![৩৭ মণ পদ্মরাজের দাম সাড়ে ১০ লাখ](uploads/2024/05/28/10.-Mogura-Box-1716867062.jpg)
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন আলোচনার মূল বিষয় বড় আকারের ষাঁড়। আকৃতি ও সৌন্দর্যে মাগুরার ‘পদ্মরাজ’ নজর কাড়ছে সবার। ষাঁড়টির মালিক আবুল কালাম আজাদের দাবি, এখন পর্যন্ত এটিই খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় ষাঁড়। যে কারণে প্রতিদিনই কেউ না কেউ কেনার আশায় দেখতে আসছেন। আবার অনেকে শুধু এত বড় ষাঁড়টি সামনাসামনি দেখার জন্যই আসছেন।
৩৭ মণ ওজনের ষাঁড় ‘পদ্মরাজের’ মালিক মাগুরা সদরের বেড়আকছি গ্রামের আবুল কালাম আজাদ পেশায় জেলা মৎস্য অফিসের গাড়িচালক। চার বছর আগে ২ লাখ টাকা দিয়ে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভি কেনেন তিনি। সেই গাভিটি পরপর তিনটি বাচ্চা দেয়। তিন নম্বর বাচ্চাটির নাম রাখা হয় পদ্মরাজ। পদ্মরাজের বয়স এখন আড়াই বছর। ছয় দাঁতের পদ্মরাজের ওজন প্রায় ৩৭ মণ। আসছে কোরবানির ঈদে এটি সাড়ে ১০ লাখ টাকা বিক্রি করতে চান আবুল কালাম আজাদ।
তিনি জানান, চার বছর আগে দুই লাখ টাকা দিয়ে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভি কেনেন তিনি। সেই গাভিটি এর আগে আরো দুটি বাচ্চা দিয়েছে। তিন নম্বর বাচ্চাটির নাম রাখা হয় পদ্মরাজ। আড়াই বছর বয়সের হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের পদ্মরাজের ওজন হয়েছে এখন প্রায় ৩৭ মণ। ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার পদ্মরাজ লম্বায় ১২ ফুট। প্রতিদিন খাবার হিসেবে ষাঁড়টিকে দেওয়া হয় দুই কেজি আখের গুড়, দুই কেজি ছোলা, দুই কেজি সয়াবিনের ভুসি, চার কেজি ভুট্টার দানা ও ছয় কেজি ধানের কুড়া। সঙ্গে থাকে কাঁচা ঘাস ও ধানের বিছালি। তিনি আরও জানান, পদ্মরাজের মায়ের ১৮ থেকে ২০ কেজি দুধ হলেও সেখান থেকে সংগ্রহ করা হতো পাঁচ থেকে ছয় কেজি। বাকি দুধ খাওয়ানো হতো পদ্মরাজকে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশালাকৃতির দেহ হওয়ায় এটির নাম দিয়েছি পদ্মরাজ। অনেক খামারি কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন। কিন্তু আমি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে ষাঁড়টি পালন করেছি। খাবার হিসেবে আখের গুড়, ছোলা, ভুট্টার দানা, সয়াবিনের ভুসি, খড় এবং কাঁচা ঘাস দিয়েছি। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ কেজি খাবার লাগে ষাঁড়টির। খুবই যত্ন করে এটি লালনপালন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আসছে কোরবানির ঈদে এটি বিক্রি করতে চাই। অনেকেই দেখার জন্য আসছে। দাম চাচ্ছি সাড়ে ১০ লাখ টাকা। তবে একটু কম হলেও বিক্রি করে দেব। ষাঁড়টিকে বড় করতে কোনো প্রকার মোটা তাজাকরণের জন্য ব্যবহৃত খাবার খাওয়ানো হয়নি। যে কারণে সে শারীরিকভাবে অনেক সুস্থ।’
ষাঁড়টির লালনপালনের দায়িত্বে থাকা আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘ষাঁড়টিকে নিজের সন্তানের মতো করে লালনপালন করেছি। তাকে সবসময় ভালো খাবার দিয়েছি। মোটাতাজাকরণের খাবার ব্যবহার করিনি, যাতে তার কষ্ট না হয়।’
জেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাক্তার মিহির কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘জেলা প্রাণিসম্পদ সমৃদ্ধ একটি জেলা মাগুরা। জেলায় এ বছর কোরবানি পশুর চাহিদা আগের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি রয়েছে। অতিরিক্ত কোরবানির পশুগুলো অন্যান্য জেলায় বিক্রি করা হবে। আর আমরা বিভিন্ন হাটবাজারের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি প্রক্রিয়ার চেষ্টা করছি।’