![দিনাজপুরে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ভুট্টা চাষ](uploads/2024/04/17/1713344041.Corn-tree.jpg)
দিনাজপুরে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা এ মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন আশা করছেন।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তর উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৭৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হতে পারে।
কৃষকরা ভুট্টাগাছের পাশ দিয়ে জমিতে আইল দিয়েছেন। তার সঙ্গে পানি সেচ দিয়ে ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দিয়েছেন। যেসব কৃষক আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন, তাদের গাছের ভুট্টা পরিপক্ব হতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হতে পারে, যা জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলমান থাকবে।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ গ্রামের ভুট্টাচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, ভুট্টা চাষের জমিতে প্রথমে ২০ কেজি পটাশ, ২৫ কেজি ফসফেট, ১০ কেজি জিপ সার, ১ কেজি বরন, ১ কেজি দানাদার ও ১ কেজি সালফার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি তৈরি করেন চাষিরা। পরে বিঘাপ্রতি ৩ কেজি ভুট্টার বীজ রোপণ করেন। এক মাসের মাথায় আইল বেঁধে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডেপ ও ২ কেজি থিওভিট ছিটিয়ে খেতে সেচ দেন। বীজ রোপণের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্য কৃষকরা ভুট্টা কাটা-মাড়াই করে থাকেন।
ভুট্টার বীজ রোপণ থেকে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়। হাকিমপুর উপজেলার ভুট্টা চাষি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘গতবার আমি ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলাম। দামও ভালো পেয়েছি। তাই এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আবাদ করছি। আশা করছি ভালো ফলন পাব।’
সাজিবর রহমান নামের অপর এক চাষি বলেন, ‘প্রতিবছর আমি এক বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করি। এ বছরও আবাদ করছি, দেখি কেমন হয়। অল্প জমি তাই নিজেই সব কাজ করি, এতে খরচ কম হয়। আশা করছি এবার ভুট্টার ভালো দাম পাব।’
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, ‘হিলিতে এবার ৩৯৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আলুচাষিরাও খেত থেকে আলু তুলে ভুট্টা চাষ করেছেন। আমরা সরকারিভাবে ২৫০ জন ভুট্টা চাষিকে ২ কেজি হাইব্রিড ভুট্টা বীজ ও ৩০ কেজি সার বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। আশা করি আগামীতে ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে।’
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘চলতি রবি মৌসুমে ৭৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলার সব উপজেলাতেই ভুট্টা চাষ হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে ৭৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এবার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারে ভুট্টার চাহিদা অনেক রয়েছে। কৃষকরা সহজে তাদের উৎপাদিত ভুট্টা বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।’ সূত্র: বাসস