছিল। পরে আরও টাকার ব্যাপারে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাকে জানিয়েছিল। তখন তাদের বলেছিলাম, প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টে নোটিশ দাও, টাকা তোলার একটা ব্যবস্থা করতে হবে আর প্রশাসনকেও আমি বলবো।’
তবে প্রশাসনের আশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থেমে থাকেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘ইরফানের জীবন’ নামে একটি প্রজেক্ট শুরু করে মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে টাকা উঠানো শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা তোলা হয়।
এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহসীন জামিল বলেন, ‘আমরা স্ট্রিট লেভেলে যখন কাজ করি তখন ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। বর্তমানে কালেকশন হচ্ছে না। যদি বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকত, আমরা শিক্ষার্থীরা সবাই কাজ করতে পারতাম।’