বর্তমান সময়ে সবাই যেখানে সকারি চাকরির আশায় থাকেন। সেখানে ব্যতিক্রম নড়াইলের শোয়েব আক্তার। সরকারি চাকরি ছেড়ে হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা। নিজে সফল হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান করেছেন অনেক যুবকের।
২০০৮ সালে বনবিভাগের মালি পদে চাকরি পান। কিন্তু তিন মাস পর চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে নার্সারি গড়ে তোলেন। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে নড়াইলে এসে বিভিন্ন প্রকার কুল চাষ শুরু করেন।
শোয়েব আক্তার বলেন, ‘সরকারি চাকরি ভালো না লাগার কারণে তিন মাস পর চাকরি ছেড়ে চলে আসি। বাড়িতে এসে ছয় একর জমিতে নার্সারি করি। তারপর নড়াইলে এসে দুই একর ৫০ শতক জমিতে বিভিন্ন কুল চাষ করি। এখানে আমার প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কুল বিক্রি শুরু করেছি, খরচ বাদে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার এখানে কাজ করে ১০টি পরিবার সংসার চালাচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
শোয়েব আক্তারের কুল খেতে কাজ করা সোহান হোসেন বলেন, আমি কুল খেতে কাজ করি। মাস শেষে ১৫ হাজার টাকা বেতন পাই।’
সবুজ আলী বলেন, ‘কুল খেতে সার, ওষুধ দেওয়া, কুল তোলাসহ অন্য কাজ করি। প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন পাই।’
পাইকারি বরই ক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এই খেতের বরই আমরা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কেজি কিনে নিয়ে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি।’
নড়াইল পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবির কুমার দে বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তার বাগানে যেভাবে ফলন হয়েছে কমপক্ষে ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবেন।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকোনুজ্জামা বলেন, ‘শোয়েব আক্তারের কুল খেত এখানকার বেকার যুবকদের অনুকরণীয় হতে পারে। স্বল্প খরচে অনেক বেশি লাভ করতে চাইলে কুল চাষের বিকল্প নেই। এক বছরেরও কম সময়ে জমি থেকে কুল তুলে বাজারজাত করা সম্ভব। সদর উপজেলায় এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কুল আবাদ করা হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘শিক্ষিত বেকার যুবকরা লেখাপড়া শেষ করে ঘরে বসে না থেকে তারা সহজেই কৃষি উদ্যোক্তা হতে পারেন। অল্প পুঁজি এবং কম সময়ে তারা মিশ্র ফলের বাগান করে সহজেই লাভবান হতে পারেন। শোয়েব আক্তারের কুল না দেখলে কেউ বুঝতে পারবেন না ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে এক বছরেরও কম সময়ে কীভাবে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করা যায়। জেলায় এ বছর ৯৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কুলের আবাদ হয়েছে।