![ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রভাবে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন](uploads/2024/04/16/1713246262.dhaka-exchange.jpg)
টানা ছয় দিন ঈদের ছুটি শেষে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। তবে প্রথম দিনে দেশের উভয় পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার কারণে পুঁজিবাজারে এমন দরপতন হয়েছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৮৫ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে সোমবার মোট ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে মোট ৩৯৫ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২ কোম্পানির। কমেছে ৩৩৬ কোম্পানির। বাকি ২৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮৯ পয়েন্ট কমে ১৬ হাজার ৫৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী খবরের কাগজকে বলেন, ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে নতুন করে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বেধে গেলে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। এমনটি হলে বিশ্বের তেল সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সৃষ্টি হতে পারে নতুন সংকট। এর প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
রফিকুল ইসলাম নামে একজন বিনিয়োগকারী খবরের কাগজকে বলেন, টানা দরপতন থেকে দেশের পুঁজিবাজার যখন বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছিল, ঠিক সেই সময় ইরান-ইসরায়েল পরিস্থিতি নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করল।
দরপতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, পুঁজিবাজার খুবই স্পর্শকাতর জায়গা। যেকোনো ধরনের অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এখন ইরান-ইসরায়েল পরিস্থিতিও পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। কারণ ইরান-ইসরায়েল পরিস্থিতি নতুন বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
এদিকে ঈদের ছুটি শেষে সোমবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ইরানের হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ফলে লেনদেন শুরু হতেই মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী। এতে লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই সূচকের বড় পতন হয়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির চাপও বাড়তে থাকে। ফলে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রাও।
এর আগে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও দেশের পুঁজিবাজারে বড় পতন হয়। সে পতন রোধে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফ্লোর প্রাইস দিয়েছিল।