
বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি-সুদহার বাড়ানোর পরও কিছুতেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে মূল্যস্ফীতির হার আরও বেড়েছে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক চাপ আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে, গত বছরের মার্চে একটি পণ্য কিনতে ১০০ টাকা খরচ হলে, এখন ব্যয় হয়েছে ১০৯ টাকা ৮১ পয়সা। অথচ খরচ বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে বেড়েছে দুর্ভোগ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এ ছাড়া পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়, গ্রামের তুলনায় শহরে মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে। মার্চে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং শহরে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। একই সঙ্গে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে, আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬ শতাংশ। তবে সর্বশেষ মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে।
গত এক বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতির পারদ চড়া হয়ে আছে। বিলম্বে হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি-সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নিলেও কার্যত কোনো সুফল আসেনি। এ অবস্থায় নীতি-সুদহার আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
এদিকে বিশ্বব্যাংকও সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে তিন কারণে বাংলাদেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতি বহাল থাকবে। কারণগুলো হলো, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বিদেশি মুদ্রাসংকটের কারণে আমদানি-সংকোচন ও জ্বালানিসংকট বহাল।