![মেহেরপুরে ৫ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা](uploads/2024/02/27/1709019388.Vutta.jpg)
অধিক লাভজনক হওয়ায় গত কয়েক বছরে মেহেরপুরে ভুট্টা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ মৌসুমে জেলার প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার টন।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একসময় যেসব জমিতে কৃষকরা ধান, গম, তামাক চাষ করতেন, এখন সেসব জমিতে ভুট্টার চাষ করছেন। কৃষকরা জানান, ভালো ফলন, ফসলের চাহিদা এবং ভুট্টাগাছ থেকে জ্বালানির চাহিদা পূরণ হওয়ায় তারা দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
জেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের ভুট্টাচাষি জিল্লুর রহমান জানান, তামাক চাষে মাটির উর্বরা শক্তি কমে যায় এবং পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বুঝতে পেরে তিনি ভুট্টার আবাদ করছেন।
সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ভুট্টাচাষি রবকুল হোসেন জানান, বৃষ্টি হলে যেন ভুট্টার পচন না লাগে এবং পাখি ও পোকা যেন ভুট্টা খেয়ে ফেলতে না পারে সে জন্য ভুট্টার মোচা ছোট ছোট পলিথিন ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আগাম চাষ করা ভুট্টা জমি থেকে সংগ্রহ শুরু করবেন।
উজ্জ্বলপুর গ্রামের ভুট্টাচাষি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘ভুট্টা চাষে আমার বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধারণা করছি, ৩৫ থেকে ৪০ মণ ফলন পাব। এতে আমার বিঘাপ্রতি ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। ভুট্টার গাছ এবং কাঁদি জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করি।’
বামনপাড়া গ্রামের ভুট্টাচাষি সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভুট্টার ক্রেতা অনেক। গবাদিপশুর উন্নতমানের খাবার হিসেবে ভুট্টার চাহিদা বেড়েই চলেছে। এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ক্রেতারা এই ভুট্টা থেকে তাদের নিজেদের ফিড মিল কারখানায় মুরগির বাচ্চার, মাছের ও গরুর খাবার তৈরি করে থাকেন।’
গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের ভুট্টাচাষি জাহিদুল হাসান জানান, তাদের এলাকায় ভুট্টা আবাদের তেমন একটি প্রচলন ছিল না। বর্তমানে গোখাদ্য, মাছের খাবার ও পোলট্রি খাবার হিসেবে ভুট্টার চাহিদা বাড়ছে। সে জন্য তাদের এলাকায়ও ভুট্টার আবাদ বাড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের মতে, এ বছর ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় একজন কৃষকের কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা লাভ থাকছে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভুট্টা একটি লাভজনক আবাদ হিসেবে মেহেরপুর জেলায় চাষ হয়ে আসছে। সরকারের বিভিন্ন সহযোগিতা এবং কৃষি প্রণোদনার কারণে এ বছর ভুট্টা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘মেহেরপুরের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার ফলন ভালো হয়। ভুট্টা চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টা চাষে চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’ সূত্র: বাসস।